![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি বর্তমানে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধয়্যনরত আছি।
জন্মের পর থেকে পাঁচ বছর আমার কিভাবে কেটেছে সঠিক মনে নেই,কারোই মনে থাকার কথা নয়। পাঁচ বছর বয়সে আমাকে স্কুলে ভর্তি করে দিয়েছিলো,বাবার হাত ধরে সেদিন স্কুলে গিয়েছিলাম (বাবার কাছ থেকে জেনেছি পরে),প্রধান শিক্ষক হয়ত আমাকে বলেছিলো__
.
--কি নাম তোমার বাবু ?
.
--রোবায়েত রুবেল অর্ক.
.
-- অ ,আ ... ক,খ পারো ? A,B,C পারো ?
.
সেদিন আমি পেরেছিলাম,তাই আমাকে ভর্তি করে নিয়েছিলো স্কুলে!! যখন ক্লাশ ফাইভে তখন আমার পাশে,রাতুল,আদনান,ফারহান,সাবা,মিতু এদের পাই,তারা সবাই আমার বাড়ির পাশে ছিলো বিধায় তাদের সাথে ভাল সম্পর্ক গড়ে উঠে, সবাই দল বেঁধে স্কুলে যেতাম, আবার বাসায় আসতাম। অন্য মহলার ছেলেদের সাথে যখন ঝগরা লাগতাম তারা আমার সাথেই থাকত,আবার আমি ও সেইম..আর সাবা ও মিতু আমাদের বলত তোরা ঝগরা লাগিস না,ঝগরা ভাল না আম্মু বলছে। আমরা ধমক দিয়ে বলতাম__
.
--ধর আমাদের বই গুলো, যা বাড়িতে যা তোরা!!
.
ওরা বই হাতে দূরে দাঁড়িয়ে আমাদের ঝগরা দেখতো,যখন দেখতো আমরা পারতাম না দৌড়ে বাড়িতে যেয়ে খবর দিতো, যেই দেখতাম বাড়ি থেকে কেউ আসত,ঝগরা রেখেই দিতাম দৌড়!! শেষ বিকালে আর বাড়ি আসতাম নাহ .. সন্ধ্যা হলেই বাড়ির আশে পাশে ঘুরঘুর করতাম,মা দৌড়ে এসে হাত ধরে লাঠি দিয়ে ইচ্ছা মতো মারতো আর স্যান্ডেল নিয়ে এসে হাত-পা ধুয়ে দিতো,আমি কাঁদতাম আর রাতুল ,ফারহান, আদনান এর কথা ভাবতাম,তাদের ও মনে হয় আমার মতো দিছে ধরে!
.
সকালে ঘুম থেকে উঠেই ব্যাট-বল/ফুটবল নিয়ে মাঠে যেতাম খেলাধুলা করতে,দুপুর ১২ টার আগেই মা লাঠি নিয়ে হাজির, স্কুলের সময় হয়ে গেছে আর আমরা এখনো খেলেই যাচ্চি। দোড়ানি খেয়ে বাড়িতে আসা,তারপর বাবার আরেক পালা মার খেয়ে কাঁদতে কাঁদতে স্কুলে যাওয়া। স্কুলে যেয়ে আদনান, রাতুলদের পেয়ে আবার বাঁদরামি শুরু হয়। স্যারদের দৌড়ানি খেয়ে ক্লাশ রুমে ডুকি। তারপর ক্লাশে আবার দুষ্টমি, পড়া না পারলে কান ধরে টেবিলের উপর দাঁড়িয়ে থাকা, কান ধরে উঠবস করা, বেতের বাড়ি খাওয়া। সাবা আর মিতু খুব ভালো ছাত্রী, কারন তারা পড়াশোনা করে, ফারহান ও পড়াশোনায় ভালো, আমি আর রাতুল মোটামুটি মানের, আর আদনানের মাথায় নাকি গোবর স্যারেরা বলে,তবে সে খুব সাহসী। কোন এলাকায় কি আছে, কার গাছে ফল পেকেছে... ইত্যাদি খবর সবার আগে আদনান পেতো। আর আমরা স্কুল ছুটির পর যেতাম চুরি করতে। বাড়ির ফেরার আগেই বাড়িতে নালিশ চলে যেতো আমাদের নামে। মায়ের বকুনি আর বাণী_
---তোরে আর কত মারলে ঠিক হবি,আসুক তোর বাপে আজ বাড়ি। ভালো মানুষের মতো খেয়ে ঘুমাবি,না হয় আজ তোর একদিন কি আমার একদিন।
.
