নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি খুবই সাধারণ..আমার লেখালেখি করতে ভালো লাগে তাই এইখানে। :) ফেবুতেও বেশ লেখালেখি হয় । আমার ফেবু আইডি উল্লাস চৌধুরী ।

উল্লাস সাইমুন

আমি খুবই সাধারণ..আমার লেখালেখি করতে ভালো লাগে তাই এইখানে। :) ফেবুতেও বেশ লেখালেখি হয় । আমার ফেবু আইডি উল্লাস চৌধুরী

উল্লাস সাইমুন › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিদ্যুৎ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারি নেতাদের মিথ্যাচার!

১৯ শে মার্চ, ২০১৫ রাত ৯:০৩

২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার আগে আওয়ামী লীগ ডিজিটাল বাংলাদেশ ও দিনবদলের স্লোগান দিয়েছিল। ২০১৪ সালের নির্বাচনে দলটি আগের লক্ষ্য পেরিয়ে নতুন লক্ষ্য ঠিক করে। এখন আওয়ামী লীগ সরকার সমৃদ্ধ বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখাচ্ছে।
যেকোনো বিচারেই দেশের উন্নয়নের পেছনে বিদ্যুতের ভূমিকা খুব গুরুত্বপূর্ণ। দেশের এই শনৈঃ শনৈঃ উন্নতির কালে কত ভাগ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধা পাচ্ছে, তার হিসাব নিতে গিয়ে আমরা ধন্দে পড়ে গেছি। সরকারের একেক সংস্থার একেক হিসাব। সচিব থেকে শুরু করে প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত সরকারের সব ঊর্ধ্বতনরাই ভুল তথ্য দিচ্ছেন!
সম্প্রতি খবর বেরিয়েছে যে, তিন বছরের মধ্যে দেশের ৭৫ ভাগ মানুষ বিদ্যুৎ পাবে। সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তাব্যক্তিরা এ নিয়ে একের পর এক বক্তব্য রেখে চলেছেন। যিনি যেমন পারছেন বাড়িয়ে বলছেন মনের সুখে। এতে করে প্রশ্ন উঠছে যে, আসলে সরকারের পরিকল্পনা কী? আর তার তুলনায় বাস্তব অবস্থা কী? যদি ৫৫ ভাগ মানুষ এখন বিদ্যুৎ পায় তাহলে ৭০ ভাগ মানুষের কাছে বিদ্যুৎ পৌঁছানোর পরিকল্পনা করতে হবে, উদ্যোগ নিতে হবে। আর যদি ৭০ ভাগ মানুষ বিদ্যুৎ পায়, তাহলে তো পরিকল্পনা হবে একেবারেই অন্য রকম। সরকারি তথ্য যদি ভুল হয় তাহলে রাষ্ট্রের অনেক কর্মকাণ্ডই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং মানুষের বিদ্যুৎ প্রাপ্তি নিয়ে সরকারের দেয়া তথ্যগুলোর মধ্যকার স্পষ্ট ফারাক এ প্রশ্নকে গুরুতর করে তুলেছে।
৫৫ না ৭০ শতাংশ?
বিদ্যুৎ উৎপাদনের হিসাব পর্যবেক্ষণ করলে আমরা পাই, ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৩ তারিখে বিদ্যুৎ উৎপাদনের স্থাপিত ক্ষমতা ছিল ১০ হাজার ২১৩ মেগাওয়াট। আর ওই দিন বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে ৫ হাজার ৪৫৬ মেগাওয়াট।
আবার এক বছর পর, ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৪ তারিখে বিদ্যুৎ উৎপাদনের স্থাপিত ক্ষমতা ছিল ১০ হাজার ৬৪৮ মেগাওয়াট। আর ওই দিন বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে ৫ হাজার ৯১৪ মেগাওয়াট।
আর এর দুই মাস পর অর্থাৎ ২০১৫ সালের মার্চের ৪ তারিখে বিদ্যুৎ উৎপাদনের স্থাপিত ক্ষমতা বলা হয়েছে ১০ হাজার ৮৬৮ মেগাওয়াট। আর ওই দিন বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে ৬ হাজার ৫৪৫ মেগাওয়াট।

