নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

::::::::::::অতি সাধারন একজন...

আমি মনে প্রাণে একজন মুসলিম। ঘৃণা করি ধর্ম বিদ্বেষী নাস্তিকদের এবং ধর্ম ব্যবসায়ী ছাগু তথা উগ্রবাদীদের। ক্যঁচাল পছন্দ করিনা ।।

যুবায়ের

যখন যা মাথায় আসে লিখে ফেলি।

যুবায়ের › বিস্তারিত পোস্টঃ

ক্ষেদ!!.. (ছোট গল্প)

২৬ শে আগস্ট, ২০১৫ রাত ১১:৫৯



রাত যতই ঘনিভূত হচ্ছে বুকের বা পাশের ব্যথাটা ততই জাগ্রত হচ্ছে।
একটু পানি পান করার ইচ্ছে হলেও উঠতে বড় কষ্ট হচ্ছে!.
বউ চলে গেল বাপেরবাড়ি ছেলের স্কুল ছুটির বাহানায়!. আর এইসময়ে
বেড়ে গেল বুকের ব্যথাটিও!.
বিপদ যখন আসে সবদিক থেকেই আসে!. বড় অর্থকষ্টে দিনাতিপাত করছি।
মাস শেষে যে কয় হাজার বাড়িভাড়া আসে তাই নিয়েই কোনভাবে সংসারটা চালাচ্ছি।
বউ অবশ্য এর আগে একদিন কইছিল তোমার বুকের ব্যথার জন্য ডাক্তার দেখাও।
মুচকি হেসে বলেছিলামঃ ও কিছু নয় হয়তো পেটে অম্বল টম্বল কিছু একটা হয়েছে!.
ওই পিলাচ একটা ট্যবলেট খাইছি ঠিক সেরে যাবে।

বউ ঘুমুচ্ছে.. এদিকে বুকের ধরপড়ানিটা বেড়েই চলেছে…
বউরে ডাকন যাইবোনা তাইলে র্নিঘাৎ ডাক্তার দেখাইবো কাইল। আর যদি ডাক্তারে
কোন টেষ্ট করতে কয় তাইলে হাতে যে কয়টা টাকা আছে তা সবই শ্যষ হইয়া যাইবো!
সারাডামাস কি খাইয়া বাঁচুম?..
আল্লাগো চউক্ষে ঘুম দ্যও জানি বউ টের না পায়….

এমনই কষ্টে দিন কাটতেছিল নুরুল হুদার। গন্জ্ঞে একসময় বড় ব্যবসাদার ছিল এই
নুরুল হুদা। মটর বাইকে করে সকালে দোকানে যেত আর বাড়ি ফিরতো অনেক রাতে।
ব্যগ ভর্তি টাকা এনে নতুন বউ মিনুর হাতে দিতো।
মিনু ভাত বেড়ে রেডি করতো আর এই ফাঁকে হুদা টিউবঅয়েলে গিয়ে মুখ হাত ধুয়েেএসে খেতে বসতো। প্রতিদিনই মিনু বলতো এত্ত রাইত কৈরা বাড়িতে আসেন ক্যন! এক্টু আগেভাগে আ্েতে পারেননা?..
হুদা খেতে খেতে বলতো বউ “আমি যেমন তোমার স্বোয়ামী, হেইরাম পুরুষের স্বোয়ামী হইলো টাকা” মিনু হেসে বলতো ভাত খান! খালি আজাইরা প্যঁচাল পাড়েন!.

হুদার সংসারটা বেশ ভালই চলছিল স্বচ্ছলভাবে। হঠাৎ যমুনা নদী ভয়ংকর হয়ে ওঠে।
ভাঙন শুরু হয় রাতারাতি! বন্দরের পাট গুদাম থেকে ঠিকমতো মাল বেড় করতেও পারলোনা হুদা। বড় বড় পাট গুদাম নিমিষেই নদীগর্ভে বিলিন হয়ে গেল!.
সেই থেকেই হুদা কেমন জানি হয়ে গেছে! অধীক শোকে পাথর হওয়ার মতো।
গন্ঞ্জের ব্যবসা যখন রমরমা ছিল তখন হুদা শহরে একটি বাড়ি কিনেছিল। সেই বাড়িভাড়ার টাকা আর অল্প কিছু জমিজমা আছে সেগুলির আবাদ ফসল করে মোটামুটি
কোন রকমে সংসারটা চালাচ্ছিল।

