নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ওয়াসীম সোবাহানের ভাবনা

ওয়াসীম সোবাহান চৌধুরী

ওয়াসীম সোবাহান চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

হিটলারের মৃতদেহ পোড়ানো হয় দুইবার – একবার পোড়ায় তার অধিনস্তরা, আরেকবার পোড়ায় রাশিয়ানরা

৩০ শে জুলাই, ২০১৫ দুপুর ১২:৩৩

অ্যাডলফ হিটলার ১৯৪৫ সালের ২০ এপ্রিল যখন একটি বাঙ্কারের ভিতরে তার জীবনের শেষ জন্মদিন পালন করছিলেন,তখন মার্শাল জুকভের নেতৃত্বে রাশিয়ান সামরিক বাহিনী বার্লিনের ঠিক বাইরে অবস্থান নেয়। রাশিয়ান বাহিনীর সামনে তখন শুধু একদল বৃদ্ধ সেনা আর কিছু আহত পুলিশ।

২৩ এপ্রিল দুপুরে হিটলারের সবচেয়ে বিশ্বস্ত সাথী গোরিং এবং হিমলার কৌশলে তাকে ছেড়ে চলে যায়। হিটলার বুঝতে পারেন পরাজয় একেবারে কাছে চলে এসেছে । বাঙ্কার থেকে পালিয়ে পিছনের পথে আল্পসে পালিয়ে যাওয়া হয়তো যেতো কিন্তু তিনি ধরা পরার ঝুঁকি নিতে চান নি। হিটলার পালিয়ে যেতে চাননি,ধরা পরতেও চাননি।তাই একটিই পথ ছিল রাশিয়ানদের এড়ানোর - আত্মহত্যা করা। ২৯ এপ্রিল হিটলার তাঁর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডাঃ ভের্নার হাসিকে কতগুলো সায়ানাইড ক্যাপসুল পরীক্ষা করে দেখতে বললেন। পরীক্ষাটা করা হয় হিটলারের প্রিয় অ্যাল্সেশিয়ান কুকুর ব্লন্ডির উপর।সায়ানাইড পরীক্ষাটি সফল ঘোষনা করা হয় যখন ব্লন্ডি তার পাঁচটি বাচ্চাসহ মারা যায়।

৩০ এপ্রিল হিটলার তার অতিরিক্ত ব্যক্তিগত কর্মচারী অত্ত গুন্সেকে নির্দেশ দেন আত্মহত্যা পর তার ও নববিবাহিত স্ত্রী ইভা ব্রাউনের মৃতদেহ যেন পুড়িয়ে ফেলা হয়। হিটলার ইটালির শাসক মুসলিনির মত অপমানের শিকার হতে চাননি। মুসোলিনি বিপ্লবীদের কাছে কিছুদিন আগে ধরা পরেন এবং হত্যার পর তার দেহটি মিলানের একটি স্কয়ারে ঝুলিয়ে রাখা হয়।

মৃতদেহকে কি করা হবে সেই সম্পর্কে নির্দেশ দিয়ে হিটলার এবং ইভা ব্রাউন তাদের ব্যক্তিগত রুমে প্রবেশ করেন।তখন বেলা ৩টা ৩০ মিনিট। হিটলারের অনুগতরা যারা রুমের বাইরে বসে ছিলেন তারা একটি গুলির শব্দ শুনতে পেয়ে রুমে প্রবেশ করেন এবং দেখেন একটু সোফায় হিটলার ও ইভা ব্রাউনের নিথর দেহ। ইভা সায়ানাইড খেয়েছেন। হিটলার সায়ানাইড খেয়ে বাড়তি সতর্কতা হিসেবে ব্যক্তিগত পিস্তল দিয়ে নিজ মাথায় মাথায় গুলি করেছেন।

ব্যক্তিগত কর্মচারী অত্ত গুন্সে এবং আরতুর অ্যাস্কামান লাশ দুইটিকে কম্বলে মুড়ে নেয় এবং এগুলোকে বাঙ্কার থেকে বাইরে আনে। মৃতদেহ গুলোতে পেট্রোল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয়া হয়।একজন ক্রোধান্মত্ত একনায়ক আগুনে জ্বলতে থাকেন যিনি ভেবেছিলেন তৃতীয় রীচ ১০০০ বছর রাজত্ব করবে কিন্তু তার স্তায়িত্ত হয়েছিল মাত্র ১২ বছর।

