নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

The only person u should try to be better than, is the person u were yesterday.

ত্রিভকাল

আমি গ্রামের একজন সহজ সরল প্রথমশ্রেণীর আবুল, যে কিনা ছিঁড়া লেপের তলায় শুয়ে কোটিপতি হবার স্বপ্ন দেখতে ভীষণ ভালোবাসে। কৃপণ, কাইষ্টা মানুষের নাকি অনেক টাকা পয়সা হয়, সে হিসাব অনুযায়ী আমি অক্সফোর্ড কোটিপতি হবো। নিজের টাকা নিজেই খাইয়ম .... ফেইসবুক লিঙ্কঃ https://www.facebook.com/Sabbirahmed069 ওয়েবসাইট লিন্ক : http://bkadda.blogspot.com http://www.trivokal.com http://www.votku.com htttp://www.likilose.com http://trivokal.wordpress.com/ http://www.vokalab.com

ত্রিভকাল › বিস্তারিত পোস্টঃ

মানুষ কি দ্বারা প্ররোচিত হয় ?

২২ শে মে, ২০১৪ সকাল ১১:২৮

১২ই জানুয়ারি, ২০০৭।



বোস্টোনের রেলওয়ে প্ল্যাটফর্ম এ একজন বেহেলাবাদক বেহেলা বাজাচ্ছে। ৪৫ মিনিট ধরে টানা বাজিয়ে যাচ্ছে সে তাঁর বেহেলাটি। সাবওয়ের যাত্রীরা তাকে পাশ কাটিয়ে চলে যাচ্ছে চলে যাচ্ছে যে যার কাজে। ঘুড়েও দেখছে না বেহেলা বাদককে, শুনছে না তাঁর বেহেলার সুর। একজন মহিলা একডলার ছুড়ে মারলো তাঁর দিকে তারপর দ্রুতগতিতে হেটে চলে গেলো, একজন লোক দেয়ালে হেলান দিয়ে একমিনিটেরও কম সময়ের জন্য দাড়ালো তারপর ঘড়ির দিকে তাকিয়ে চলে গেলো নিজের কাজে, ৪৫ মিনিট টানা পারফর্ম করার পর দেখা গেলো ২০ জন মানুষ তাঁর সামনে অর্থ রেখে গিয়েছে যা সর্বোমোট হয়েছে ৩২ ডলার। কিন্তু এদের একজনও দাঁড়িয়ে থেকে শুনেনি তাঁর বেহেলার সুর। শুধুমাত্র একজন ছাড়া..একটি বাচ্চা, তিন বছরের একটা বাচ্চা দাঁড়িয়ে বোঝার চেষ্টা করছিল স্পেশাল কিছু হচ্ছে কিনা। কিন্তু তাঁর সাথে থাকা মা তাকে টেনে নিয়ে যাচ্ছিল, যাওয়ার সময়ও সে ঘাড় ঘুরিয়ে দেখতে দেখতে যাচ্ছিল বেহেলা বাদককে অথবা তাঁর বেহেলা কে... বেহালার সুর থেমে যায় লোকারণ্য এলাকায়, কেউ টেরও পায় না। বেহেলাবাদক শূণ্য দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে তাঁর সামনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখা ৩২ ডলারের দিকে।



৯ম জানুয়ারি, ২০০৭।



জসোয়া বেল, গ্রামি এওয়ার্ড প্রাপ্ত আমেরিকান বেহেলা বাদক এবং কনডাক্টরস, যাকে বলা হয় পৃথিবীর ইতিহাসে জন্ম নেওয়া সেরা বেহেলাবাদকদের একজন, বেহালা বাজাচ্ছে বোস্টোনের সিম্পোনি হলের হাজার হাজার দর্শকের সামনে। এই সিম্পোনি হলের বেশীরভাগ সিটের টিকেটের দাম ১০০ ডলারের ও বেশী। জসোয়া বেলের শোর প্রতিটি টিকেট বিক্রি হয়েছে, হাউসফুল বলা চলে সোজা বাংলায়। আরো যদি বলতে চাই তাহলে বলতে হয় জসোয়া বেল তাঁর খ্যাতি এবং প্রতিভা দিয়ে সাফল্যের চূড়ায় উঠে পারফর্ম করছে চোখ বন্ধ করে। এই চূড়ার যদি কোনো উচ্চতা থাকতো তাহলে তা অবশ্যই এভেরেষ্ট এর থেকে বড় হতো।