এই তিনটি হিসাব বলছে, ২০১৩ সালের পর এখন পর্যন্ত বিদ্যুৎ উৎপাদনের স্থাপিত ক্ষমতা বেড়েছে ৬৫৫ মেগাওয়াট। প্রশ্ন উঠছে, এই মাত্র ৬৫৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ দিয়ে ৫৫ ভাগ থেকে ১৫ ভাগ বেড়ে ৭০ ভাগ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় কীভাবে এলো! কারণ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের হিসাব অনুযায়ী ২০১৩ অর্থবছরের শেষে বিদ্যুৎ সুবিধার আওতাভুক্ত মানুষের সংখ্যা মাত্র ৫৫ ভাগ। ওই প্রতিবেদন লেখাকালে বিদ্যুতের স্থাপিত উৎপাদন ক্ষমতা ১০ হাজার ২৬৪ মেগাওয়াট ছিল বলে তাতে উল্লেখ করা হয়। ২০১৪ সালের জানুয়ারি মাসের শেষে প্রকাশিত বিদ্যুৎ বিভাগের ২০১২-১৩ সালের বার্ষিক প্রতিবেদনের ২৪ নং পৃষ্ঠায় বিদ্যুৎ খাতের বর্তমান হাল হকিকত তুলে ধরতে গিয়ে পিডিবি এ তথ্য দেয়।