কে শোনে কার কথা, খেয়েই দিতাম দৌড়,এক মহলার সাথে অন্য মহলার বাজি ধরে খেলা,মাঝে মাঝে ঝগড়া ও লেগে যেতাম। এইরকম হাজার ও দুষ্টমি,সন্ধ্যা হলে চাচাতো ভাই বোনদের সাথে গ্রাম্য খেলা( বৌছি, কানামাছি...ইত্যাদি), লাঠিম খেলা, ডাংগুলি,মার্বেল খেলা, এইসব করেই একেকটা দিন কাটত।
.
৫ম শ্রেনীর বার্ষিক পরীক্ষা দেওয়ার পর আদনান ফেল করে, সে আর হাই স্কুলে ভর্তি হয়নি,আমি,নিতু রাতুল,ফারহান এক সাথে ভর্তি হই,আর সাবা কে ভর্তি করে তার নানুর বাসায় রেখে আসে তার বাবা। সে সেখান থেকে পড়াশোনা করবে।
.
হাই স্কুলে ভর্তি হওয়ার পর লাইফে আরো বন্ধু আসে। সকাল ১০ থেকে বিকাল ৪টা প্রর্যন্ত ক্লাস, আগের মতো খেলতে পারি না, স্কুল ফাঁকি দিয়ে চলে যেতাম খেলতে। নতুন বন্ধুদের সাথে পরিচয়,কয়েক জন মিলে আমাদের গ্রুপ বানালাম।ক্লাসের মধ্যে কয়েক দল হয়ে যায়। এক দল আরেক দলের নামে নালিশ করতো স্যারদের কাছে। আর কিছু ছিলো একা একা থাকত, কারো সাথে মিশত না, ক্লাশে আসত,পিছনের বেঞ্চে বসতো, পড়া পারত না,স্যারদের কাছে মার খেতো। আর কয়েকজন ছিলো ব্রিলিয়ান্ট, তাদের কাজ ছিলো সামনের বেঞ্চে বসা,আর নিয়মিত পড়াশোনা করা।
.
ক্লাশ টেনে যখন উঠলাম তখন অনেক সহপাঠী ঝরে যায়, অনেক মেয়ের বিয়ে হয়ে যায়, নিতুর ও বিয়ে হয়ে যায় ক্লাশ নাইনে থাকতে। আর রাতুল ক্লাশ এইটে পড়াশোনা বাদ দিয়ে তার বাবা র সাথে কাজে লেগে যায়। ফারহান আর আমি ছিলাম শুধু, সাবা ছুটিতে বাড়িতে আসলে দেখা হতো,কিন্তু আগের মতো আর তেমন মিশতো না। হাই স্কুলে এসে অয়নের সাথে ভালো সম্পর্ক হয়, আমি, সে আর ফারহান এই ৩জন বেস্ট ফ্রেন্ড ক্লাশে। একদিন ফারহান এসে বলল_
.
--দোস্ত এইটের একটা মেয়ে কে ভালো লাগছে, প্রেম করব।
.
