নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ভাটির দেশের কথা

জাকারিয়া জামান তানভীর

আত্মিক এবং সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে লিখি।

জাকারিয়া জামান তানভীর › বিস্তারিত পোস্টঃ

হাতে ৪র্থ প্রজন্মের গেজেট দেশে চালু শের শাহ্‌ আমলের ইন্টারনেট, যাই কই!?

১৮ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১:১৫

২০০৮ সালে আমার বন্ধু আহাদের হাত ধরে ফেসবুকে পদার্পণ। এর আগে ২০০৫ থেকে ব্যাক্তিগত আর অফিসের কাজে ব্রাউজিং ও ইন্টারনেট ব্যাবহার করার অভিজ্ঞতা ছিল। ২০০৫ থেকে আজ পর্যন্ত প্রযুক্তিতে কত কিছুই না যোগ হয়েছে তার ইয়ত্তা নেই। আজ তৃতীয় প্রজন্মের কম্পিউটার প্রসেসর, আর র্যা মের স্পিড রীতিমত ভয় জাগানিয়া। শক্তিশালী ট্যাবলেটগুলি অনায়াসে ব্যাক পকেটে পুরা যায়। আইফোন আর স্যমসাংয়ের যুদ্ধ ভোক্তাদের বরং লাভবানই করছে। সহজলভ্য প্রযুক্তি বিশ্ববাজারে আসার কিছুদিনের মধ্যেই আমাদের হাতে চলে আসছে। এদানিং প্রত্যেকটি প্রযুক্তি পণ্যই সেটা প্লেস্টেশনই হোক বা ট্যাবলেট তাতে ইন্টারনেট ব্যাবহারের সুযোগ থাকছে। লোকজন মেইল, ব্রাউজিং বা ফেসবুকিংয়ের জন্য এখন অনেকটা ইন্টারনেট কেন্দ্রিক হয়ে গেছে। প্রযুক্তি পন্য এখন প্রায় ৪র্থ প্রজন্মের কাছাকাছি কিন্তু এইগুলা চালানোর ইন্টারনেটের কি অবস্থা? আজকাল ফেসবুকে অনেককেই আক্ষেপ করতে দেখা যায় যে নেট খুব ধীর। ফেসবুকের মত হালকা মাইক্রব্লগিং সাইট যদি সহজে সার্ফ করা না যায় তাইলে ইউটিউব বা লাইভ স্ট্রিমিংয়ের অভিজ্ঞতা কেমন হবে তা পাঠককুল আমার চেয়ে ভালো বলতে পারবেন। আমি শেষ কবে যে নেটে একটি গান শুনতে সফল হয়েছি তা মনে করতে পারবনা। নেটের এই হাল কেন? দেখার কেউ কি নেই? এক সময় ভিস্যাটের মাধ্যমে আমরা নেটে সংযোগ পেতাম তাই তা ব্যায়বহুল ছিল, ট্র্যাফিকের কারনে ধীরও ছিল কিন্তু সাবমেরিন ক্যাবলে সংযুক্তির পরও অবস্থার পরিবর্তন হয়নি বললেই চলে। এই অবস্থার কি আশু উন্নতি হবে না?



দেশে আদৌ কতজন লোক ইন্টারনেট সেবা ভোগ করছেন সে ব্যাপারে ধুয়াশা রয়েছে। বিদেশী একটি সংস্থার হিসাব অনুযায়ী দেশে এখন প্রায় ৮০ লক্ষ ইন্টারনেট ব্যাবহারকারি আছেন, যা এশিয়ার মোট ব্যাবহারকারির মাত্র .০৭ শতাংশ কিন্তু প্রযুক্তিবিদ মোস্তফা জব্বারের মতে ব্যাবহারকারির সংখ্যা ৬০ লাখের বেশী হবে না। তার মতে এর মধ্যে অধিকাংশ মোবাইলেই তাদের কাজ সেরে নেন। মেইল চেক, ব্রাউজিং বা ফেসবুকের জন্য মোবাইল কোম্পানির জিপিআরএস প্রজুক্তিই এখন ভরসা। গত বছরের হিসাব অনুযায়ী মোবাইলে ইন্টারনেট সেবাদানে গ্রামীনের পরেই সিটিসেলের অবস্থান ছিল। থ্রিজির যুগে জিপিআরএস আর সিডিএমএ একবারেই চলে না কিন্তু সেবা প্রদানকারীদের কি তাতে ভ্রুক্ষেপ আছে! টেলিটক থ্রিজির যে ব্যাবস্থা করেছে তা কবে জেলা শহরগুলিতে পৌছায় তা কেউই জানেনা। ওয়াইম্যাক্স প্রযুক্তিটাকে রীতিমত হাস্যকর করে ফেলা হয়েছে। বলা হয়েছিল ওয়াইম্যাক্স আছে এমন জায়গায় কোন ধরনের ডঙ্গল ফঙ্গল ছাড়াই ইন্টারনেট ব্যাবহার করা যাবে কিন্তু হল কি? হাজার টাকা দামের মডেম কিনে তাদের ধীর গতির সেবার স্বাদ নিতে হচ্ছে! ব্রডব্যান্ডের অবস্থাও খুবই নাজুক, উনাদের ব্যাবসার বাতি নিভু নিভু। সেবার মান এলাকাভেদে সম্পূর্ণ ভিন্ন, বেশী টাকা খরছ করেও গ্রাহকরা খুব ধীর গতির সেবা পাচ্ছেন। খুঁটি গেড়ে তার টানিয়ে তারা যে ব্যাবসা করছেন তাদের সমস্যা দেখার যেন কেউ নেই। বিটিআরসি ভুমিকা এই ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধী শিশুর মত বলে মনে হয়।



