নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সত্যের সন্ধানে ও শান্তির অন্বেষায় ...

জোবাইর

বিনয়ী মূর্খ অহংকারী বিদ্বান অপেক্ষা মহত্তর।

জোবাইর › বিস্তারিত পোস্টঃ

সুমেরু অঞ্চলে নিশি রাতে সূর্য দর্শন - পর্ব ৩

২৭ শে জুন, ২০২০ রাত ৮:৩৮



ইউরোপের বিখ্যাত দীর্ঘ সান্ধ্যকালীন ট্রেন ভ্রমণগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে স্টকহোম – ন্যারভিক রেল ভ্রমণ। এই ট্রেনটি স্টকহোম থেকে শুরু করে সুইডেনের সবচেয়ে উত্তরে অবস্থিত শহর কিরুনা হয়ে দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চলের মধ্য দিয়ে আঁকাবাঁকা রেলপথ ধরে নরওয়ের ন্যারভিক শহরে গিয়ে শেষ হয়। কিরুনা থেকে শুরু করে ন্যারভিক পর্যন্ত এলাকায় গ্রীষ্মকালে প্রচুর পর্যটক আসে। স্টকহোম থেকে রেলপথে কিরুনার দূরত্ব ১২৩৫ কিলোমিটার এবং যেতে ট্রেনে সময় লাগে প্রায় ১৩ ঘন্টা। সুইডেনের সরকারি রেলওয়ে কোম্পানীর নাম সংক্ষেপে SJ ( Sveriges Järnvägar)। স্টকহোম থেকে সারাদিনে শুধু একটি ট্রেন যায় এবং এটি ছাড়ে বিকাল ৬ টা ১০ মিনিটে। এটি মূলতঃ নাইট-ট্রেন এবং বেশিরভাগ হচ্ছে Sleeping compartment।

সুইডেনের নিশিরাতের রেলগাড়ির নিবাসন সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চাইলে নিচের ভিডিও ক্লিপটি দেখতে পারেন:



এই ট্রেনের ঘুমের কামরাগুলো তিন রকমের:
১। Sleeping compartment 1 Class: এখানে রুমের মধ্যে দুটি বেড এবং স্নানাগার ও শৌচাগার রয়েছে। সকালে বিনামূল্যে প্রাতরাশ কামরাতেই সরবরাহ করা হয়।
২। Sleeping compartment 2 Class: এখানে উপরে, নিচে, মাঝখানে মোট তিনটি বেড। দিনের বেলায় মাঝখানের বেডটি দেয়ালের সাথে ভাজ করে রাখা হয়। নিচের বেডটি হয়ে যায় তিন সিটের সোফা। রুমের মধ্যে একটি বেসিন, লাগেজ রাখার জন্য একটি শেলফ এবং এরকম কয়েকটি রুমের যাত্রীদের জন্য করিডোরে রয়েছে দুটি শৌচাগার ও একটি স্নানাগার।
৩। Bunk in couchette 2 Class (Liggvagn): এখানে একইভাবে একপাশে তিনটি এবং অন্যপাশে তিনটি মোট ৬টি বেড। দিনের বেলায় নিচের বেড দুটিতে সবার বসার সুবিধার্থে মাঝখানের বেড দুটিকে দেয়ালের সাথে ভাজ করে রাখা হয়। শৌচাগার ও স্নানাগার বাইরের করিডোরে। এ ধরনের কামরাগুলো আবার পুরুষ, মহিলা এবং মিক্সড - এই তিন ভাগে বিভক্ত।


এছাড়া কয়েকটি কমপারমেন্ট আছে চেয়ার সিটের। রেডিমেড ফাস্টফুডসহ রয়েছে একটি রেস্টুরেন্ট।

