![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মধ্যবিত্ত পরিবারের ব্যাচেলর ছেলে!!! ফেসবুকঃ https://www.facebook.com/rajshahjahan
আজকাল ঘরের খাবার বাদ দিয়ে বাইরের দামী রেস্টুরেন্ট এ খাওয়াটা একটা ট্রেন্ড হয়ে গেছে। দামী আসবাবপত্রে ঘেরা, রঙিন আলোতে সাজানো, আধুনিক সব মুখোরচক খাবারের রেস্টুরেন্ট। দেশী, থাই, চাইনিজ, ইন্ডিয়ান, মেক্সিকান নানান দেশের নানান পদের খাবার। টাকায় মেলে সবই। জন্মদিন আর বিবাহবার্ষিকী থেকে শুরু করে সব ধরনের অনুষ্ঠানে রেস্টুরেন্ট ছাড়া জমেনা।
ছোটবেলায় বাবা-মা'র সাথে এসব দামী রেস্টুরেন্ট এ যাওয়া হতো মাঝে মাঝে। কিছু ঘটনার পর পরিবারের কেউ আর আমাকে তাদের সাথে বাইরে খাবার খেতে নিতে চায়না। বড় ভাই ভাবী আসার পরে তো একেবারেই না। বাব-মা ও অনেক আগেই আমার অনেক অত্যাচার সহ্য করে শিক্ষা নিয়ে ফেলেছে। ছোট ভাইটাকে মাঝেমাঝে খাওয়ানোর লোভ দেখিয়ে সাথে নিয়ে যাই। সেও কোনরকমে খাবার খেয়েই যত তাড়াতাড়ি রেস্টুরেন্ট ত্যাগ করতে পারে।
আমার অবশ্য বাইরের খাবারের প্রতি আগ্রহ নাই তেমন। তবুও মাঝে মাঝে বাইরের খাবারের প্রতি আগ্রহ হয়ে যায়। বেশ কয়েকদিন ধরে ছোট ভাইটাকে চাইনিজের লোভ দেখাচ্ছি। রাজি হয় হয় ভাব। আশা করছি হয়ে যাবে। শুনেছি ধানমন্ডির দিকে নাকি অনেক সিকিউরড একটা চাইনিজ রেস্টুরেন্ট হয়েছে। মন্ত্রী, এমপি আর ফোরেনার দের আনাগোনা সেখানে। দেশী মানুষদেরও অল্পসল্প যাতায়াত আছে।চারিদিকে পুলিশের করা নিরাপত্তা। ভিতরে নিজস্ব সিকিউরিটি। সোয়াত টিমের রাউন্ড চলে।
সন্ধ্যায় ছোট ভাইকে সাথে নিয়ে পুরাতন একটা গাড়ি নিয়ে বের হয়েছি। এটা আমার দাদা'র গাড়ি ছিল। মার্সিডিজ! এটা এক কথায় ভালোবাসা। নতুন অনেক গাড়িকে অনায়াসে হারিয়ে দিতে পারে। কালো রঙ এখনো চকচক করে। এরকম গাড়ি নেয়ার কারনও আছে। এতো দামী রেস্টুরেন্ট এ যাচ্ছি একটা ব্যাপার আছেনা। পুরাতন দামী গাড়ি দেখলে ইজ্জত বেরে যাবে। রেস্টুরেন্ট এ পৌঁছে ছোট ভাইকে ভিতরে ঢুকতে বলে আমি গেলাম গাড়ি পার্কিং করতে।
গাড়ি পার্কিং করে ফিরে গেটের সামনে দাঁড়িয়েছি। আমার সামনে একজন ছয় ফুট লম্বা কালো লোক দাঁড়ানো। বেশ সুসাস্থ্য তার। বয়স অনুমান করা কঠিন তবে ৩৫ এর কম নয়। তাকে দেখে খুব সুবিধার মনে হচ্ছেনা আমার। কেমন যেনো ররহস্যময় তার হাসি আর ভাংগা ভাংগা ইংরেজি। কিছু বলতে গিয়েও বলতে পারছিনা। যদি ছোট ভাই দেখে ফেলে। গেট পার করে ভিতরে চলে আসলাম। খাবার অর্ডার করে বসে আছি। ছোট ভাই সেলফি তুলছে। আর আমি রহস্যের জালে আটকে আছি।
