নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ভোক্তারা কি আসলে বাজার নিয়ন্ত্রণ বা একে প্রভাবিত করতে পারে?
আধুনিক অর্থনীতির অন্যতম একটি বড় ক্যাড়া বা সমস্যা হল ভারসাম্যহীন আর্থ-সামাজিক পরিবেশ। এটা বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। পরিস্থিতি এরকম – একদিকে বিশ্ব জনসংখ্যার একটি অংশ প্রতিদিন ব্যাপক পরিমাণ খাদ্য অপচয় করছে আর অন্যদিকে অনেক মানুষ না খেয়ে আছে। বাজার নিয়ন্ত্রিত বিশ্ব-অর্থনীতির এই সমস্যা মেটাবার জন্য পুঁজিবাদ বলে ভোক্তার চাহিদাকে অগ্রাধিকার দেয়া হউক, সাম্যবাদ বলে সম্পদের সমবণ্টনময় একটি কেন্দ্রীয় পরিকল্পনা নেয়া হউক আর ইসলামী অর্থনীতি ব্যবস্থা বলে ভারসাম্য অগ্রাধিকার পাক।
বর্তমানে বিশ্বের বেশিরভাগ দেশে পুঁজিবাদের আধিপত্য বিরাজমান। আর পুঁজিবাদ বাজারে বিশ্বাসী, বাজার বিশ্বাসী ভোক্তার ইচ্ছা ও সামর্থ্যে। কিন্তু ভোক্তার ইচ্ছা ও সামর্থ্য কি বাজার তথা বৈশ্বিক অর্থনীতিকে প্রভাবিত করতে পারে? পারলে কতদূর?
পুঁজিবাদ তত্ত্ব অনুসারে, ভোক্তারা তাদের ক্রয়ক্ষমতা দিয়ে বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। এবং তারা যদি পরিবেশবান্ধব ও নবায়নযোগ্য পণ্যে আগ্রহী হয়, তবে তা যোগানে বাজার বাধ্য থাকবে। কিন্তু সমস্যা হলো পুঁজিবাদী অর্থনীতিক ব্যবস্থা ভারসাম্যহীন হয়ে থাকে অনেক সময়। পুঁজিবাদের ফল হিসাবে মাত্র ১০ শতাংশ লোক পুরো বিশ্বের অর্থনীতিকে নিয়ন্ত্রণ করে। উদাহরণস্বরূপ ধরা যাক, একটি সম্প্রদায়ে ১০০ জন লোক আছে, যাদের মোট অর্থ-সম্পদের ৯০ শতাংশ মাত্র দশজনের কাছে রয়েছে। তাহলে ঐ দশজনের চাহিদা অনুযায়ী পণ্য যোগান দিতে বাজার বাধ্য, কেননা তারা পছন্দের যেকোনো পণ্যের মূল্য পরিশোধে সক্ষম। তাই ঐ দশজন ব্যক্তির চাহিদা অনুসারেই বাজারে পণ্যের জোগান আসবে। বাকি নব্বইজনের পছন্দ এখানে অপাংক্তেয়, তারা গোনাতেই আসে না। মুড়ি খায়।
আবার ধরা যাক, মানুষ তথা ভোক্তারা সাধারনভাবে এমন কোন দ্রব্য কিনতে চায় না, যা ধরিত্রীকে দূষিত করবে। তবুও পরিবেশের জন্য ক্ষতিকারক দ্রব্য যদি বাজারে থাকে এবং তা সল্প দামে পাওয়া যায়, তাহলে ভোক্তাদের আর কিছু করার থাকে না। একটি জরিপে দেখা গেছে, ৮২ শতাংশ মানুষই পরিবেশবান্ধব পণ্য কিনতে চায়, কিন্তু তাদের মাত্র ১৮ শতাংশ তা করতে পারে। মানে ৮২ শতাংশ মানুষ মুড়ি খেতে খেতে সেসব পণ্য কেনে এবং ধরিত্রীকে দূষিত করে। তাই বলা যায় যে ভোক্তার বাজার নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারটি অনেকাংশে সম্পদের পর্যাপ্ততার ওপর নির্ভরশীল।