ক্লাশ রেখেই গেলাম ওই মেয়েকে দেখতে। পরের দিন ও চিঠি লিখে নিয়ে আসে, ক্লাশের এক মেয়ে ফ্রেন্ড কে দিয়ে দেওয়াই। কয়েকদিন পর ওদের মাঝে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। আমার আর অয়নের মাথায় ও প্রেমের ভুত চাপে। ক্লাশের ভিতরেও একেক জন একেক জনের সাথে রিলেশন। ক্লাশ নাইনের এক মেয়েকে ভালো লাগে,ফারহান কে বললাম, পরে তাকে প্রোপজ করি,সে রাজি হয়। আহা প্রেম এতো মজা যে খেলাধুলা সব বাদ দিয়ে সবাই প্রেমে মজে যাই। অয়ন যাকে পছন্দ করত, সে অন্য একজনের সাথে আগেই প্রেম করে,তাই অয়নের আর প্রেম করা হয়নি। তবে আমরা সবাই পড়াশোনা ঠিক রেখেছিলাম। প্রেম আর পড়াশোনা, খেলাধুলা কমিয়ে দেই।
.
নির্ভেজাল,চিন্তামুক্ত,স্বপ্নের মতো করে স্কুল লাইফ পার করে দিলাম। এসএসসি পরীক্ষা দিলাম, ভালো রেজাল্ট করলাম প্রায় সবাই। অনেকে ফেল করেছে।অনেক মেয়ের পরীক্ষার পর বিয়ে হয়ে যায়। ছোট কালের ফ্রেন্ড আদনান বিদেশ যাবে,আর রাতুল কাজ করার জন্য ঢাকা চলে যায় বছর খানেক আগে।
.
ফারহান ভর্তি হয় স্থানীয় কলেজে, আমি আর অয়ন ভর্তি হই ঢাকা,তবে আলাদা কলেজে। যাইহোক
পরিবার কে ছেঁড়ে থাকতে হবে ঢাকা। প্রথম দিক দিয়ে ঢাকা মানিয়ে নিতে কষ্ট হয়। ঢাকা আসার কারনে বাড়ি থেকে মোবাইল কিনে দেয়। আমার গার্লফ্রেন্ডের নাম তো বলা হয়নি,তার নাম হলো মেহেরিন। সে তার আম্মুর মোবাইল দিয়ে মিস দিতো,আমি কল ব্যাক করতাম।এইভাবে কথা হতো আমাদের মাঝে। আর অয়ন ঢাকা এসে তার কলেজের এক মেয়ের সাথে রিলেশনে করে।একদিন আমার সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়।
.
ঢাকা এসে পরিচয় অনেক জেলার মানুষের সাথে,বিভিন্ন চরিত্রের মানুষের সাথে মিশতে হয়। থাকি কলেজের হোস্টেলে,যখন খাবার দিতো বাড়ির কথা মনে পড়ত। মাকে ফোন দিয়ে কান্নাকাটি করতাম যে আমি বাড়ি চলে আসব। পরে আস্তে আস্তে করে মানিয়ে নিয়েছি। যেখানে কোন দিন নিজের জামা ধুয়ে পরতাম না,সেখানে আজ নিজের সব কাজ নিজেকে করতে হয়।
.
কলেজে নতুন বন্ধুদের সাথে পরিচয়, আমরা যারা ঢাকা নতুন আসছি, কলেজ ছুটি হলে দলবেঁধে ঘুরে বেড়াতাম ঢাকা শহরে, একেক দিন একেক জায়গায়, পার্কে গিয়ে সেই আড্ডা। আহা লাইফ মজাই, সাথে মেয়ে বন্ধু। এই যেনো আরেক সুখের জীবনে প্রবেশ করেছি। এইবার কলেজে লাইফের কিছু ঘঠনা শেয়ার করি_
একদিন হোস্টলে এক ছেলে বলে যে তার মোবাইল পায় না খোঁজে, পরে সেই মোবাইল পাওয়া যায় অন্য একজনের কাছে। সবাই ধরে সেই মাইর, ব্যাটা পড়তে এসে চুরি ? ম্যানেজার তার বাবা-মা কে খবর দিলে তার বাবা এসে নিয়ে যায়,আর কলেজ থেকে তাকে টিসি দিয়ে দেয়।
.