এরিষ্টটল হচ্ছে গ্রিক দার্শনিক যিনি কিনা জন্মেছিলেন খৃষ্টের জন্মের ৩৮৪ বছর আগে। তিনি কোনো এওয়ার্ড বা নোবেল প্রাইজ পাননি :D যদিও তিনি কোনো নোবেল বা এওয়ার্ড পাননি তবুও তাঁর রেখে যাওয়া কিছু নোট দিয়ে বেশ কিছু থিউরি আবিষ্কার করা সম্ভব হয়েছে। এসব রেখে যাওয়া থিউরির মধ্যে একটা হচ্ছে ‘Rhetoric’



যাইহোক এরিষ্টটোল এর থিউরিতে পরে আসি, আগে শেষের জনের পরিচয় পর্ব সেরে নেই। দুইজনের পরিচয় তো গেলো। এবার আসি সাবওয়ে প্ল্যাটফর্মে বেহেলাবাদকের দিকে। সাবওয়ে প্ল্যাটফর্মে যে বেহেলা বাজাচ্ছিল সে হচ্ছে বোষ্টেনে সিম্পোনী হলে হাজার হাজার দর্শক মাতানো সেই জসোয়া বেল, যার টিকেট কিনা ১০০ ডলারের বেশী দিয়ে কনসার্ট দেখতে গিয়েছিল হাজার হাজার মানুষ, যার সমগ্র মিউজিক এর মূল্য কিনা ৪ মিলিয়ন ডলারেরও বেশী। আর তিন দিন পর সেই জসোয়ার বেহালার দিকে কিনা একটি বাচ্চা ছাড়া আর কেউ ফিরেও তাকায়নি!



কেনো কেউ তাকালো না সাবওয়ে প্ল্যাটফর্মে ? আর কেনোই বা শত ডলার এর ও বেশী খরচ করে একই বেহেলার সুর শুনতে গিয়েছিল ‘সিম্পোনি হলে’ ?





"What Aristotle and Joshua Bell can teach us about persuasion – Conner Neill"







“এটা ছিল একটা অদ্ভুত অনূভতি। মানুষ ঠিক সেই মূহুর্তে আমাকে অবহেলা করছিল!! একটা মিউজিক হলে যখন আমি পারফর্ম করি তখন কেউ কাশলে বা কারো সেলফোন বেজে উঠলে আমি আপসেট হয়ে পরি। কিন্তু এই প্ল্যাটফর্মে যখন আমি পারফর্ম করছিলাম...আমার আশা খুব দ্রুতই মাটিতে মিশে গেলো... আমি কৃতজ্ঞ ছিলাম এটা ভেবেই যে কেউ কেউ আমার দিকে কিছু ডলার ছুড়ে দিয়েছিল...”



কি এমন পরবর্তন ছিলো ?



একই সুর একই বেহেলাতে বাজাচ্ছিল একই আবেগ দিয়ে একই ব্যক্তি। তাহলে কেন একদল মানুষ চড়া মূল্যে শুনেছিল এবং কেনই বা বিনামূল্যে কেউই শুনলো না ?



এরিষ্টটোল এই প্রশ্নের ব্যাখ্যা দিয়ে গিয়েছেন। ... ‘মানুষ কি দ্বারা প্ররোচিত হয় ?’



২৩০০ বছর আগে এরিষ্টটল ‘প্ররোচিত’ বা ‘Persuation’ হওয়ার উপর গুরুত্বপূর্ণ নোট লিখে গিয়েছেল... ‘Rhetoric’ … ‘প্ররোচিত হওয়ার তিনটি উপায়’।



১ লোগোস

২ এথোস

৩ পাথোস



লোগোস হচ্ছে আইডিয়া যেটা কিনা সেন্স তৌরি করে দর্শকের দৃষ্টিকোণ থেকে। এটা সাধারণত বক্তার দৃষ্টিকোণ থেকে ভিন্ন। সুতরাং যেটা করা উচিত তা হচ্ছে আইডিয়া টিকে পৃথিবীর দৃষ্টিকোন থেকে সামঞ্জস্য করে তোলা, যা কিনা একজন বক্তা, আর্টিষ্ট, পারফর্মার এর জন্য চ্যলেঞ্জিং একটা বিষয়।