আমরা টিকেট অনুযায়ী আমাদের কামরায় গিয়ে বসলাম। টিকেট আগে থেকেই বুক করা ছিল। আমাদের কামরাটি ছিল ৩য় ক্যাটাগরির স্লিপিং কমপার্টমেন্ট। ঘুমানোর ইচ্ছা তেমন নেই। ট্রেনের জানালা দিয়ে সুইডেনের প্রকৃতিকে দেখার সুযোগ ঘুমিয়ে নষ্ট করতে চাই না। এই ধরনের কামরায় নিচের ও মাঝখানের বেডে শুয়ে শুয়ে জানালা দিয়ে বাইরের দৃশ্য উপভোগ করা যায়। তাই আমি বুক করার সময় সেভাবেই বেড বুক করেছিলাম। বেডগুলোর সাথে বালিশ, বিছানার কভার ও লেপ ভাজ করে দেওয়া আছে। আমাদের এই ৬ জনের রুমে মোট ৫ জন যাত্রী। ট্রেন ৬টা ১০ মিনিটে যাত্রা শুরু করার ১৫ মিনিট পরেই টিকেট চেকার এসে টিকেট চেক করে গেলেন। উপরের সিটের দুই যাত্রী সন্ধ্যা ৭ টার মধ্যেই তাদের বেডে গিয়ে শুয়ে পড়লেন। আমরা এর মধ্যে করিডোর ধরে ট্রেনের প্রথম কামরা থেকে শেষ কামরা পর্যন্ত একটা চক্কর মারলাম। রেস্টুরেন্ট কারের পরিবেশটা বেশ খোলামেলা এবং জানালাগুলো বেশ প্রশস্ত। এখানে বসে একটু জলপান করলাম। মনে হয় যেন খোলা বারান্দায় বসে কফি পান করছি।


আমাদের সিট ছিল একপাশে মাঝখানের ও নিচের বেড। নিচের বেড দুটো দিনের বেলায় রুমের সবার জন্য বসার সিট। আমরা নিচের বেডে বসে রাত ১০টা পর্যন্ত ট্রেনের দুই পাশের পেছন দিকে ছুটে চলা সুইডেনের প্রকৃতিকে দেখতে লাগলাম। যখন খুব সুন্দর দৃশ্য আসতো তখন করিডোরে গিয়ে ট্রেনের অপর পাশের দৃশ্যও দেখতাম। রাত ১০টার দিকে শুয়ে পড়লাম। আমি নিচের বেড থেকে এবং আমার মেয়ে মাঝখানের বেড থেকে জানালার পর্দা আংশিক সরিয়ে ঘুম না আসা পর্যন্ত বাহিরের দিকেই চোখ রাখলাম। জুন-জুলাই মাসে এখানে ঘড়ির হিসাবে দিন প্রায় ২০ ঘন্টা এবং রাত মাত্র ৪ ঘন্টা। রাতের সেই চার ঘন্টাও আমাদের দেশের মাগরিবের মতো আলো থাকে। কখন ঘুম এসে গেল জানিনা। খুব ভোরে যখন ঘুম ভাঙলো তখন আমরা বোডেন স্টেশনের কাছাকাছি চলে এসেছি। এই ট্রেনটি খুব অল্প কিছু স্টেশনে থামে। তাছাড়া এই সময়ে বেশিরভাগ যাত্রীর গন্তব্যস্থল হচ্ছে কিরুনা থকে নেরভিক পর্যন্ত এলাকাটি।


