নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সত্যের সন্ধানে ও শান্তির অন্বেষায় ...

জোবাইর

বিনয়ী মূর্খ অহংকারী বিদ্বান অপেক্ষা মহত্তর।

জোবাইর › বিস্তারিত পোস্টঃ

উত্তর মেরুতে নিশি রাতে সূর্য দর্শন - পর্ব ৪

০৫ ই জুলাই, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:০১

বিভিন্ন ঋতুতে ল্যাপল্যান্ড: শীত, বসন্ত, গ্রীষ্ম ও শরৎ

রেন্ট-এ-কার' কোম্পানীর সেই মেয়েটি কুশলাদি জিজ্ঞাসা করে আগে থেকেই পূরন করা একটা ফরমে আমার দস্তখত নিয়ে কিরুনা স্টেশনের পাশের পার্কিং এরিয়াতে নিয়ে গেলেন। সেখানে একটি volkswagen golf গাড়ি চাবিসহ আমাকে বুঝিয়ে দিলেন। তারপর ওদের রিজার্ভ পার্কিংয়ের জায়গাগুলো দেখিয়ে বললো, আমি ট্রেনে কিরুনা থেকে চলে যাওয়ার সময় গাড়িটি এই পার্কিং-এ রেখে চলে গেলেই হবে। পাশেই একটি খুঁটিতে আটকানো একটি কাঠের বক্স দেখিয়ে বললো, আর গাড়ির চাবিটি এই বক্সে ফেলে দিলে হবে। আমি ওকে আমাদের ভাড়া করা কটেজের ঠিকানাটা দেখিয়ে জিজ্ঞাসা করলাম কোনদিকে যেতে হবে। রাস্তা দেখিয়ে দিয়ে বললো, খুব দূরে নয়, কাছেই। এরপর আমার ভ্রমণের শুভকামনা করে মেয়েটি চলে গেল।


মেয়েটি বিদায় নিয়ে চলে যাওয়ার পর গাড়ি নিয়ে ১০ - ১৫ মিনিটের মধ্যে কটেজের সামনে এসে হাজির হলাম। ঘুরে দেখলাম, কটেজের এরিয়াতে রিসেপশন বা তত্ত্বাবধায়কের কোনো অফিস নেই। এমনকি তত্ত্বাবধায়কের দায়িত্বে আছে এমন কোনো লোকজনও নেই! অনলাইনে বুক দেয়ার সময় পাওয়া ইমেইলের একটি প্রিন্টকপি আমার সাথে ছিল। সেটা দেখে ফোন করলাম। ফোনে উত্তর পেলাম আমার কটেজ নাম্বার ২২, রুম নাম্বার ৩ এবং রুমের চাবি কটেজের সামনে লেটার বক্সের ভেতরে আছে। ওরা বিস্তারিত জানিয়ে আমাকে ইমেইল করেছিল। গত দুদিন আমি ইমাইল চেক করিনি, তাই মিস। যা-ই হোক, কটেজে ঢুকে দেখলাম সবকিছু সাজানো গোছানো পরিষ্কার। তিনটি বেডরুমের একটি আমাদের। তিন রুমের জন্য কমন ড্রয়িং-কাম-কিচেন। আমরা রুমের মধ্যে আপাতত ব্যগ গুলো রেখে গোসল করে ফ্রেস হয়ে গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে গেলাম। সময় নষ্ট করা যাবে না, কম সময়ে যত বেশি জায়গা দেখতে পারি।


প্রথমে শহরের প্রধান সড়কগুলোতে একটা চক্কর দিলাম। ছিমছাম ছোট শহর। লোকজন খুব কম, রাস্তাগুলোতে গাড়িও কম। উল্লেখ্য, কিরোনা শহরের মধ্যে দেখার তেমন কিছু নাই, তাই বেশিরভাগ পর্যটক শহরের বাহিরেই ঘুরে। বেড়ানোর সুবিধার্থে আমি আগে থেকেই কিরোনা ও আশাপাশের এলাকার মানচিত্র সাথে করে নিয়েছিলাম। প্রথমেই গেলাম শহরের কেন্দ্রে (রেল স্টেশন থেকে দুই কিলোমিটার দূর) কিরুনা টুরিস্ট সেন্টারে। সেখান থেকে কিছু তথ্য জেনে নিলাম এবং কাছের ও দূরের বিভিন্ন পর্যটন এলাকার তথ্য সম্পর্কিত কাগজপত্র সংগ্রহ করলাম। এরপর প্রয়োজনীয় কিছু কেনাকাটা করে কটেজে চলে আসলাম।


এক নজরে কিরুনা শহর ও এর আশাপাশের দর্শনীয় স্থানসমূহ:
1. Kiruna Church
2. Abisko National Park
3. Kebnekaise (Mountain)
4. Aurora Sky Station
5. Ice Hotel
6. Sarek National park
7. Red Cross War Museum
8. Laponia – Lapland’s world heritage area
9. Activities in Abisko
10. Muddos National Park
11. Husky Tours (Sled dog) & sami Siida (Sami Activities)
12. Naturum Laponia
13. Kungsleden (Hiking trail)

সময় এবং পূর্বপ্রস্তুতির অভাবে সব জায়গা দেখা সম্ভব হবে না। রুমে জিনিসপত্র ঘুছিয়ে খাওয়া-দাওয়া করে কিরুনা পর্যটন কেন্দ্রের তথ্য এবং আমার পূর্ব সংগৃহীত তথ্যগুলো সামনে নিয়ে চার দিনের একটা পরিকল্পনা করে ফেললাম। কিরুনা গীর্জা আমাদের কটেজ থেকে কাছে। আজকে প্রথমে যাবো কিরুনা গীর্জা পরিদর্শনে তারপর আইস হোটেল। যাত্রা শুরু করার আগে একটু জেনে নিই সুমেরু অঞ্চলের প্রকৃতিক সৌন্দর্যের ল্যাপল্যান্ড এবং অত্র এলাকার আদিবাসী স্যামিদের কিছু ঐতিহাসিক ও ভৌগোলিক তথ্য।