কলেজে কিছু ছেলে আর মেয়ে আছে,যাদের প্রধান কাজ প্রেম করা। যে ছেলে মোবাইল চুরি করেছে সে তার গার্লফ্রেন্ডের সাথে কয়েকদিন পর পর ডেটিংয়ে যায়, প্রাইভেটের টাকা বাড়ি থেকে এনে এই মেয়ের পিছনে খরচ করে। আবার কিছু অতিস্মার্ট ছেলে আছে বড়লোকের মেয়েদের থেকে কাছ থেকে পঠিয়ে খায়।
.
অনেক কে দেখেছি ৪,৫ জনের সাথে রিলেশন।তারা পড়া বাদ দিয়ে একেক জনের সাথে একেক সময়ে কথা বলে।আর অনেকের গার্লফ্রেন্ড নেই,দিন রাত পড়াশোনা করে। আর অনেকের আমার মতো গার্লেফ্রেন্ড, বন্ধুদের সাথে আড্ডা, পড়াশোনা এই নিয়েই সারাদিন।
.
কলেজে এসে ফ্রেন্ড সার্কেলের পরিবর্তন,শাহারিয়ার,তানজুম,আকিব,ফারিহা, এই পাঁচ জনের ফ্রেন্ড সার্কেল আমাদের। আমার গার্লফ্রেন্ড আছে, আর তাদের কারো নেই। তবে আমার স্কুল ফ্রেন্ডরা আমার বেস্ট ফ্রেন্ড এর লিস্টেই। যেমন রাতুল ফোন দিয়ে বলবে__
.
--দোস্ত তোদের জীবন সুখের, আমাদের কাজ করেই খেতে হবে।পড়াশোনা যদি করতাম,তাহলে আজ এই অবস্থা হতো না।
.
আদনান বিদেশ থেকে ফোন দিয়ে বলবে_
.
--সারাজীবন আমাদের বিদেশ করতে হবে,দোস্ত ভালো করে পড়াশোনা করিস। আমার মতো ভুল করিছ না।
.
আর অয়নের সাথে কয়েকদিন পর পর দেখা করি,কারন সে ঢাকাতেই,আর ছুটিতে আমি আর অয়ন বাড়িতে গেলে ফারহান সাথে সেই আড্ডা। স্কুলের মেয়ে ফ্রেন্ড গুলার সাথে মাঝে মধ্যেই দেখা হয়,তবে সাথে এক হালি করে বাচ্চা দেখি।বিশেষ করে ঈদের ছুটিতে গেলে সেই আড্ডা।
.
আমি যখন কলেজের দ্বিতীয় বর্ষে,তখন মেহেরিন এসএসসি দিবে। শুনেছি পরীক্ষার পর ভালো ঘর পেলে বিয়ে দিয়ে দিবে ,কারন আমার সাথে তার সম্পর্ক তার বাবা-মা মেনে নেইনি। তার বাবা-মা, বড় ভাই আমাকে দুচোখে দেখতে পারে না, আমি তাদের দুচোখের বিষ।
.
টেস্ট পরীক্ষা দেই। মোটামোটি ভালো রেজাল্ট করি, সেই সময়ে মেহেরিনের বিয়ে ঠিক। মেহেরিন আমার কাছে পালিয়ে চলে আসবে। আমি রাজি হইনি,পরে ওর বিয়ে হয়ে যায়। খুব ভেঙে পরি। আমার কলেজের বেস্ট ফ্রেন্ড গুলো সাহস জুগিয়ে বলেছিলো_
.
---আরে জীবন তো মাত্রো শুরু,ওর থেকে কতো ভালো মেয়ে লাইফে পাবি।
.
যাইহোক সব কিছু ওভার কাম করে পরীক্ষা দিলাম।পরীক্ষা অনেক ভালো হয়।শাহারিয়ার,তানজুম, ভর্তি হয় মেডিকেলের কোচিংয়ে, আবির, ফারিহা,আর আমি ভর্তি হই ভার্সিটি ও BUET কোচিং এর জন্য। মাথার মধ্যে রাজ্যের টেনশন। চারদিক থেকে সবাই বলছে_
.
