নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি একটি পথ, আপনি চাইলে হেঁটে দেখতে পারেন....

জীয়ন আমাঞ্জা

পৃথিবীর সবচেয়ে বড় দর্শন হল হিসাব বিজ্ঞানের ডেবিট এবং ক্রেডিট । সবসময় যতখানি ডেবিট, ঠিক ততখানিই ক্রেডিট হয় । পরকালের হিসেব যা-ই হোক, এই ইহকালে আমরা ঠিক যেভাবে শূন্য হাতে পৃথিবীতে এসেছি, সেভাবে শূন্য হাতেই পৃথিবী ছেড়ে যাব । এটাই পৃথিবীর আবর্তনিক নিয়ম । অনেকে আমরা এটা বুঝতে ব্যর্থ হই ।আপনি কারো ক্ষতি করবেন তো আজ অথবা কাল আপনার ক্ষতি হবেই হবে । ভালো করলেও তার ফল আপনি জীবদ্দশাতেই পাবেন ।অনেকে দেখবেন রাস্তাঘাটে অযথা হোঁচট খায়, অসুখে ভোগে- এসব এমনি এমনি নয়, হয় এর অতীত, নয়তো ভবিষ্যৎ প্রসারী কোন কারণ আছে । যদি আপনি কারো ক্ষতি না করেন, তবে আমি নিশ্চয়তা দিচ্ছি, আপনার কোন ক্ষতি হবে না । কেউ চেষ্টা করলেও আপনার ক্ষতি করতে পারবে না ।শুদ্ধ থাকুন, শুদ্ধতার শুভ্রতাকে উপভোগ করুন । জীবন সুন্দর হবে ।আমি সবার মতের প্রতিই শ্রদ্ধাশীল।আশা করি আপনিও তাই।সৌজন্যবোধ ও মানবতার জয় হোক !

জীয়ন আমাঞ্জা › বিস্তারিত পোস্টঃ

মুখের সৌন্দর্য এবং আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি

১৪ ই মার্চ, ২০১৫ রাত ১১:৫২

(এই প্রবন্ধে সৌন্দর্য বলতে প্রত্যেকবার নারী পুরুষ উভয়ের প্রতিই নির্দেশ করা হচ্ছে। ব্যাপারটি বিশেষভাবে বিবেচনায় রাখতে বলা হল।)



সৌন্দর্য জিনিসটা বেশ অপেক্ষিক, তবে চিরন্তন। প্রাকৃতিকভাবেই মানুষ সৌন্দর্যের পূজারী, এবং এ কারণেই প্রকৃতি তার প্রতিটি পরতে পরতে লোভাতুর করে সাজিয়ে রেখেছে সৌন্দর্যের পসরা। গাছের ফুল পর্যন্ত সৌন্দর্য নামক কলাটির আশ্রয় নেয় ভ্রমরকে আকৃষ্ট করতে। আমরা আলোচনাটা এখান থেকেই শুরু করতে পারি।



ফুল ভ্রমরকে আকৃষ্ট করতে সৌন্দর্যের আশ্রয় নেয় দুইভাবে, এক. তার বাহ্যিক রূপ, দুই, তার ঘ্রাণ। যে ফুলে ঘ্রাণ অল্প, বা ঘ্রাণ নেই তাদের প্রকৃতি চমৎকার রূপ দান করে, আর রূপহীন ফুলকে সাধারণত দেয় মোহনীয় ঘ্রাণ। কিছু ফুল দুইটিই একসাথে পায়, আর কিছুই পায় না এমন ফুলের সংখ্যাও কম নয়। কিন্তু তাই বলে তাদের বংশবিস্তার থেমে থাকে না, পৃথিবীতে তাদের প্রয়োজনও শেষ হয় না।



মানুষের ব্যাপারটাও একই রকম। যার রূপ নেই, স্রষ্টা তাকে দেন গুণ, গুণ না থাকলে অন্তত রূপ। আরো বড়ো কথা, প্রতিটি মানুষকেই সৃষ্টি করা হয় কিছু না কিছু চমৎকারিত্ব বা অসাধারণত্ব দিয়ে। আমাদেরকে আগে এই অসাধারণত্বের ব্যাপারে সচেতন হতে হবে, নিজের অবস্থান, সম্মান ও প্রয়োজনীয়তাকে প্রতিষ্ঠা করতে হবে। তবেই মানুষ আমাদের প্রাপ্য সম্মান দেবে।



কেউ কালো বলে যদি মন খারাপ করে, কিংবা কেউ যদি তার রূপ নিয়ে বড়াই করে, তবে তাকে আমি ধিক্কার জানাই। ধিক্কার জানাই এই জন্যে যে, সে কেবল নিজেকে একটা নিছক শরীর বিবেচনা করছে। একটা মাংসপিণ্ডই শুধু!