এথোস হচ্ছে

‘খ্যাতি - কিসের জন্য পরিচিত’,

‘বিশ্বাসযোগ্যতা – আপনি কি পেশাদারী মনোভাব নিয়ে কাজ করছেন কিনা’,

‘নির্ভরযোগ্য – আপনার উদ্যেশ্য কি পরিষ্কার ?, আপনি কি নিশ্চিত যে আপনি আপনার শ্রোতার এবং নিজের পারফর্মেন্স এর ব্যাপারে যত্নবান ?’,

‘কর্তৃপক্ষ – হচ্ছে আস্থাবান, সংক্ষিপ্ত অথচ দ্যোতক অর্থবহ বার্তাবাহক।



পাথোস হচ্ছে ‘মানসিক সংযোগ’। গল্প হচ্ছে একটি যথাযথ মাধ্যম যার মাধ্যমে কিনা একজন মানুষের মধ্যে ‘মানসিক সংযোগ’ ঘটনো যায়। এমন অনেক মূহুর্ত আছে যখন কিনা একজন মানুষ প্রস্তুত থাকে না কোনো বিশেষ ধরনের মানসিক সংযোগ ঘটানোর। একজন স্পিকার বা আর্টিষ্ট কে অবশ্যই পরিবেশ তৌরি করতে হবে সেই মানসিক সংযোগ প্রতস্থাপনের জন্য।



কি এমন পরিবর্তন ছিলো যার কারণে জসোয়ার একরাতের শো দেখার জন্য হাজার মাইল পাড়ি দিয়ে চড়া মূল্যে দেখতে এসেছিল বোস্টনের সিম্পনি হলে, এবং ঠিক তাঁর দুই দিন পরেই একজন মানুষও একটু সময়ের জন্য দাঁড়িয়ে দেখলো না জসুয়ার পারফর্মেন্স সাবওয়ে স্টেশনের প্লাটর্ফমে ?



উত্তর হচ্ছে ‘এথোস’ এবং ‘পাথোস’ মিসিং ছিলো সাবওয়ের পারফর্মের সময়।



‘এথোস’, সিম্ফোনী হল হোষ্ট করেছিল জসোয়ার মিউজিক নাইটটি। সিম্পোনি হল তাদের উপর বর্তানো ‘নির্ভরযোগ্যতা’ বর্তিয়ে দিয়েছিল ‘জসোয়ার’ উপর। নির্ভরযোগ্যতা আসলে জসোয়ার উপর ছিলো না, নির্ভরযোগ্যতা ছিলো সিম্ফোনী হলের উপর। মানুষ জানতো সিম্পোনী হলে আসলে তাঁরা ভালো মিউজিকের সন্ধান পাবে। কিন্তু সাবওয়ে আমাদের কাছে নির্ভরযোগ্য কোনো জায়গা না যেখানে কিনা আমরা ভালো মিউজিকের সন্ধান পাবো। ‘We do not expect to find great art in subway like musical talent, or great ideas’. তাই সাবওয়ের পথচারিরা জসুয়াকে ট্রাস্ট করেনি। তাই কেউ দাঁড়িয়ে শুনেও নি।



‘পাথোস’, কনসার্ট হল হচ্ছে এমন একটি জায়গা যেখানে কিনা ইমোশনাল বন্ড তৌরি করে দর্শক এবং আর্টিষ্ট এর মধ্যে। কিন্তু সাবওয়ে নয়। একেতো সবাই সাবওয়ে তে আসে নিজের গন্তব্যে যাওয়ার জন্য, তখন তাদের মনমানসিকতা সেরকম থাকে না যেরকমটি সিম্ফোনি হলে যাওয়ার পর হয়। অর্থাৎ ইমোশনাল এটাচমেন্ট। তাছাড়া সাবওয়ে হচ্ছে লোকারণ্য জায়গা যেখানে পরিবেশ থাকে না একজন দর্শক আর একজন আর্টিষ্ট এর মধ্যকার ইমোশানাল এটাচমেন্টের।



এই তিনটি বিষয়ই জসোয়া ধরতে পেরেছিল সাবওয়ে রেলস্টেশনে পারফর্ম করার পর। আর এই তিনটির মধ্যে দুইটির মিসিং থাকার কারণে সাবওয়েতে জসোয়ার পারফর্মেন্সে কোনো দর্শক ছিলো না।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে মে, ২০১৪ সকাল ১১:৪৭

আজীব ০০৭ বলেছেন: +++

২| ২২ শে মে, ২০১৪ দুপুর ১২:১৩

নীল জোসনা বলেছেন: দারুন তো !

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.