দীর্ঘ সময় ধরে ট্রেনের আশেপাশে যত জায়গা দেখেছি সবখানেই মানুষজন খুব কম। তাই এখানকার বেশিরভাগ এলাকা শান্ত ও নির্জন। কিরুনার আগের স্টেশন গ্যালিভারে এসে দেখলাম অনেক লোকজন এবং বেশিরভাগই বিদেশি পর্যটক। মনে হচ্ছে এখানে কোনো বিশেষ অনুষ্ঠান, মেলা বা প্রদর্শনী এরকম কিছু চলছে হয়তো। ট্রেন থেমে আছে। ট্রেনের গার্ডকে সামনে পেয়ে জিজ্ঞাসা করলাম, ট্রেন ছাড়তে দেরি হবে নাকি? তিনি বললেন, ইনল্যান্ডসবানা ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করছি। এইমাত্র এসে পৌঁছেছে। সেই ট্রেনের অনেক যাত্রী নাকি আমাদের এই ট্রেনে যাবে। পরে ইনল্যান্ডসবানা থেকে ঘুরে আসা এক পর্যটক থেকে জানতে পারলাম যে, ইনল্যান্ডসবানা রেলপথের দুপাশের নৈসর্গিক দৃশ্য নাকি খুবই সুন্দর! ইস্, আগে জানলে ভ্রমণের প্যাকেজে আরো একটা দিন বাড়িয়ে ইনল্যান্ডসবানা রেলপথেও ঘুরে আসতে পারতাম। গত বছর (২০১৯) যুক্তরাজ্যের দৈনিক পত্রিকা দ্যা টেলিগ্রাফের মতে মনোমুগদ্ধকর নৈসর্গিক দৃশ্যের জন্য ইউরোপের সবচেয়ে আকর্ষনীয় ১৫টি রেল ভ্রমণের মধ্যে সুইডেনের ইনল্যান্ডসবানা দ্বিতীয়। (The Telegraph) পরে কৌতুহলবশত আরো তথ্য সংগ্রহ করে যা জানলাম তাতে এ ট্রেনে ভ্রমণের খুব ইচ্ছা হয়েছিল। কিন্তু সময়ের অভাবে এবং পূর্ব পরিকল্পনা পরিবর্তন করে তা আর সম্ভব হয়নি।



আমাদের ট্রেন যে রেলপথে এসেছে সেটি সুইডেনের পূর্ব সীমানা হয়ে দক্ষিণ থেকে উত্তরে এসেছে। ইনল্যান্ডসবানা রেলপথটি সুইডেনের একদম মধ্যখানে দক্ষিণ থেকে উত্তরে এসেছে। ইনল্যান্ডস্ লাইন (সুইডিশ: ইনল্যান্ডসবানা) সুইডেনের ক্রিস্টিনহ্যামন থেকে মোরা হয়ে গালিভারে এসে শেষ হয়েছে। এটি ১,২৮৮ কিলোমিটার দৈর্ঘের সিঙ্গেল ট্র্যাকের রেলপথ। এটি ১৯০৮ ও ১৯৩৭ সালের মধ্যে নির্মিত হয়েছিল এবং উত্তর ও মধ্য সুইডেনের কেন্দ্রীয় অংশগুলির মধ্য দিয়ে চলে। এই ট্রেনগুলো কিছুটা ধীর গতির ডিজেল ইঞ্জিনে চলে। গ্রীষ্মকালে পর্যটকদের জন্য এখানে Gallivare থেকে Mora এবং Mora থেকে Gallivare দু'দিনের একটি প্যাকেজ ট্যুরের ব্যবস্থা করা হয়। মাঝখানে একরাত যাত্রীদেরকে Ostersund'এ হোটেলে রাখা হয়। এই সৌখিন প্যাকেজের মধ্যে রয়েছে সার্বক্ষনিক গাইড, রেল লাইনের পাশে হ্রদ ও নদীর তীরে নির্জন-নিস্তব্ধ পরিবেশে বসে চা/কফি পান, আশেপাশের স্থানীয় স্থানগুলো ঘুরে দেখা। পাঠকের উপলদ্ধির সুবিধার্থে ইনল্যান্ডসবানা রেলপথের কয়েকটি ছবি (একের ভেতরে পাঁচ) এখানে দিলাম। (More info: Inlandsbanan)


