নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সত্যের সন্ধানে ও শান্তির অন্বেষায় ...

জোবাইর

বিনয়ী মূর্খ অহংকারী বিদ্বান অপেক্ষা মহত্তর।

জোবাইর › বিস্তারিত পোস্টঃ

সুমেরু অঞ্চলে নিশি রাতে সূর্য দর্শন - পর্ব ২

২১ শে জুন, ২০২০ রাত ৮:১২


সুমেরু অঞ্চলে নিশি রাতে সূর্য দর্শন - ২য় পর্বে সবাইকে স্বাগতম। আমরা এখন স্টকহোম শহরের কেন্দ্রবিন্দু সেন্ট্রাল রেলওয়ে স্টেশনে, হাতে প্রায় সাড়ে তিন ঘন্টা সময় আছে। যারা ১ম পর্বে আমার সাথে ভার্চুয়্যাল ভ্রমণে আরলান্ডা এক্সপ্রেসে উঠেছিলেন তাদেরকে অনুরোধ করবো আসুন এখন আমরা একসাথে আশেপাশে শহরটা ঘুরে দেখি। আজকের পর্বে থাকবে স্টকহোম শহর দেখার সংক্ষিপ্ত বিবরণ এবং স্টকহোম থেকে কিরুনা অভিমুখি ১৫ ঘন্টার নৈস্বর্গিক ট্রেন ভ্রমণের প্রস্তুতি।


স্টকহোম সেন্ট্রাল স্টেশন খুব বেশি বড় নয় তবে বেশ সাজানো গোছানো চিমচাম। এটি হচ্ছে শুধুমাত্র আন্তঃসংযোগ রেলওয়ে স্টেশন। মেট্রো ও কমিউটার ট্রেন স্টেশন মাত্র এক কিঃমিঃ দূরেই অবস্থিত। এই স্টেশন থেকে আন্ডারগ্রাউন্ড করিডোর দিয়েও সেখানে যাওয়া যায়। এখানে সাইনবোর্ডে প্লাটফরম, মেট্রোরেল, ট্যাক্সি, ওয়াশিং রুম, লকার রুম ইত্যাদি সবকিছুর অবস্থানের দিক উল্লেখ করা আছে। নিচের তলায় লকার রুমে গিয়ে লাগেজ লকারে আমাদের মালপত্র রাখলাম। তিনতলা স্টেশন, প্রতি ফ্লোর থেকে বের হওয়ার রাস্তা আছে। প্রতিটি ফ্লোর থেকে আলাদা আলাদা রাস্তার সাথে বহিঃগমন সংযোগ। হাতে সময় আছে প্রায় সাড়ে তিন ঘন্টা। তাই আশেপাশে ঘুরতে স্টেশন থেকে বেরিয়ে গেলাম।


আমরা ২য় তলা দিয়ে বের হয়ে (Vasagatan) ডান দিকে থাকাতেই নদী চোখে পড়লো। সেদিকেই গেলাম। এটি একটি হ্রদ, দৈর্ঘ্য নাকি প্রায় নদীর মতোই। এর পাশেই স্টকহোম সিটি হল। হলটি বাহির থেকে দেখতে গির্জার মতই মনে হয়। স্টকহোম সিটি হল স্টকহোম সিটি কর্পোরেশনের মালিকাধীন ভবন। এটি অফিস এবং সম্মেলন কক্ষ পাশাপাশি আনুষ্ঠানিক হল। এখানে রয়েছে অভিজাত রেস্টুরেন্ট স্ট্যাডহুজসেলারেন (Stadshuskallaren)। এটি নোবেল পুরষ্কারের নৈশভোজের জায়গা এবং স্টকহোমের অন্যতম প্রধান পর্যটক আকর্ষণ। গাইডের নেতৃত্বে পর্যটকরা এটি পরিদর্শন করতে পারে। এটি নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছিল ১৯১১ সালে শেষ হয়েছিল ১৯২৩ সালে, টাওয়ারের উচ্চতা ১০৬ মিটার। বাহির থেকে ঘুরেফিরে দেখলাম। পাশের ঘাটে কিছু নৌযান দেখলাম যেগুলো কয়েক ঘন্টার জন্য পর্যটকদের বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানে নিয়ে যায়।

