নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

https://www.facebook.com/tonmoypoetry

তন্ময় কে সাহা

কোন এক শনিবার সকাল ছয় টায় আমার জন্ম হয়েছল। আর বাইরে খুব বৃষ্টি হচ্ছিল। এখনকার মত তখন যদি দৌড়াতে পারতাম, তবে একদৌড়ে গিয়ে বৃষ্টিতে ভিজতাম।

তন্ময় কে সাহা › বিস্তারিত পোস্টঃ

লালন সাঁইজির জীবন সম্পর্কে কিছু তথ্য।

০৮ ই নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:১২

বাংলার লোকসমাজ ও সেইসঙ্গে নাগরিকজনকেও লালন সাঁই প্রবলভাবে নাড়া দিয়েছিলেন। সেই তরঙ্গ দূরদেশের মানুষকেও তরান্বিত করেছে। সাঁইজি হয়ে উঠেছেন এক ধ্রুপদ লোক ব্যাক্তিত্ব, কালান্তরে যিনি আক্ষরিক অর্থেই নিত্য স্মরণীয় ও বরণীয়।

এই আত্তনিমগ্ন সংসার নির্লিপ্ত মরমী সাধকের জীবন কাহিনী রহস্যময়। সাঁইজির জন্মস্থান ও ধর্মগত পরিচয় নিয়ে পণ্ডিতদের মতভেদ আছে। লালন সাঁইজি নিজেও তার আত্ম পরিচয় সম্পর্কে নীরব ও নিঃস্পৃহ ছিলেন।

‘হিতকরী’ পত্রিকার (১৫ কার্ত্তিক ১২৯৭/৩১ অক্টোবর ১৮৯০) নিবন্ধ, মৌলবী আবদুল ওয়ালীর (১৮৫৫-১৯২৬) প্রবন্ধ (‘Journal of the Anthropological Society of Bombay’, Vol: V, No: 4; 1900), বসন্ত কুমার পালের (১৮৯৫-১৯৭৫) প্রবন্ধ (‘প্রবাসী’ শ্রাবণ ১৩৩২ ও বৈশাখ ১৩৩৫) ও বই ( ‘মহাত্মা লালন ফকির’, ১৩৬২) গ্রন্থে সাঁইজির কিছু নির্ভরযোগ্য উপকরণ পাওয়া যায় যার সাহায্যে লালনজীবনীর একটি কাঠামো নির্মাণ করতে পণ্ডিতরা সক্ষম হয়।

লালন সাঁই ১৭৭৪ সালে সেইসময়ের নদীয়া জেলার অধীন কুষ্টিয়ার কুমারখালী থানার চাপড়া ইউনিয়নের অন্তর্গত গড়াই নদীর তীরবর্তী ভাঁড়ারা গ্রামে জন্মগ্রহন করেন। হিন্দু কায়স্থ পরিবারে সাঁইজির জন্ম। তার পিতার নাম মাধব কর ও মাতার নাম পদ্মাবতী। জানা যায় সাঁইজি তাঁর পিতামাতার একমাত্র সন্তান ছিলেন। শৈশবেই তিনি পিতৃহীন হন। আর্থিক অভাব অনটনের জন্য সাঁইজি নিম্নস্তরের প্রাথমিক শিক্ষাও গ্রহন করতে পারেন নি।

সেই সময় চাপড়া ও ভাঁড়ারা গ্রাম ছিল লোকসংস্কৃতির এক বিশেষ ক্ষেত্র। বাউল সংগীত-কবিগান- হরিনামসংকীর্তন সহ নানা ধরনের লোকসংগীতের চর্চা করা হতো। এই সাংগীতিক পরিবেশেই লালন সাঁইজির জন্ম।

শৈশবে পিতৃবিয়োগ হওয়ার অল্প বয়সেই তাঁর উপর সংসারের চাপ পরে। আবার সেই সময়েই সে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। সাংসারিক চিন্তা ও আত্মীয় স্বজনদের বৈরিতা সাঁইজি কে বিশেষ ভাবে পীড়িত করে তোলেন। তাদের সাথে মতামতের মিল না হওয়ায় সাঁইজি তাঁর মা ও স্ত্রী কে নিয়ে ভাঁড়ারা গ্রামের অন্তর্গত দাসপাড়ায় আলাদা ভাবে বসবাস শুরু করেন।

দাসপাড়ার বাউলদাস এর সাথে অন্যান্য সঙ্গি সহ সাঁইজি মুর্শিদাবাদ জেলার বহরমপুরে গঙ্গাস্নানে যান। সেখান থেকে ফেরার পথে সাঁইজি বসন্ত রোগে আক্রান্ত হন। তাঁর সেই রোগ ক্রমশ বাড়তে বাড়তে তাকে অচৈতন্য করে ফেলে, যার ফলে তাঁর সহযাত্রীরা তাকে মৃত ভেবে এবং সংক্রামক রোগের হাত থেকে বাঁচতে তাকে নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হয়। তার পর গ্রামে ফিরে গিয়ে তাঁর মা ও স্ত্রীর নিকট মৃত্যু সংবাদ দেওয়া হয়। সকলেই তখন বিধির বিধান বলে সাঁইজির অকাল মৃত্যুকে স্বীকার করে নেয়।

সাঁইজির অচেতন দেহ ভাসতে ভাসতে নদীর কিনারায় এসে পরে। একজন মুসলমান নারী জল নিতে এসে তাকে এই অবস্থায় দেখে তাকে উদ্ধার করে নিজের বাসায় নিয়ে যায়। এই মায়ের আন্তরিক সেবায় সাঁইজি রোগ মুক্ত হন। কিন্তু বসন্ত রোগে সাঁইজির একটি চোখ নষ্ট হয়ে যায় এবং মুখমণ্ডলে গভীর ক্ষতচিহ্নের সৃষ্টি হয়। সুস্থ হয়ে সাঁইজি নিজ গ্রামে ফিরে গেলে তাঁর মা ও স্ত্রী আনন্দে অভিভূত হলেও সমাজ এর অধিপতি ও তাঁর আত্মীয় স্বজনরা তাকে প্রত্যাখ্যান করেন। ব্যাথিত ও অভিমানক্ষুব্ধ হয়ে চিরতরে গৃহত্যাগ করেন। এই ঘটনায় সমাজ-সংসার, আচার-জাত-ধর্ম সম্পর্কে সাঁইজি বীতশ্রদ্ধ হয়ে পরেন।

এরপরে তিনি নিজের আখড়া স্থাপন করেন ছেউড়িয়া গ্রামে। সাঁইজি তাঁর যৌবনের মধ্যভাগে গৃহত্যাগ করেন। সমাজ সংসার বিচ্যুত সাঁইজি তখন জগৎ ও জীবন – জিজ্ঞাসার জবাব খুঁজে পেলেন সিরাজ সাঁই নামক এক তত্ত্বজ্ঞ সিদ্ধ গুরুর সংস্পর্শে এসে।

জয় গুরু
সাধু গুরুর জয় হোক।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:৫১

খায়রুল আহসান বলেছেন: ফকির লালন সাঁই সম্বন্ধে এখানে যতটুকু জানতে পারলাম, এটুকুর জন্যই আপনাকে ধন্যবাদ।
ব্লগে সুস্বাগতম। আপনার প্রথম লেখায় প্রথম মন্তব্যটা করে গেলাম।
শুভকামনা রইলো।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.