ল্যাপল্যান্ডের মানচিত্র

ল্যাপল্যান্ড উত্তর ইউরোপের মূলত আর্কটিক সার্কেলের মধ্যে অবস্থিত বিশেষ প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্যের একটি অঞ্চল। এটি নরওয়ে, সুইডেন এবং ফিনল্যান্ডের উত্তরাংশ জুড়ে রাশিয়ার কোলা উপদ্বীপ পর্যন্ত প্রসারিত। এটি পশ্চিমে নরওয়েজিয়ান সমুদ্র, উত্তরে বেরেন্টস সাগর এবং পূর্ব দিকে শ্বেত সাগর দ্বারা আবদ্ধ। অঞ্চলটির প্রচলিত নাম ল্যাপল্যান্ড। এই অঞ্চলটিতে কয়েক হাজার বছর ধরে অল্প সংখ্যক স্থানে বসবাস করে আসছে সামি নামে একটি জাতি। এরা হাজার হাজার বছর ধরে উত্তর স্ক্যান্ডিনেভিয়াতে বসবাসকারী যাযাবর লোকদের বংশধর। এদের রয়েছে নিজস্ব ভাষা, ধর্ম ও সংস্কৃতি। কালের প্রবাহে এবং রাজনৈতিক ও ভৌগোলিক পরিবর্তনে ল্যাপল্যান্ডও স্থায়ীভাবে ভাগ হয়ে উল্লেখিত দেশগুলোর অধীনে চলে যায় এবং সেইসাথে স্থানীয় আদিবাসী সামিগণও নরওয়ে, সুইডেন, ফিনল্যান্ড ও রাশিয়ার নাগরিকে পরিণত হয়। ল্যাপল্যান্ডের যে অংশ সুইডেনের অন্তর্ভুক্ত সেটিকে বলা হয় সুইডিশ ল্যাপল্যান্ড। এটি বিরাট একটি অঞ্চল, তাই এর জলবায়ু, তাপমাত্রা এবং ভূমিরূপ এলাকা বিশেষে কিছু পার্থক্য রয়েছে। কিরুনাতে শীতকালে (ডিসেম্বর - এপ্রিল) গড় তাপমাত্রা থাকে -14.3 °C এবং গ্রীষ্মকালে (জুন - আগস্ট) 11.5 °C।

সামি আদিবাসী

দীর্ঘ শীতকাল, শূন্য ডিগ্রির নিচে তাপমাত্রা, বৈরি আবহাওয়া এবং কাজকর্মের অভাবে অন্যান্য অঞ্চলের লোকজন ল্যাপল্যান্ডে এসে স্থায়ীভাবে বসবাস করতে চাই না। তাই সুইডেনের অতীতের রাজারা সামিদেরকে সেখানে স্থায়ীভাবে থাকার জন্য উৎসাহিত করেছে। সুইডেনের বর্তমান প্রশাসনও এদেরকে কিছু ক্ষেত্রে পূর্ণ স্বাধীনতাসহ বিভিন্নভাবে সাহায্য-সহযোগিতা করে আসছে যাতে এরা এদের নিজস্ব ভাষা-সংস্কৃতি-পেশা বজায় রেখে এখানে স্থায়ীভাবে বসবাস করতে পারে। বর্তমান সুইডেনের উত্তরের দুই জেলার (Norrbottens, Vasterbottens) প্রায় ৯০% এলাকা বৃহত্তর ল্যাপল্যান্ডের অংশ। সুইডিশ ল্যাপল্যান্ডের আয়তন ১,১০,০০০ বর্গকিলোমিটার (বাংলাদেশের চার ভাগের তিন ভাগ) ও জনসংখ্যা মাত্র ৯০,০০০। বর্তমানে বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা এদের মোট লোকসংখ্যা আনুমানিক ১ লক্ষ। এর মধ্যে নরওয়েতে ৬০,০০০, সুইডেনে ৩০,০০০, ফিনল্যান্ডে ৮,০০০ এবং রাশিয়ায় ২০০০ জনের আবাস।

১। কিরুনা গির্জা

কিরুনা গির্জা - গ্রীষ্ম ও শীতকালে

কিরুনার আকর্ষনীয় গির্জা ভবনটি ১৯০৯ থেকে ১৯১২ সালের মধ্যে নির্মিত হয়েছিল। এটি নির্মান করেছিল সুইডেনের সরকারী মালিকাধীন খনিজ সম্পদ উত্তোলনকারী কোম্পানীএলকেএবি। স্থপতি গুস্তাভ উইকম্যান এবং ম্যানেজার হজলমার লুন্ডবোহম উভয়ই সক্রিয়ভাবে নির্মাণ সংস্থায় অংশ নিয়েছিলেন। নির্মাতা ছিলেন কিরুনার অলিফ এডফাস্টসন নাইগ্রেন। চিত্রকলার কাজটি করেছেন চিত্রশিল্পী ইমানুয়েল উস্টবার্গ। এটির ডিজাইন করা হয়েছিল ল্যাপল্যান্ডের আদিবাসী সামিদের কাঠের নির্মিত বাড়ির অনুকরণে। ডিসেম্বর ৮, ১৯১২ সালে আটজন পুরোহিতের সহায়তায় বিশপ অলোফ বার্গকভিস্ট চার্চের উদ্বোধন করেন। গির্জার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ৩িন হাজার মানুষকে আমন্ত্রণ করা হয়েছিল এবং তাদেরকে কফি ও রুটি পরিবেশনের জন্য বিশেষ ডিজাইনে বানানো হয়েছিল কাপ ও প্লেট। অনুষ্ঠানের শেষে বিশপ ঘোষণা দিলেন যে প্রত্যেকে নিজের কাপ ও প্লেট গীর্জার স্যুভেনির হিসাবে বাড়িতে নিয়ে যেতে পারবে। গির্জা ভবনটির পাশে রয়েছে গাছগাছালি ও লতাপাতায় সাজানো সুন্দর একটি কবরস্থান।