---ভর্তি পরীক্ষা বলে জীবনের মোর ঘুরিয়ে দিবে। জীবনে সফল হতে হলে সরকারি ভার্সিটিতে ভর্তি হতেই হবে, ন্যাশনাল,প্রাইভেটে পড়ে কিছু করা যাবে না।
.
বলে রাখা ভালো, রাতুল যেখানে কাজ করতে এসেছিলো,সে এখন সে কাজ শিখে ভালো টাকা ইনকাম করে। ওই দিন ফোন দিয়ে বলল দোকান দেওয়ার চিন্তা আছে।ও আশা রাখি সফল হবে।
.
আদনান বিদেশে ভালো টাকা ইনকাম করে। বাড়িতে নতুন ঘর দিয়েছে, তার ছোট ভাই,বোনদের পড়াশোনা করায়।তার পরিবার স্বচ্ছল।
.
আর ফারহান তার পড়াশোনার ফাঁকে ফাঁকে গ্রামে তার বাবার ব্যাবসার কাজে সাহায্য করে। ওর চিন্তা ভাবনা আছে, নিজেই এলাকায় ব্যাবসা করবে।
.
সাবার কথা বলা হয় নাই, ওর বিয়ে হয়েছে, স্বামী,সংসারের পাশাপাশি নাকি পড়াশোনা ও চালিয়ে যাবে।
.
আর নিতুর লাইফে কষ্ট,অল্প বয়সে বিয়ে হয়েছে,স্বামী অশিক্ষিত, অনেক গুলো বাচ্চা হয়েছে।একেক জনের লাইফ একেক রকম।
.
ভর্তি পরীক্ষা দিলাম,তানজুম মেডিকেলে চান্স পায়,শাহারিয়ার পেলো না, ফারিহা ঢাবিতে, আবির বুয়েটে আর আমি কোথাও পেলাম না, শাহারিয়ার ভর্তি হলো প্রাইভেটে আর আমি ন্যাশনালে। অয়ন বিদেশ যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে,বিদেশ যাবে পড়তে।কলেজের অনেক ফ্রেন্ড বিভিন্ন জায়গায় ভর্তি হয়। যখন কলেজে ছিলাম সমাজের মানুষের চোখে সবাই একরকম ছিলাম, আর যখন ভার্সিটিতে ভর্তি হলাম একেকজন কে একেক রকম ভাবে মুল্যায়ন করতে শুরু করল।
---ওহ তুমি ন্যাশনালে পড়? এখানে তো সেশন জট আর জট।বুড়ো হয়ে যাবে পাস করতে করতে!
---প্রাইভেটে পড়? বাবার টাকা আছে তাই সার্টিফেকেট কিনতে পারবা!
---ডিগ্রিতে পড়াশোনা না করে গরুর ঘাস কাঁটা ও অনেক ভালো।
---ইহা আল্লাহ তুমি বুয়েটে পড়?মেয়ের বাবা ছেলের বাবা-মার নিয়মিত খোঁজ নেই,যদি মেয়েকে এই ছেলের কাছে বিয়ে দেওয়া যায়।
---আমাদের মামনি/বাবা ভবিষ্যৎ ডাক্তার? ছেলের/মেয়ের মা-বাবা লাইন ধরে তাদের ঘরের বউ/জামাই করার জন্য।
---ঢাবিতে/সরকারি ভার্সিটিতে পড় তুমি ?সফল হও বাবা তুমি।
.