ট্রেন আবার চলতে শুরু করেছে। আমরা এখন আমাদের গন্তব্যস্থল কিরুনার দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। মালামাল গুছিয়ে নামার প্রস্তুতি নিয়ে জানালার পাশে বসে কিরুনা তথা উত্তর মেরুর আদিবাসী সামীদের চারণভূমি লাপল্যান্ডের অপরূপ প্রকৃতিক দৃশ্য নয়ন ভরে উপভোগ করতে করতে স্থানীয় সময় সকাল ৯টা ১৫ মিনিটে কিরুনায় পৌঁছে গেলাম। অনলাইনে যে কোম্পানী থেকে কিরুনায় চারদিনের জন্য গাড়ি ভাড়া করেছিলাম তারা আমাকে ই-মেইলে জানিয়েছিল কিরুনা রেল স্টেশনে আমাকে গাড়ি প্রদান করা হবে। তাই প্লাটফরমে নেমে রেন্ট-এ-কারের কোনো লোকজন আছে কিনা দেখছি। স্টেশনের সামনে দেখলাম একজন যুবতী বড় করে আমার নাম লেখা একটি কাগজ ধরে দাঁড়িয়ে আছে। কাছে গিয়ে ওকে সম্ভাষণ করে আমার পরিচয় দিলাম। মেয়েটি একটু মিষ্টি করে হেসে করমর্দন করার জন্য হাত বাড়িয়ে দিয়ে বললো, Welcome to the land of the midnight sun!

          কিরুনা রেল স্টেশন

সুইডেনের স্টকহোম থেকে কিরুনা পর্যন্ত ১৩০০ কিলোমিটার রেল ভ্রমণের নৈসর্গিক দৃশ্যগুলো সবার সাথে শেয়ার করার জন্য মোট ১৩টি ছবি নিচে যোগ করলাম। প্রতিটি ছবি থেকে পরবর্তী ছবির রেল ভ্রমণ দূরত্ব প্রায় ১০০ কিলোমিটার। ট্রেন থেকে চলন্ত অবস্থায় আমার তোলা ছবিগুলো অত সুন্দর হয়নি, তাই বেশিরভাগ ছবি ইন্টারনেট থেকে নিয়েছি।

ব্লগের ভার্চুয়্যাল সহযাত্রীদের ভ্রমণের জন্য স্টকহোম থেকে কিরুনা পর্যন্ত যাওয়ার পথের কিছু ছবি :

01. Uppsala

02. Gävle

03. Soderhamn

04. Hudiksvall

05. Sundsvall

06. Harnosand

07. Ornskoldsvik

08. Umea

09. Bastutrask

10. Boden

11. Murjek

12. Gallivare

13. Kiruna


ছবি ও তথ্যসূত্র: সুইডেন রেলওয়ে ও ইন্টারনেট

       ◄ পর্ব ২ ——— সুমেরু অঞ্চলে নিশি রাতে সূর্য দর্শন ——— পর্ব ৪

মন্তব্য ২৫ টি রেটিং +৯/-০

মন্তব্য (২৫) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে জুন, ২০২০ রাত ১০:০৬

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: দ্বিতীয় পর্বটা মিস করেছিলাম। এখন ওটাও দেখে এলাম। ঝরঝরে বর্ণনা ও সে সঙ্গে আপনার সাথে আমরাও চললাম মিডনাইট সূর্যের দেশ বা উত্তর আমেরিকার সামীদের চারণভূমিতে।

ঝরঝরে বর্ণনায় ভাললাগা ঝরঝরে বর্ণনা ও ছবিগুলি খুবই ভালো লেগেছে।

শুভেচ্ছা নিয়েন।

২৭ শে জুন, ২০২০ রাত ১১:৫৮

জোবাইর বলেছেন: পাঠ ও মন্তব্যে কৃতজ্ঞ। আপনার মতো সমজদার ব্যক্তিকে ভ্রমণসঙ্গী হিসাবে পেয়ে পুলকিত বোধ করছি। আপনার প্রতিও রইলো শুভেচ্ছা।

২| ২৭ শে জুন, ২০২০ রাত ১০:৪৮

রাজীব নুর বলেছেন: ছবি গুলো দেখে মুগ্ধ!!!

