![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
পৃথিবীর ভূস্বর্গ নামক খ্যাত একটা স্থান। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দ্বারা ঘেরা দক্ষিণ এশিয়ার অত্যন্ত সুন্দর এই জায়গাটির নাম হলো কাশ্মীর। কিন্তু বিগত বছর খানিক ধরে কাশ্মীরে যা হয়েছে বা হচ্ছে তাতে এইটাকে আর "স্বর্গ" বলা যায় না। বলা যায় "দি বার্নিং প্যারাডাইস" অর্থাৎ জ্বলন্ত স্বর্গ। কিন্তু যাইহোক কাশ্মীরে মুসলিমদের উপর অথবা কাশ্মীরে কি পরিমান ক্ষয়-ক্ষতি বা নির্যাতন হয়েছে বিগত বহু বছরে তা অবশ্যই আমাদের সবার জানা। যাইহোক , দাদাদের কাছে কাশ্মীর প্রসঙ্গে কিছু জিজ্ঞেস করলেই তারা "কাশ্মীরি পন্ডিতের" প্রসঙ্গ নিয়ে হাউমাউ করে কেঁদে দেবে। আহারে কাশ্মীরি পন্ডিতদের কি পরিমান কষ্ট। মুসলিমরা নাকি একেবারে কাশ্মীরি পন্ডিত ছাইয়ের সাথে মিলিয়ে দিয়েছে , তারা একেকজন এই গুলোকে "গণহত্যা" বলেও টাইটেল দেয়। যেইগুলা আসলেই হাস্যকর। কিন্তু সবচেয়ে মজার ব্যাপার ভারতীয় শিক্ষিত সমাজেও (বিশেষ করে হিন্দু সমাজ ) এইটা নিয়ে প্রচুর কান্নাকাটি করে। আমি অবাক হয়ে গিয়েছিলাম যখন ইন্ডিয়ার সুপ্রিম কোর্টের "এক্স চিফ জাস্টিস" মারকান্দি কাটজু একজন নাস্তিক এবং প্রচুর সেক্যুলার একজন ব্যক্তি তাকে একজন মুসলিম ছেলে কাশ্মীর বিষয়ে প্রশ্ন করায় সে তাকে পাল্টা জবাব দেয় কাশ্মীরি পন্ডিত গণহত্যা নিয়ে। আমি অবাক হয়ে গিয়েছিলাম। শুধু মারকান্দি কাটজু না পুরা ভারতে দাদাদের মধ্যে কাশ্মীরি পন্ডিত নিয়ে আছে বিশাল পরিমান তামাশা। বিভিন্ন ভারতীয় গ্রুপ , পেজ ,মিডিয়া এইসব জায়গায় কাশ্মীরি পন্ডিত নিয়ে অগণিত উল্টা-পাল্টা জিনিস প্রচার করা হয়।
আজকে তাহলে দেখা যাক , পন্ডিতরা কতখানি নির্যাতিত আর মুসলিমরা।
গভার্নমেন্ট রিপোর্ট অনুসারে , ২১৯ জন কাশ্মীরি পন্ডিতকে হত্যা করা হয়েছে আর ২০০৪ এর পর , আর কোনো কাশ্মীরি পন্ডিত হত্যা করা হয়নি।
(Click This Link)
(Click This Link)
(Click This Link)
আর আনঅফিসিয়াল রিপোর্ট অনুসারে , ৩৯৯ জন কাশ্মীরি পন্ডিতকে হত্যা করা হয়েছে
(Click This Link)
জম্মু আর কাশ্মীরের পুলিশ রিপোর্ট ২০০৮ অনুসারে ২০৯ জন কাশ্মীরি পন্ডিতদের মারা হয়েছিল , ১৯৮৯ থেকে।
(Click This Link)
তবে এইবার আপনারা সবাই ভয় পেয়ে যাবেন যে , কতজন মুসলিমদের মারা হয়েছে কাশ্মীরে।
৪৩,৪৬০ জন মানুষ মারা গিয়েছে কাশ্মীরে বিগত ২১ বছরে। তাদের মধ্যে ২১,০০০ জঙ্গি , ১৩২২৬ জন বেসামরিক নাগরিককে হত্যা করে জঙ্গিরা , ৩৬৪২ জন বেসামরিক নাগরিককে হত্যা করে সিকিউরিটি ফোর্স ।
আসলে হিসাবে , এদেরকে জঙ্গি হিসাবে বলাটাও ভুল। এরাতো স্বাধীনতাকামী। সেই হিসাবে , ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে যারা ছিলেন অথবা ৭১ এ মুক্তিযুদ্ধ করেছিল অথবা স্বাধীনতাকামী ছিলেন তাদেরকেও তো জঙ্গী বলা যায়। যদিও এইটা স্টেট্ রিপোর্ট। আর আমরা জানি , কাশ্মীরে বর্তমানে সাধারণ মানুষদের কি অবস্থা। তাই বহু নিরীহ মানুষ যে টেররিস্ট আখ্যায়িত হয়ে মরতেছে তা খুব সহজেই বোঝা যায়।
(Click This Link)
তাহলে দেখা যায় কি ??? ১৬৮৬৮ জন নিরীহ বেসামরিক মুসলিমদেরকে কাশ্মীরি সিকিউরিটি ফোর্স আর জঙ্গিরা।