২। আইস হোটেল

আইস হোটেল - গ্রীষ্ম ও শীতকালে

কিরুনা থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে পাহাড় এবং অরণ্যে ঘেরা টর্নে নদীর পাশে বিখ্যাত আইস হোটেলটি অবস্থিত। কিরুনা থেকে সেখানে বাসেও যাওয়া যায়। এটি বিশ্বের প্রথম ও সবচেয়ে বড় আবাসিক আইস হোটেল। এই হোটেলটি বরফ আর তুষারের শক্ত গাঁথুনী দিয়ে তৈরি। হোটেলটি প্রতি বছর একবার নতুন করে ডিজাইন করা হয় যাতে পর্যটকরা আবারো আসতে উৎসাহিত হয়। শীতের সময় এই হোটেলের পরিসর অনেক বড়। পর্যটকদের সুবিধার্থে হোটেল কমপ্লেক্সের একটি অংশ 'Ice hotel 365' (যার মধ্যে একটি বার ও বরফ ভাস্কর্যের গ্যালারি রয়েছে) স্থায়ীভাবে নির্মিত এবং এটি ৩৬৫ দিন খোলা থাকে।

আইস হোটেল এরিয়া ম্যাপ

এটি ডিসেম্বরের ১৫ তারিখ থেকে শুরু করে এপ্রিলের ১৫ তারিখ পর্যন্ত পূর্ণাঙ্গভাবে ও পুরোদমে চালু থাকে। তখন এখানে বরফের তৈরি বিলাসবহুল স্যুইটসহ ৫৫টি আবাসিক রুম থাকে। এগুলোতে খাট থেকে শুরু করে সব ধরনের আসবাবপত্র বরফের তৈরি। এর পাশাপাশি রয়েছে সনাতন হোটেলের মতো ৭২টি উষ্ণ আবাসিক কামরা। এছাড়া রয়েছে একটি আইস বার, দুটি রেস্টুরেন্ট, একটি সেমিনার কক্ষ এবং একটি শিল্পকলা গ্যালারি। বাইরের তাপমাত্রা যাই হোক না কেন হোটেল রুমের তাপমাত্রা সবসময় রাখা হয় মাইনাস পাঁচ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গ্রীষ্মের দিনে এই তাপমাত্রা ধরে রাখার জন্য সৌর-বিদ্যুৎ চালিত কুলিং প্রযুক্তি ব্যাবহার করা হয়।

বরফের তৈরি শয়নকক্ষ ও ভাস্কর্য

রুম ভাড়া নিয়ে রাত্রিযাপন করতে না চাইলেও পর্যটকদের জন্য টিকেট কিনে গাইডসহ হোটেল পরিদর্শনের ব্যবস্থা আছে। আমরাও তাই করলাম। গ্রীষ্মের দিনে সাধারণত পর্যটকদের কাছে শীতের পোশাক থাকে না। তাই হোটেলটি পরিদর্শনের সময় সবাইকে বিশেষ ধরনের শীতের জ্যাকেট এবং হ্যান্ড গ্লাভস দেয়া হয়। ভিতরে ঢুকার পর মনে হয় সম্পূর্ণ এক ভিন্ন জগৎ! বিভিন্ন রকমের বাতির রঙ্গীন আলো বরফের দেয়ালে প্রতিফলিত হয়ে এক স্বপ্নীল পরিবেশের সৃষ্টি করেছে। তাছাড়া বাইরের ২০ ডিগ্রী সেলসিয়াস থেকে হঠাৎ করে মাইনাস ৫ ডিগ্রী সেলসিয়াসে এসে মনে হয় এক সেকেন্ডে গরমকাল থেকে শীতকালে চলে আসলাম। আইসবারে গিয়ে আমরা ঠান্ডা পানীয় পান করতে চাইলাম। বরফের তৈরি কারুকাজ করা (ওয়ান টাইম ইউজ) গ্লাসে পানীয় পরিবেশন করলো। একটু সাবধানে পান করতে হয়, বরফের গ্লাস ওষ্ঠের সাথে লেগে থাকে। গাইড সুইডিশ/ইংরেজিতে সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দিয়ে হোটেলের বেশিরভাগ অংশ ঘুরিয়ে দেখায়।

আইস হোটেলে প্রবেশের আগে বিশেষ ধরনের শীতের জ্যাকেট পরিধানে আমরা (পিতা ও কন্যা)

আইসহোটেল সম্পর্কে আরো জানতে দেখুন:
১। Icehotel
২। একটি ক্রিয়েটিভ উপস্থাপনা : আইস হোটেল - ওমেরা

অন্য কোনো জায়গায় যাওয়ার মতো আর সময় ছিল না। তাই আলোময় রাতকে উপভোগ করার জন্য কিরুনা শহরের আশেপাশে গাড়ি নিয়ে রাত ১১টা পর্যন্ত ঘুরাঘুরি করলাম। এখনও ঘরের বাহিরে কোনো বাতি ছাড়াই কাজ করার মতো পর্যাপ্ত আলো! তাই রাস্তার লাইটগুলো নিভানো। কিরুনাবাসীর জীবন চলে ঘড়ির কাঁটা মেপে। ওরা এখন গভীর নিদ্রায় নিমগ্ন হলেও কিছু কিছু পর্যটক এখনও রাস্তায় ঘুরে ঘুরে পড়ন্ত বিকেলের ধূসর আলোয় আলোকিত রাত উপভোগ করছে। আমাদের কটেজের পাশেই শিশুদের খেলাধুলোর একটি পার্ক। সেখানে ৭-৮ বছরের দুটি শিশু এখনও খেলতেছে। আমার মেয়েও বায়না ধরলো সে পার্কটিতে দোলনায় ছড়বে। তাই আমরাও সেদিকে গেলাম। শিশুদের মা-বাবার সাথে আলাপ করে জানলাম উনারা ইটালি থেকে এসেছেন। তাঁরা শিশু দুটিকে বারবার বলছেন, চলো এখন ঘুমাতে যায়। আর বাচ্চাগুলো অনুনয় করে তাদের মাকে বলছে, "মা, আর কিছুক্ষণ খেলি। এখনো তো সন্ধ্যা হয় নাই।" ঘড়িতে তখন রাত সাড়ে এগারটা। সময় গড়িয়ে যায়, কিন্তু এই শিশুদের চিরচেনা সেই সন্ধ্যা তো আর হয় না! সূর্য ডুবুক আর না ডুবুক এখন রাত - ঘুমাতে হবে। তাই আমরাও কটেজে চলে আসলাম।

রাতে সব জায়গায় আলো দেখা গেলেও দিগন্তরেখায় সূর্য দেখতে হলে উঁচু জায়গায় উঠতে হয় অথবা শহরের বাহিরে উন্মুক্ত প্রাঙ্গনে যেতে হয়। আগামীকাল নিশিরাতে সুর্য দেখার জন্য একটি জায়গাও নির্বাচন করে ফেললাম। আগামীকালের ভ্রমণ পরিকল্পনা তৈরি করে ক্লান্ত শরীর নিয়ে আপাতত ঘুমিয়ে পড়লাম। শুভরাত্রি!

