নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

একটি চলচিত্র, ব্যক্তি,পরিবেশ এবং সমাজের কথা বলে, \nআর এগুলো নিয়েই আমাদের জীবন,\nচলচিত্র মানেই জীবনের কথা।

আব্দুল্লাহ আল-মানী

মুভি দেখতে ভালোবাসি। থ্রিলার মুভি সব থেকে ভালো লাগে। সাউথ এবং কোরিয়ান মুভির পাগল ভক্ত বলতে পারেন। তবে সব ধরনের মুভি নিয়ে লিখবো আশা করি।

আব্দুল্লাহ আল-মানী › বিস্তারিত পোস্টঃ

দেয়াল (শর্টফিল্ম) – মুক্তিযুদ্ধ কোন কল্পনা নয়

১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ৯:২৫

আলোচনার আগে বলে নিচ্ছি, লেখাটি স্পয়লার যুক্ত। কেউ যদি স্বল্পদৈর্ঘ্যের সিনেমটি না দেখে থাকেন তাহলে বলব লেখাটি এড়িয়ে যেতে।

গতকাল অনলাইনে মুক্তি পেল ভিকি জাহেদ এর দেয়াল। ইতিপূর্বে তিনি মায়া ও মোমেন্টস এর মত শর্টফিল্ম নির্মাণ করে বেশ আলোচিত হয়েছেন। তাই দেয়ালের প্রতি সবার একটি বিশেষ আকর্ষণ থাকবে এটি স্বাভাবিক ছিল। কাজটি যেহেতু ভিকি জাহেদ এর তাই শুরু এবং শেষে কোন মিল থাকবে না এমনটি আগেই ভেবেছিলাম।

শুরুটা হল রোম্যান্টিক দৃশ্য দিয়ে। প্রেমের সাগরে হাবুডুবু খাচ্ছে দুই কপোত-কপোতী। গাছের ডালে, পাতার ফাঁক দিয়ে বয়ে চলেছে তাদের সময়। সদ্য চাকরী পেয়ে নতুন জীবনের সূচনা করতে চলেছে দুইজন। ঐযে বললাম না শুরু ও শেষে কোন মিল হবে না। মাঝ দিয়ে সময়টা দেখিয়ে দেয় ১৯৭১ এর, সব আলো নিভিয়ে ফেলে হানাদাররা, সাথে সাথে নিভে যায় নতুন জীবনের প্রদীপ। একসাথে পথ চলা আর হয়ে ওঠে না তাদের।

যাই হোক এই ছিল মূলত গল্প। ২৬ মিনিট ভালোবাসা ও মুক্তিযুদ্ধের জন্য এমন হাজারো ভালোবাসা পরিনতি পায়নি এমনটি দেখাতে চেয়েছেন পরিচালক।

সমস্যা ঠিক এখানে, মুক্তিযুদ্ধের মত একটা বড় বিষয়বস্তুকে এমনভাবে না দেখালেও পারত। এই শর্ট ফিল্মের সব থেকে বড় সমস্যা হল এর কাহিনী বিন্যাসে। সিনেমার স্ক্রিপ্ট লেখার সময় রাইটার মনে হয় বাস্তবতার থেকে কল্পনায় আশ্রয় বেশি নিয়েছেন। পুর মার্চ মাস ধরে দেশ ছিলো উত্তল। আর তখন এরা গাছের ঢালে বসে সেজে গুজে প্রেম করছে তাও একদম উন্মুক্ত প্লেসে। যেসময় মানুষ ঘর থেকে বের হতে ভয় পায়, তখন কি না একা মেয়ে প্রেম করতে চলে গেছে পার্কে। ব্যপার টা কেমন না? তাও আবার কবে ২৫ তারিখ, ১৯৭১ এ। যেখানে ২৫ তারিখ এসিম্বলি ছিল তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে-----

"ভায়েরা আমার, ২৫ তারিখে এসেম্বলি কল করেছে। রক্তের দাগ শুকায় নাই। আমি ১০ তারিখে বলে দিয়েছি, ওই শহীদের রক্তের ওপর পাড়া দিয়ে আরটিসিতে মুজিবুর রহমান যোগদান করতে পারেনা। "

৭ ই মার্চে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান সারা দেশে অনির্দিষ্ট কালের জন্য ধর্মঘট ঘোষনা করেন। ৭ ই মার্চের ভাষণ মতে-

"আমি বলে দিতে চাই, আজ থেকে কোর্ট-কাচারী, হাইকোর্ট, সুপ্রীম কোর্ট, অফিস, আদালত, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমুহ অনির্দিষ্ট-কালের জন্য বন্ধ থাকবে। কোন কর্মচারী অফিস যাবেন না। এ আমার নির্দেশ। গরীবের যাতে কষ্ট না হয় তার জন্য রিক্সা চলবে, ট্রেন চলবে আর সব চলবে। ট্রেন চলবে- তবে সেনাবাহিনী আনা-নেয়া করা যাবে না। করলে যদি কোন দূর্ঘটনা ঘটে তার জন্য আমি দায়ী থাকবো না। সেক্রেটারীয়েট, সুপ্রীম কোর্ট, হাইকোর্ট জজকোর্ট সহ সরকারী, আধা-সরকারী এবং স্বায়ত্তশাসিত সংস্থাগুলো বন্ধ থাকবে। শুধু পূর্ব বাংলার আদান-প্রদানের ব্যাঙ্কগুলো দু-ঘন্টার জন্য খোলা থাকবে। পূর্ব বাংলা থেকে পশ্চিম পাকিস্তানে টাকা যেতে পারবেন না। টেলিগ্রাফ, টেলিফোন বাংলাদেশের মধ্যে চালু থাকবে। তবে, সাংবাদিকরা বহির্বিশ্বে সংবাদ পাঠাতে পারবেন। এদেশের মানুষকে খতম করা হচ্ছে, বুঝে শুনে চলবেন। দরকার হলে সমস্ত চাকা বন্ধ করে দেয়া হবে। আপনারা নির্ধারিত সময়ে বেতন নিয়ে আসবেন।"

তাহলে ২৫ তারিখ তৎকালীন সময়ে বিদেশী কোম্পানীতে চাকরী কি করে হয় আমার তো মাথায় আসে না। মুক্তিযুদ্ধ কি কোন কল্পনা? নাকি হ্যালোসিনেশন? আপনি ইচ্ছামত যা তা বলে দিলেন?

শর্ট ফিল্মে না একদম শেষে এসে বোঝানো হয়েছে যে সময়টা ১৯৭১। ছেলে বাইরে যাবে এটা শোনার পর ও মায়ের মুখের অভিব্যক্তি দেখে মনে হচ্ছিল কোন সমস্যা নেই। আমি ত ভাবতেও পারিনি এখানে ১৯৭১ নিয়ে আসবে। এতো ইজিলি তখন কারো মা কাউকে ঘর থেকে বের হতে দেয় মাথায়ই আসেনি।

আমার কাছে ব্যাপারগুলো খুবই হাস্যকর লেগেছে। মুক্তিযুদ্ধে আমাদের অনেক পরিবার নষ্ট হয়েছে কিন্তু এভাবে মানুষ স্বাভাবিক ভাবে প্রেম করতে যায়নি, ছেলেরা তখন বিয়ের চিন্তায় মশগুল থাকত না। চাইলে অন্যভাবে ফুটিয়ে তুলতে পারত ব্যপারটা। কারন ইতিহাসের সাথে কল্পনা হয়তো মিথোলজিতে মিলে কিন্তু নির্মম্ সত্যের কাছে নয়।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.