বলুন ,২১৯ জন পন্ডিত কোথায় আর ১৬৮৬৮ জন কোথায় ??? যদিও এইটা অফিসিয়াল রিপোর্ট আনঅফিসিয়াল সংখ্যাটা হলো প্রায় ১০০,০০০ এর মতন
আর কাশ্মীরে ধর্ষণ , গণধর্ষণ আর ইন্ডিয়ানা সোনার আর্মিদের , সিকিউরিটি ফোর্স দ্বারা কি পরিমান আকাম-কুকাম হয়েছে আর কাশ্মীরে কি বিশাল আকারে হিউমান রাইটস এর অপব্যবহার হচ্ছে তা লিখতে গেলে হয়তো ব্যাপক সময় লাগবে তাই এই লিংক থেকে পড়ে নিন।
(Click This Link)
শুধু তাই না যাদের সেই ২ দশক আগের পন্ডিত নিয়ে চোখে খালি জল আসে তাদের বলি , ১৯৯০ সালে ইন্ডিয়ার "সেন্ট্রাল রিজার্ভ পুলিশ" কাশ্মীরি প্রতিবাদকারীদের উপরে গুলিবর্ষণ করে ৫০ জন মুসলিমকে মেরে ফেলে। যদিও যারা ওই ১৯৮৯ সালে অল্প কয়েকজন পন্ডিতের মৃত্যুতে চোখের পানি ভাসিয়ে দেয় আর ১৫ বছর বসে ২১৯ জন কাশ্মীরি পন্ডিত হত্যাকে গণহত্যা আখ্যাইয়িত করে।( https://en.wikipedia.org/wiki/Gawkadal_massacre) তারা এইটাকে কি বলবে??? আমি তো শুধু ১৯৯০ এর কথা বললাম। ইন্ডিয়ার সোনার মিলিটারি দ্বারা এর চেয়েও নিম্নমানের কাজ ঘটেছে আর প্রতিনিয়ত ঘটছে । তার সামান্য একটা উদাহরণ দেই , কুনান পুষ্পরায় , ২৩ ফেব্রুয়ারী ১৯৯১ সালে ২৩ জন মেয়েকে ইন্ডিয়ান আর্মি গণধর্ষণ করে যদিও "হিউমান রাইটস ওয়াচ" দাবী করে সংখ্যাটা ১০০ এর মতন। কিন্তু আবাল ভারতীয় সরকার এইটাকে গুজব বলে উড়িয়ে দেয়। আর সেই নরপশু গুলো এখন পর্যন্ত সমাজে বীরদর্পে হাঁটা-চলা করে । কিন্তু "ইন্টারন্যাশনাল হিউমান রাইটস অর্গানাইজেশন" ভারতীয় সরকারের উপর প্রচুর সন্দেহ পোষণ করে। আর যার ফল স্বরূপ , পরবর্তীতে জানা যায় , ধর্ষণের শিকার মেয়েগুলোর মধ্যে শুধু মাত্র ২ জন মেয়ে ইউনিভার্সিটি জয়েন করেছিল। লোক লজ্জার ভয়ে ধর্ষণের স্বীকার বেশির ভাগ মেয়েরাই অষ্টম শ্রেণীর পর পড়াশুনা বন্ধ্ করে দেয়। বেশীর ভাগ পরিবার দাবী করে তাদের মেয়েদের বিয়ে দেওয়া অনেক কষ্টকর ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। একজন ব্যক্তিকে বাধ্য হয়ে তার ১৬ বছরের মেয়েকে ৫০ বছর বয়সী বৃদ্ধর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করে। ভারতীয় আবাল সরকার এইটাকে বড় মাপের গুজব বলে চালিয়ে দেয়। এখন পর্যন্ত সেই সোনার ভারতীয় "জওয়ানরা" বুক ফুলিয়েই সমাজে হাটছে। (Click This Link)
এইবার আসি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ যেইটা নিয়ে দাদাদের চোখের জল ভেসে যায় সেটা হল পন্ডিতদেরকে তাদের অঞ্চল থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। সংখ্যাটা প্রায় ১০০,০০০-১৪০,০০০ এর মতন ব্যক্তি নিজেদের ঘর ছেড়েছিলো। (Click This Link)
কিন্তু প্রবাদে আছে হাতি মরলেও লাখ টাকা। কাশ্মীরি পন্ডিতদের জন্য ২০০৮ সালে ১১৬৮ কুটি রুপী দেওয়ার ঘোষণা
(Click This Link)
শুধু তাই না , কাশ্মীরি পন্ডিতদের জন্য স্পেশাল কলোনী/এলাকা তৈরী করা হচ্ছে। তাদের জন্য চাকরী সহ অন্যান্য জিনিসেরও ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
(Click This Link)
(Click This Link)
(Click This Link)
তাহলে দেখা যায় কাশ্মীরি পন্ডিতদের কত আদর যত্ন। যদিও তাদের সাথে যা হয়েছে তা নিঃসন্দেহে খারাপ।
কিন্তু মুসলিমরা কি মানুষ না ???