ফটো গ্যালারি:

লৌহ আকরিকের খনি খ্যাত কিরুনা শহর

পাখির চোখে কিরোনা গির্জা

কিরোনা গির্জার পাশে কবরস্থান

আইস হোটেলের শয়নকক্ষ

আইস হোটেলের পানশালা

আইস হোটেলে গীর্জার নিয়মে বিবাহ

২১ জুন, রাত ১২টা ৩০ মিনিট, কিরুনা, সুইডেন - ঘড়ির সময় দেখলে মনে হবে শহরের মানুষগুলো ঘুমাচ্ছে, সূর্যের আলো দেখলে মনে হবে শহরটি এখনো জেগে আছে।

[তথ্য ও বেশিরভাগ ছবি ইন্টারনেট থেকে সংগৃহিত]

     ◄ পর্ব ৩ - উত্তর মেরুতে নিশি রাতে সূর্য দর্শন - পর্ব ৫


মন্তব্য ৫০ টি রেটিং +১৩/-০

মন্তব্য (৫০) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই জুলাই, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:১৩

আজাদ প্রোডাক্টস বলেছেন: একের ভেতর দুই ছবি সমৃদ্ধ অসাধারণ একটি লেখা । খুব ভালো লেগেছে।

০৫ ই জুলাই, ২০২০ রাত ৮:৪৬

জোবাইর বলেছেন: পাঠ, মন্তব্য এবং সেইসাথে ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম। ধন্যবাদ।

২| ০৫ ই জুলাই, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৩১

ইসিয়াক বলেছেন: পরে পড়ে মন্তব্য করবো।
চমৎকার পোস্ট।

০৫ ই জুলাই, ২০২০ রাত ৮:৪৯

জোবাইর বলেছেন: অগ্রিম মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

৩| ০৫ ই জুলাই, ২০২০ রাত ৮:৩১

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: যে দেশ এত সুন্দর আর সমৃদ্ধ সেখানকার মানুষ এত বেশী আত্মহত্যা কেন করে?

০৫ ই জুলাই, ২০২০ রাত ৯:২২

জোবাইর বলেছেন: কঠিন প্রশ্ন! এ ব্যাপারে উত্তর দিতে হলে সুইডেনের মানুষ সম্পর্কে বিশেষ করে এদের ব্যক্তিগত ও পারিবারিক জীবন এবং আর্থ-সামাজিক বিভিন্ন বিষয়ে আরো জানতে হবে। মানুষের জীবনের এইটাই মনে হয় বড় ট্রাজেডি যে অর্থ-সম্পদ, রূপ-সৌন্দর্য্য, আনন্দ-ভালোবাসা সব থাকার পরেও কিছু মানুষ সুখী হতে পারে না!

তবে আমার মনে হয় সুইডেনে আত্মহত্যার হার তুলনামূলকভাবে বেশি হওয়ার অন্যতম কারণগুলো হচ্ছে:
● বছরের বেশিরভাগ সময় শীতল ও অন্ধকার হওয়ার কারণে অনেক মানুষ বিষাদগ্রস্ততায় ভোগে।
● যুবক-যুবতি হউক বা বয়স্ক মানুষই হোক - বেশিরভাগ মানুষ একা বাস করে।
● বেশিরভাগ মানুষের পারিবারিক বন্ধন শীতল। কারো মুখ চেয়ে বা প্রয়োজনে বেঁচে থাকার আকাঙ্ক্ষাটুকু থাকে না।
● এখানকার মানুষ বেশি শান্তি ও আরামে থাকতে অভ্যস্ত হওয়ায় অপ্রত্যাশিত সামান্য আঘাতেই ভেঙ্গে পড়ে।
● এখানে ভালোভাবে বাঁচতে হলে পূর্বপূরুষ থেকে যেমন কোনো ধন-সম্পদ পেতে হয়না, তেমনি উত্তারাধীকারীদেরকেও কিছু দিয়ে যেতে হয়না।

৪| ০৫ ই জুলাই, ২০২০ রাত ৮:৩৮

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: অসাধারন জগত ঘুরিয়ে আনলেন :)

দারুনসস...

+++++++

০৫ ই জুলাই, ২০২০ রাত ৯:২৬

জোবাইর বলেছেন: ধন্যবাদ বিদ্রোহী ভৃগু ভাই, আগামী পর্বে নিশিরাতে সুর্য পর্যবেক্ষণ করবো। আশা করি সাথে থাকবেন।

৫| ০৫ ই জুলাই, ২০২০ রাত ৮:৪৯

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: আমরা উপমহাদেশে ভাবতেই পারি না যে কেউ গাড়ির চাবি দিয়ে বলে যাবে, প্রয়োজন শেষে আপনি গাড়িটা পারকিংএ রাখবেন এবং​ চাবিটা বক্সে রাখবেন।একইভাবে কটেজে গিয়েও কোন রিসেপশন সেন্টার না দেখেও অবাক হলাম।জনসংখ্যার স্বল্পতার কারণেই​ বোধায় এমন ব্যবস্থাপনা।
কিরুনা গির্জার ছবিটি খুব সুন্দর লাগলো।আপনার সঙ্গে সঙ্গে আইস হোটেলেও ঘুরে এলাম।যদিও ইতোপূর্বে ওমেরাপুর সৌজন্যে আইস হোটৈলের পরিচয় একবার পেয়েছি।
সবমিলিয়ে চমৎকার লাগলো।
শুভেচ্ছা নিয়েন।

