নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মধ্যবিত্ত পরিবারের ব্যাচেলর ছেলে!!! \nফেসবুকঃ \nhttps://www.facebook.com/rajshahjahan

শুন্য বাইট

মধ্যবিত্ত পরিবারের ব্যাচেলর ছেলে!!! ফেসবুকঃ https://www.facebook.com/rajshahjahan

শুন্য বাইট › বিস্তারিত পোস্টঃ

মা কে ভালোবাসুন কারন মা কারো চিরদিন থাকেনা। :)

০৭ ই নভেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১:৪০

ছোট বেলায় আমি নাকি খুব মোটা ছিলাম। বাড়ির আশেপাশের সবাই আমাকে কোলে নিতে খুব আগ্রহী ছিল। আর আমি নাকি কারো কোলে যেতেই কোন কার্পণ্য করতাম না। সবার কোলেই খুব হাসি হাসি লুক দিতাম, ভাবটা এমন যে আমি খুব মজা পাচ্ছি। এটা নিয়ে কারো কোন সমস্যা ছিলনা একজন বাদ দিয়ে। সেই একজন নাকি ছিল আমার মা। হ্যাঁ আমার মা। মা নাকি খুব হিংসা করতো সবাইকে। কারো নজর যদি লাগে সেই ভয়ে নাকি আমাকে বেশীর ভাগ সময়েই ঘরের মধ্যে রাখা হতো। আর সবাই আমাদের ঘরেই হামলা করতো। মায়ের এই হিংসা যে কি পরিমাণ ভালোবাসার তা আমি সেই দুই-তিন বছরের বাচ্ছা বয়সেও বুঝিনি আর আজ এই বয়েসেও না। ভালোবাসা এমনই হয় বুঝি, ও শুধু আমার ওকে নিয়ে কোন ভাগাভাগি চলবেনা।

আমরা পিঠাপিঠি দুই ভাই। আমার ছোট ভাইটা আমার থেকে এক বছরের ছোট। দুই-তিন বছরের বাচ্চাকালে আমরা যতটাই শান্ত ছিলাম ছয়-সাত বছরে নাকি তাঁর বিপরীত হয়ে উঠেছিলাম। সারাদিন নাকি ছুটাছুটি করতাম। রৌদ্রে দৌড়াদৌড়ি করতাম। বাগানের গাছ থাকলেও কোন ফুল-পাতা থাকতোনা। ঘরে কোন কাঁচের জিনিস থাকতো না। এসবে কারো কোন সমস্যা ছিলনা যতদিন না, আমরা আমদের ঘর আর বাগান ছেড়ে বাড়ির আশেপাশের বাগান আর ঘর গুলোতেও হামলা করেছিলাম। বাড়ির আশেপাশের সেই লোকগুলোই যারা আমকে কোলে নিয়ে ঘুরতে খুব আগ্রহী ছিল তারাই নাকি তখন আমাদের জ্বালায় অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিল। আর এতে করে সবথেকে বেশী সমস্যা আমার সেই মা'য়েরই হয়েছিল। ভালোবাসা বুঝি এমনই হয়, এটা আমার শরীরের অংশ পচে ঘন্ধ বের হলেও আমার।

পড়াশুনা করাটা ছোটবেলার সব থেকে যন্ত্রনার বিষয় ছিল। আর এতো এতো প্রতিযোগীতার ভীড়ে টিকে থাকার লড়াইটাতো আছেই। আর আমি আর আমার ছোটটা মাশাল্লাহ এগুলোর ধারে কাছেও ছিলামনা, ভাবটা এমন যে তখনই বুঝে ফেলেছিলাম জীবনে পড়ালেখা ছাড়াও করার অনেক কিছু আছে। দুপুড়ের কড়া রৌদ্রে ক্রিকেট, বিকেলের বর্ষণমুখর সন্ধ্যায় ফুটবল। কিন্তু এতো কিছুর মাঝেও কেনো জানি সব কিছু ঠিকঠাকমতো লাইনে রেখেছিলেন আমার সেই মা। মজার একটা ঘটনা শেয়ার করি, দুপুড়ে না ঘুমালে রাত্রে খুব তাড়াতাড়ি ঘুমায়া যাইতাম, পড়া হইতো না। কিন্তু আমরা দুজন দুপুড়ে ঘুমাতে চাইতাম না, আর না ঘুমালেতো হবেনা পড়াশুনা। এই সমস্যাটাও হলো আমার মা'য়ের। সংসারের সমস্ত কাজ ফেলে শুরু করলেন আমাদের ঘুম পারানোর কাজ। মা মাঝে আর আমরা দুজন দুই পাশে। সারাদিনের কাজের ক্লান্তিতে মা আমার পাঁচ মিনিটেই ঘুম। আর আমি আর আমারা দুজন একজন আরেকজনের দিকে তাকিয়ে বিছানা থেকে নেমেই দৌড়ে পালিয়ে যেতাম।