বিদ্যুৎ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিদ্যুৎ উৎপাদন না বাড়লে বিদ্যুৎ সুবিধাভুক্ত মানুষের সংখ্যা বাড়াও সম্ভব না। কারণ আমাদের উৎপাদিত বিদ্যুৎ উদ্বৃত্ত থাকে না, বরং ঘাটতি আছে বিরাট। পাওয়ার সেক্টর মাস্টার প্ল্যান ২০১০ অনুযায়ী ২০১৩ সালে বিদ্যুতের চাহিদা ছিল ৭ হাজার ৪৩৬ মেগাওয়াট। কিন্তু আমরা দেখেছি, ওই বছরের শেষ দিন বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে ৫ হাজার ৪৫৬ মেগাওয়াট। অর্থাৎ চাহিদার তুলনায় বিরাট ঘাটতি নিয়েই ৫৫ ভাগ মানুষকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে আসছিল সরকার। এ কারনেই নতুন যোগ হওয়া ৬৫৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কোন নতুন গ্রাহক তৈরী করতে পারে না। পাওয়ার সেক্টর মাস্টার প্ল্যান ২০১০ অনুযায়ী প্রতি বছর বিদ্যুতের চাহিদা ১০ শতাংশ বাড়ে। তাতে করে নতুন যোগ হওয়া এই বিদ্যুৎ তো পুরনো গ্রাহকদের বাড়তি চাহিদা পূরণেই ব্যয় হওয়ার কথা। এর দ্বারা নতুন বিদ্যুৎ সুবিধাপ্রাপ্ত মানুষ সৃষ্টি কিভাবে সম্ভব?
পাওয়ার সেক্টর মাস্টার প্ল্যান ২০১০ অনুযায়ী বর্তমানে বিদ্যুতের চাহিদা ৮ হাজার ২৩২ মেগাওয়াট। কিন্তু আমরা দেখছি, এর বিপরীতে বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে ৬ হাজার ৫০০ মেগাওয়াটের মতো। অর্থাৎ সরকার ঘাটতিতেই আছে। প্রশ্নটা হচ্ছে, যেখানে স্বাভাবিক চাহিদার তুলনায় উৎপাদনের হিসাবে প্রতিনিয়তই ঘাটতি বর্তমান, সেখানে ওই একই বিদ্যুতের মধ্যে কীভাবে নতুন করে ১৫ ভাগ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধা পেল? বিদ্যুৎ উৎপাদন না বাড়িয়ে এত মানুষকে এর সুবিধার আওতায় আনা সম্ভবই নয়।
সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো থেকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০১৪ সালে মাত্র ২৭ হাজার নতুন বিদ্যুতের সংযোগ দেয়া হয়েছে। এর আগ পর্যন্ত বিদ্যুৎ সংযোগের সংখ্যা ছিল সেচসহ ১ কোটি ৫৭ লাখ ৮ হাজার। সেখানে নতুন মাত্র ২৭ হাজার সংযোগ কীভাবে এত বেশি মানুষকে বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় নিয়ে এলো! সরকারি তথ্যে শুধু একের সঙ্গে অপরের বিরোধই নেই বরং এর ভিত্তিও প্রশ্নবিদ্ধ।
সরকারি বক্তব্যের ফারাক!
সরকারি সংস্থাগুলো কেউ বলছে বর্তমানে দেশের ৬৮ ভাগ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় আছে। কেউ বা বলছে ৭০ ভাগ, কেউ বা ৭০ পেরিয়ে আরও সামনে হাঁটছেন। কিন্তু এসব হিসাবের পেছনের কোনো যুক্তিগ্রাহ্য তথ্যের উল্লেখ নেই। আবার সংস্থাগুলো কেন একেকজন একেক ধরনের তথ্য দিচ্ছে, তা দেখারও যেন কেউ নেই।
বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) ওয়েবসাইটে লেখা আছে, বর্তমানে ৫৮ ভাগ মানুষ বিদ্যুৎ পাচ্ছে। এই সাইটটিতে প্রতিদিনই কিছু না কিছু নতুন তথ্য যোগ হয়। ফলে এ হিসাবটা এতদিনে পাল্টানোর কথা। কিন্তু শুধু পিডিবির তথ্যকেই আমরা দেখেছি বাস্তবের কাছাকাছি। তারা বলছে ৫৮ ভাগ।
ওদিকে সরকারের বিদ্যুৎ বিষয়ক বিশেষ সংস্থা পাওয়ার সেলের ওয়েবসাইটে বলা হচ্ছে, বর্তমানে দেশের ৬৮ ভাগ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় আছে। পিডিবির হিসাবের সঙ্গে তাদের ১০ ভাগের ব্যবধান!
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধিভুক্ত বিদ্যুৎ বিভাগ তাদের ওয়েবসাইটে লিখেছে, মে ২০১৪ তে প্রাপ্ত তথ্যমতে, দেশের ৬২ ভাগ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় আছে। উল্লেখ্য, গেল বছরের মে মাসের পর এখন পর্যন্ত নতুন কোনো বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র চালু হয়নি। ফলে বিদ্যুৎ বিভাগের হিসাব ৬২ ভাগই বজায় থাকার কথা! এ হিসাবের সঙ্গে পিডিবি ও পাওয়ার সেলের হিসাবের কোনোটির সঙ্গেই মিল নেই!

পিডিবির হিসাবই তুলনামূলক বাস্তবতার কাছাকাছি- ৫৮ ভাগ!