০৫ ই জুলাই, ২০২০ রাত ১০:০১

জোবাইর বলেছেন: পদাতিক ভাই, বিশেষ উপলদ্ধিসহ অভিজ্ঞ মন্তব্যের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। গাড়ি ফেরত দেওয়ার এই অবিশ্বাস্য ব্যাপারটি পরে আমার কাছেও খটকা লেগেছিল। তাই নিশ্চিত হওয়ার জন্য ভ্রমণের মাঝখানে ওদের অফিসে গিয়েছিলাম। তখন রিসেপসনিস্ট হেসে আমাকে বললেন, "হ্যাঁ, ওভাবেই আপনি গাড়ি রেখে চলে যাবেন। কোনো সমস্যা হবে না।"

কটেজে কোনো রিসেপশন অফিস না রাখার কারণগুলো হলো: জনসংখ্যার স্বল্পতা, খরচ বাঁচানো, চুরি-ডাকাতির সম্ভবনা না থাকা এবং পারষ্পরিক বিশ্বাস। শুভেচ্ছা নিয়েন। আগামী পর্বে আবার দেখা হবে।

৬| ০৫ ই জুলাই, ২০২০ রাত ৯:৩৪

শায়মা বলেছেন: ভাইয়া অসাধারণ এই লেখাটা নিশ্চয় কখনও পাবলিশ করবে তুমি.......:)

০৬ ই জুলাই, ২০২০ রাত ১২:১০

জোবাইর বলেছেন: আপাতত ব্লগের জন্যই লিখছি। আরো কয়েকটি ভ্রমণ কাহিনী লেখার ইচ্ছা আছে। পরে ভেবে দেখবো পাবলিশ করা যায় কিনা! আজ থেকে ১৫ বছর আগে আমার প্রথম গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছিল। এরপরে আরো কয়েকটি বই প্রকাশ করেছিলাম। বইগুলোর একাধিক সংস্করণ প্রকাশনা হয়েছে।

নিম্নমানের প্রকাশনা ও বাঁধাই এবং প্রকাশকদের প্রতারণার কারণে বই প্রকাশের উৎসাহ হারিয়ে ফেলেছি। তারপরেও কিছু পান্ডুলিপি জমা হচ্ছে। বইয়ের প্রচ্ছদ, কম্পোজ, ছাপা, বাঁধা এবং বিপণন সম্পর্কে পড়াশুনা ও ট্রেনিং নিচ্ছি। ভবিষ্যতে সব দায়িত্ব নিজে নিয়ে পাবলিশ করতে পারলে উদ্যোগ নেবো, ইনশাল্লাহ।

৭| ০৫ ই জুলাই, ২০২০ রাত ৯:৪০

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: চমৎকার তথ্যবহুল ভ্রমণ পোস্ট।

০৬ ই জুলাই, ২০২০ রাত ১২:১১

জোবাইর বলেছেন: ধন্যবাদ, কবি ভাই।

৮| ০৫ ই জুলাই, ২০২০ রাত ১০:০৩

ঢাবিয়ান বলেছেন: দারুন সব অভিজ্ঞতা। চার নাম্বার ছবিটা খুব সম্ভবত অরোরা। অরোরা হলো মেরু অঞ্চলের আকাশে দৃশ্যমান অত্যন্ত মনোরম প্রাকৃতিক আলোর প্রদর্শনী। থ্রি ডি অম্নি থিয়েটারে দেখেছি যেটা বাস্তবের প্রায় কাছাকাছি। অসাধারন এক অভিজ্ঞতা

০৬ ই জুলাই, ২০২০ রাত ১২:৫৭

জোবাইর বলেছেন: পাঠ ও মন্তব্যের জন্য কৃতজ্ঞতা। ঠিক বলেছেন, চার নাম্বার ছবিটা অরোরা। সুমেরু অঞ্চল অরোরা দেখার জন্যও বিখ্যাত। তবে অরোরা সবচেয়ে বেশি দেখা যায় শরৎকালে (সেপ্টেম্বর - নভেম্বর)। সাধারণত মেঘমুক্ত অন্ধকার আকাশে অরোরা স্পষ্টভাবে দেখা যায়।

৯| ০৫ ই জুলাই, ২০২০ রাত ১০:০৭

মেহবুবা বলেছেন: ছবি মন কাড়া, পড়তেও ভাল লাগছিল তবে মনে হল শীত করছে !

০৬ ই জুলাই, ২০২০ রাত ১২:২৭

জোবাইর বলেছেন: শীত লাগার কারণ খুব মনোযোগ সহকারে পড়েছেন নিশ্চয়ই! যাক, ভালোই হলো দূর থেকেও আইস হোটেলের কিছু অনুভূতি পেয়ে গেলেন। পড়তে ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

১০| ০৫ ই জুলাই, ২০২০ রাত ১১:৩১

রাজীব নুর বলেছেন: ভাইরে ভাই কে আপনি?
আপনি আছেন মহা সুখে।

০৬ ই জুলাই, ২০২০ রাত ১:৫৭

জোবাইর বলেছেন: "পৃথিবীতে আনন্দ এবং দুঃখ সব সময় থাকবে সমান সমান। বিজ্ঞানের ভাষায় আনন্দের সংরক্ষণশীলতা। একজন কেউ চরম আনন্দ পেলে, অন্য জনকে চরম দুঃখ পেতে হবে।"
- হুমায়ূন আহমেদ

১১| ০৬ ই জুলাই, ২০২০ রাত ১২:১৩

নেওয়াজ আলি বলেছেন: খুব ভালো ।

০৬ ই জুলাই, ২০২০ বিকাল ৪:২৯

জোবাইর বলেছেন: ধন্যবাদ +

১২| ০৬ ই জুলাই, ২০২০ রাত ১২:৩৬

সোহানাজোহা বলেছেন: স্পেন জার্মান সুইস গিয়েছি নরওয়েতে যাইনি। ইনশাল্লাহ নরওয়েতে যাবো।

০৬ ই জুলাই, ২০২০ বিকাল ৪:৩২

জোবাইর বলেছেন: অগ্রিম অভিনন্দন ও শুভ কামনা। আমার এই ভ্রমণে লংড্রাইভে উত্তর নরওয়ের যাওয়ার অভিজ্ঞতার একটা পর্ব আগামীতে থাকবে। আপনার স্পেন জার্মান সুইস ভ্রমণের অভিজ্ঞতা ব্লগে লিখুন।

