![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নিজের সাথে বলে যাওয়া কথাগুলো ছাপার অক্ষরে প্রকাশ করি।নিজের কল্পনা গুলোকে একটা রূপ দেওয়ার চেষ্টা করি।নতুন লিখছি, আপনাদের মন্তব্য আমাকে অনুপ্রাণিত করবে।
চার চাকার ছোট্ট একটি গাড়ি... লাল রঙের। ছুটে চলছে ঢাকা-ময়মনসিংহ হাইওয়ে ধরে। আরোহী দু'জন। আমি আর তুমি, দুজনেই গাড়ি চালাতে জানি কিন্তু এখন ড্রাইভিং সিটে আমি আর পাশের সিটে বসে অনবরত কেঁদে চলেছ তুমি। ঘণ্টায় ৬০ কিমি বেগে খুব স্বাভাবিক ভাবে এগিয়ে যাচ্ছি আমি। এয়ারপোর্ট-টঙ্গী-বোর্ডবাজার হয়ে এখন আমরা চৌরাস্তার কাছাকাছি।
খুব স্বাভাবিক ভাবে ড্রাইভ করলেও আসলে আমি মোটেও স্বাভাবিক নেই। ভেতরে ভেতরে ঝড় বয়ে যাচ্ছে আমার। একটু আগে পাশে বসে থাকা মেয়েটিকে জোর করে তুলে আনতে হয়েছে। কাজটা মোটেও সহজ ছিল না... কারণ সে সব রকম ভাবে এভয়েট করে গিয়েছে আমাকে গত কয়েক দিন। ফোন, বাসা, অফিস, মিচুয়াল ফ্রেন্ড... সব চেঞ্জ!! রীতিমত খড়ের গাঁদায় সূচ খোঁজার মত করে খুঁজতে হয়েছে তাকে।
: কাঁদছ কেন তুমি ময়না... মনে সাহস সঞ্চয় কর। আর আমি বলছি তো তোমার কিচ্ছু হবে। কাজ শেষ হলে তুমি গাড়ি নিয়ে চলে আসবা। ব্যস...
: চুপ থাক তুই... ইতর... বদমাইশ... লজ্জা করে না তোমার কথা বলতে??
: হা হা হা... মাথা ঠাণ্ডা কর বাবাই... এত মাথা গরম করলে তো চলে না। শোন... আমি তোমাকে পুরো প্লানিং না বলি...
: না... প্লিজ। তুমি এটা করবা না। প্লিজ...
: না রে বাবা... এখন আর এখান থেকে ফিরে আসা সম্ভব না।
: প্লিজ, দোহাই তোমার... এরকম কইরো না...
: শোন, মাথা ঠাণ্ডা করে শোন... গাড়ির পেছনে একটা সাইকেল রাখা আছে। কাজ শেষে তুমি সাইকেল নিয়ে সোজা বের হয়ে যাবা। এখান থেকে ময়মনসিংহ যাবা প্রথমে। ময়মনসিংহ পৌছানোর আগে তুমি এমন কিছু জায়গা পাবা জনশূন্য। ওরকম একটা জায়গায় সাইকেলটা ফেলে দিবে। তারপর কিছুটা পথ হাঁটবে। এরপর সিএনজি বা রিক্সা নিয়ে সোজা বাস টার্মিনাল। সেখান থেকে বাসে করে ঢাকা। ব্যস।
: আমি কিচ্ছু করব না। আমি কিচ্ছু করতে পারব না। আর তোমার এই সব ভন্ডামি বন্ধ কর। প্লিজ। আমি আর নিতে পারতেসি না।
: পারতেসি না বললেই ত আর হয় না রে পাগলা... তোমাকে পারতে হবে। তোমার জন্য তোমাকে পারতে হবে। মনটা শক্ত কর ময়না। আমরা প্রায় চলে এসেছি।
: সায়েম, প্লিজ... তোমার পায়ে পড়ি। এরকম করো না। প্লিজ... চিন্তা কর তোমার আব্বু আম্মুর কথা... তোমার আপুর কথা। আমাকে ছেড়ে দাও। মনে কর গত চারটা বছর ভুল ছিল। আমি মেনে নিতে পারছি, তুমি কেন পারবা না? তুমিও পারবা সায়েম। প্লিজ, এমন কোরো না... দোহাই লাগে... দেখো... সময়ের সাথে সাথে তুমিও সব ভুলে যাবা... সব ঠিক হয়ে যাবে... সব স্বাভাবিক হয়ে যাবে... আমার কথা শোন তুমি... প্লিজ...