২৮ শে জুন, ২০২০ রাত ১২:০৩

জোবাইর বলেছেন: সেই ছবিগুলোকে বাস্তবে দেখলে সত্যিই বিমোহিত হতে হয়! মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

৩| ২৭ শে জুন, ২০২০ রাত ১১:২০

শেরজা তপন বলেছেন: ছবি দেখে ও লেখা পড়ে মোহিত হলাম। মজে গিয়েছিলাম সুইডেনের রুপে!

২৮ শে জুন, ২০২০ রাত ১২:৫৭

জোবাইর বলেছেন: মানুষের রূপে মজে পরে হতাশ হতে হয়! এসব রূপসীরা কথা দিয়ে কথা রাখেনা :)। প্রকৃতির রূপে মজলে লাভবান হবেন। প্রকৃতি মানুষকে নিরাশ করে না। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ, ভালো থাকুন।

৪| ২৮ শে জুন, ২০২০ রাত ১২:১৭

জাফরুল মবীন বলেছেন: বেশ কিছু তথ্য জানার পাশাপাশি চমৎকার কিছু ছবি দেখে খুব ভালো লাগল।

ধন্যবাদ আপনাকে।

২৮ শে জুন, ২০২০ রাত ৩:৩১

জোবাইর বলেছেন: তথ্য ও ছবিগুলো আপনার ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম। মন্তব্যের জন্য আপনাকেও ধন্যবাদ।

৫| ২৮ শে জুন, ২০২০ রাত ১:১২

মা.হাসান বলেছেন: আপনার ভ্রমন কাহিনীর আগের দুই পর্ব পড়েছি, কিন্তু অনলাইনে ছিলাম না বলে মন্তব্য করা হয় নি।

এরকম গোছানো লেখা কম পাই।
আগে থেকে টিকেট করা না থাকলে তাৎক্ষণিক ভাবে কাটা, বিশেষ করে সামারে, অনেক ক্ষেত্রেই সম্ভব হয় না, হলেও খুব ব্যয় বহুল হয়ে যায়। আর প্রথম বার ভ্রমনে সব দিক কাভার করা সম্ভব না।

নরভিকে যদি যেয়ে থাকেন, অরোরা দেখার সুযোগ হয়েছিলো কি? নাকি অত আগে দেখা যায় না?

পরের পর্বের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করবো।

২৮ শে জুন, ২০২০ ভোর ৪:০৫

জোবাইর বলেছেন: হাসান ভাই, ব্লগে আমার লেখা প্রথম ভ্রমণ কাহিনীতে আপনার মতো একজন সমজদার ভ্রমণপ্রিয় মানুষকে পেয়ে খুশি হলাম। আমার এই ভ্রমণটি অনেক আগের। করোনা মহামরির কারণে এ বছর সামারে দূরে কোনো ভ্রমণে যেতে পারছি না :(। তাই ভাবলাম সেই ভ্রমণটি ব্লগে লিখে ফেলি। স্মৃতি ঝাপসা হয়ে গেলেও লিপি হিসাবে ভ্রমণের আনন্দটুকু বেঁচে থাকবে।

'আগে থেকে টিকেট করা না থাকলে তাৎক্ষণিক ভাবে কাটা, বিশেষ করে সামারে, অনেক ক্ষেত্রেই সম্ভব হয় না, হলেও খুব ব্যয় বহুল হয়ে যায়। আর প্রথম বার ভ্রমনে সব দিক কাভার করা সম্ভব না।' –ঠিক বলেছেন।
সামার হচ্ছে এসব দেশের ভ্রমণের পিক সিজন। তবে করোনার কারণে এ বছর সব উলটপালট হয়ে গেছে। যেমন অনলাইনে জানতে পারলাম যে এ বছর সুইডেনের সামারে পর্যটকপ্রিয় ইনল্যান্ডস লাইন ট্রেনটি বন্ধ করে দিয়েছে। কারণ এই ট্রনটি হচ্ছে শুধু একটি কমপার্মেন্ট। সামাজিক দূরত্ব (২ মিটার) মেনে চললে যাত্রী নিতে পারবে মাত্র ১২ থেকে ১৪ জন! এতে কারো পোশাবে না।