মোবাইল কোম্পানিগুলি যে সেবা দেয় তাকে সেবা না বলে বিরক্তিকর উপাদান বলে মনে হয়। বেশী দামে প্যাকেজ কিনে বরাদ্দ পাওয়া লিমিট ক্রস করা যায় না ধীর গতির সেবার জন্য। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে কোটি টাকার স্পন্সরশিপ আর অহেতুক খরছ না করে তারাত তাদের সেবার মান উন্নত করতে মনযোগী হতে পারত, তাই না? সরকার ব্রডব্যান্ড সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতি নরম দিলের আচরণ করলে পরিস্থিতির অনেকটা উন্নতি করা যেত কিন্তু হচ্ছে কি? সব অগ্রগতি যেন নীতিমালা তৈরিতেই সীমাবদ্ধ হয়ে আছে! প্রথমবার আমরা যখন ফ্রিতে সাবমেরিন ক্যাবল ব্যাবহারের সুযোগ পেয়েছিলাম তখনকার সরকার বিদেশে তথ্য পাচার হয়ে যাবে এই অজুহাতে সেটা নাকচ করে দেন। বর্তমান সরকার ২০২১ সালের যে রুপকল্প আমাদের সামনে তুলে ধরেছেন তার অর্জন অনেকখানি নির্ভর করছে তথ্য প্রযুক্তির ব্যাবহারের উপর কিন্তু অবকাঠামোগত ব্যার্থতার কারনে বছরে শত শত গিগাবাইট ব্যান্ডউইথ ব্যাবহার করা করা যাচ্ছে না। কোন সরকারই এই ব্যাপারে তেমন ইচ্ছুক নয় বলে মনে হচ্ছে।



পরিস্থিতির উন্নতি হলে তথ্য প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে দেশের আমুল পরিবর্তন করা সম্ভব। স্বাস্থ্য, চিকিৎসা বা শিক্ষায় আগামী দশকে বৈপ্লবিক পরিবর্তন পরিলক্ষিত হবে এক্ষেত্রে ইন্টারনেট নিশ্চিতভাবে ব্যাপক ভুমিকা রাখবে। আগামীর জ্ঞানভিত্তিক সমাজ গঠনে আমাদের প্রস্তুতি কেমন বলে মনে হয় আপনার? আমিত বলব তথৈবচ! ইন্টারনেটের এহেন অবস্থার পরও জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্স ফ্লাটফর্ম ওডেস্কে মাত্র তিন বছরে আমরা শীর্ষ তালিকার তৃতীয় স্থানে উঠে এসেছি। এছাড়া ওডেস্কে মোট কাজের ১২ শতাংশই এখন আমাদের দেশের তরুণদের দ্বারা সম্পন্ন হয়ে থাকে। ২০১২’তে সারা বিশ্বের তথ্যপ্রযুক্তি আউটসোর্সিং কাজ করা দেশগুলোর তালিকায় শীর্ষ ৩০’এ আমরা চলে এসেছি। একবার চিন্তা করুন ইন্টারনেটের বদৌলতে আমরা আরও কি করতে পারতাম?



আসছে যুগটা হবে ইন্টারনেট সর্বস্ব। এটাকে বলা হবে ইন্টারনেট সভ্যতা। যেখানে ইন্টারনেট আমাদের প্রাত্যেহিক জীবনে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে থাকবে আর এমন অবস্থায় আমরা যদি সহজে ও কম পয়সায় নেটে যুক্ত হতে না পারি তাইলে আমরা আধুনিক সভ্যতার কোন জায়গায় দাড়িয়ে থাকব তা পাঠকরা আন্দাজ করতে পারছেন! থ্রিজি ছাড়া মোবাইলে উচ্চ গতির নেট ব্যাবহারের সুযোগ কম থাকায় মোবাইল কোম্পানিদের এর আওতা বাড়ানোর ব্যাপারে আরও উদ্যোগী হতে হবে, যেহেতু তৃতীয় প্রজন্মের মোবাইলগুলি এখনও সাধারণের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে সেজন্য ব্রডব্যান্ড ব্যাবস্থার মাধ্যমে দেশের আপামর জনগণকে নেটের আওতার মধ্যে আনার জন্য সরকারকে নীতিমালা বাস্তবায়নে আরও এগিয়ে আসতে হবে। সেই সাথে মোবাইল কোম্পানি আর ব্রডব্যান্ডে ইন্টারনেট সেবা প্রদানকারীরা গ্রাহকদের অর্থনৈতিক অবস্থা বিবেচনা করে প্যাকেজের মূল্য নির্ধারনে আরও উদার হবেন বলে আশা রাখি। সময় করে পড়ার জন্য অশেষ ধন্যবাদ।



