নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মধ্যবিত্ত পরিবারের ব্যাচেলর ছেলে!!! \nফেসবুকঃ \nhttps://www.facebook.com/rajshahjahan

শুন্য বাইট

মধ্যবিত্ত পরিবারের ব্যাচেলর ছেলে!!! ফেসবুকঃ https://www.facebook.com/rajshahjahan

শুন্য বাইট › বিস্তারিত পোস্টঃ

বৃষ্টিভেজা খিচুড়ি (একটি জগাখিচুড়ী গল্প অযথা সময় নষ্ট)

২১ শে জুলাই, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:০৭

বৃষ্টি পরার একটা শব্দ আছে। টিনের চালে এক ধরনের শব্দ, কংক্রিটের ছাদে এক ধরনের, কাঁচা মাটিতে এক, পাকা মাটিতে আরেক, গাছের পাতায় পরে আরেক হরেক রকমের জায়গায় হরেক রকমের শব্দ। বৃষ্টির শব্দই একটা নেশা। একেবারে জনমানবশূন্য জায়গাতেও বৃষ্টির শব্দ নেশা জাগায়। যেখানে দূর দূরান্তে কেউ নেই শুধু বৃষ্টির ফোঁটা আরেক বৃষ্টির ফোঁটার সাথে লেগেও একটা শব্দ তৈরী করে।

শহরের বৃষ্টির মৌসুম শুরু হয়েছে। সকাল সন্ধ্যা হঠাৎ হঠাৎ ঝুপঝুপ করে বৃষ্টি ঝরছে। মাঝ রাত্রিতে চারিদিক যখন সারাদিনের বৃষ্টিতে অলস সময় কাটিয়ে নিস্তেজ, অল্প মাত্রার ঠান্ডা আবহাওয়া যখন প্রশান্তির ঘুম এনে দিয়েছে তখনও হঠাৎ হঠাৎ বৃষ্টি ঝরে যাচ্ছে। ক্লান্তিহীন ঝরে পরা। ঝরে পরাতেই পরম মুক্তি। মাঝ রাত্রিতে শহরের আলোতে বৃষ্টির ঝরে পরার দৃশ্য যে দেখেনি সে কোন দিনই এই মুক্তির মানে বুঝবেনা।

সরকারী স্টাফ কোয়ার্টার ধানমন্ডি পনেরো। শহরে বন্যার স্বাদ। বিড়ম্বনা বন্যায় ছিলনা কবে! রাস্তায় হাটু জল তবুও এখানে সন্ধ্যা নামে ভিন্ন আমেজে। রংগীন সন্ধ্যা। সারাদিন অপেক্ষার পরে খুলে বেলাল মামা'র সিংগারার দোকান আশেপাশের সবার উপচে পরা ভীর। অমৃত সে গরম গরম সিংগারা! রাস্তার দুই পাশের চায়ের দোকান গুলোতেও ভীরের কমতি নেই। উপর থেকে দেখলে অনেকটা কল্পনায় আঁকা বৃষ্টি ভেজা শহরের গলির মতো। রংগীন আলো, রাস্তার দুই পাশে হরেক রকমের দোকান, নানান মানুষের আনাগোনা, হৈচৈ আড্ডয় ভরা ভালোবাসার গলি।

গলির মাথায় বাবু ভাইয়ের চা'য়ের দোকান। তেইশ বছর বয়সী বাবুর ব্যাবসাটা খুব ভালো জানা। এখানকার সব ব্যাচেলরদের সাথে তার ভালোবাসা। ব্যাচেলর ছেলেগুলোরও আর কেউ নেই ঢাকা শহরে, মন খুলে বসে গল্প করার। বাবু তাদের ডাক বাক্স। শুধু চিঠি জমা পরে, উত্তর এর আশা কেউ করেও না আর বাবুরও অসবের বালাই নেই। ঝর তুফান এক করে তারা আসে, চা খায়, কেউ কেউ পান বেশীরভাগই সিগারেট এর জন্য। গ্রুপে গ্রুপে আসে আড্ডা দেয়।

মাস খানেক হলো এ পারায় এসেছে রুদ্র। আড্ডা এই বাবুর দোকানেই। চাকরীটা ঠিক জমছেনা তার। ছয় মাসেই তিন বদলি। উত্তরা, নয়াপল্টন আর এখন রায়েরবাজার। অগ্রণী ব্যাংকের জুনিয়র অফিসার। মোটা টাকা মায়নে আছে। একা জীবনে চালানোর জন্য প্রচুর স্বাধীনতা না থাকলেও প্রচুর এনার্জির ব্যাবস্থা আছে। ডিউটির ফাকে ফাকে দুই মিনিট হেটে বাবুর দোকানের চা-সিগারেট। আর সন্ধ্যার পরে ঘন্টা দুইয়েক বসা। খাতির জমে গেছে বেশ।

আজকে সন্ধ্যা থেকেই বৃষ্টি। বাবুর দোকানের সামনে বেশ পানি জমেছে। রাস্তার ওপারে রিক্সা থেকে আধা ভেজা হয়ে যাওয়া একটা ছেলে আর একটা মেয়ে নামছে। বয়সে মেয়েটাকে বড় দেখাচ্ছে। তবুও প্রেমের জোড়া না মেনে পারা যাচ্ছেনা।
-বাবু ভাই, অনেকক্ষণ তো বৃষ্টি দেখা হলো চলো এবার প্রেমের ছবি দেখি লাইভ।

