নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সত্যের সন্ধানে ও শান্তির অন্বেষায় ...

জোবাইর

বিনয়ী মূর্খ অহংকারী বিদ্বান অপেক্ষা মহত্তর।

জোবাইর › বিস্তারিত পোস্টঃ

করোনাভাইরাস : পর্যবেক্ষণ ও পরিসংখ্যান

০৩ রা এপ্রিল, ২০২০ দুপুর ১:১৮


চলমান বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসে বিপর্যস্ত বিশ্বের বেশির ভাগ দেশ। দ্রুত বেড়ে চলেছে করোনাভাইরাসে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা। গত ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের উহানে ছড়িয়ে পড়ে প্রাণঘাতী এই ভাইরাস এখন সারা বিশ্বের জন্য আতঙ্ক। যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিনস ইউনিভার্সিটির এর তথ্য অনুযায়ী, ২ এপ্রিল পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে ১৮১ টি দেশে করোনা সংক্রমিত হয়েছে ১০ লাখ ২ হাজার ১৫৯ ব্যক্তির মধ্যে। বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা ৫১ হাজার ৪৮৫। করোনাভাইরাসের অনেকগুলো তথ্য শতভাগ সঠিক নয় বা এই মুহুর্তে সঠিকভাবে নির্ণয় করা সম্ভব হচ্ছে না। তাছাড়া এই বৈশ্বিক মহামারি এখনও চলমান। সুতরাং এর তথ্য-উপাত্ত নিয়ে সঠিক পরিসংখ্যানের জন্য আরো অপেক্ষা করতে হবে। যা-ই হোক, মিডিয়ায় প্রকাশিত এই পর্যন্ত পাওয়া তথ্যের ওপর ভিত্তি করে কিছু পরিসংখ্যান গ্রাফ ও সরণীর মাধ্যমে এখানে তুলে ধরলাম।

সংখ্যা ও বিভ্রান্তি


কোভিড-১৯ রোগের লক্ষণকে তিনভাগে ভাগ করা যেতে পারে: ১। মৃদু, ২। তীব্র এবং ৩। সংকটপূর্ণ।
করোনা আক্রান্ত ৭০,০০০ মানুষের ওপরে স্ট্যাডি করে দেখা গেছে যে, ৮১% মানুষের সর্দি-কাশি হচ্ছে করোনার ফলে, আবার সেরেও যাচ্ছে। এরা হচ্ছে মৃদু লক্ষণের অন্তর্ভুক্ত। এই মৃদু লক্ষণের রোগীদের কোনো তথ্য কোনো দেশেই নাই। টেস্ট ও চিকিৎসার ব্যাপারেও পৃথিবীর একেক দেশে একেকরকম নীতি নেয়া হয়েছে। কোনো দেশ মৃদু লক্ষণ দেখা দিলেও অনেককেই টেস্ট করছে, যাকে অ্যাগ্রেসিভ টেস্ট বলা হচ্ছ। এর উদাহরণ জার্মান। অন্য অনেক দেশের চেয়ে এজন্যই জার্মানিতে শনাক্তের সংখ্যা বেশি, কিন্তু মৃত্যুর সংখ্যা কম। অন্যদিকে, যুক্তরাজ্য তীব্র লক্ষণ দেখা না দিলে বেশিরভাগ মানুষকেই টেস্ট করছে না, বরং বাসায় সেল্ফ কোয়ারান্টিনে থাকতে উৎসাহিত করছে। ফলে দেশটিতে শনাক্তের সংখ্যা কম হলেও সে তুলনায় মৃত্যুর সংখ্যা বেশি। অর্থাৎ টেস্টে পজিটিভ নিশ্চিত হওয়ার পর করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হিসাবে গণ্য করা হচ্ছে এবং তার ওপর ভিত্তি করে মৃত্যু ও আরোগ্যের হার দেখানো হচ্ছে! উদাহরণ: বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর মৃত্যু হার কত? এই মুহুর্তে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৫৬ ও মৃত্যুর সংখ্যা ৬, সুতরাং ১০.৬%। যদি মৃদু, তীব্র এবং সংকটপূর্ণ সব মিলে শনাক্ত ও অশনাক্ত মোট রোগীর প্রকৃত সংখ্যা প্রায় দশগুণ (৫৬০) ধরি তবে মৃত্যু হার হবে ১.০৬%।