: আমি সব চিন্তা চেতনার ঊর্দ্ধে চলে এসেছি রে ময়না। আমার আর ফেরার পথ নেই। আমাকে ক্ষমা কোরো তুমি।
এর মধ্যে গাড়িটি গাজীপুর গজারী বনের ভেতরে ঢুকে যাওয়া একটি পথে চলতে শুরু করেছে। প্রায় ২০ মিনিট চলার পর থামল গাড়িটি।
: শুনতে পাচ্ছো বাবাই... চারদিক কত নিরব। শুধু কিছুক্ষণ পরপর পাখির ডাক আর শুকনো পাতায় বাতাসের শব্দ। নিরবতারও একটা আওয়াজ আছে... কান পাতো বাবাই... শুনতে পাবা...
: প্লিজ সায়েম। আমার কথা শোন। অনেক পাগলামি হইসে, চল এখন ফিরে যাই। ঢাকায় ফিরে আমরা ব্যপারটা নিয়ে কথা বলব। কথা দিচ্ছি আমি, কথা বলব আমরা।
: হা হা হা... মনে আছে তোমার বাবাই... একবার কথা বলার জন্য তোমার সাথে কি করতে হত... মিনিমাম তো ১০০ বার ফোন দিতে হত। আর রিসিভ করে তুমি কি বলতা... এই যে তুমি সারাদিন এতবার ফোন দিলা, তুমি জান, আমার একটা বারও এই ফিলিংস আসে নি যে আমি ফোনটা রিসিভ করি। চিটাগাং গিয়েছি আমি বাবাই... খুঁজে খুঁজে তোমার বাসা বের করেছি... ছবি তুলে তোমাকে পাঠিয়েছি... তারপর তুমি কথা বলেছ। আর এখন এত সহজে রাজি হয়ে যাচ্ছ কথা বলার জন্য!!
: বাজে কথা বন্ধ কর। প্লিজ, চল ফেরত যাই।
: পৃথিবীটা কত সুন্দর, তাই না? অনেক দিন বাঁচার ইচ্ছা ছিল আমার... জান... আমার জীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ পাওয়া হচ্ছো তুমি। তোমার মত একজনকে আমি আমার পাশে পেয়েছি... এটা আমার সাত জনমের ভাগ্য।
: প্লিজ, চুপ কর তুমি।
: তোমার হাতটা একটু দিবে আমার হাতে।
: নাও। কিন্তু প্লিজ, পাগলামি বন্ধ কর। আমার ভাল লাগতেসে না... চল ফিরে যাই।
বাম হাত দিয়ে তার ডান হাতটা ধরল সায়েম।
: বাবাই... শোন... আমি একটা মিথ্যে কথা বলেছি। কিন্তু এর মানে এই না যে আমার ভালবাসা মিথ্যে। আমার চোখের দিকে তাকাও বাবাই... আমি সত্যি তোমাকে ভালবাসি।
ভোতা একটি আওয়াজ। ডান হাত দিয়ে পকেট থেকে সাইল্যান্সার লাগানো রিভালভারটি বের করে নিজের পেটে গুলি করেছে সায়েম। এতটা নিরিবে নিঃশব্দে কাজটা হল যে বনের পাখিগুলোও কিচ্ছু টের পেল না। শুধু ধীরে ধীরে ধরে থাকা বাবাই এর হাতটা লাল হয়ে উঠল। সেও টের পেল যখন সায়েম আস্তে করে পড়ে গেল মাটিতে।
: এটা কি করলে তুমি সায়েম। না... (চিৎকার করে উঠল বাবাই)
