নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শক্তি ও সাহসিকতাই ধর্ম। দুর্বলতা ও কা পুরুষতাই পাপ। অপর কে ভালবাসায় ধর্ম, অপর কে ঘৃণা করাই পাপ। স্বামী বিবেকানন্দ

ঊণকৌটী

শক্তি ও সাহসিকতাই ধর্ম। দুর্বলতা ও কা পুরুষতাই পাপ। অপর কে ভালবাসায় ধর্ম, অপর কে ঘৃণা করাই পাপ। স্বামী বিবেকানন্দ

ঊণকৌটী › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্প :- মিঠির মাসিমণি

২০ শে মার্চ, ২০২০ রাত ১১:৫৬

আসলে দোষ টা পুরোপুরি মিঠির নয়। বাড়ির সবাই, মানে এই দিদি-জামাইবাবু, মা-বাবা, কিংবা মোনার নিজের বর বা ছেলে সকলেরই ধারনা জগতের সবরকম কেলেঙ্কারি মোনার পক্ষে করে ফেলে সম্ভব। তাই ওকে একটু আগলে আগলে কিংবা নজরে রাখাই ভালো। একটা রীতিমতো পড়াশুনা জানা, চাকরি করা মহিলাকে নাকি চোখে চোখে রাখা দরকার । এইসব শুনলেই রাগে গা-হাত-পা জ্বলে যায় মোনার। কিন্তু সবাই বেশ অম্লানবদনে মোনার সামনেই কথা গুলো আলোচনা করে। হাঁ দু-একটা কেলেঙ্কারি কান্ড মোনা করেছে ঠিকই। তবে সেটা অন্যরা যে ভাবে ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে বলতে থাকে তেমনটা মোটেই নয়। যেমন ওই সিনেমা দেখতে যাও যাওযার ঘটনাটা। সেটাও এই দিদির বাড়িতেই ঘটেছিল। মোনারা এসেছে বলে ঠিক হল সবাই মিলে সিনেমা দেখতে যাওয়া হবে। মোনা আবার সাজুগুজু করতে একটু ভালোবাসে । তা ছাড়া মাল্টিপ্লেক্স এ সিনেমা দেখতে যাওয়া। সাজতে হবেই। মাসি-বোনঝি মিলে অনেকক্ষণ সাজগোজ হল। তারপর সবাই মিলে গাড়ি চেপে রওনা দিল। যখন সিনেমা হলের প্রায় কাছাকাচি পৌঁছেছে, তখনই বোনঝিকে, আমার নেল পালিশের রংটা দেখেছিস মিঠি কেমন আনইউজ্যয়াল..............
বলে পায়ের আঙ্গুল দেখাতে গিয়েই যুগপৎ বিকট চিৎকার। দুজনের চিৎকারটা অবশ্য দু রকম ছিল। মোনারটা একটা বুক-চেরা হাহাকার আর মিঠির ভয়ঙ্কর আতঙ্কে আর্তনাদ। না করে অবশ্য উপায়ও ছিলনা। কারণ মোনা বাড়ি থেকে বেরোনোর আগে চটি বদলাতে ভুলে গেছিল। বদলার কাজ করা মিড-নাইট ব্লু কঞ্চিভরমের সঙ্গে আধ খাওয়া সাদা হাওয়ই চটি। তার একটা স্ট্রাপ আবার ছিল মাঝখানে ফাটা। সেটা আবার মিঠির টানাটানিতে গেল ছিড়ে। তখন বাড়ি ফিরে গেলে সিনেমা মিস হয়ে যাবে। কিন্ত ছেঁড়া চটি পরে তো আর সিনেমা দেখতে যাওয়া সম্ভব নয়। তাই মোনা বলেছিল যে তার ভয়ানক মাথা ধরেছে। তাই সিনেমা দেখবে না গাড়িতেই বসে থাকবে। কিন্তু কেউ তার কথা শুনল না। ভাগ্য ভাল মাল্টিপ্লেক্সটা ছিল একটা শপিং মলের ভিতরে। তাই দেবী বিপতারিণীর মতো দিদি নেমে একজোড়া নুতন চটি কিনে এনে অবস্থ্যা সামাল দিল। তবে দিদির পা মোনার থেকে এক সাইজ বড়। আর মোনা নিজের পায়ের মাপ মনে করতে পারেনি বলে দিদি নিজের পায়ের মাপেই চটিটা এনেছিল।মোনা অবশ্য তাতে মাইন্ড করেনি। ঢোলা চটি পরেই সিনেমা দেখে এসেছিল। আসলে এসব ব্যপারে মোনা সাধারণত মাইন্ড করে না। এগুলো প্রাতহিক জীবনের নেহাত তুচ্ছ ঘটনা। এসব মনে রাখার কোনও দরকার আছে বলেও সে মনে করে না। কিন্তু মুশকিল হচ্ছে অন্যরা তো আর তার মতো দার্শনিক নয়। তাদের যেন এইসব ভুলভ্রান্তির মুখরোচক গল্পেই যত আনন্দ। বিশেষ করে বাবার। বাড়িতে কোন কারনে জনসমাগম হলেই বাবা তার গল্পের ঝাঁপি খুলে বসবে । আর প্রথমেই শুরু করবে, জানো তো মোনা না...... অথচ ঘটনাটা খুব সাধারণ। মোনা গাড়ির নম্বর মনে রাখতে পারে না। অন্যের গাড়ির তো প্রশ্নই নেই, নিজের গাড়ির নম্বর সে নিশ্চতভাবে ভুলে যায়। একবার সেজন্য ট্রাফিক পুলিশের কাছে বেমক্কা ঝাড়ও খেয়েছিল । তার ড্রাইভার সিগন্যাল ভেঙেছে। পুলিশও অমনি দৌড়ে এসেছে উলটো দিক থেকে। তারপর ফাইন দেওয়া এবং লাইসেন্স কেড়ে নেওয়া নিয়ে যখন ড্রাইভারের সঙ্গে পুলিশের ভয়ানক টানাটানি চলছে সেই সময় মোনাও গাড়ি থেকে নেমেছিল ড্রাইভারের সমর্থনে দু-চারটি কথা বলতে। কিন্তু পুলিশ কোনও কথা শুনবে না। সে লাইসেন্স কেড়ে নিয়ে খসখস করে কীসব লিখতে লিখতে কড়া গলায় যেই বলেছে, গাড়ি কা নম্বর বাতাইয়ে। মোনাও অমনি স্মার্টলি গাড়ির নম্বর বলে দিয়েছে। ড্রাইভার তখনও কুঁইকুঁই করে পুলিশকে কিছু বলার চেষ্টা করছিল। কিন্তু মোনার মুখে গাড়ির নম্বর শুনে একদম চুপ। পুলিশটা অবশ্য ততক্ষণে আবার খসখস করে নম্বর লিখতে শুরু করে দিয়েছিল, কিন্তু অর্ধেকটা লিখেই হটাৎ গটগট করে গিয়ে নম্বর প্লেটটা দেখল তারপর ভয়ানক রেগে মোনার দিকে তাকিয়ে বলল, আপনা কার কা নম্বর পাতা নেহি, আপ পাগল হ্যায় ক্যায়া ! চলবে........

দীপান্বিতা রায়

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.