১৩| ০৬ ই জুলাই, ২০২০ রাত ২:৩৭

কেএসরথি বলেছেন: ঘোরা-ফেরার জন্য ইউরোপের দেশগুলো আমার কাছে অনেক আকর্ষনীয় মনে হয়।

০৬ ই জুলাই, ২০২০ বিকাল ৪:৩৮

জোবাইর বলেছেন: বিশেষ করে গ্রীষ্মের সময় ইউরোপের দেশগুলো খুবই সুন্দর এবং এ সময় ভ্রমণ ও আরামদায়ক। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

১৪| ০৬ ই জুলাই, ২০২০ ভোর ৫:৫৮

ইসিয়াক বলেছেন:

অসাধারণ একটা ভ্রমণ কাহিনী পড়লাম।প্রিয়তে রাখলাম। মুগ্ধতা।
ছবিগুলো খুব সুন্দর। চমৎকার নয়নাভিরাম।
সুপ্রভাত।

০৬ ই জুলাই, ২০২০ বিকাল ৪:৩৯

জোবাইর বলেছেন: আপনার পাঠ, মন্তব্য এবং মুগ্ধতায় কৃতজ্ঞ। শুভ বিকাল!

১৫| ০৬ ই জুলাই, ২০২০ দুপুর ১২:৫০

রাজীব নুর বলেছেন: আমার মন্তব্যের উত্তর দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

০৬ ই জুলাই, ২০২০ বিকাল ৪:৫২

জোবাইর বলেছেন: মন্তব্যের উত্তর পড়েছেন জেনে আশস্থ হলাম। আপনার ধন্যবাদের জন্য পাল্টা-ধন্যবাদ।

১৬| ০৬ ই জুলাই, ২০২০ দুপুর ১:১১

মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: সুন্দর ভ্রমন পোস্টটির অপূর্ব বর্ণনাতে মন ছুঁয়ে গেছে। ছবিগুলো চোখ জুড়ানো।

০৬ ই জুলাই, ২০২০ বিকাল ৫:৫২

জোবাইর বলেছেন: আপনার মন ছোঁয়া অনুভূতিতে আমার পোস্ট লেখার পরিশ্রমটুকু সার্থক হয়েছে বলে মনে করি। চমৎকার মন্তব্যের জন্য অশেষ ধন্যবাদ। আগামী পর্বে আপনাকে অগ্রিম আমন্ত্রণ। শুভেচ্ছা নেবেন।

১৭| ০৬ ই জুলাই, ২০২০ দুপুর ২:৪৫

দেশ প্রেমিক বাঙালী বলেছেন: চমৎকার যতসব ছবি ও বর্ণনা!

০৬ ই জুলাই, ২০২০ রাত ৮:৫০

জোবাইর বলেছেন: ছবি দেখার সাথে সাথে বর্ণনাও পড়েছেন। অনেক অনেক ধন্যবাদ।

১৮| ০৬ ই জুলাই, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:২৮

মোস্তফা সোহেল বলেছেন: প্রিয়তে রাখলাম সময় করে পড়ব।আপতত শুধু ছবি গুলো দেখলাম।

১৭ ই জুলাই, ২০২০ রাত ১:০৩

জোবাইর বলেছেন: ধন্যবাদ, আগামী পর্বে আমন্ত্রণ রইলো।

১৯| ০৬ ই জুলাই, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৪৯

তারেক ফাহিম বলেছেন: ব্লগটি পড়তে পড়তে অন্য এক জগত থেকে ঘুরে আসলাম।

১৭ ই জুলাই, ২০২০ রাত ১:০৬

জোবাইর বলেছেন: মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

২০| ১৬ ই জুলাই, ২০২০ রাত ৩:৩৯

কবিতা পড়ার প্রহর বলেছেন: যেন এক অপার্থীব জগৎ

১৭ ই জুলাই, ২০২০ রাত ২:৩১

জোবাইর বলেছেন: এই অপার্থিব জগতে আপনাকে স্বাগতম।

২১| ১৬ ই জুলাই, ২০২০ ভোর ৪:১৫

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:



লেখাটি খুবই তথ্যপুর্ণ ও ছবিগুলি খুবই সুন্দর হয়েছে।
প্রিয়তে নিয়ে গেলাম । আআবার একবার অআমার চেষ্টা করব।
আপনার প্রচ্ছদ ছবির ডানদিকের নীচের ছবি দেখে আমার
মেরু জ্যোতি দেখার কথা মনে পড়ে গেল । সামুতে
প্রকাশিত উত্তরের যাত্রা - ১ম পর্ব : মেরুজ্যোতি দর্শন
দেখতে পারেন ।

অনেক অনেক শুভেচ্ছা রইল

১৭ ই জুলাই, ২০২০ রাত ৩:২২

জোবাইর বলেছেন: আলী ভাই, পাঠ ও মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। আপনার মেরুজ্যোতি দর্শন পড়ে আসলাম, ছবি ও বর্ণনায় চমৎকার লেখা। আমার এই ভ্রমণ সিরিজের সামনের কোনো পর্বে মেরুজ্যোতি সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত বর্ণনার ইচ্ছা আছে। এখন আমাকে আর বেশি কিছু লিখতে হবে না। সেখানে আপনার লেখাটির লিঙ্ক দিয়ে দেবো।

২২| ১৬ ই জুলাই, ২০২০ ভোর ৪:১৭

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:
আআবার হবে আবার এবং আআমার হবে আসার

২৩| ২৩ শে আগস্ট, ২০২০ রাত ৮:৫৪

খায়রুল আহসান বলেছেন: সত্যি, ওসব ভদ্র দেশে রেন্ট-এ-কার এর সুবিধাদি যে কতটা নির্ঝঞ্ঝাট এবং ঝামেলামুক্ত হতে পারে, তা আমরা কল্পনাও করতে পারি না। আমার সাম্প্রতিক নিউ যীল্যান্ড সফরকালে আমার বন্ধু তওফিক অকল্যান্ড থেকে ক্রাইস্টচার্চ (সে সময়ে আমরা ওখানেই দু'দিনের জন্য বেড়াচ্ছিলাম) এসে একটা রেন্ট-এ-কার ভাড়া করে তিনদিন ধরে দূরের বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাঘুরি করে আমাদেরকে কুইন্সটাউনে নামিয়ে দিয়ে সেখানেই সেই কারটি জমা দিয়ে প্লেনে করে আবার অকল্যান্ডে ফিরে যায়। এতটা ত্রুটিহীন এবং পর্যটক বান্ধব ব্যবস্থা দেখে আমি একেবারে তাজ্জব বনে গিয়েছিলাম, কি করে মানুষকে এতটা বিশ্বাস করে ওরা, তা ভেবে!