পাওয়ার সেল ১০ ভাগ বাড়িয়ে বলছে!
মাত্র তিন মাস আগে প্রকাশিত বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) এক জরিপে বলা হয়েছে, সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী দেশের ৬৫ দশমিক ৬০ শতাংশ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধা পাচ্ছে। আর অবশিষ্ট অংশের আলোর উৎস কেরোসিন। সংস্থাটির এমএসভি জরিপে দেখা গেছে, ২০১২ সালে দেশের ৬৫ দশমিক ৬০ শতাংশ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধা পেয়েছে। আর ২০১০ সালে বিদ্যুৎ সুবিধা পেয়েছে ৫৪ দশমিক ৬০ শতাংশ মানুষ (খবর : যুগান্তর)। পরিসংখ্যান ব্যুরো যে তদন্ত ছাড়াই তথ্য দিচ্ছে, এটি তার প্রমাণ! অথচ এই সংস্থার তথ্যের ওপর দাঁড়িয়েই সারা দেশের বিভিন্ন খাতের পরিকল্পনা করা হচ্ছে। ভুল তথ্যের ফলে এসব পরিকল্পনাও যে ভুলে ডুবছে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
গত ২০ জানুয়ারি, পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জানিয়েছেন, ‘এখনো দেশের ৩২ ভাগ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধা থেকে বঞ্চিত রয়েছে’। জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদের অনুপস্থিতির কারণে তার পক্ষে প্রশ্নোত্তর পর্বে অংশ নিয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী এমন তথ্য দেন (খবর : যায়যায়দিন)।
এর দুই সপ্তাহ পর ০৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ সংসদে এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘আগামী ২০২১ সালের মধ্যে ৮০ শতাংশ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধা পাবে।’ যদিও স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী বলছেন, ততদিনে পুরো দেশের সব ঘরেই বিদ্যুৎ পৌঁছে যাবে (খবর : কালের কণ্ঠ)।
২৫ ফেব্রুয়ারি বুধবার জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নির্বাচনী অঙ্গীকার অনুযায়ী ২০২১ সালের মধ্যে প্রত্যেক ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেয়া সম্ভব হবে। ২০০৬ সালে দেশের ৪৩ ভাগ লোক বিদ্যুৎ সুবিধা ভোগ করত, যা বর্তমানে ৭০ ভাগে দাঁড়িয়েছে (খবর : যুগান্তর)।’
এদিকে প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ গত ২৭ ফেব্রুয়ারি বলেছেন, আগামী তিন বছরের মধ্যে দেশের ৭৫ শতাংশ মানুষের বিদ্যুৎ সুবিধা নিশ্চিত করা হবে। জয়পুরহাটে কয়লা খনির একটি কূপ পরিদর্শনকালে মন্ত্রী এ কথা বলেন (খবর : ইত্তেফাক)।
এখানে প্রধানমন্ত্রী এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রীর বক্তব্যে বড় ধরনের ফারাক দেখা যাচ্ছে। মন্ত্রীর দুই দফার বক্তব্য থেকে স্পষ্ট হয় যে, তিনি প্রতি তিন বছরে নতুন পাঁচ ভাগ মানুষকে বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় আনার কথা বলছেন। ২০১৮ সালের মধ্যে ৭৫ ভাগ এবং ২০২১ সালের মধ্যে ৮০ ভাগ। এক্ষেত্রে তিনি বর্তমান হিসাবটা ধরেছেন ৭০ ভাগ। আর প্রধানমন্ত্রী বলছেন ২০২১ সালের মধ্যে ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছাবে। অর্থাৎ প্রতি বছরে নতুন পাঁচ ভাগ মানুষকে বিদ্যুৎ দেয়া হবে! বিদ্যুৎ সংশ্লিষ্টরা এমন হিসাব শুনলে বিষম খেতে পারেন। খেয়াল করে দেখুন, মন্ত্রী বলছেন তিন বছরে নতুন ৫ ভাগ মানুষ আর প্রধানমন্ত্রী বলছেন প্রতি বছর নতুন ৫ ভাগ!