সুনামগঞ্জ, এপ্রিল ১৮, ২০১৩

[email protected]

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১:৩৩

মিজভী বাপ্পা বলেছেন: আমাদের দেশে নেট স্পিড হচ্ছে স্বপ্ন।চেহারা কাতুন বলেছে সব ব্রডব্যান্ড স্পিড ১এমবিপিএড করতে।কে করছে না।আর বলে সামনে ৪জি আনবে।আমার একটা প্রশ্ন ওরা এসব বলে ওরা কি এসবের কিছু বুঝে??যদি বুঝত তাহলে ব্যান্ডউইথ সংরক্ষণ বলে কিছু করত না গাধার দল গুলো।

আরেক গাধা হচ্ছে বিটিআরসি।গ্রাহকের কাছে থেকে গলাকাটা টাকা মেরে বিলাই আর কুপি মানে কিউবি নাম মাত্র স্পিড দিচ্ছে।বেশী ডালো করলে দেয় ফাঁপে ফেলে।তো এত টাকা দিয়ে পাবলিক ইউজাই কি ফাঁপে পরার জন্য।এর জন্য বিটিআরসি কি অভিযোগ দিলে উনারা তো কর্ণপাতই করে না।

আর ব্রডব্যান্ডের লাইন ১ এমবিপিএসের যে ঘোষণা আসছে সেটা বিটিসিএল নিধারর্ণ করে দিক যে আইএসপি ওলারা গ্রাহকের কাছে থেকে সর্বনিম্ন এই টাকা হারে ১ এমবিপিএসের লাইন দিবে।যদি সে রেটে না দেয় তাহলে যেন দ্রুত অভিযোগ জানানো হয়।আর সরকার যতই বলুক কোন আইএসপি ফাও ফাও ১ এমবিপিএসের লাইন দিবে না।

১৮ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ২:১৫

জাকারিয়া জামান তানভীর বলেছেন: বাপ্পা ভাই, সবাই টাকা বানানোর ধান্দায় হয়ত আছে কিন্তু নীতিমালা বলেত কিছু আছে নাকি ঐগুলা উনাদের ব্যাবসা বাঁচায়ে রাখার কূট কৌশল। যাই হোক আপনি কিন্তু ভালো এবং সঠিক বলছেন যে "আর সরকার যতই বলুক কোন আইএসপি ফাও ফাও ১ এমবিপিএসের লাইন দিবে না।" আপনাকে আপনার মন্তব্যের জন্য অশেষ ধন্যবাদ। ভাল থাকুন।

২| ১৮ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ২:১০

মাজহারুল হুসাইন বলেছেন: মিজভী বাপ্পা বলেছেন:

আর ব্রডব্যান্ডের লাইন ১ এমবিপিএসের যে ঘোষণা আসছে সেটা বিটিসিএল নিধারর্ণ করে দিক যে আইএসপি ওলারা গ্রাহকের কাছে থেকে সর্বনিম্ন এই টাকা হারে ১ এমবিপিএসের লাইন দিবে।যদি সে রেটে না দেয় তাহলে যেন দ্রুত অভিযোগ জানানো হয়।আর সরকার যতই বলুক কোন আইএসপি ফাও ফাও ১ এমবিপিএসের লাইন দিবে না। >>>এইটাই আসল কথা ।

১৮ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ২:১৬

জাকারিয়া জামান তানভীর বলেছেন: মাজহারুল ভাই, সহমত।

৩| ১৮ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ২:৩৯

রাহাত ইমাম বলেছেন: shohomot.....

১৮ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ৩:১৬

জাকারিয়া জামান তানভীর বলেছেন: থ্যাঙ্ক ইউ ভাইজান। ভাল থাকুন।

৪| ১৮ ই এপ্রিল, ২০১৩ সকাল ৯:১০

সোহাগ সকাল বলেছেন: ভাল্লাগলো।

শুভ কামনা।

১৮ ই এপ্রিল, ২০১৩ সকাল ১১:৫৩

জাকারিয়া জামান তানভীর বলেছেন: সোহাগ ভাই, ভালো থাকুন শুভেচ্ছা সতত।

৫| ১৮ ই এপ্রিল, ২০১৩ দুপুর ১:০৯

রেজোওয়ানা বলেছেন: ঠিক বলসেন।

৬| ১৮ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১০:০৬

জাকারিয়া জামান তানভীর বলেছেন: শুভেচ্ছা রইল রেজোওয়ানা।

৭| ১৮ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১১:০২

বাংলার হাসান বলেছেন: ভাল লেখা।

১৯ শে এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১১:৫৭

জাকারিয়া জামান তানভীর বলেছেন: ধন্যবাদ। শুভ কামনা রইল।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.