অরোরা নিয়ে যথাসময়ে ভ্রমণ কাহিনীতে আলোচনা করবো। আমার এই ভ্রমণটি ছিল জুনের শেষ সপ্তাহে। তখন এখানে সারা রাত কমবেশি সুর্যের আলো থাকে। তাই এই সময় অরোরা দেখার সুযোগ-সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। পরের পর্বে দেখা হবে ইনশাল্লাহ, ভালো থাকুন।

৬| ২৮ শে জুন, ২০২০ রাত ১:২২

চাঙ্কু বলেছেন: এইতো দেখি কঠিন সুন্দর ভ্রমন!! প্রায় ১৩০০ কিমি যেতে ১৩ ঘন্টা লাগলে ট্রেনের স্পিডতো মনে হয় ভালোই!

২৮ শে জুন, ২০২০ ভোর ৪:৩০

জোবাইর বলেছেন: 'এইতো দেখি কঠিন সুন্দর ভ্রমন!!' –একদম সঠিক কথা। ভালো ও সুন্দর যে কোনো কিছু পাওয়া একটু কঠিনই হয় :)। পাঠ ও সুন্দর মন্তব্যের জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।

X2000 Train

সুইডেনের X2000 সিরিজের ট্রেনগুলোর সর্বোচ্চ গতি হলো ২০০ কিলোমিটার/ঘন্টায়। এই ট্রেনগুলো খুব বেশি আঁকাবাঁকা রেল লাইনে চলে না। তাই এগুলো শুধু বড় বড় কিছু শহরের সাথে আন্তঃসংযোগ এক্সপ্রেস ট্রেন হিসাবে ব্যবহার করা হয়। আমাদের ট্রেনটির সর্বোচ্চ গতি ছিল ১৬০ কিলোমিটার/ঘন্টায়।

৭| ২৮ শে জুন, ২০২০ ভোর ৪:১৯

আমি সাজিদ বলেছেন: নরডিক দেশগুলোকে প্রকৃতি উজার করে দিয়েছে সব। ছবিগুলো আর লেখায় মুগ্ধতা।

২৮ শে জুন, ২০২০ দুপুর ১:২৩

জোবাইর বলেছেন: প্রকৃতির উজার করে দেওয়া সে সৌন্দর্যকে ওরা যত্ন ও পরিচর্যার সাথে বাঁচিয়ে রেখেছে। আমাদের দেশেও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য খুব একটা কম ছিল না। আমরা অযত্নে, অবহেলায় এবং হীনস্বার্থে তা ধ্বংস করেছি। অনলাইন ও বিদেশি টিভি চ্যানেলে বিদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখেও দেশের মানুষ সচেতন হচ্ছে না! মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

৮| ২৮ শে জুন, ২০২০ ভোর ৫:৫২

নেওয়াজ আলি বলেছেন: চমৎকার ছবি , খুব ভালো লাগল।

২৮ শে জুন, ২০২০ দুপুর ২:১৪

জোবাইর বলেছেন: আপনার ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম। অনেক ধন্যবাদ।

৯| ২৮ শে জুন, ২০২০ ভোর ৬:২৮

ইসিয়াক বলেছেন:


অপূর্ব ! মনে হলো স্বপ্নের রাজ্যে ভেসে চলেছি। লেখা এবং ভ্রমন এ্যালবাম দুটোই মনোমুগ্ধকর।

২৮ শে জুন, ২০২০ দুপুর ২:৩০

জোবাইর বলেছেন: কবিরা সব সময় স্বপ্নের রাজ্যে ভেসে চলে :)। আশা করি ভ্রমন এ্যালবামটি কবির স্বপ্নের রাজ্যকে আরো স্বপ্নীল করে তুলবে। অনেক অনেক শুভেচ্ছা।

১০| ২৮ শে জুন, ২০২০ বিকাল ৩:৩২

মনিরা সুলতানা বলেছেন: অপূর্ব !!!