সর্বশেষ এ বিষয়ক তথ্য দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী। ২৮ ফেব্রুয়ারি, শনিবার ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি অডিটোরিয়ামে ‘বিদ্যুৎ ব্যবস্থার উন্নয়ন : ভোক্তা স্বার্থে নিরবচ্ছিন্ন সঞ্চালন’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘বর্তমানে দেশের ৭০ শতাংশেরও অধিক লোক বিদ্যুৎ সুবিধা ভোগ করছে (খবর : সমকাল)।’ সর্বশেষ বক্তা হিসেবে তিনি ৭০ ভাগের সীমাও পেরিয়েছেন। এখন পর্যন্ত পাওয়া তথ্যমতে, তার হিসাবটাই সর্বোচ্চ!
এভাবেই সরকারি সংস্থা, সরকারপ্রধান ও সরকারের অন্য কর্তারা একে অপরের বিরোধী তথ্য দিচ্ছেন, যা নির্দেশ করে যে, এসব তথ্যের অধিকাংশই ভুল, মনগড়া এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যের সঙ্গে সম্পর্কিত। কিন্তু বিদ্যুৎ খাতের তথ্য নিয়ে যদি এরকম পরস্পরবিরোধী তথ্য আসে তার ফল খুবই নেতিবাচক হবে।
এ প্রসঙ্গে জিজ্ঞেস করা হলে অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘এ ধরনের ভুল তথ্য দেয়াটা নিঃসন্দেহে কাজের পরিসরকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। সরকার থেকে এভাবে বলা হলে এসব হিসাব রাখাটা যাদের দায়িত্ব তারা চাপের মধ্যে পড়ে। তখন তাদের পক্ষে সঠিক তথ্য দেয়া সম্ভব হয় না। আর সঠিক তথ্য না এলে ওই খাতের দুর্বলতাগুলো ধরা পড়ে না এবং যথাযথ পরিকল্পনাও করা যায় না। নানামুখী পরস্পরবিরোধী তথ্য হলে শিক্ষা ও গবেষণাকর্মও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সাধারণত রাজনৈতিক কৃতিত্বের লোভে সরকারি দল এ ধরনের প্রচারণা চালায়। জবাবদিহির সংস্কৃতি ও ব্যবস্থা না থাকায় এর লাগাম টানা যাচ্ছে না। সংসদে তাদের দেয়া ভুল তথ্যকে সংসদেই চ্যালেঞ্জের কোনো সুযোগ নেই। বাইরে থেকে করা হলেও, সরকার সংশ্লিষ্টদের কাছে প্রশ্ন রাখা হলেও তখন আমরা দেখছি, জানাচ্ছি, অপেক্ষা করেন বলে এটাকে এমন এক দীর্ঘসূত্রতার মধ্যে ঠেলে দেয়া হয় যে, এ নিয়ে আর কেউ কাজ করার আগ্রহ পান না। এর ফলে জাতীয় সক্ষমতা ও বিকাশ নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।’
বর্তমান সরকারের আমলে আগের যেকোনো সরকারের তুলনায় বিদ্যুৎ উৎপাদন অনেক বেড়েছে, এই সত্য স্বীকার করতেই হবে। কিন্তু সরকার এতে বুঁদ হয়ে সাফল্যকে বাড়িয়ে বলার পথ ধরেছে। ফলত, এই খাতের সমস্যাগুলো মোকাবেলা করা কঠিন হয়তে উঠছে। সরকারের কর্তাদের দেয়া ভুল তথ্যের ফলে নিচের স্তরে বা মাঠে যারা কাজ করছেন, কথা বলছেন, তারা পথ হারাচ্ছেন। সুষ্ঠু পরিকল্পনার জন্যও সঠিক তথ্য দরকার। বিদ্যুৎ খাতের বাস্তব অবস্থা না জানা গেলে এর সঙ্কট দূর করা যাবে না। সেজন্য অবশ্যই সরকারি এসব মিথ্যাচার বন্ধ হতে হবে।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে মার্চ, ২০১৫ রাত ৯:৩৩

বিলোয় বলেছেন: পলিটিক্যাল এইসব নেতা মিথ্যাবাদী।

২০ শে মার্চ, ২০১৫ বিকাল ৪:৩৭

উল্লাস সাইমুন বলেছেন: যা ভাবেন। -_-

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.