কটেজেও কোন রিসেপশনিস্ট নেই, প্রহরী নেই, চাবি লেটারবক্স থেকে সংগ্রহ করে আবার সেখানেই রেখে যেতে হবে, মানুষের প্রতি কতটা বিশ্বাস ওদের! আমিও একই অভিজ্ঞতা অর্জন করেছিলাম নিউ যীল্যান্ডের বিভিন্ন শহর সফরকালে। আমার খুব ভাল লাগছে সফর শুরুর পূর্বে এবং সফর চলাকালীন সময়ে আপনার নিখুঁত পরিকল্পনা এঁটে এবং সবসময় মানচিত্র কনসাল্ট করে সফরসূচী প্রণয়ন করার এ সুঅভ্যাসটা। তবে সমস্যা হয় মহিলারা সাথে থাকলে। ওনারা তাদের সাথীদেরকে মানচিত্র পঠনের পর্যাপ্ত সময় দিতে চান না। ফলে অনেক সময় অপ্রস্তুতির কারণে কনফিডেন্স কমে যায় এবং সফরে বিভ্রান্তি ঘটে থাকে।

কয়েক হাজার বছরের ঐতিহ্যের অধিকারী সামি জাতি (আদিবাসী) সম্পর্কে কিছুটা জানতে পেরে ভাল লাগলো।

পোস্টে দ্বাদশ প্লাস + +।

২৫ শে আগস্ট, ২০২০ রাত ২:২৩

জোবাইর বলেছেন: চমৎকার মন্তব্যে আপনার ভ্রমণ অভিজ্ঞতা শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ। আপনার দেশ-বিদেশে ভ্রমণের অভিজ্ঞতা থাকায় আমি লেখার মাধ্যমে যা তুলে ধরতে পারিনি তাও আপনি বুঝতে পেরেছেন। উন্নত বিশ্বে রেন্ট-এ-কার সিস্টেমটা খুবই সুন্দর। বিশেষ করে শহর থেকে দূরে অবস্থিত পর্যটন এলাকাগুলো ঘুরে দেখার জণ্য খুবই ভালো। টাকা একটু বেশি লাগলেও সুবিধা অনেক বেশি।

ভ্রমণে আমার মানচিত্র দেখে পরিকল্পনা করার অভ্যাসটা গড়ে উঠেছে কয়েকটি কারণে। আগে অনেক সময় এরকম হয়েছে যে, শহর থেকে অনেক দূরে গিয়ে সারাদিন চিড়িয়াখানা দেখে হোটেলে আসলাম। পরের দিন ন্যাশনাল পার্ক দেখতে গেলাম। গিয়ে দেখলাম সেই চিড়িয়াখানা থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরেই ন্যাশনাল পার্ক! অথচ আগে জানা থাকলে গতকাল একসাথেই ন্যাশনাল পার্ক দেখা হয়ে যেতো। আমি অপরিচিত এলাকায় গাড়ি চালাবার সময় দিক ঠিক রাখতে পারি না, পথ হারিয়ে ফেলি। ইদানিং ডিজিটাল ম্যাপ ও জিপিএস সিস্টেম ব্যবহার করে কাউকে কোনোকিছু জিজ্ঞাসা না করে যে কোনো জায়গায় যাওয়া যায়। তারপরেও আমার দীর্ঘদিনের অভ্যাস - ভ্রমণ এলাকার কাগজের প্রিন্টেট একটা মানচিত্র পকেটে রাখি। এটাও ঠিক যে, সাথে মহিলা ও শিশু থাকলে সবকিছু পরিকল্পনা মাফিক করা সম্ভব হয় না।

২৪| ২৩ শে আগস্ট, ২০২০ রাত ৯:২৭

খায়রুল আহসান বলেছেন: কিরুনা গীর্জার শীত ও গ্রীস্মকালীন ছবিদুটো খুব সুন্দর। গীর্জা সংলগ্ন কবস্থানের একটা ছবি আশা করেছিলাম। কবরস্থানের এপিটাফ পড়তে আমার খুব ভাল লাগে। এপিটাফ পড়ে প্রিয়জনদের মনের তাৎক্ষণিক আবেগ অনুভূতির সন্ধান পাই, এবং নিকটজনের জন্য তাদের সে ভালবাসার উষ্ণতায় নিজেও উষ্ণ বোধ করি, অনেক দার্শনিক ভাবনা মনের মাঝে উঁকি ঝুকি দেয়। ওহ, নীচে নেমে এসে অবশ্য কবরস্থানের একটা ছবি পেলাম!

আইস হোটেলের বৃত্তান্ত পড়ে আশ্চর্যান্বিত হ'লাম। বিস্ময়ের যেন কোন সীমা নেই! অনিন্দ্যসুন্দর সব ছবি এবং সেই সাথে চমৎকার বর্ণনাসমৃদ্ধ এ পোস্ট কারো ভাল না লেগে উপায় নেই। আইস হোটেল নিয়ে লেখা ওমেরা এর পোস্টটিও শীঘ্রই পড়বো ইন শা আল্লাহ!

৩ নং প্রতিমন্তব্যে আপনার চমৎকার ভাবনাগুলো শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ, এবং প্রতিমন্তব্যে প্লাস! ৬ নং প্রতিমন্তব্যে বই প্রকাশ নিয়ে আপনার পরিকল্পনার কথা জেনে প্রীত হ'লাম। আমি এ পর্যন্ত পাঁচটি বই প্রকাশ করেছি। প্রকাশকদের নিয়ে আমার অভিজ্ঞতাও মোটেই সুখকর নয়। বিশেষ করে প্রুফরীডিং, বাঁধাই ও বিপণন নিয়ে তাদের উদাসীনতা ও অবহেলায় আমি বিরক্ত। ৭ নং প্রতিমন্তব্যটিতেও চমৎকার কথা বলেছেন, এবং সেটাতে প্লাস +! উদ্ধৃতি যদিও, কিন্তু কথোপকথনে কিংবা লিখিত আলোচনায় যথোপযুক্ত উদ্ধৃতি ক'জনাই বা উল্লেখ করতে পারে।

আপনার প্রকাশিত বইগুলোর নাম কি জানানো যাবে এখানে?



