![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মাঝে মাঝে লিখতে ভাল লাগে তাই টুক টাক লিখার চেষ্টা করি।
সকাল ৭ টা,ফোনের রিংটোনের কল্যাণে ঘুম ভেঙ্গে গেল।এত সকালে কে ফোন দিল ভাবতে ভাবতে ফোনটা হাতে নিয়ে দেখি ফুপি ফোন দিয়েছে।
-হ্যালো ফুপি।
- গাধা আমি হিমেল,জলদি বাসায় আয়।তোরে ১ ঘণ্টা সময় দিলাম,এর মধ্যে না আসলে তোর বাসায় গিয়া ব্যাক সাইডে কিক দিয়া তোরে বাইর করমু।
-ভাইজান ঘুমাইতে দেন পিলিচ,পিলিচ।
-চুপ হারামি।টাইম কিন্তু ১ ঘণ্টা, মনে রাখিস কইলাম।
এই বলে ফোনটা কাইটা দিল।আমি আবার মহান ঘুমের ডাকে সাড়া দিলাম।একটু পর হিমেলের চিৎকারে আবার ঘুম ভাঙল।
-ঐ টুট টুট ওঠ কইতাছি।আর ৫ মিনিট সময় আছে তোর।
-একটু আগেই না কইলি ১ ঘণ্টা,আর এখন কইতাছিস ৫ মিনিট।
-ঘড়ি দেখ টুট টুট, ৫ মিনিট কম ৮ টা বাজে।
-ও তাই তো,সরি ভাইজান।
এরপর আরামের ঘুমরে জলাঞ্জলি দিয়ে বের হলাম হিমেলের সাথে।বের হয়ে দেখি মুনজার বাইক নিয়ে দাড়িয়ে আছে।দেখে ভালই লাগল।আহা কত দিন পর বাইকে ভ্রমণ।তিন জন মিলে ভালই ভ্রমণ হচ্ছিল।এক সময় গ্রামের দিকে গেলাম।আরও ভিতরের দিকে ঢুকার ফলে পলি মাটির বদলে লালচে মাটির দেখা মিলল।চারপাশে শুধু সবুজ আর সবুজ।মনটা ভরে গেল সবুজে।কিন্তু বিপদটা টের পেলাম যখন পাকা রাস্তা ছেড়ে মাটির রাস্তায় নামলাম।কয়েকদিন ধরে বৃষ্টির পর রাস্তার মাটি খুবি পিচ্ছিল হয়ে গেছে আর পুরা রাস্তাই যেন এক হাঁটু লালচে কাদা দিয়ে ভরে দেয়া হয়েছে।আর লালচে মাটি অনেকটা আঠাল হয় আর এই জন্য বিপদটা আরও বেড়ে গেল বহু গুনে।অনেক সাবধান থাকারও পর একসময় আমরা ক্রাশ করলাম তাও আবার গ্রামের কিছু ভদ্র মহিলার সামনে।হিমেল পড়ল আমার উপরে আর আমি আর মুনজার বাইকের নিছে।বুদ্ধি করে হিমেল স্টার্টটা বন্ধ করে দিল।এর পর কি যে হল আমাদের তিনজনে বাইকের নিচ থেকে ওঠা বাদ দিয়ে হাসতে শুরু করলাম,একে অপরের দিকে তাকিয়ে।এই দেখে রাস্তার পাশে দাঁড়ান এক ভদ্র মহিলা একটু রেগে গিয়ে বলল,
-এত বড় বিপদ থাকি আল্লাহ্ তোমার ঘরোক বাঁচাইল আর তোমরা হাসতোছেন।কোনটে একনা আল্লাহর নাম নিবে তাক না পাগল গুলার মত হাসতোছে।এই জন্নি তোমার ঘরে এমনটা হইছে।
এই কথা শুনে আমরা হাসি থামালাম।কিন্তু মহিলার কথা শুনে মেজাজটা একটু গরম হয়ে গেল আমাদের।হিমেল তো বলেই ফেলল,
-আরে কারও পৌষ মাস আর কারও সর্বনাশ।এত জ্ঞান দেয়ার চেয়ে এসে আমাদের একটু সাহায্য করেন না কেন।আর যদি না করেন তাইলে চুপ করে থাকেন।
এই কথায় কাজ হল ঠিকই মহিলা আর কিছু না বলে চলে গেলেন।আমাদের কপালটা খুবি ভাল, খারাপ কিছু হয়নি,হিমেলের সারা শরীর লালচে কাদায় মাখামাখি হয়েছে আর মুনজার আর আমার শুধু প্যান্টে কাদা লেগেছে।হিমেল আর মুনজার এর বাম হাতে একটু লেগেছে আর আমারও বাম হাতে লেগেছে আর বাম পাটা একটু কেটে গেছে।এরপর একটু এগিয়ে যেতেই একটা পানির পাম্প পেলাম।সেখানে সবাই মিলে পরিষ্কার হয়ে নিলাম এবং সেদিনের মত বাইকে করে ভ্রমণের ইতি টানলাম।
এর পরও কিন্তু আমাদের হাসি থামেনি,আসার সময় পুরা রাস্তাটাও হাসতে হাসতে এসেছি।সবাই শুধু হা করে দিকে তাকিয়ে ছিল,লালচে কাদায় মাখা তিনটে ছেলের দিকে আর হয়তোবা মনে মনে পাগল বলেও গালি দিয়েছে।যে যাই মনে করুক না কেন তাতে আমাদের কিছু যায় আসে না,সবাই খুশিতে হাসে আর আমরা না হয় দুঃখেও হাসি।আর আবশ্যই সৃষ্টিকর্তার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই যে তিনি আমাদের নিরাপদেই রেখেছেন।
©somewhere in net ltd.