বিজ্ঞানীদের ধারণা সার্বিকভাবে করোনা আক্রান্ত সব রোগীর প্রকৃত সংখ্যা জানা গেলে এর গড় মৃত্যু হার হবে ০.৫% – ১.০%। আশির ওপরে যাদের বয়স তাদের মৃত্যু হার ৯.০% – ৯.৫%। অর্থাৎ আশিয়োর্ধ ১০০ জন মানুষ করোনায় আক্রান্ত হলে সঠিক সময়ে যথোপযুক্ত চিকিৎসা পেলে তাদের মধ্যেও ৯১ জন বেঁচে যাবে! বিভিন্ন দেশের কভোড-১৯ রোগীদের তথয়-উপাত্তের ওপর ভিত্তি করে সবাই একমত যে, যারা বয়স্ক এবং তাদের মধ্যে যাদের হাঁপানি, শ্বাসকষ্ট, ডায়বেটিস, হৃদরোগের মতো নানা জটিলতা রয়েছে, তারাই এই ভাইরাসের সংক্রমণে সবচেয়ে ঝুঁকিতে রয়েছেন। পরিসংখ্যান ও পর্যবেক্ষণের তথ্য-উপাত্ত দেখে মনে হয় করোনাভাইরাসকে মানুষ যত প্রাণঘাতী মনে করছে এটা আসলে তত মারাত্মক কিছু নয়।

এক নজরে করোনাভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি এমন ৩০টি দেশের তালিকা:



এক নজরে সার্কভুক্ত দেশসমূহে (মায়ানমারসহ) করোনাভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা এবং মৃত্যুর তালিকা:



দেশে দেশে সংক্রমণ ও মৃত্যুর হারের পার্থক্যের কারণ


ইটালি ও ইরানে আক্রান্তের সংখ্যা কিছুটা কমে আসলেও যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে আক্রান্তের সংখ্যা এখনও দিনদিন বেড়েই চলেছে।


যে কোনো সংক্রামক ব্যাধি শুরুতে গাণিতিক হারে বাড়ে এবং মানুষ আক্রান্ত হয় অনেকটা ব্যক্তিগত বা পারিবারিক বলয়ের মধ্যেই। শুরুতে চেষ্টা করলে রোগটি কার থেকে কীভাবে ছড়ালো তা বের করা যাবে। এরপর এটা ছড়াবে জ্যামিতিক হারে এবং মানুষ বিভিন্ন সামাজিক বলয়ের মধ্যেও আক্রান্ত হবে। এই অবস্থায় রোগটি কার থেকে কীভাবে কোথায় ছড়ালো তা আর বের করা সম্ভব হবে না। এরপর রোগটি বাড়বে এক্সপোনেন্সিয়াল হারে। এই ধাপে রোগটি খুব কম সময়ে এত বেশি মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে যে চিকিৎসাব্যবস্থা সম্পূর্ণ ভেঙে পড়ে এবং সবক্ষেত্রে আতঙ্ক ও বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হবে। তখন চিকিৎসা, চিকিৎসা সরঞ্জাম ও ঔষুধের অভাবে মৃত্যুহার আরো বেড়ে যায়। বর্তমান ইতালী ও যুক্তরাষ্ট্র ঠিক এই পরিস্থিতির শিকার। দক্ষিণ কোরিয়া যথাসময়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করে এ ধরনের নাজুক পরিস্থিতি এড়াতে সক্ষম হয়েছে। শুরু থেকে বিভিন্ন সঠিক পদক্ষেপ নিয়ে রোগ ছড়ানোর হারকে নিয়ন্ত্রনে রাখতে পারলে এবং একসাথে বেশি মানুষকে চিকিৎসা দেওয়ার আগামপ্রস্তুতি নিলে মৃত্যুহার কম হবে।

পর্যবেক্ষণ ও পরিসংখ্যানের তথ্য-উপাত্তের ওপর ভিত্তি করে বলা যায় যে, কভোড-১৯ খুব ভয়াবহ প্রাণঘাতী মহামারী নয়। তবে কিছু কিছু দেশের অবহেলায় মৃত্যুর হার অস্বাভাবিক বৃদ্ধি, মিডিয়ায় অতিমাত্রায় নেতিবাচক সংবাদ, কোয়ারান্টিন, লকডাউন, ১৪৪ ধারা, জরুরি অবস্থা, গুজব, অজ্ঞতা, ধর্মীয় গোঁড়ামী, আতঙ্ক, ভয়, ইত্যাদি মিলে করোনাভাইরাস ইতোমধ্যেই মানব সভ্যতার ইতিহাসের সবচেয়ে বেশি ভয়াবহ মহামারী হিসাবে স্বীকৃতি পেয়ে গেছে।

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ০৩ রা এপ্রিল, ২০২০ দুপুর ১:৫৫

রাজীব নুর বলেছেন: করোনা ভাইরাস নিয়ে যারই লেখা পড়ি মনে ভয় ঢুকে যায়।
করনা নিয়ে ভালো লেখা কি কেউ লিখবে না??