এরপর মেট্রো সেন্ট্রাল স্টেশনের দিকে আসলাম। এদিকে এসে পেলাম অনেকটা আমাদের ঢাকার শাপলা চত্বরের মতো ফোয়ারাসহ সড়কদ্বীপ। এর নাম সারগেলস স্কয়্যার (Sergels Torg)। সার্জেলস টর্গ ("সার্জেলস স্কয়ার") স্টকহোমের সর্বাধিক কেন্দ্রীয় পাবলিক স্কয়ার। অষ্টাদশ শতকের ভাস্কর জোহান টোবিয়াস সার্গেলের নামানুসারে ১৯৬৭ সালে স্কয়ারটির নির্মাণকাজ শেষ হয়েছিল। স্টকহোম শহরে পর্যটকদের কেনাকাটার জন্য সুপরিচিত সড়ক Drottninggatan (Queen street) এখান থেকেই শুরু।


এই শপিং সড়ক দিয়ে কিছুদূর গেলেই সুইডেনের সংসদ ভবন। এটি একটি সংযোগ খালের উপর স্থাপিত। সংসদ ভবন কমপ্লেক্সটি নওক্লাসিক্যাল স্টাইলে অরন জোহানসন ডিজাইন করেছিলেন। সংসদ ভবনটি ১৮৯৭ থেকে ১৯০৫ এর মধ্যে নির্মিত হয়েছিল। কমপ্লেক্সের দুটি বিল্ডিং, মূলত একটি সংসদের জন্য এবং অন্যটি সুইডিশ ন্যাশনাল ব্যাংকের জন্য অর্ধবৃত্তাকারে নির্মিত হয়েছিল।


সংসদ ভবন সংলগ্ন খালটি মেলারেন হ্রদকে (স্টকহোম সিটি হলের পাশে) বাল্টিক সাগরের জলের সাথে সংযোগ করে দিয়েছে। এখানে সুইস গেট রয়েছে যার মাধ্যমে হ্রদটির পানিকে নিয়ন্ত্রণ করা হয়। খালের পাড়ের রাস্তা ধরে সাগরের দিকে গেলাম। উপরের ছবিটি সেদিক থেকে নিয়েছি। উল্লেখ্য, গভীর সাগর এখান থেকে বেশ দূরে। ইচ্ছা থাকা স্বত্বেও সময়ের অভাবে এদিকে আর বেশি ঘুরতে পারলাম না। তাই একটি রেস্টুরেন্টে খাওয়াদাওয়া সেরে সেন্ট্রাল স্টেশনে ফিরে আসলাম।


স্টেশনের নির্দিষ্ট প্লাটফরমে স্টকহোম - নেরভিক ট্রেন দাঁড়িয়ে আছে। তবে এখনো যাত্রী উঠানো শুরু করেনি। রেলওয়ের স্টাফরা ট্রেনের সবকিছু ঠিক আছে কিনা শেষবারের মতো চেক করে দেখছে। এর মধ্যে আমরা লকার থেকে আমাদের মালামাল নিয়ে প্লাটফরমের বেঞ্চে আয়েস করে বসলাম। স্টকহোমে এখন (জুনের শেষ সপ্তাহ) সূর্যাস্ত ১০ টায়, সূর্যোদয় সাড়ে ৩ টায়। স্থানীয় সময় এখন বিকাল সাড়ে ৫টা হলেও সুর্যের আলো ও বাতাসের উষ্ণতায় মনে হয় বাংলাদেশের বসন্তকালের দুপুর ২টা! কিছুক্ষণের মধ্যে শুরু হবে আমার জীবনের দীর্ঘ ট্রেনযাত্রা 'সুমেরু অঞ্চলে নিশি রাতে সূর্য দর্শন - পর্ব ৩'। আজ এখানেই ইতি। আবার কথা হবে ৩য় পর্বে। সবাই ভালো থাকুন।

তথ্য ও ছবিসূত্র: কিছু ছবি নিজের তোলা, কিছু ছবি ও তথ্য ইন্টারনেট।

       ◄ পর্ব ১ ——— সুমেরু অঞ্চলে নিশি রাতে সূর্য দর্শন ——— পর্ব ৩


মন্তব্য ২৮ টি রেটিং +৯/-০

মন্তব্য (২৮) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে জুন, ২০২০ রাত ৮:৪৪