গুজরাট দাঙ্গায় প্রায় ২৫০০ এর মতন মুসলিম মারা গিয়েছিলো বলে জানা যায়। (Click This Link) কিন্তু দাদারা তারপরও কান্নাকাটি করে যে , না ২৫০০ সংখ্যাটা ভুয়া আসলে সংখ্যাটা হলো ৭৯০ জন মুসলিম। তো ঠিক আছে আমরা ৭৯০ সংখ্যাটাকেই ঠিক হিসাবে ধরি। সমস্যা কোথায় ??? ১৫ বছরে ২১৯ জন পন্ডিত হত্যাকে "গণহত্যা" বলা হয় তাহলে শুধু ২০০২ এর গুজরাট দাঙ্গায় মৃত ৭৯০ জন মুসলিমকে হত্যাকে কি বলা হবে ????
তাহলে আরেকটু কথা যোগ করি ২০১৪ সালে শুধু ভারতে ৬৪৪ দাঙ্গা হয়েছে। (Click This Link) এখন এই ৬৪৪ দাঙ্গায় মুসলিমদের কি ক্ষতি হয়েছে তা খোদ আল্লাহ ব্যাতিত ঠিক ভাবে বলা অসম্ভব।
যাই হোক এইবার গুজরাট দাঙ্গায় শান্তিকামী হিন্দু দাদারা কি করেছিলেন একটু দেখা যাক।
গুজরাট দাঙ্গায় ৭৯০ জন মুসলিম মারা হয়েছিল ( আরো মারা হয়েছিল কিন্তু দাদারা স্বীকার করবে না ) তাহলে ১০০,০০০ এর মতন বা তার বেশি পন্ডিতরা নিজেদের এলাকা ছেড়েছিলো। ২৭ ফেব্রুয়ারী এই গুজরাট দাঙ্গা শুরু হয়েছিল ২৭ মার্চের মধ্যে ১০০,০০০ এর মতন মানুষ ১০১ টি রিলিফ ক্যাম্পে আশ্রয় নেয় । শুধু মাত্র ১ মাসে শান্তিকামী দাদারা এই কাজ করেন। আর ২ সপ্তাহ যেতে না যেতে রিলিফ ক্যাম্পে মানুষ সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ১৫০,০০০। শুধু তাই না দাদাদের গভর্নমেন্ট চাপ প্রয়োগ করছিলো ক্যাম্পে আশ্রয়কারীদের ক্যাম্প ছাড়ার জন্য। ২৫,০০০ ব্যক্তিকে জোরপূর্বক ক্যাম্প ছাড়ানো হয়। আর আমাদের সর্বোচ্চ শান্তিকামি খোদ মোদী দাদা রিলিফ ক্যাম্পের বিরুদ্ধে স্পিচ/ভাষণ দান করেন। আর রিলিফ ক্যাম্পে খালি কত ব্যক্তি ছিল তা শুধু আল্লাহই জানেন। (Click This Link#Relief_efforts)
দেখুন , শুধু তাই না গভর্নমেন্ট ৩২০ কুটি রুপি দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের সাহায্যের জন্যও বরাদ্দ করে গুজরাট দাঙ্গায় । যেই খানে কাশ্মীরি পন্ডিতদের জন্য সংখ্যাটা ছিল ১১৬৮ কুটি রুপি আর কাশ্মীরি পন্ডিতদের ঘর-বাড়িও তুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করেন মোদী দাদা সেই ঘর-বাড়ি তৈরী করার হিসাব তো আলাদাই।
শুধু তাই না আপনি শুনলে অবাক হয়ে যাবেন , এই দাঙ্গায় ১০০,০০০ মুসলিমরা ঘর হারায় , ১১০০ হোটেল হারায় , ১৫,০০০ মুসলিমদের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ধ্বংস হয়, ৫০০০ মুসলিমদের যানবহন ধ্বংস হয়।( Click This Link) আর মোদী বাবু তাদেরকে ১০০,০০০ রুপী দিয়ে সাহায্য করে তাও আবার শুধু নিহত পরিবারদের। সেই ক্ষেত্রেও শান্তিকামী হিন্দু দাদারা বৈষম্য দেখায় তারা ট্রেনে পুড়ে নিহত হওয়া হিন্দু পরিবারদের ২০০,০০০ রুপি করে দেয়। কিন্তু মুসলিমদের দেয় খালি ১০০,০০০ রুপী। (Click This Link#Relief_efforts)