০৩ রা এপ্রিল, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৪৫

জোবাইর বলেছেন: আপাতদৃষ্টিতে করোনা ভাইরাসকে যত প্রাণঘাতি মনে করা হচ্ছে বাস্তবে ইহা তা নয়—লেখায় সেটাই বুঝাতে চেয়েছি। সুতরাং ভয়ের কোন কারণ নেই। আশাবাদী হউন ও ইতিবাচক চিন্তা করুন, সব ঠিক হয়ে যাবে। স্রষ্টার সেরা জীব মানুষের কাছে অতি নগন্য এই ভাইরাসকে হার মানতেই হবে।

২| ০৩ রা এপ্রিল, ২০২০ বিকাল ৩:১৯

রাজীব নুর বলেছেন: আপনার পোষ্ট থেকে অনেক কিছু জানলাম।

০৩ রা এপ্রিল, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৪৬

জোবাইর বলেছেন: ধন্যবাদ, নিজের ও পরিবারের প্রতি যত্ন নিন।

৩| ০৩ রা এপ্রিল, ২০২০ বিকাল ৩:১৯

নেওয়াজ আলি বলেছেন: ঘরে থাকুন। ভালো থাকুন।

০৩ রা এপ্রিল, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৪৮

জোবাইর বলেছেন: সবসময় ঘরে থাকার ইচ্ছা থাকা স্বত্বেও জীবন ও জীবিকার তাগিদে মাঝে মাঝে বের হতে হচ্ছে! আপনিও ভালো থাকুন, ধন্যবাদ।

৪| ০৩ রা এপ্রিল, ২০২০ বিকাল ৪:২৮

ইসিয়াক বলেছেন: অনেক কিছু জানলাম।
ধন্যবাদ

০৩ রা এপ্রিল, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৫০

জোবাইর বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ। ঘরে বসে বসে কবিতা ও গল্প লেখার এখন শ্রেষ্ট সময়।

৫| ০৩ রা এপ্রিল, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:০২

চাঁদগাজী বলেছেন:



অনেক ডাটা মাটা দিলেন, চার্ট পার্ট দিলেন, তারপর উপসংহার টানলেন যে, "ইহা ভয়ংকর কিছু নয়, কিন্তু কিছু দেশের অব হেলায়, মিডিয়ার নেতিবাচক সংবাদ, লকডাউন, ... ইত্যাদি ইহাকে ইতিহাসের সব চেয়ে বড় মহামারীতে পরিণত করেছে"।

আপনাকে প্রশ্ন:
-ইটালীতে মানুষকে হাসপাতালে যায়গা দিতে পারেনি, হাসপাতালের করিডোরে রেখেছে, ইহা এই যুগের ইটালী জন্য গ্রহনযোগ্য নয়; ইহা বর্তমান সময়ের ইটালীর জন্য ভয়ংকর অবস্হা কিনা?

আপনি লিখেন, কিন্তু বুঝেন না যে, কি লিখছেন।

০৩ রা এপ্রিল, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:০৯

জোবাইর বলেছেন: এই লেখাটি যখন লিখতে ছিলাম, তখনই নিশ্চিত ছিলাম যে এবার আপনার একটা নেতিবাচক মন্তব্য পাবোই :D। কারণ আপনিও জানেন, আমিও জানি। ব্লগের দীর্ঘ অভিজ্ঞতা থেকে এখন আগেই বুঝতে পারি কোন ব্লগার কখন কোন ধরনের লেখা ও মন্তব্য লিখবে !:#P

ইটালি ও আমেরিকার আজকের এই দুরাবস্থার কারণ প্রায় একই—যা লেখায়ও উল্লেখ করেছি। ইটালির আরো একটি অতিরিক্ত কারণ হলো ওদের জনসংখ্যার বিরাট একটি অংশ এখন বয়স্ক লোক। ধন্যবাদ, ভালো থাকুন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.