![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নানার লাইব্রেরীতে মোটা একটা বই দেখি। ছোটবেলায় গল্পের বইয়ের ভালই নেশা ছিল। ‘গল্পগুচ্ছ’ শিরোনাম আমাকে আকৃষ্ট করল। রবীন্দ্রনাথকেও চিনি তখন। এই লোক তো সেই লোক, যে পাঠ্যবইয়ে কবিতা লিখে আমাদের মুখস্তের বিড়ম্বনায় ফেলেছে। সে আবার গল্পের বইও লেখে!
মামাকে বলে বাসায় নিয়ে এলাম। তিনিই আমার বই পড়ার প্রথম উৎসাহদাতা।
মাটির বাড়ির দুইতলায় থাকি। রেলিঙে একদিন দু’পা মেলে বইটা উল্টিয়ে পাল্টিয়ে দেখছি। শব্দগুলো অনেক কঠিন কঠিন। ‘পোষ্টমাষ্টার’ গল্পটা পড়লাম। কঠিন ভাষার গল্পটা না বুঝেও বুঝলাম যেন। রতনের আবেগ লেখকের ভাষার কাঠিন্য এড়িয়ে বারো বছরের বালককে দোলা দিয়ে গেল।
এরপর বইটা সযত্নে পড়েই থাকল।
নানা এলাকার নামকরা হাইস্কুলের হেডমাষ্টার ছিলেন দীর্ঘকাল। কিছুটা সংস্কৃতিঘেঁষা মানুষ। তিনি তার নিজের অজান্তেই নাতিকে শ্রেষ্ঠ উপহারটা দিয়ে গিয়েছেন। নানার স্বাক্ষরের দিকে মাঝে মাঝেই চোখ বুলাই। আমি তখন গ্রাম ছেড়ে রাজশাহী শহরে এসেছি, কলেজে পড়ছি, সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপারটা হল ‘গল্পগুচ্ছ’ আমার কাছে এখন ‘ফুলের গুচ্ছ’ হিসেবে সৌরভ দিয়ে যাচ্ছে। নিয়মিত একটা করে গল্প পড়ি, চিন্তা করি, এটা আগের চাইতেও বেশীরকমের মনোহর। পরবর্তী গল্পে আগের বিশ্বাসটা ভাঙে। আরও আনন্দ নিয়ে আরেকটা গল্প পড়ি।
যখন রাতে কোন গল্প পড়তাম, সকালে ঘুম ভাঙার কিছু আগে ও পরে সে গল্পের চরিত্ররা আমার আশেপাশে ভীড় করত। অনেকদিন চারুলতা কিংবা রামকানাইয়ের মত কারো দুঃখ সকালবেলায় গাঢ় হয়ে আমাকে বিছানায় চেপে ধরত!
আহা! কী দিন ছিল সেগুলো!
নানার ‘গল্পগুচ্ছ’টা হারিয়ে যাওয়ায় কালকে আরেকটা কিনে আনলাম।
সবকিছু পেলাম। নানার গন্ধটা হারিয়েছি। চিরদিনের মত।
©somewhere in net ltd.
১|
২৭ শে আগস্ট, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:১৩
বিজন রয় বলেছেন: ব্লগে স্বাগতম।
শুভব্লগিং।
শুভকামনা।