নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ওয়াসীম সোবাহানের ভাবনা

ওয়াসীম সোবাহান চৌধুরী

ওয়াসীম সোবাহান চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

১৯৮১ সালের ২ জুন এক জেনারেল নিস্তব্ধ হয়েছিলেন

০২ রা জুন, ২০১৭ রাত ১০:৪৯

গভীর রাতে জেনারেলকে নিয়ে একটি সামরিক জীপ দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের এক সেনানিবাসে ঢুকে। জেনারেলের চোখ কাপড় দিয়ে বাধা, হাত পিছমোড়া করে দড়ি দিয়ে বাধা। তার পাশে একজন ও সামনে দুইজন সশস্ত্র সৈনিক। জীপ চালাচ্ছে এক সৈনিক, পাশে ঝিমমারা এক ক্যাপ্টেন বসা।

কোন গন্তব্য নেই, জীপ সেনানিবাসের ভেতরে এক রাস্তা থেকে অন্য রাস্তায় ঘুরে। রাত বাড়ে। সেনানিবাস সুনসান, বেশীরভাগ ব্যারাক খালি তবে ইবিআরসি দপ্তর কর্মচঞ্চল; রাজধানীতে বসা এক জেনারেলের আশীর্বাদপুষ্ট দুই ব্রিগেডিয়ার সক্রিয় সেখানে।

রাত গভীর হয়, টেলিফোন আসে রাজধানী থেকে, দুই ব্রিগেডিয়ার আদেশ গ্রহন করে জীপে বসা পিছমোড়া করে দড়ি দিয়ে বাধা জেনারেলকে নিস্তব্ধ করবার। এ আদেশে তারা বিচলিত হয় না।

জেনারেলকে বহনকারী জীপটি তখনো এ রাস্তা থেকে সে রাস্তায় চলাচল করে। হঠাৎ জীপের সামনে এসে দাড়ায় অন্য এক জীপ। দুই জীপের দুই অফিসার নেমে স্বল্প বাক্যে কথা সারে। ক্যাপ্টেন পুনরায় জীপে উঠে চালককে নির্দেশ দেয় - রেঞ্জের দিকে চল। জেনারেলও শুনেন সে কথা; কোন কথা বলেন না কিন্তু এক দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে আসে।

ফায়ারিং রেঞ্জে যেয়ে জীপ থামে। নিশুতি রাত। চোখ কাপড় দিয়ে বাধা, হাত পিছমোড়া করে দড়ি দিয়ে বাধা জেনারেলকে নামানো হয়, নিয়ে যাওয়া হয় রেঞ্জের মাঠে। জেনারেল বিড়বিড় করেন; কোরআনের আয়াত না অনুযোগ বোঝা যায় না। সৈনিকরা তখন দ্বিধান্বিত; ক্যাপ্টেন হাত তুলে দেখিয়ে দেয় - ঐদিকের পাহাড়ে নিয়ে চলো। পাহাড়ের কাছে থামে সবাই। জেনারেল বলেন - আমার পকেটে একটা ফরমেশন সাইন আছে, সেটা বের করে রাখো। এক সৈনিক আদেশ পালন করে।

ক্যাপ্টেন সৈনিকদের জিজ্ঞেস করে - কে শুট করবা? এক সৈনিক হাত দিয়ে ঈশারা করে। ক্যাপ্টেন বলে, সামনে আসো। ক্যাপ্টেন কোমর থেকে নিজের পিস্তল বের করে সৈনিকের হাতে দেয়। সৈনিক জেনারেলের মাথায় পিস্তল ঠেকায় আর ট্রিগার চাপে। রাতের আধারে এক আলোর ঝিলিকে সৈনিকেরা দেখে জেনারেলের মগজ ছিটতে বেরিয়ে গেলো।

জেনারেলের প্রাণহীন দেহ ধুপ করে মাটিতে পরে। ক্যাপ্টেন ও সৈনিকেরা সেদিকে আর তাকায় না। তারা ঘুরে হাটতে থাকে, রেঞ্জের মাঠ পেরিয়ে জীপে উঠে বসে। জীপ ইবিআরসি দপ্তরে আসে। ক্যাপ্টেন উপস্থিত ব্রিগেডিয়ারদ্বয়কে আশ্বস্ত করে যে জেনারেলকে নিস্তব্ধ করা হয়েছে। ব্রিগেডিয়ারদ্বয় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে।

জেনারেলের দেহ পাহাড়েই থাকে সারা রাত; সকালে কিছু সৈনিক তা উঠিয়ে সামরিক হাসপাতালের মর্গে রাখে। পরদিন এক কর্নেল ময়নাতদন্ত করে জেনারেলের দেহ। তারপর কিছু সৈনিক জেনারেলের দেহ নিতান্ত অবহেলায় সেনানিবাসের ভেতরেই তাদের ইউনিটের পাশে কবর দেয়।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা জুন, ২০১৭ রাত ১১:০২

দ্যা ফয়েজ ভাই বলেছেন: জেনারেলের নামধাম কিছুই ছিলো নাহ।এটা কোন ঘটনাকে কেন্দ্র কিরে ঘটেছিলো।?

২| ০২ রা জুন, ২০১৭ রাত ১১:২৪

মানবী বলেছেন: ‌এটা দুঃখজনক যে বাংলাদেশে আজ অবধি এমন কোন পুরুষের জন্ম হলোনা যে এক লম্পট, মিথ্যাবাদী ভন্ড সাবেক জেনারেলের কাছ থেকে দেশের দুই বীর মুক্তিযোদ্ধা জেনারেল হত্যার স্বীকারোক্তি আদায় করতে পারে।

সেই ভন্ড, মিথ্যাবাদী লম্পটের প্রতি ঘৃনার পারা দিন দিন বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে।


পোস্টের জন্য ধন্যবাদ ওয়াসীম সোবাহান চৌধুরী।

৩| ০২ রা জুন, ২০১৭ রাত ১১:৩৭

নাঈম জাহাঙ্গীর নয়ন বলেছেন: কাহিনীটি খুব কষ্টের।
এমনটি কেবল ক্ষমতার কুক্ষিগত করার জন্যই হয় হয়তো!!

৪| ০৩ রা জুন, ২০১৭ রাত ১:০৮

সচেতনহ্যাপী বলেছেন: সবই মনে আছে।। কিন্তু এটাই যে, সুষ্ঠ বিচার আজো হলো না। আসলে বিচারের বানী নিভৃতে কাঁদে।।।

৫| ০৩ রা জুন, ২০১৭ দুপুর ১২:৩৪

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: জেনারেল মঞ্জুরের হত্যাকাণ্ড আজও রহস্যময় হয়ে আছে।

৬| ০৬ ই জুন, ২০১৭ বিকাল ৩:৪৭

সবুজ২০১২ বলেছেন: ধিক!লুচ্চা এরশাদ,লম্পট,খুনি

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.