বাস্তবতার লাইফে প্রবেশ করলাম, পরিবার থেকে চাপ,চারপাশে বিভিন্ন অভিজ্ঞতা। কলেজের ফ্রেন্ড সার্কেল ভেজ্ঞে যায়,মাসে একবার দুইবার দেখা হয় তাদের সাথে, স্কুল ফ্রেন্ডের সাথে কালেভদ্রে।নতুন বন্ধু আবার অনার্স লাইফে। কলেজের হলে উঠলাম খরচ বাঁচানোর জন্য। উঠে নতুন নতুন অভিজ্ঞতা অর্জন করতে শুরু করলাম।বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনের দল তাদের দলে নতুনদের ভিড়ানোর জন্য উঠে পরে লাগে।ক্ষমতাসীন দলের সংগঠের বড় ভাইয়েরা এসে বলে,এই শুন,আজকে আমাদের নেত্রী নেতা আসবে মিটিংয়ে যেতে হবে।যারা যেতো না তাদের বিভিন্ন কায়দা শাস্তি দিতো।
.
অনার্স ২য় বর্ষে এসে লাইফে বেস্ট ফ্রেন্ড হিসাবে এড হলো রাব্বি,রাজু,মিনার,অতশী,অহনা। এই ছয়জনের রোল কাছা কাছি হওয়াতে এক সাথে স্ট্যাডি করি, একেকজন আরেক জনের এসাইনমেন্ট করে দেই,নোট শেয়ার করি, এক সাথে ঘুরি, একজন আরেক জন কে টাকা পয়সা দিয়ে হেল্প করি। এবার বাস্তবতার কিছু কথা_
আবির বুয়েটে, একটা টিউশনি করে,১০ হাজার টাকা পায়।হেব্বি চলে ওর। ওর অনেক ফ্রেন্ড অনেক গুলো করায়,সে টাকায় নাকি সংসারও চালায়। একি চিত্র ফারিহা যেখানে পড়ে সেখানে।
তানজুম মেডিকেলে পড়ে,সারাদিন ক্লাশ আর পড়া,এই নাকি ওর কাজ।বাসা থেকে সমস্যা না,তাই সে কিছু করে না।তবে তার সাথের ফ্রেন্ডরা অনেকে নিজের টাকায় চলে।
অনেকে আছে রাজনৈতিতে যোগ দিয়েছে,যাদের কাজ ক্যাম্পাসে মারামারি,হল দখল,মিছিল মিটিং। আবার একেক দল আছে যারা সারাদিন ক্যাম্পাসে গিটার,গার্লফ্রেন্ড এই সব নিয়ে আড্ডাবাজি।
এইতো গেলো সমাজের যাদের কদর বেশি তাদের কথা।
.
ন্যাশনালে যারা পড়ে তার মার্কেটিংয়ে জব করে, বিভিন্ন রেস্টুরেন্টে,মাসে ২হাজার দামি ৪,৫ টা টিউশনি করে। নিজেকে চলতে হয় আবার পরিবার কে ও চালাতে হয়। মাস শেষে মানিব্যাগের এক কোণায় খুঁজে পাওয়া যায়,দুই টাকার কিছু নোট। মেসে মিল হয় না, হলে খাওয়ার টাকা থাকে না, কাছের ফ্রেন্ডের কাছ থেকে ধাঁর করে চলতে হয়।
.
কোন ফ্রেন্ডের আত্মীয় স্বজন মারা গেলে তাকে সবাই মিলে মেন্টালি সাপোর্ট দিতাম।কেউ অসুস্থতা জনিত সমস্যায় পরলে সবাই মিলে সাধ্য মতো সাহায্য করা।
এই সব কষ্টের মাঝে ও অনেকের লাইফেই জীবন সঙ্গী থাকে, তাদের সাথে ভালো করে সময় কাটানো যায়। বিভন্ন সামাজিক কাজের সাথে অনেকেই নিজেকে জড়ায়।যেমন শীতকালে শীত বস্ত্র বিতরন।পথ শিশুদের ঈদের সময় নতুন জামা, তাদের রাস্তায় শিক্ষাদান করা ইত্যাদি ভালো কাজ।
.
কেউ আবার খারাপ সঙ্গ পেয়ে নেশাগ্রস্ত হয়ে যায়।অনেকে মেয়েদের নিয়ে ঘুরাঘুরি করেই সময় পার করে দেয়, একটা ব্রেক আপ হলে আবার নতুন করে প্রেম করে।অনেকে পড়াশোনা শেষ করতে পারে না।
.