হুদার ছেলেটা দেখতে বেশ সুন্দর হয়েছে। পড়ালেখাতেও ভালো। পিএসসিতে এ+ পেয়ে হাই স্কুলে সিক্সে পড়ছে। ছেলেটার পড়ালেখার জন্যও খরচ কম লাগেনা!. এমনিতেই টানাটানির সংসার তার উপরে প্রতিদিন রিক্সা ভাড়া আর টিফিন মিলে দৈনিক ৫০ টাকা! ২০ টাকা করে যাতায়াত ৪০ টাকা রিক্সা ভাড়া আর ১০ টাকা টিফিনে দিতে হয়। কিজানি বাবা আমরা যখন পড়ালেখা করতাম তখনতো দুইমাইল হেটেই স্কুলে যেতাম। এখন কুন জামানা আইলোরে… অল্প একটু পথ তাও রিক্সায় চড়ে যাইতে হয়!.



মিনু বাপেরবাড়ি থেকে ফিরেছে সাথে ছেলে সজলকে নিয়ে। এসেই বললোঃ আমাগোরে কি একটু আনবার যাইতেও পারলানা!. কি এমন মহাকর্ম করে ফেললে! শুধু খাওয়া আর ঘুমানো?.. শ্বশুর শাশুড়ীকেতো একটু দেখা সাক্ষাৎও দিতে হয় না কি?.
বিয়া অইচে তাও বছর পনের!. এহনো কি আর শ্বশুরবাড়ি যাওনের শখ থাকতে আছে?

হুদা বাড়ির বাহিরে মেঠোপথের সাথে বাশের তৈরী টং এ বসে বিকেলের নরম রোদে গা এলিয়ে দিয়ে ভাবছে যখন টাকা আছিল তখন হগলেই দাম দিয়া কতা কইতো। জ্যৈষ্ঠ্য মাস আইলে শ্বশুড়বাড়ি থিকা পালকি পাঠাইতো জামাই মেয়ে নিতে। বউ পালকিতে চইড়া যাইতো আর আমি যাইতাম মটর বাইকে। কত্তনা সুদিন ছিল সেইসব রঙিন দিনগুলি। আইজ টাকা ফুরাইছে আর কেউই আসেনা জামাই,মেয়ে,নাতীর খোঁজ নিতে। মিনুর যখন বাপেরবাড়ি যাইতে ইচ্ছে হয় তখন ছেলেকে নিয়ে চলে যায়!. বউটাও যেন আইজকাল কিরাম হই গেছে..
আগেরমতো আর দাম দেয়না!.. বউয়ের কাছে শুনছি ছোট শালা নাকি বিদেশে গিয়ে বহুত টাকা পাঠাইতাছে। বাড়ি নাকি হাইফাইভাবে সাজিয়েছে। তাও বছর দুয়েক আগে শোনা কথা!
কেউ একবার কইলোওনা নতুনবাড়ির সাজসজ্জা এক্টু দেইখ্যা যাও!
জগৎটা আর আগের মতো নেই। বদলে গেছে মানুষ আর সবচেয়ে বেশি বদলে গেছে মানুষের মন! সবাই এখন টাকার মোহে মত্ত! যার টাকা আছে তার দাম আছে যার টাকা নাইতো তার দামও নাই!!.. এই নিয়ে হুদার মনে জন্ম হয়েছে ভীষণ ক্ষেদ!..

ছবিসুত্র- ১. ইন্টারনেট থেকে নেওয়া।
২. নিজের তোলা ছবি।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে আগস্ট, ২০১৫ রাত ১২:৪২

আমড়া কাঠের ঢেকি বলেছেন: চমৎকার লিখেছেন।
মন ছুয়ে গেল। তবে আরেকটু বড় হলে ভাল হতো। ফিনিশিংটাচটা বাকী রয়ে গেল :P

পিলাচ+

২৭ শে আগস্ট, ২০১৫ রাত ১:২৩

যুবায়ের বলেছেন: ধন্যবাদ আমরা কাঠের ঢেকি।

২| ২৭ শে আগস্ট, ২০১৫ বিকাল ৩:১৪

হাসান মাহবুব বলেছেন: ছবি দুইটা ভালা।

২৭ শে আগস্ট, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৪০

যুবায়ের বলেছেন: ধন্যবাদ হাসান মাহবুব।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.