![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নিজের অজ্ঞতা নিজের কাছে যতই ধরা পড়ছে প্রচলিত বিশ্বাসের প্রতি ততই অবিশ্বাস জন্মাছে!
তেহরানের সাম্প্রতিক বিস্ফোরণ, সাইবার হামলা ও বিদ্যুৎ বিভ্রাট নিয়ে ইরানের শীর্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের ব্যাখ্যা শুনে একটিই প্রশ্ন জাগে।এটা কি বাস্তব ইতিহাস, নাকি কোনো হরর সিনেমার স্ক্রিপ্ট? যেখানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা আজ মহাবিশ্বের দোরগোড়ায়, সেখানে এক রাষ্ট্র বলছে, আমাদের ব্যর্থতার পেছনে কাজ করেছে ইসরাইলি জ্বিন ! হ্যাঁ, আপনি ঠিকই পড়ছেন। ২০২৫ সালে দাঁড়িয়ে ইরানের কিছু রাষ্ট্রীয় বুদ্ধিজীবী এখনো বিশ্বাস করেন, "জ্বিন-ফাই" প্রযুক্তি দিয়ে চালানো হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের আধিপত্যের লড়াই! হয়তো আর কিছুদিন পর তারা 5G নয়, ‘JinnG ’ চালুর ঘোষণাও দিতে পারে !
ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ডের (IRGC) এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা সম্প্রতি ঘোষণা দিয়েছেন ইসরাইল অতিপ্রাকৃত শক্তি ব্যবহার করছে। তার দাবি, জ্বিন নাকি সেনাদের মনে ভয় ঢুকিয়ে দিচ্ছে এবং ইলেকট্রনিক সিস্টেমে গায়েবি প্রভাব ফেলছে। বলেন কী! নেতানিয়াহু তাহলে কেবল একজন রাজনীতিবিদ নন, বরং এক আধুনিক কাবালিস্ট ? যে সফটওয়্যারের চেয়ে শক্তিশালী কোনো আধ্যাত্মিক কোড ব্যবহার করে যুদ্ধজয় করছে! প্রশ্ন জাগে মোসাদ কি তাহলে শুধু গোয়েন্দা সংস্থা নয়, এর ভেতরে 'মৌলভি ইউনিট'ও চালু হয়েছে? যাঁরা কোডিংয়ের ফাঁকে মন্ত্র পড়েন, আর পারমাণবিক গবেষণাগারে বসে ফুঁ দিয়ে ডেটা এনক্রিপশন করেন ?
যখন একটি রাষ্ট্র নিজেরই সাইবার সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ হয়, সেনা ছাউনিতে বিস্ফোরণ ঠেকাতে পারে না, জনগণের ক্ষোভ সামাল দিতে ব্যর্থ হয় তখন সে দায় চাপায় অদৃশ্য আত্মার ওপর। যেন জ্বিন এসে ফায়ারওয়াল ভেঙে তথ্য চুরি করেছে ! এই ধরনের ব্যাখ্যা কেবল কৌতুক নয় এটি মৌলবাদী রাষ্ট্রনীতির সেই পুরোনো ‘কৌশল’, যেখানে বাস্তব ব্যর্থতার জবাব দেওয়া হয় ধর্মীয় অপব্যাখ্যায় । আর জনগণকে বাস্তবতা থেকে সরিয়ে রাখার সবচেয়ে কার্যকর হাতিয়ার আত্মিক ভয়।
ইরান যেন এক নতুন যুদ্ধনীতির জন্ম দিয়েছে, যার নাম হতে পারে Occult Warfare Doctrine। এখানে ড্রোন নয়, দরকার পীর সাহেবের ঝাঁটা। স্পাইস্যাটেলাইট নয়, কাজে লাগে ফুঁ দেওয়া রুমাল। ইসরাইল যখন Pegasus দিয়ে বিশ্বনেতাদের ফোন হ্যাক করে, তখন ইরানের হুজুররা সেনা অফিসারদের হাতে ধরিয়ে দিচ্ছেন "সাইবার দোয়া তাবিজ"। ম্যালওয়্যার থাকলে বলা হচ্ছে এটা কালো জাদুর ফল।" Mossad যখন জিরো-ডে এক্সপ্লয়েট নিয়ে আঘাত হানে, তখন ইরান ব্যস্ত: এই এলাকায় কোন জ্বিন সবচেয়ে সক্রিয় ছিল?