পরদিন ১লা মে জার্মান সরকার হিটলারের মৃত্যুর ঘোষণা দেয়। রাশিয়ান রেড আর্মি ২ মে বাঙ্কারে প্রবেশ করে।তারা পুরো বাঙ্কার তল্লাশী করে কিন্তু কিছুই পায়না।তল্লাশী অব্যাহত থাকে। ৪ মে একজন রাশিয়ান সৈনিক রীচ বাসভবন সংলগ্ন বাগানের একটি গর্তে অগ্নিদগ্ধ কম্বলের একটি অংশ দেখেতে পায়। সে কর্তৃপক্ষকে তা জানায়।গর্তটি খোঁড়া হয় এবং হিটলারের প্রিয় কুকুর ব্লন্ডিসহ তার এবং তার স্ত্রীর মৃত দেহ পাওয়া যায়। পরদিন দন্ত পরীক্ষার মাধ্যমে প্রমানিত হয় যে এটা হিটলারের মৃতদেহ।

কঠোর সতর্কতা ও নিরাপত্তার মধ্যে হিটলার ও ইভা ব্রাউনের মৃতদেহ মস্কোতে নিয়ে যাওয়া হয় এবং পরে মাগডিবার্গের একটি প্যারেড গ্রাউন্ডের নিচে দাফন করা হয়।১৯৭০ সালে রাশিয়ার সরকার মৃতদেহগুলো তুলে পুনরায় পুড়িয়ে ফেলে।ছাইগুলো একটি নদীতে ফেলে দেওয়া হয়।

অ্যাডলফ হিটলার নিয়ে ইংরেজীতে একটা বেশ বড় প্রবন্ধ লিখেছিলাম কিছুদিন আগে। এটা তার একটা অংশ। ইংরেজীতে লেখাটার লিঙ্ক দিয়ে দিলামঃ Adi becomes Hitler

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +৫/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে জুলাই, ২০১৫ দুপুর ১:৩৯

ঢাকাবাসী বলেছেন: বেশ ভাল লাগল।

২| ৩০ শে জুলাই, ২০১৫ দুপুর ১:৫৮

খোলা মনের কথা বলেছেন: ভাল লাগার মত একটি পোষ্ট.

৩| ৩০ শে জুলাই, ২০১৫ বিকাল ৫:২৯

ইমরান আশফাক বলেছেন: বেশ কিছু তথ্য জানলাম।

৪| ৩০ শে জুলাই, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৫১

তািমম বলেছেন: apni onek porashona kore likhen....ami sob gulo likha porlam....valo lagse.....samne ro valo likher asay thaklam.........

৩০ শে জুলাই, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৫৭

ওয়াসীম সোবাহান চৌধুরী বলেছেন: ধন্যবাদ তামিম! সবগুলো পড়েছেন জেনে আনেক ভালো লাগলো :-)

৫| ৩১ শে জুলাই, ২০১৫ রাত ১:৫৩

আমি সাজিদ বলেছেন: আরেকটা মজার ঘটনা বলে যাই, হিটলারের প্রোপাগান্ডা মিনিস্টার ছিলো জোসেফ গোয়েবলস। শেষের দিকে পরাজয় আসন্ন জেনে এই গোয়েবলস প্রথমে তার স্ত্রী আর ছোট ছোট ছোট ছেলেমেয়েকে পুড়িয়ে মারে।তারপর নিজেও পুড়ে আত্নহত্যা করে।

প্লাস।

৩১ শে জুলাই, ২০১৫ সকাল ১১:৫২

ওয়াসীম সোবাহান চৌধুরী বলেছেন: প্রমান করেন হিটলারের প্রতি তার বিশ্বস্ততা...

৬| ৩১ শে জুলাই, ২০১৫ ভোর ৬:৪৯

কি করি আজ ভেবে না পাই বলেছেন: অনেক অজানা তথ্য জানলাম
ভালো লেগেছে
ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.