-কোনটা?
-ওইদিক তাকায়োনা, তোমার দোকানের ঠিক অপরপাশে।
বাবু ভাই তাকাতেই হো হো করে হাসি শুরু করে দিলো। হাসিয়ে থামিয়ে চা ধরলো দুই কাপ,
-চা কার জন্য?
-ওই ছেলেটা এখন বৃষ্টিতে ভিজে পায়ের নীচে হাটু জল নিয়ে মেয়েটার কথামতো চা নিতে আসবে।

বলতে না বলতেই ছেলেটা হাজির। এইবার রুদ্রও হাসি। ছেলেটা এসে চা চাইলো। একটু পরে এসে আবার কেক নিয়ে গেলো। মেয়েটার খুদা পেয়েছে খুব। রুদ্র আর বাবু ভাইয়ের হাসি পাচ্ছে খুব। বৃষ্টি এখন একটু কমেছে। এই ফাকে মেয়েটা আর ছেলেটা চলে গেলো। রুদ্রুও উঠছে আজ।

একটা ফ্লাটে একাই থাকে রুদ্র। মাঝে মাঝে ওর বড় বোন আসে বিয়ের তাগিদ দিতে। বড় বোন ছাড়াতো রুদ্রর একুলে আর কেউ নাই। আজকে রুমটা বেশীই ফাকা ফাকা লাগছে তার। রাত্রে খাওয়ার মুড নেই। বিছানায় চলে যাবে। সাউন্ড বক্সে গান ছেড়ে সিগারেট জালিয়েছে রুদ্র। বারান্দায় দাঁড়িয়ে রাস্তার ওই পাশের ছেলেটার কথা ভাবছে সে। কতই বা বয়স হবে ছেলেটার ১৬ কি ১৭ এখনো কলেজ পার করেনি। কত রোমান্টিক বয়স। রঙিন সবকিছু। এরকম বয়স চিরকাল থাকেনা।

আজকে আরুর কথা খুব বেশীই মনে পরছে রুদ্রর। কলেজের সেই প্রথম দিনের বৃষ্টিতে কাকভেজা আরু। পদার্থ বিজ্ঞানের লেকচারার। অগত্যা শাড়ি পরে এসেছিল বলে তাকে ম্যাম বলে ডাকতে বাধ্য হয়েছিল ক্লাসের সবাই। ক্লাসের ডেস্কে আরুকে দেখে বিশ্বাস হয়নি রুদ্রর যে, এই মেয়েটাকেই একটু আগে কলেজের গেটে রিক্সা থেকে নামতে দেখেছে সে।

আরু সে বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এপ্লাইড ফিজিক্সে অনার্স শেষ করে ওই কলেজে জয়েন করেছিল। পদার্থ বিজ্ঞানের ম্যাম তো তাকে মানাই যাচ্ছেনা বড়জোর বাংলা সে পড়াবে। বয়সটা কোথায় লুকিয়ে রেখেছে সে কোন হাসির আড়ালে। বাবা-মা কে শহরে ছেড়ে গ্রামের কলেজের প্রফেসরদের বাসভবনে একা উঠেছিল সে।

ফিজিক্সের ভাষায় হারিয়েছিল রুদ্র। সকাল বিকেল দুইবেলা ম্যামের বাসায় গিয়ে পড়া, ক্লাসের লেকচার মিস করে গেছে বাহানায় দুইটা ক্লাস করা, ল্যাবের সময় টুকু আর অফিসের বাইরে আনাগোনা। আরু কোন ম্যাম নয়, কোন লেকচারার নয়, কোন প্রাইভেট টিউটর নয় রুদ্রর মনে আরু বৃষ্টিতে কাকভেজা ক্লাস টেনের এক কল্পনা।কল্পনা ধরে ফেলতে সময় লাগেনি আরুর। বয়সের সমস্যা বলে প্রথমে উরিয়ে দিলেও পরে নিজেকে আটকে রাখতে পারেনি আরু।

বৃষ্টিটা আবার বেরে গেছে। এরকম চলতে থাকলে কালকে আর অফিস করা লাগবেনা। এমনিতেই রাস্তায় হাটু জল কাল সকালে অফিসের নীচতলায় পানি জমে যাবে। খুব খিচুড়ি খেতে ইচ্ছে করছে রুদ্রর। মাঝ রাত্রিতে খিচুড়ি চুলায়। পাশের বাসার খিচুড়ির ভেসে আসা ঘন্ধে এর উৎপত্তি।

শেষবার যখন আরুর সাথে রুদ্রর দেখা হয়েছিল সেদিনও আরু রুদ্রর জন্য খিচুড়ি রান্না করে নিয়ে এসেছিল। একহাতে বিয়ের কার্ড আর অন্য হাতে পৃথিবীর সব থেকে স্বাদের খিচুড়ি। সেদিনও বৃষ্টি হচ্ছিল। চোখের জল লুকাতে কষ্ট হয়নি কারোরই। গরম খিচুড়ি থেকে ধোয়া উড়ছিল। আজো উড়ছে রুদ্রর হাতের সিগারেট এর ধোয়া, পুরে যাচ্ছে তামাক নাকি চুলোয় থাকা খিচুড়ি নাকি রুদ্রর অন্তর।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে জুলাই, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:২৬

চাঁদগাজী বলেছেন:


বৃস্টি বড়, নাকি রুদ্রের গল্প বড়?

২১ শে জুলাই, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৪২

শুন্য বাইট বলেছেন: বৃষ্টি বড় হয়ে গেছে :(

২| ২১ শে জুলাই, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৪৩

Al Rajbari বলেছেন: আর্টিকেলটি ছোট হলেও ভালই লেগেছে-!! :D

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.