ফ্রেশ হউয়ার কথা বলে ওয়াশরুমে যাচ্ছি। ওয়াশরুমে ঢুকতেই সেই লোকটা। আমাকে দেখে কিছুটা ভড়কে গেলেন এটা আমি বুঝতে পারছি। আমি কিছু না বলে মুখ হাত ধুয়ে চলে আসলাম। মনে মনে কত কিছু ভাবছি। লোকটার কোমড়ের দিকে কেমন জানি অস্বাভাবিকভাবে ফোলা ছিল। জংগী হবে, নাকি প্রোফেশনাল কিলার। জংগী হলে একা হবে কেন? আর প্রোফেশনাল কিলার হলে টার্গেট কে? উনি ভিতরের ঢুকলেন কিভাবে? পিছনের টেবিলে তাকাতেই চোখে পরলো, "Reserved for, Minister of external affairs" লেখা কার্ড।
খাবার চলে আসছে আমাদের। আমি না খেয়ে বসে আছি। ছোট ভাই এবার বুঝতে পারছে। উঠে চলে যাবে বলে হুমকিও দিচ্ছে। আমি কোনরকম কোন ঘটনা ঘটালেই ওর সাথেও আমার আর বাইরে খাওয়া হবেনা। অগত্যা খাওয়া শুরু করলাম। অবশ্য ভালোই হলো খাওয়ার ভাব নিয়ে থাকলে ওই লোকটি ভাববে আমি কিছু বুঝতে পারিনি। লোকটি আমাদের পাশের টেবিলে বসে আছে। উনার চোখে অপেক্ষা। আমিও এর শেষ না দেখে ছাড়ছিনা।
পররাষ্ট্র মন্ত্রী চলে এসেছে। আমাদের ঠিক পিছনের টেবিলে। সাথে তার মেয়ে। উনার মেয়ে আমার ছোট ভাইয়ের বান্ধবী। একই স্কুল থেকে ও লেভেল কমপ্লিট করলো এবার। মেয়ের রেজাল্ট এর সেলিব্রেশান খুব সম্ভবত। আমাদের মতোই। কালো লোকটির উপর আমার করা নজর। বারবার কোমড়ে হাত দিচ্ছেন। আমার সন্দেহ আরো বেরে যাচ্ছে। রেস্টুরেন্ট এ আসার একমাত্র সংগীকে হারানোর ভয়ও কাজ করছে।
হঠাৎ কালো লোকটি উঠে দাঁড়িয়েছে। দাঁড়িয়ে কোমড়ে হাত দিতেই আমি এক লাফে উনার পিছনে হাজির। কেউ কিছু বুঝে উঠার আগেই চারদিকে সিকিউরিটি সবাইকে ঘিরে ফেলেছে। লোকটি হাত উচু করে দাঁড়িয়ে পরেছে। আমি অনেক খুশী। যাক এবার আমি সাকসেসফুল হবো। এই লোকটার কাছে বন্ধুক আছে বলে চিল্লানো শুরু করেছি।
সিকিউরিটি উনাকে সার্চ করে এক ধরনের আফ্রিকান ফল পেলেন। কোন বোমা-বারুদ নাই। মন্ত্রী উঠে এসেছেন এবার। ফল দেখে মন্ত্রী অনেক খুশী হয়েছেন মনে হচ্ছে। আমি এবারেও ব্যার্থ হয়ে যাচ্ছি। মন্ত্রী আর ওই কালো লোকটি একজন আরেকজনকে জড়িয়ে ধরে আফ্রিকান কোন এক ভাষায় কথা বলছেন। একটু পরে লোকটি চলে গেলো।
মন্ত্রী আমাকে কাছে ডেকে বললেন, উনি নাকি একবার ওই লোকের দেশ সফর করতে গিয়ে ওই লোকের জীবন বাঁচিয়েছিলেন। আর এই ফল মন্ত্রীর খুব প্রিয়। যেহুতু এখানে বাইরের খাবার এলাউ করেনা তাই উনি এভাবে ফলটা দিতে চেয়েছিলেন।
২১ শে জুলাই, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:০৪
শুন্য বাইট বলেছেন: হাহাহা মাফ করবেন আমি বড়লোক নই শুধু দামী রেস্টুরেন্ট এ যাও্যার জন্য গল্প ফেঁদেছিলাম
©somewhere in net ltd.
১|
২১ শে জুলাই, ২০১৭ রাত ১২:০৬
বেনামি মানুষ বলেছেন: কমেডি থ্রিলার এর চেষ্টা।
সত্যি, চেষ্টাই সার হয়েছে। মাঝখানে আপনার বড়লোকি পড়লাম।