২৮ শে জুন, ২০২০ রাত ৯:৪৮

জোবাইর বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ, আপা।

১১| ১৯ শে জুলাই, ২০২০ সকাল ১০:৪৯

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন:
হায়!
কত সুন্দর দুনিয়া বানাইলা আল্লাহ
হলোনা দেখা কিছু চক্ষু মেলিয়া
আমার সোনার স্বদেশ কেন গো এমন
দা্ও আমাদেরে দাও যোগ্য নেতা।।

আহ! প্রতিটা ছবিতে যেন চোখ, মন আটকে থাকে।
মন চায় উড়ে গিয়ে বসে থাকি সেখানে অন্তহীন.........

দারুন ভ্রমনে দারুন বর্ণনায়, ছবিতে আমাদের মাতিয়ে রাখায় ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা

+++++

০৩ রা আগস্ট, ২০২০ রাত ১০:২৪

জোবাইর বলেছেন: ভৃগু ভাই, আপনার এত সুন্দর মন্তব্যটি কেন জানি যথাসময়ে চোখে পড়েনি, দেরিতে উত্তরের জন্য দুঃখিত! আসলে সেখানে কিছু কিছু জায়গা দেখেছি, এতই সুন্দর যা ভাষায় বর্ণনা করা যায় না। সবচেয়ে বেশি ভালো লেগেছে নির্জন-নীরব পরিবেশ, যার কারণে প্রকৃতির সৌন্দর্যকে একাগ্রচিত্তে উপভোগ করা যায়।

১২| ০৬ ই আগস্ট, ২০২০ সকাল ১১:৪৮

খায়রুল আহসান বলেছেন: ইস, কি সুন্দর ছবিগুলো! সত্যিকার অর্থেই চোখজুড়ানো ছবি!
অনেকদিনের ইচ্ছে, একবার দীর্ঘ সময়ের জন্য বের হয়ে গোটা ইউরোপ ট্যুর করবো। ২০১৯ এ একটা সুযোগ মিস করেছি কিছু পারিবারিক সমস্যার কারণে। জানিনা, আল্লাহ রাব্বুল 'আ-লামীন আমার সে ইচ্ছেগুলো পূরণ করবেন কিনা, এবং করলে কবে করবেন! বয়স তো দিনে দিনে বেড়ে যাচ্ছে।
আপনার ভ্রমণ কাহিনী পড়তে খুব ভাল লাগে কারণ আপনি খুব সাজিয়ে গুছিয়ে লিখতে পারেন, এবং ধারণা করতে পারি, আপনি খুব সাজিয়ে গুছিয়েই একটা ভ্রমণ আইটেনেরারি অর্গানাইজ করতে পারেন। আপনার মত একজন ভ্রমণসঙ্গী আমার প্রয়োজন, যিনি এতটা নীটলি একটা সফরসূচী বাস্তবায়ন করতে পারেন! :)
পোস্টে নবম ভাল লাগা + +।