: পালাও বাবাই... এটা চিৎকার করার সময় না। যাও, চলে যাও। যেভাবে বলেছি সেভাবে চলে যাও। মনে রেখ বাবাই... আমি তোমাকে অনেক ভালবাসতাম। অনেক অনেক।
০৭ ই অক্টোবর, ২০১৬ ভোর ৫:৫৫
নিঃশব্দের কথামালা বলেছেন: ধন্যবাদ ভাইয়া ... প্রথম মন্তব্য পেলাম, কি যে ভাল লাগছে বলে বোঝাতে পারব না।
আর এটাকে লেখা বলার চাইতে কল্পনা বলাটাকেই আমি বেশি প্রেফার করব।
আবারও অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
২| ০৭ ই অক্টোবর, ২০১৬ ভোর ৬:০০
বিলিয়ার রহমান বলেছেন: পোস্টে লাইক!
মনের আনন্দে লিখে চলুন অবিরত।
০৭ ই অক্টোবর, ২০১৬ ভোর ৬:০৫
নিঃশব্দের কথামালা বলেছেন: ধন্যবাদ। ইচ্ছে আছে ...
৩| ০৭ ই অক্টোবর, ২০১৬ ভোর ৬:১৫
এস আই সুমন বলেছেন: বেশ ভালো!
শুভকামনা রইলো।
০৭ ই অক্টোবর, ২০১৬ ভোর ৬:২০
নিঃশব্দের কথামালা বলেছেন: ধন্যবাদ ভাইয়া। দোয়া রাখবেন।
৪| ০৭ ই অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ৯:৫০
অপ্সরা বলেছেন: একমাত্র পাগলরাই এমন শয়তান হয়
আবার শয়তানরাই এমন পাগল
ভালো হইসে এইটার মরাই উচিৎ ছিলো!
ভেরী নাইস স্টোরী ভাইয়া!
০৭ ই অক্টোবর, ২০১৬ দুপুর ১২:৪৪
নিঃশব্দের কথামালা বলেছেন: হা হা হা ... ভালো বলেছেন ... আসলেও সে পাগল। ঃ)
নায়ক মারা যাচ্ছে আর আপনি বলছেন এর মরাই উচিৎ ছিল!!! কি বলেন!!!
৫| ০৭ ই অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ১১:৪৯
মার্কো পোলো বলেছেন:
গল্পটা ভাল লাগলো।
কতই না পাগলামি! ভালবাসার পাগলামি।
০৭ ই অক্টোবর, ২০১৬ দুপুর ১২:৪৭
নিঃশব্দের কথামালা বলেছেন: ধন্যবাদ ভাইয়া। ভালবাসায় যদি একটু পাগলামি না থাকে তাহলে সেটা কি আর ভালবাসা হয়? আমি তো বলি ভালবাসার আরেক নাম পাগলামি।
৬| ০৭ ই অক্টোবর, ২০১৬ দুপুর ২:৩৬
সুমন কর বলেছেন: পূর্বের কাহিনী একটু বললে আরো ভালো হতো।
ভালো লাগল।
০৮ ই অক্টোবর, ২০১৬ ভোর ৪:০৪
নিঃশব্দের কথামালা বলেছেন: পূর্বের কাহিনী, পরের কাহিনী বলে কিছু নেই ভাইয়া, যখন যা মনে আসে লিখে ফেলি।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
©somewhere in net ltd.
১|
০৭ ই অক্টোবর, ২০১৬ ভোর ৫:৫০
বিলিয়ার রহমান বলেছেন: সুন্দর লিখেছেন!!

অনেক অনেক শুভকামনা!