আমার কোন একটি ইংরেজি কবিতায় এক নারী উচ্চারণ করেছিল (Boldly), I am a woman, more than a body!



আপনাকে অবশ্যই শরীর সর্বস্ব হলে চলবে না। তারচেয়েও বেশি কিছু, বড় কিছু হতে হবে। আর এই পরামর্শ কেবল নারীদের প্রতি নয়, সৌন্দর্য নিয়ে উৎকণ্ঠা নারী পুরুষ সবারই আছে।



ফাউস্ট নাটকের ইংরেজি অনুবাদ খ্রিস্টোফার মারলো'র ডক্টর ফস্টাস নাটকটিতে একটি চমৎকার কথা আছে, উদ্ধৃতি হুবহু মনে নেই, বোধহয় এমন ছিল, We know, heaven is beautiful, and heaven is made for man. So man must be more beautiful than the heaven!



এই কথার পর আর লাগে কী?



সমাজের দৃষ্টিভঙ্গীর কথা বলেন? সমাজকে আপনার পায়ে এনে ফেলতে পারেন না আপনার যোগ্যতা দিয়ে? রেশমী ঘোষ নামের মডেলটা কি খুবই রূপবতী কেউ? কিংবা বিশ্বনন্দিত মরগ্যান ফ্রিম্যান?



হ্যাঁ, বিশ্বকে জয় করতে বা নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে গায়ের রং কখনই জরুরি কিছু নয়। জরুরি হচ্ছে আপনার কর্ম যোগ্যতা, আপনার ব্যক্তিত্ব। আপনি আমি কেই ফেলনা নই পৃথিবীতে। নিজের অসাধারণত্বকে খুঁজে বের করুন এবং প্রতিষ্ঠা করুন।



যাইহোক, কথাগুলো হয়ত আপনাদের কানে ডেল কার্নেগির উপদেশের মতো কেতাবি মনে হচ্ছে, শুনতে ভালো লাগে, প্রেরণা লাগে, কিন্তু বাস্তবতার সাথে মিল পাওয়া যায় না, তাই তো?

এটা কেবলই আপনার উপলব্ধির অভাব। উপরে যা বলেছি সেটাই একমাত্র সত্য।



তারপরও আপনাদের খুশি করার জন্য বলি, সৌন্দর্য হয় কীসে? কোন জিনস আচমকা একটা মানুষের প্রতি আপনার নজর কেড়ে নেয়? ভেবে বলুন তো!



উত্তর হচ্ছে পোশাক। ভীড়ের মধ্যে ওই মানুষটাকেই আমাদের সবার আগে চোখে পড়ে, যে আকর্ষণীয় বা উজ্জ্বল পোশাক পরে আছে। আপনি অন্যমনষ্ক হয়ে হাঁটছেন, পাশ দিয়ে চমৎকার পরিপাটি পোশাকের কেউ হেঁটে যাচ্ছে, আপনি চোখ না ফিরিয়ে পারবেন না। ধ্যান আপনার ভাঙবেই! নিজেকে আকর্ষণীয় করতে এজন্যই ফ্যাশান ডিজাইনিংয়ে কালারকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়। আপনি যত সুদর্শনই হন, আপনার পোশাক যদি মানানসই না হয় বা অপরিপাটি হয় তবে আপনার দিকে কারো চোখ সহসা যাবে না। এটাই বাস্তবতা।



পোশাকে আকৃষ্ট হয়েই আমরা সাধারণত একটা মানুষের মুখের দিকে তাকাই। তখন গুরুত্ব পায় মানুষটার মুখের সৌন্দর্য।



এবার আরেকটু রহস্য করি, বলুন তো মুখের সৌন্দর্যের ভিত্তি কী?



উত্তর হচ্ছে, চোখ। ব্যাখ্যা করার সময় পাব না হয়ত, সংক্ষেপে বলি, কোন ভাস্কর্য, কোন চিত্রই পূর্ণতা পায় না চোখের অবস্থান ছাড়া। চোখ খুবই গুরুত্পূর্ণ। চোখের চাহনির ব্যাপারে সচেতন হোন।



ফিরে আসি মুখের সৌন্দর্যে, এই সৌন্দর্যের মানদণ্ড কী? চামড়ার রঙ? মেলানিন?