ইরানের বিপ্লব একসময় ছিল নতুন চিন্তা ও মুক্তির প্রতিশ্রুতি। কিন্তু সেই পথের শেষে এসে দাঁড়িয়েছে একটি ‘রুহানিয়াত-নির্ভর রাষ্ট্র’। আজ পারমাণবিক প্রকৌশলীরাও যদি কাশ্মীরি পীরের কাছে তালিম নেয়, আর নিরাপত্তা বিশ্লেষণ হয় জ্বিনের গতিবিধি দেখে তবে রাষ্ট্র চালায় না সরকার, চালায় আতঙ্ক ও অন্ধতা। ইরান ভুলে গেছে ইসরাইল ডেটা চুরি করে বাস্তব ডেটা সেন্টার থেকে, আর সেনা ছাউনিতে ঢুকে পড়ে হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে not জ্বিন পাঠিয়ে! এই disconnect বাস্তবতা থেকে কল্পনার ব্যবধান এটাই ইরানের পরাজয়ের মূল কারণ।
ইরান এক সময় চেয়েছিল পরাশক্তি হতে। কিন্তু আজ তারা হয়ে উঠেছে নিজেদের ব্যর্থতার কল্পনানির্ভর গল্পকার। একসময় দোষ ছিল পশ্চিমা ষড়যন্ত্রের, পরে হলো Zionist cabal-এর, এখন গিয়ে ঠেকেছে জ্বিনের ঘাড়ে । এটা শুধু বুদ্ধিহীনতা নয়, এটা এক ‘কৌশলগত অলসতা’ যেখানে প্রশ্নের জবাব হয় না, বরং প্রতিপক্ষকে অভিশপ্ত ঘোষণা করাই হয়ে ওঠে বীরত্ব। আত্মসমালোচনা, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও বাস্তবভিত্তিক রাষ্ট্রচিন্তা ছাড়া কোনো উন্নয়ন হয় না। আর যখন রাষ্ট্র বলে বিদ্যুৎ চলে গিয়েছিল, কারণ জ্বিন সুইচ টিপে দিয়েছে তখন তা স্পষ্ট হয়ে যায়: রাষ্ট্রটা নিজের অস্তিত্ব হারিয়ে ফেলছে।
ইরান পারলো না কারণ তারা আধুনিকতার মুখোমুখি না হয়ে পালিয়ে বাচতে চাইলো ধর্মীয় অপব্যাখ্যার আড়ালে । Mossad রিমোট কন্ট্রোলে ড্রোন চালায়, আর ইরান জ্বিনের হাজিরায় যুদ্ধে নামে। একদিকে বাস্তব অস্ত্র, অন্যদিকে তাবিজের পুঁজি। এভাবে কোনো রাষ্ট্র চলে না। এভাবে কেউ শক্তিধর হয় না। বরং এভাবে রাষ্ট্র নিজেরই ছায়া হয়ে ওঠে ভয়ে কাঁপা, কল্পনায় বিভ্রান্ত, এবং বাস্তব থেকে গা ঢাকা দেওয়া এক ব্যর্থতার মহাকাব্য।
Source : Iranian Officials Claim Israel Uses Jinns and Talismans in War -iranwire.
১৭ ই জুলাই, ২০২৫ রাত ৯:৩৬
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: দারুন বলেছেন জনাব। ভারত কে টাইট দিতে হবে ।
২| ১৮ ই জুলাই, ২০২৫ রাত ১২:৫৭
কাঁউটাল বলেছেন: চাঘল খায় আম - এখনও আসেনাই এখানে? উহার জন্য ইহা উপযুক্ত পোষ্ট।
১৮ ই জুলাই, ২০২৫ রাত ১:৪৭
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: ছাগল না আসলেও ছাগলের কসাই কে দেখা যাইতেসে।
©somewhere in net ltd.
১|
১৭ ই জুলাই, ২০২৫ রাত ৯:২৬
রিফাত হোসেন বলেছেন: বাংলাদেশেরও একটি আধ্যাত্মিক বাহিনী থাকলে মন্দ হয় না! প্রশিক্ষন এর জন্য ইরানে পাঠিয়ে দেওয়া যেতে পারে, কি বলেন?