শুধু তাইনা , মুজাফ্ফর নগর দাঙ্গায় ৫০,০০০ মানুষদের তাদের ঘরবাড়ি থেকে সরিয়ে আনা হয়। তাদের সিংহ ভাগই ছিল মুসলিম (Click This Link)
তাহলে এই ১০০,০০০ মুসলিম যারা ঘর হারায় আর ১৫,০০০ মুসলিমদের ব্যবসা ধ্বংস হয় গুজরাট দাঙ্গায় সেইটার কি ????
আর এই গুলা খালি ২টা সাধারণ দাঙ্গার কথা বললাম সব গুলার হিসাব অসম্ভব আর বাকি গুলোর করা দরকারও মনে করলাম না। ২টা দিয়েই বুঝলাম।
শুধু তাই না আরো একটা কথা যোগ করি যারা পন্ডিতদের নিয়ে এত কান্না করে তাদের জানা উচিত জম্মু কোনো এক সময় মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ এলাকা ছিল কিন্তু বর্তমানে এইটা হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ এলাকা। কিভাবে এইটা হলো তা বুঝতে এই লিংকটিতে ক্লিক করুন। (Click This Link)
তাহলে এখন কিছু প্রশ্ন থেকে যায়।
# ১৫ বছরে ২১৯ জন পন্ডিত হত্যাকে গণহত্যা বলা হবে না ২১ বছরে ১৬৮৬৮ নিরীহ মুসলিম হত্যাকে গণহত্যা বলা হবে নাকি গুজরাট দাঙ্গা সহ বিভিন্ন দাঙ্গায় হাজার হাজার মানুষ হত্যাকে গণহত্যা বলা হবে ???
# ১০০,০০০-৫০০,০০০ এর মতন কাশ্মীরি পন্ডিত যাদের ঘর ছাড়া করা হয় পরবর্তীতে তাদের ১১৬৮ কুটি রুপী দিয়ে সাহায্য করা হয়। তাদের পুনরায় ঘর বাড়িও বানিয়ে দেওয়া হয়। কাজ-কর্মের ব্যবস্থাও করা হয় তাদেরকে অসহায় বলা হবে না গুজরাট দাঙ্গায় , মুজাফ্ফরনগর দাঙ্গায় লাখ লাখ মুসলিম ঘর ছাড়া হয়েছিল। হাজার হাজার মুসলিমরা নিজেদের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান হারায় তাদের জন্য বলতে গেলে কিছুই করা হয়নি। তাহলে কাদেরকে অসহায় বলা হবে ???
# ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে/বাংলাদেশের ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধে যারা স্বাধীনতাকামী ছিলেন তাদের কি টেররিস্ট বলা হবে ?????
©somewhere in net ltd.
১|
০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৯ রাত ১১:২২
Iqbal Sheikh বলেছেন: কোন মিডিয়ায় মুসলিমদের উপর এত জুলুম, অত্যাচারের এমন সত্য কথা বলার সৎ সাহস দেখাতে চায় না। কারন তারা অন্যদের মানুষ মনে করলেও মুসলিমদের মানুষ মনে করে না।আপনাদের পোষ্টের কিছু লিংক ওপেন হচ্ছে না আশাকরি কি সমস্যা হয়েছে তা দেখবেন। ধন্যবাদ