মোটেই না। মুখের সৌন্দর্য নির্ভর করে চামড়ার সতেজতার উপর। আপনার রঙ যাই হোক, চামড়া যদি খসখসে হয়, প্রাণবন্ত না হয় তবে আপনাকে দেখতে বিরক্তিই লাগবে। চামড়ার অভ্যন্তরে জল কণার পর্যাপ্ততা আছে কিনা, চামড়া চকচকে টসটসে কিনা সেটা খেয়াল করুন, সৌন্দর্যের রহস্য এখানেই। স্নো- ক্রিম নয়। একবার চর্চা করেই দেখুন।



এরপরে ভূমিকা রাখে চিবুক তথা মুখের পেশীর সঞ্চালন এবং গ্রীবার সঞ্চালন। সৌন্দর্য কিছু নয়, ব্যাপারটা হচ্ছে স্মার্টনেস। আর স্মার্টনেস নির্ভর করে পায়ের পাতার উপর। আপনি কিভাবে পা ফেলছেন, পায়ে ভর দিয়ে কিভাবে দাঁড়াচ্ছেন তার উপর। যার পায়ের স্টেপ যতটা সাবলীল ও সচেতন, সে ততটাই স্মার্ট।



সৌন্দর্য সম্পর্কে বিশেষ আর কিছু বলার নেই। এবার সমাজের প্রতিবন্ধকতা নিয়ে একটু বলা যেতে পারে। বিয়ের জন্য পাত্র পাত্রীর গায়ের রঙ এখনও গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু ক্যারিয়ার নিয়ে ভাবার প্রবণতা সমাজে ইতোমধ্যেই তৈরি হয়েছে। বৌ সুন্দর হলে যে ছেলেমেয়েও সুন্দর হবে এই ধারণা মিথ্যা। আইনস্টাইনের চেহারা অসুন্দর ছিল আপনারা জানেন। তাঁকে একবার এক রূপসী প্রস্তাব করেছিল, আমাকে বিয়ে কর, তাহলে আমাদের সন্তান আমার মতো সুন্দর হবে এবং তোমার মতো বুদ্ধিমান হবে।

আইনস্টাইন ভ্রু কুঁচকে বলেছিলেন, উল্টোটাও তো হতে পারে।



সন্তান কেমন হবে সে নিশ্চয়তা কেউ দিতে পারে না। কেবল মা নয়, বাবা মা দুজনেরই যে ভূমিকা আছে, এটা তো আমাদের সবারই জানা আছে। আমি অনেক পরিবারই দেখেছি মা কুৎসিত অথচ ছেলেমেয়েগুলো পুতুলের মতো! অসুন্দর সন্তান আজকাল কয়টা দেখা যায়?

আর সুন্দরী স্ত্রীর রূপ নিয়ে যে বাতুলতা সে বাতুলতা বিয়ের পর বড়োজোর দুই বছর থাকে। এরপরে সুন্দরী রমণীর রূপের আকর্ষণ কেবল পরপুরুষের কাছেই থাকে, স্বামীর কাছে আর তার কদর থাকেও না। এ প্রসঙ্গে দাম্পত্য সম্পর্ক নিয়ে একটি প্রবন্ধে বিস্তারিত আলোচনা হবে। আজ এ পর্যন্তই।



পরিশেষে বলি, সমাজ এক দিনে বদলায় না। তবে বদলাচ্ছে। আমরাই সম্মিলিতভাবে এই বদলকে আরো বেগবান করতে পারি।



পুনশ্চ:-

পৃথিবীর সব বস্তুর মধ্যেই সৌন্দর্য নিহিত আছে। প্রেম, মায়া কিংববা পবিত্র মন নিয়ে যার প্রতিই তাকাবেন, সেই আপনার চোখে সুন্দর হয়ে ধরা দেবে।

মন্তব্য ৯ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৯) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই মার্চ, ২০১৫ রাত ১২:৩৭

এইস ম্যাকক্লাউড বলেছেন: like it

১৫ ই মার্চ, ২০১৫ রাত ১:৩৫

জীয়ন আমাঞ্জা বলেছেন: ধন্যবাদ।

২| ১৫ ই মার্চ, ২০১৫ রাত ১২:৫৫

জীয়ন আমাঞ্জা বলেছেন: আমি সুন্দর নই গো,
সুন্দর তোমার দৃষ্টিভঙ্গি। :-D

৩| ১৫ ই মার্চ, ২০১৫ রাত ১:০৩

মনিরা সুলতানা বলেছেন: খুব ভাল লেখা

১৫ ই মার্চ, ২০১৫ রাত ১:৩৬

জীয়ন আমাঞ্জা বলেছেন: ধন্যবাদ।

৪| ১৫ ই মার্চ, ২০১৫ রাত ৩:১৪

ডেড আকাশ বলেছেন: আচ্ছা ঠিক আছে কোন প্রবলেম নাই, ব্যাপার না

১৫ ই মার্চ, ২০১৫ বিকাল ৩:৩৪

জীয়ন আমাঞ্জা বলেছেন: বুঝিনি!!
??

৫| ১৫ ই মার্চ, ২০১৫ বিকাল ৫:৩৫

শায়মা বলেছেন: বাব্বাহ !!! এত কিছু!

১৬ ই মার্চ, ২০১৫ বিকাল ৫:২১

জীয়ন আমাঞ্জা বলেছেন: সাহিত্যিক, দার্শনিক, বিউটিশিয়ান, কাউন্সেলর.. সব একসাথে! :-P

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.