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: সুন্দর তথ্যবহুল ভ্রমন পোস্ট ।++++

২২ শে জুন, ২০২০ রাত ৩:১৬

জোবাইর বলেছেন: কবি ভাইকে ধন্যবাদ ++++

২| ২১ শে জুন, ২০২০ রাত ৯:০২

নেওয়াজ আলি বলেছেন: মনোরম লেখনী

২২ শে জুন, ২০২০ রাত ৩:১৮

জোবাইর বলেছেন: লেখাটি আপনার 'মনোরম' লেগেছে জেনে খুশি হলাম।

৩| ২১ শে জুন, ২০২০ রাত ৯:৫৬

রাজীব নুর বলেছেন: চমতকার পোষ্ট।
৩য় পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম।

২২ শে জুন, ২০২০ রাত ৩:২২

জোবাইর বলেছেন: অপেক্ষায় থাকতে হবে না, ব্লগে লেখা আসলে আপনার চোখে পড়বেই :)। ব্লগের কোনো লেখা অন্যের চোখ এড়িয়ে গেলেও আপনার চোখকে ফাঁকি দিতে পারবে না। ভালো থাকুন।

৪| ২১ শে জুন, ২০২০ রাত ১০:১৩

আমি তিতুমীর বলছি বলেছেন:



আপনার চমৎকার লেখনীর সাথে ছবিগুলো পোস্টটিকে অনেক বেশি সমৃদ্ধ করেছে।
আপনার ভ্রমণ সাথী হিসাবে আছি (কল্পনায়)

নৈসর্গিক ট্রেন ভ্রমণের অভিজ্ঞতা পড়ার জন্য অপেক্ষায় আছি, আশাকরি খুব শ্রীঘ্রই আপনার তৃতীয় পর্ব পড়তে পারবো।

২২ শে জুন, ২০২০ রাত ৩:৪১

জোবাইর বলেছেন: ভ্রমণ সাথী হিসাবে (কল্পনায়) আপনাকে পেয়ে খুশি হলাম। আপনাদের পরামর্শেই এবার ছবি একটু বাড়িয়ে দিয়েছি। তৃতীয় পর্বে আবার দেখা হবে। শুভেচ্ছা নেবেন।

৫| ২২ শে জুন, ২০২০ রাত ১:০৬

শের শায়রী বলেছেন: এক পাক ঘুরে আসলাম আপনার সাথে জোবাইর ভাই

২২ শে জুন, ২০২০ রাত ৩:৫০

জোবাইর বলেছেন: সব সময় সিরিয়াস বিষয় নিয়ে লেখা ও পড়া মন ও শরীরের ওপর চাপ সৃষ্টি করে। তাই মন চাঙ্গা করার জন্য মাঝে মাঝে একটু ভ্রমণ-বিনোদন দরকার। আমার সাথে এক পাক ঘুরে আসায় কৃতজ্ঞতা।

৬| ২২ শে জুন, ২০২০ রাত ২:৫১

*কুনোব্যাঙ* বলেছেন: ভ্রমণ সঙ্গী হিসেবে আপনার পাশে আছি

২২ শে জুন, ২০২০ ভোর ৪:০০

জোবাইর বলেছেন: ভ্রমণ সঙ্গী হিসেবে আপনকে পাশে পেয়ে অনুপ্রাণিত বোধ করছি। পাঠ ও মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

৭| ২২ শে জুন, ২০২০ ভোর ৫:৪১

ইসিয়াক বলেছেন:



চমৎকার।তৃতীয় পর্বে অপেক্ষায়।
সুপ্রভাত।

২৩ শে জুন, ২০২০ ভোর ৫:০৮

জোবাইর বলেছেন: শুভ সকাল! তৃতীয় পর্বে কথা হবে, ধন্যবাদ।

৮| ২২ শে জুন, ২০২০ দুপুর ১২:৫৮

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন:
সুন্দর সুন্দর ছবি সহ দুর্দান্ত ভ্রমণ কাহিনী।