আমরা দুজন ছোটবেলা থেকেই মা'র খুব ভক্ত ছিলাম। তাকে ছাড়া আমাদের কোন কাজই হতোনা। সারাদিন এদিকে ওদিকে থাকলেও হঠাত ঘরে গিয়ে মা'কে না দেখলে সারা বাড়ি মাথায় তুলে নিতাম। মা'কে ডাকতাম তুই করে। আমাদের মা'কে খোঁজা দেখে সবাই মজা করে বলতো, "তোর মা তোর নানা'র বাড়ি চলে গেছে।" আমরা কান্না শুরু করে দিতাম। আরো জোড়ে চিল্লাইতাম, "এ মা, মা। এ মা, মা।" দম নিয়ে আবার চিল্লাইতাম। মা ছাড়া আমরা খাইতাম না। আসলে অন্য কেউ খাওয়াতে পারতোনা। ঘরে এসেই চিল্লাইতাম, "এ মা ভাত দে।" তবে সেটা খুবই কম, বেশীরভাগ সময়েই যেটা হতো সেটা হলো, আমাদের খাওয়ানোর জন্য মা লাঠি নিয়ে পাশে বসে থাকতো। ভাতে বেশ অনীহা ছিল যে। ভালোবাসা বুঝি এমনই হয়, ওর যেটায় ভালো সেটা আমি ওকে করিয়েই ছাড়বো।

হাইস্কুলের দিনগুলোতে কেন জানি মা আমার বেশ দূরে সরে গেলেন। প্রাইমারি স্কুলের মর্নিং শিফটের ইতি ঘটে শুরু হয়েছিল সারাদিন স্কুলে থাকা আর সেই সাথে ইতি ঘটেছিল মা'র সাথে অনেক বেশী সময় কাটানো। মনে মনে কতোটা কাছাকাছি ছিলাম সেটা কেবল সারাদিন স্কুলে থাকার সময়েই বুঝতাম। কিন্তু দূরত্ব খুব খারাপ একটা জিনিস। হাইস্কুলের কিছু বন্ধু তাদের মা'কে আম্মা বলে ডাকতো আর সেই সাথে তুমি করে বলতো। বিষয়টা প্রথমে খুব ভালো লাগে। আমিও এপ্লাই করা শুরু করি। বেশ ভালোই লাগে। আম্মা বলাতে আর তুমি বলাতে কোন দোষই ছিলনা, কিন্তু কেন জানি মা আমার আম্মাতে হারিয়ে গেলো। আমার সেই আবেগের তুই আজ তুমিতে মরে গেলো। ভালোবাসা কেমন হয় তখনও বুঝিনি।

হাইস্কুল ছেড়ে কলেজ। আমি তখন বেশ আধুনিক। আম্মা বলা শিখেছি অনেক আগেই আর এবারে শিখলাম সম্মান দেয়া। আম্মা অনেক সম্মানের ব্যাক্তি তাকে তুমি বলা ঠিকনা, আপনিতে বাধতে হবে। আম্মা আমার আপনি হলেন। আর আমি তখন ফোনে ফোনে খোঁজ রাখতাম। বাড়ি থেকে বহু দূরে তবুও কেবল সেই মানুষটাই আমার ব্যাথায় ব্যাথা পান আগে থেকেই ফোনে সাবধান করে দেন। আমার ভালোবাসা সম্মানে আটকে গেলো আর তাঁর ভালোবাসা বেড়ে গিয়ে ভয়ে দাঁড়ালো। ভয়তো তাকে নিয়েই হয় যাকে সব থেকে বেশী ভালোবাসা যায়।

আমার এখন দুইটা আম্মা। শাশুড়ি আম্মা। আমার গল্পের ভিলেন আমি হতে পারিনা। তাইতো দুইজনকেই সমান সমান শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা দিয়ে যাই। আমার আম্মার এখনো আমাকে নিয়ে কোন সমস্যা নেই। আমার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগও নেই। আমার বউটাও কিন্তু আমার মতোই। দুইটা আম্মাকেই খুব ভালোবাসে।
এখন সমস্যা শুধু আমার, আমি এখন শুধু আমার হারিয়ে ফেলা সেই মা'কে খুঁজে বেড়াই। বার বার তাঁকে ডাকতে চাই, "এ মা" বলে। মাঝে মাঝে বাসায় গিয়ে বলতে চাই, "এ মা, মা, ভাত দে।"

এভাবেই সব মা বেঁচে থাকুক। :)

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই নভেম্বর, ২০১৭ দুপুর ২:২২

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন: অসাধারণ লেগেছে।

পৃথিবীর সব মা-ই ভাল থাকুক, সুস্থ থাকুক।

০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৩:০১

শুন্য বাইট বলেছেন: ভালো আর ভালোবাসায় থাকুক সকল মা :)

২| ০৭ ই নভেম্বর, ২০১৭ দুপুর ২:৩৭

রাজীব নুর বলেছেন: কোন গাদা আবার মাকে ভালোবাসে না?

৩| ০৭ ই নভেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৫১

শুন্য বাইট বলেছেন: কোন গাধা তা জানিনা ভাই কিন্তু আপনার কথা শুনে মনে হচ্ছে দেশের বৃদ্ধাশ্রম গুলোর কথা কখনো শুনেননি মনে হয়!

৪| ০৭ ই নভেম্বর, ২০১৭ রাত ১১:০০

ওমেরা বলেছেন: মায়ের মত কেউ হয় না। খুব ভাল লাগল ।

০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৩:০২

শুন্য বাইট বলেছেন: ভালোবাসা নিয়েন :)

৫| ০৮ ই নভেম্বর, ২০১৭ ভোর ৪:২১

মলাসইলমুইনা বলেছেন: ওমেরা বলেছেন: মায়ের মত কেউ হয় না। আর কি বলবো ? অনেক ভাল লাগল ।

০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৩:০২

শুন্য বাইট বলেছেন: ভালোবাসা আর কি বলবো :ড

৬| ০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৭ ভোর ৬:১৯

সামিউল ইসলাম বাবু বলেছেন: ভালোলাগা +

০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৩:০৩

শুন্য বাইট বলেছেন: ভালোবাসা++

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.