২৫ শে আগস্ট, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৩৭

জোবাইর বলেছেন: একটা ব্যাপার আপনিও নিশ্চয় লক্ষ্য করেছেন যে, সব জায়গায় খ্রিষ্টানদের কবরস্থানগুলো পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন এবং পুষ্প-পল্লবে সাজানো থাকে। এমনকি ঘাসগুলো এমনভাবে ছেটেছুঁটে রাখে যে মনে হয় সবুজ কার্পেট বিছিয়ে রেখেছে। আমি অনেক সময় খ্রিষ্টানদের এরকম নয়ন জুড়ানো কবরস্থানে গিয়ে একা একা হেঁটে বেড়ায়। এই পরিবেশে কিছুক্ষণের জন্য হলেও মন-মানসিকতা, চিন্তাভাবনা সবকিছু বদলে যায়! আমার কাছে এই অনুভূতিটা খুব ভালো আগে।

আর আমরা মুসলমানদের কবরস্থানের কথা কী বলবো :(। গ্রামের বাড়িতে প্রতিবেশীদের উৎপাত, নোংরা পরিবেশ এবং মানুষের লোভ-লালসার কারণে নিজের মা-বাবার কবরস্থানও পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন ও পুষ্পপল্লবে সাজিয়ে রাখতে পারি নাই।

ব্লগে এখন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে লেখা ও আলাপ-আলোচনা করার মতো লোকজন খুবই কম। তাছাড়া পরিবার ও অন্যান্য পেশাগত কারণে কাজের ব্যস্ততায় ব্লগে বেশি সময় দিতে পারি না। রাজীব নুরের ঈর্ষান্বিত :) মন্তব্যে তারই প্রিয় লেখক হুমায়ুন আহমেদের উদ্ধৃতি দিয়ে উত্তর দিয়েছিলাম।

আমি যে বইগুলো লিখেছি সেগুলো তেমন আহামরি কিছু নয়। আমি ছাত্র জীবনে পাঠ্যসূচীর বাইরে যেসব বিষয় নিয়ে চর্চা করতাম তারমধ্যে অন্যতম ছিল সাধারণ জ্ঞাণ, কুইজ, আই কিউ। আই কিউতে খুব সুন্দর কিছু গাণিতিক সমস্যা থাকতো। তাই এই ধরনের গাণিতিক সমস্যা/প্রশ্ন চোখে পড়লেই সংগ্রহ করতাম। আজ থেকে ১৫-১৬ বছর আগে বাংলাদেশে যখন গণিত উৎসবের মাধ্যমে সারা বাংলাদেশে গণিত প্রতোযোগীতা শুরু হয় তখন ভাবলাম নিজের অভিজ্ঞতা ও সংগ্রহের উপর ভিত্তি করে একটা বই লিখলে গণিত প্রতোযোগীতার ছাত্রদের কাজে আসবে। কারণ আমাদের দেশে তখন ক্লাসের গণিত বই ছাড়া অঙ্কের ওপরে ভিন্ন ধরনের বই খুব কম ছিল।

যা-ই হোক, বই প্রকাশ করার পরে বইয়ের শ্রী দেখে খুবই হতাশ হলাম। কম খরচে কোনো রকমে তাড়াহুরো করে ছাপিয়ে দিয়েছে। বইয়ের পৃষ্টা কয়েকবার উল্টালে পাতা ঝড়ে পড়ে যায়! বিশেষ করে প্রুফরীডিং ও বাঁধাই খুবই বাজে। আমার মত নবীন লেখকের বই মোটামুটি নামকরা প্রকাশক নিজেদের খরচে ছাপিয়েছে তাই বেশি কোনো অভিযোগও করতে পারলাম না। বইয়ের এই দৈন্যদশা দেখে নিজের লেখা প্রথম বই কাউকে একটা সৈজন্য কপিও দেওয়ার সাহস করি নাই। তারপরেও বিজ্ঞান বিষয়ক আরো কয়েকটি বই বের করেছি। আরো কয়েকটি বইয়ের পান্ডুলিপি তৈরি আছে, কিন্তু প্রকাশনা করার উৎসাহ পাচ্ছি না।
আমার লেখা বইগুলোর পরিচয় নিচের লিঙ্কে পাবেন:
জোবাইর ফারুক এর বই সমূহ

২৫| ২৩ শে আগস্ট, ২০২০ রাত ৯:৩৩

খায়রুল আহসান বলেছেন: খুবই দুঃখিত, উপরে ২৪ নং মন্তব্যের ৩য় অনুচ্ছেদে ১০ নং প্রতিমন্তব্যের স্থলে ভুলক্রমে ৭ নং প্রতিমন্তব্য লিখেছি, যা পাঠক, লেখক এবং মন্তব্য/প্রতিমন্তব্যকারী- সকলের জন্য বিভ্রান্তিকর। ৭ নং প্রতিমন্তব্যের স্থলে ১০ নং প্রতিমন্তব্য (উদ্ধৃতি সংক্রান্ত) পড়তে হবে।

২৬| ২৩ শে আগস্ট, ২০২০ রাত ৯:৩৪

জুন বলেছেন: আমি প্রথম পর্ব থেকেই পড়বো জোবাইর। বরফের ঘরে বাবা মেয়ের ঢোকার প্রস্তুতি দেখেই হাত পা জমে আসলো কারণ আমি যে বড্ড শীত কাতুড়ে। আসছি শীঘ্রই :)

৩০ শে আগস্ট, ২০২০ রাত ২:৫৩

জোবাইর বলেছেন: আপা, এই আইস হোটেলের পর্বেই একটু শীত, এরপর আর কোনো পর্বে শীত নেই :)। আমার এই ভ্রমণটি ছিল গ্রীষ্মকালে। সুতরাং ভয়ের কোনো কারণ নেই। আপনি সব সময় স্বাগতম।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.