রাতের সূর্য দেখতে সুমেরো অঞ্চলে আমিও চললাম আপনার সাথে ...।

তবে আমি কিন্তু সব কিছু দেখব আপনার চোখে B-)) ,বিনা পয়সায় এবং বিনা পরিশ্রমে :-B

২৩ শে জুন, ২০২০ ভোর ৫:১২

জোবাইর বলেছেন: আপনার মতো উৎসাহী একজন ভ্রমণসঙ্গী পেয়ে আনন্দিত হলাম। আশা করি পুরো ভ্রমণে সুখ-দুঃখে সব সময় আপনাকে কাছে পাবো। শুভ কামনা রইলো।

৯| ২৬ শে জুন, ২০২০ দুপুর ২:৪৪

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: আর কত পর্ব আছে? সুমেরু অঞ্চলের নিশি রাতের অপেক্ষায় আছি।

২৭ শে জুন, ২০২০ দুপুর ২:১৬

জোবাইর বলেছেন: আরো ৩ - ৪ পর্ব হতে পারে! ৩য় পর্ব আজকে বা কালকের মধ্যে আসবে। ধন্যবাদ।

১০| ২৭ শে জুন, ২০২০ রাত ৯:৫৮

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: চমৎকার লাগলো।
শুভেচ্ছা নিয়েন।

২৭ শে জুন, ২০২০ রাত ১১:৩৮

জোবাইর বলেছেন: ধন্যবাদ।

১১| ২৭ শে জুন, ২০২০ রাত ১১:৫২

পদ্মপুকুর বলেছেন: বর্ণনা, ছবির সাথে একদম নিচে বিষয়টা ভালো লাগলো।

৩০ শে জুন, ২০২০ রাত ১২:৩৮

জোবাইর বলেছেন: ধন্যবাদ, পরবর্তীতেও একই নিয়ম বজায় রাখার চেষ্টা করবো।

১২| ১৯ শে জুলাই, ২০২০ সকাল ১০:৪০

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: বাহ!
ভ্রমন শুরুর আগেই দারুন ভ্রমন হয়ে গেল!

সত্যি পরিকল্পিত নগরায়ন আর প্রকৃতির মেল বন্ধনে তারা দারুন যাদুকরি কাজ করেছে।
হায়! আমাদের আমলা কামলারা সরকারী পয়সায় খালি ঘুরেই আসে- চেতনাকে ধারন করে না

যাই ট্রেনে উঠার সময় হয়ে এল। ;)

+++

২৫ শে জুলাই, ২০২০ দুপুর ২:৫৫

জোবাইর বলেছেন: বিলম্বে হলেও পাঠ ও মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ ভৃগু ভাই।
'আমাদের আমলা কামলারা সরকারী পয়সায় খালি ঘুরেই আসে- চেতনাকে ধারন করে না।' - ১০০% সঠিক।
এরা এখানে এসে বউ-পোলাপাইনের জন্য বাজার করে, আর যা দেখে তা অনেকটা অন্ধের হাতি দেখার মত অভিজ্ঞতা।

১৩| ০১ লা আগস্ট, ২০২০ রাত ১০:২২

খায়রুল আহসান বলেছেন: ছবিগুলো অসম্ভব সুন্দর! চোখ জুড়িয়ে যায়, তাকিয়ে থাকতে ইচ্ছে করে। +
লেখার স্টাইলও ভাল। উপভোগ্য, সুখপাঠ্য পোস্ট। + +

০৩ রা আগস্ট, ২০২০ রাত ৯:৪৬

জোবাইর বলেছেন: পাঠ ও উৎসাহ জাগানিয়া মন্তব্যে প্রীত হলাম। ধন্যবাদ।

১৪| ৩০ শে আগস্ট, ২০২০ রাত ২:০৩

ওমেরা বলেছেন: চেনা জানা জায়গাগুলোর বর্ণনা আমার লিখায় অপূর্ব লাগলো।

৩০ শে আগস্ট, ২০২০ রাত ২:২৯

জোবাইর বলেছেন: অনেকটা ঝটিকা গতিতে ক্ষণিকের বিরতিতে যা দেখেছি এবং নেট থেকে যতটুকু তথ্য জেনেছি তার ওপর ভিত্তি করে এই পর্বটি লেখা। আপনাদের সুইডেন সম্পর্কে এই ক্ষণিকের অতিথির লেখায় কোনো ভুলত্রুটি থাকলে ক্ষমাসুন্দর চোখে দেখবেন এবং সংশোধন করে দেবেন। ভালো থাকুন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.