হাজার ও অভিজ্ঞতা ফেস করে, সেশন জট পার করেই অনার্স শেষ করি। আমার যারা ফ্রেন্ড ছিলো ভালো ভার্সিটিতে ভর্তি হয়েছিলো তারা সাথে সাথে জব পেয়ে যায়। অনেকে ডাক্তার,ইঞ্জিনিয়ার, ভার্সিটির শিক্ষক, ভালো কম্পানিতে জব করে। অনেকে বিসিএস ক্যাডার।আমার একটু কষ্ট হয়েছে চাকরি পেতে,তবে নিজের মেধা দিয়ে ঠিকই ভালো একটা চাকরি করি। অনেকে আবার ভালো চাকরি না পেয়ে মোটামুটি মানের চাকরি করছে। অনেকের চাচা মামা ছিলো,তাই ভালো চাকরি করে,অনেকে ঘুষ দিয়ে সরকারি চাকরি করে।
.
লাইফের একটা সময়ে এসে সবাই ব্যাস্ত হয়ে যায় ক্যারিয়ার নিয়ে,সফল হলেই অনেকে বিয়ে করে নিজের প্রেমিকা কে,আবার অনেকে মা-বাবার পছন্দের কাউকে বিয়ে করে।আবার অনেকে বিয়ে করবে না এমন ও সিদ্বান্ত নেয়।যারা মা-বাবার পছন্দের মানুষকে বিয়ে করে তার বাসর রাতে এই বলে জীবন শুরু করে_
--সবার অতীত থাকে,আমার,তোমার সবার আছে,সো আমরা সব ভুলে যেয়ে নতুন করে জীবন সাজাবো।
.
যখন শিশু ছিলাম তখন কোন চিন্তা ছিলো না,যখন কিশোর বয়সে আসলাম তখন ছিলো উড়ন্ত মন,যা ইচ্ছা তাই করে বেড়াতাম।একটা সময়ে যৌবনে পদারচণ করলাম। জীবনের মানে বুঝতে শিখি,সব পরিস্থিতির সাথে খাপ খাইয়ে নিজেকে নিয়ে আসি।
শিশুকাল থেকে যৌবন কাল পর্যন্ত যাদের সাথে আমার একটা সার্কেল ছিলো, একটা সময়ে এসে যে যার যার জায়গা থেকে সফল। ব্যর্থতার পাল্লা খুব কম। সবশেষে যৌবন কাল সমাপ্তি ঘটিয়ে নতুন করে জীবন শুরু হয় সবার।
.
এই গল্পের চরিত্র গুলো একটা সার্কেল, এক সময় তাদের যৌবন কাল সমাপ্তি ঘঠে,সমাজে নানা রকম সার্কেল থাকে, অনেকের আবার ভিন্ন ভাবেও যৌবনের সমাপ্তি ঘঠে। কিন্তু পৃথিবী যতদিন ঠিকে থাকবে ততোদিন যৌবনের ক্রমানুসারে সমাপ্তি ঘঠতে থাকবে,তাইতো এই গল্পের নাম অসমাপ্ত যৌবন।
.
লেখা: মি.অর্ক [গিটারের ছিড়া তার]
২| ১৬ ই অক্টোবর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৩৬
মি. অর্ক বলেছেন: ধন্যবাদ
৩| ১৬ ই অক্টোবর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:২৬
গেম চেঞ্জার বলেছেন: পুরাই এপিক ওব লাইফ। দারুণ। চালিয়ে যান। হ্যাপি ব্লগিং!
১৬ ই অক্টোবর, ২০১৫ রাত ৯:৪০
মি. অর্ক বলেছেন: ধন্যবাদ। ব্লগে আমি নতুন,আপনাদের পাশে চাই.।।
©somewhere in net ltd.
১|
১৬ ই অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ১:০৪
রুদ্র জাহেদ বলেছেন: দারুন লিখেছেন।ব্লগে স্বাগতম