১৩| ০৬ ই আগস্ট, ২০২০ দুপুর ১২:২০

খায়রুল আহসান বলেছেন: মেয়েকে নিয়ে ট্রেনের প্রথম কামরা থেকে শেষ কামরা পর্যন্ত "চক্কর দেওয়া", জানালা দিয়ে একবার এ পাশের আরেকবার ওপাশের দৃশ্যাবলি দু'চোখ ভরে দেখা, ইত্যাদি ব্যাপারগুলো বেশ ভাল লাগলো। আমি সেখানে থাকলে বোধহয় আমিও সেরকমটিই করতাম।
স্টকহোম-কিরুনা-নেরভিক তো বটেই, সুইডেনে গেলে ইনল্যান্ডসবানান এও যাব ইন শা আল্লাহ!
শেষের তেরটা ছবি তুলনাহীন! তবে যতই খারাপ হোক না কেন, আপনার নিজের তোলা কয়েকটা ছবিও দিতে পারতেন। পর্যটকের নিজ হাতে তোলা ছবি দেখার একটা আলাদা আকর্ষণ আছে। ছবির সাথে সাথে পর্যটকের মনেরও কিছু ছোঁয়া থাকে সেখানে।



০৬ ই আগস্ট, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৩৮

জোবাইর বলেছেন: আপনার মতো একজন ভ্রমণপ্রিয় মানুষের আন্তরিকরতার পরশ মাখানো চমৎকার মন্তব্যে প্রীত হলাম। ভ্রমণকাহিনীতে 'ছবির সাথে সাথে পর্যটকের মনের ও ব্যক্তিগত ছবির কিছু ছোঁয়া' থাকা উচিত - কথাটা ঠিক। এই ভ্রমণের যে ছবিগুলো আমার কাছে আছে সেগুলো পেপার প্রিন্ট। ডিজিটালে পরিবর্তন করার অলসতায় দেই নি। সামনের পর্বগুলোতে যোগ করে দিয়েছি।

আমি এক সময় খুবই ভ্রমণ করতাম। তখন দেশ-বিদেশের ভ্রমণসঙ্গীদের দেখে অনেক কিছু শিখেছি। আমি সাধারণত ভ্রমণের আগে সব ধরনের তথ্য সংগ্রহ করে এমনভাবে একটি প্ল্যান করি যাতে কমসময়ে বেশি জায়গা পরিদর্শন করা যায়। ভ্রমণ আইটেনেরারি আগে থেকে অর্গানাইজ করতে না পারলে পরে সময় নষ্ট হয় এবং গুরুত্বপূর্ণ অনেক কিছু বাদ পড়ে যায়। মনের মতো ভ্রমণসঙ্গী পাওয়া খুবই কঠিন। কারণ একেকজনের একেকরকম পছন্দ। তারপরেও মোটামুটি বেসিক ব্যাপারগুলোর ব্যাপারে একমত হতে পারলে ভ্রমণসঙ্গী নিয়ে ভ্রমণ খুবই আনন্দের এবং নিরাপদও।

এখন পারিবারিক জটিলতার কারণে আগের মতো ভ্রমণ করতে পারি না। তারপরেও চেষ্টা করি সুযোগ পেলেই কাছে বা দূরে ভ্রমণ করার। অনেকটা আপনার মতোই আমারও একটি স্বপ্ন আছে - সুইডেন থেকে একটি গাড়ি নিয়ে পুরো ইউরোপে হয়ে দক্ষিন স্পেনে ভূমধ্য সাগর পাড়ি দিয়ে মরক্কো থেকে পুরো আফ্রিকা মহাদেশের মধ্য দিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকায় যাওয়া। দিন দিন বয়স বাড়ছে তবে আশা এখনো ছাড়িনি। আপনি পুরো স্ক্যানডেনিভিয়ান (ডেনমার্ক, সুইডেন, নরওয়ে, ফিনল্যান্ড) নিয়ে একটা ভ্রমণ প্ল্যান করতে পারেন যার মধ্যে স্টকহোম-কিরুনা-নেরভিক অন্তর্ভুক্ত থাকবে। এ ধরনের ভ্রমণগুলোতে কিছুটা অ্যাডভেঞ্চার থাকে তাই বয়স বেশি হওয়ার আগেই আসা ভালো।
আগামী পর্বে আবার কথা হবে, ভাইজান। ভালো থাকুন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.