তাত্ত্বিকভাবে জ্ঞানের মুক্ত অনুপ্রবেশ প্রতিশ্রুতিশীল মনে হলেও বাস্তবে তথ্য ও জ্ঞানের সুযোগ সবার থাকে না। শিক্ষা, অর্থনীতিক সামর্থ্য ও অন্যান্য প্রভাবকের জন্য এক এক সমাজে জ্ঞানের মুক্ত অনুপ্রবেশ এক এক রকম। এই জ্ঞান আবার অনেক সময় অল্প বিদ্যা ভয়ঙ্করী হয়ে উঠে, ফলে ভোক্তারা বাজার তথা বৈশ্বিক অর্থনীতিকে প্রভাবিত করা থেকে আরও দূরে সরে যায়।
ভোক্তাদের রয়েছে কলম, কিবোর্ড ও রাজপথ যা দিয়ে তারা বাজারকে প্রভাবিত করতে পারে আর বাজারের আছে ঝলমলে বিজ্ঞাপন যা দিয়ে সে ভোক্তাদের লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত করে ও মুড়ি খাওয়ায়। ঝলমলে বিজ্ঞাপনের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে ভোক্তারা সহজেই পণ্যের সত্যিকার গুনাগুণ থেকে বিচ্যুত হয়ে পড়ে। প্রচারণার অভাবে যেখানে একটি ভালো পণ্যেরও কাটতি কম হতে পারে, সেখানে জোরদার বিজ্ঞাপন ও প্রচারণায় একটি নিচু মানের পণ্য অধিক বিক্রি হতে পারে। তাতে ভোক্তারা সেই নিচু মানের পণ্য কিনে হাসি মুখে বাড়ী যায় আর বাজার নিয়ন্ত্রণ বা পরিবর্তনে ব্যর্থ হয়।
তাই এটা বলা যায় যে ভোক্তারা বাজার নিয়ন্ত্রণ বা পরিবর্তনে সক্ষম নয়। ইঙ্গিত দিতে পারে তারা, কিন্তু কোন মোড় ঘুড়িয়ে দেবার ক্ষমতা তাদের নেই। তবে মুড়ি খাবার সামর্থ আছে।
বাংলাদেশের বাজারব্যবস্থা এর ব্যতিক্রম নয়। এবং বাংলাদেশে মুড়ি সুলভ।
১৪ ই অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ৯:৫১
ওয়াসীম সোবাহান চৌধুরী বলেছেন: সংগঠিত ভোক্তারা বাজার কিছুটা হলেও নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।
২| ১৩ ই অক্টোবর, ২০১৮ দুপুর ১:৫৪
ফেনা বলেছেন: মাথায় অর্থের নীতি বেসামাল। কিছুই বুঝি না।
শুধু একটা কথা - আমাদের ভোক্তারা যেন কোন ঠকে সেই রকম অর্থনৈতিক ব্যবস্থা থাকা উচিত।
৩| ১৩ ই অক্টোবর, ২০১৮ রাত ৯:৩৪
রাজীব নুর বলেছেন: সব কিছু নষ্টদের দখলে চলে গেছে।
১৪ ই অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ৯:৫২
ওয়াসীম সোবাহান চৌধুরী বলেছেন: একজন বহুমাত্রিক লেখক তো অনেক আগেই আমাদের সতর্ক করেছিলেন...
©somewhere in net ltd.
১| ১৩ ই অক্টোবর, ২০১৮ দুপুর ১২:১৭
স্বপ্নের শঙ্খচিল বলেছেন: এটা বলা যায় যে ভোক্তারা বাজার নিয়ন্ত্রণ বা পরিবর্তনে সক্ষম নয়।
................................................................................................
সংগঠিত ভোক্তারা বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।