নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি যা চাই, যা ভাবি, যা সিদ্ধান্ত করছি, আমি যে আগাগোড়া কেবল তাইই, তা তো নয়। আমি যা ভালবাসিনে, যা ইচ্ছে করিনে, আমি যে তা-ও!

আতিক আফজাল

নিরীহ প্রজাতির মানুষ। কারো সাতপাঁচে থাকতে চাই না! মানুষ বাদ দিলে সবচেয়ে প্রিয় জিনিস, সেলফোন! এই জিনিস কখনো বিশ্বাসঘাতকতা করে না, মিথ্যা বলে না, নিজের সাধ্য মত আমাকে সঙ্গ দেয়! আগে অবশ্য এ জায়গায় বই ছিল! কিন্তু, ব্যস্ততা আমায় দেয় না বই পড়ার অবসর! কথা কম বলার চেষ্টা করি! কারণ, কথা আর তীর একবার ছুঁড়ে দিলে ফিরিয়ে নেয়া যায় না। তাই, পারতপক্ষে কথা এড়িয়ে যাই, তা সে যত কাছের বন্ধুই হোক! কে যে কোন কথায় আঘাত পায় বলা যায় না! না হাসতে হাসতে আমার মুখে একটা দুঃখি দুঃখি ভাব চলে আসছে মনে হয়! এখানেও একটা ছোটবেলার কারণ আছে, কোথায় যেন পড়েছিলাম, মৃত্যু-পরবর্তী জীবনের কথা মনে থাকলে মুখে কখনো হাসি থাকবে না! কথাটা এখনো মাথায় রয়ে গেছে! তাই বলে ভাববেন না, খুব ধার্মিক আমি! ছোটবেলায় ইচ্ছা ছিল মেজর হব! কেন? মেজর শব্দটা অনেক মনে ধরে গিয়েছিল! হাহাহা! পরে বুঝলাম মেজর তো দূরে, সেনাবাহীনি পর্যন্তই যাওয়া অসম্ভব! শেষ পর্যন্ত যা হতে চেয়েছিলাম, সেটা এখনো হতে চাই। কিন্তু, সেটা ধরাছোঁয়ার বাইরে! কোন এক কলেজের ইংরেজির টিচার! এখন রওনা দিয়েছি এমন পথে, যেটা কখনো ভাবিনি! আগে বুঝতাম না, "সবার মাঝে থেকেও একা" মানে কি, মেডিকেল এই জিনিসটা হাড়ে হাড়ে বুঝিয়ে দিয়েছে। অনেক মিস করি আমার ৩/৪ জন বন্ধুকে। কিন্তু, একেক জন থাকে শত মাইল দূরে! এটা পথের হিসাব, "অন্য হিসেবে" দূরত্ব খুব বেশি না! ২৪ ঘন্টায় নিজের জন্য সময় খুব একটা থাকে না। যেটুকু থাকে সেটা ঐ মিস করতে করতে চলে যায়! জীবনের প্রথম ২১ বছরে প্রাপ্তির খাতায় ১০০ তে ৯০ দিব নিজেকে! স্কুল লাইফে বাসায় ফিরে কিছু করার থাকতো না, তখন আক্ষরিক অর্থেই দিবাস্বপ্ন দেখতাম। তার মাঝে শুধু একটা স্বপ্ন পূরণ হয়নি, বন্ধুগুলো একসাথে থাকাটা! তবু, অনেক ভালো আছি। আব্বু-আম্মু-ভাই-বোন নিয়ে। কোন দিনকেই আমার "আজাইরা দিন" মনে হয় না। কারণ, এই মুখগুলো। দিন যেমনই যাক, তাদের মুখ দেখে ঘুমাতে যেতে পারি এটাই আমার কাছে অনেক, তা সে মুখগুলো আমার প্রতি বিরক্তিতে কুঁচকে থাকলেও!

আতিক আফজাল › বিস্তারিত পোস্টঃ

অসঙ্গায়িত: পর্ব ২

২৩ শে মে, ২০১৪ রাত ১২:৩৯

পূর্বকথাঃ

সত্য হলেও গল্পের ছলেই বলবো। গল্প হিসেবেই নিবেন। আর, এটা আমার ভয় পাওয়ার গল্প, ভয় দেখানোর গল্প না!



২০১১ সাল। নোয়াখালী।



আমি তখন সবে ভার্সিটিতে ভর্তি হয়েছি। নোয়াখালীতে আমার পরিচিত কেউ ছিল না। আব্বুর এক পুরানো কলিগ ছিলেন। প্রস্তাবটা উনিই করেন। উনার বাসায় থাকার। রাজি না হবার কোন কারণ নেই। একটা ফ্যামিলির সাথে থাকতে পারবো, এটা কম কি! প্রথম ক'দিন একটা মেসে ছিলাম। অনেক জ্বালা। তাই, প্রস্তাব পাওয়া মাত্র রাজি হয়ে গেলাম



সকাল সাড়ে সাতটায় যখন আমি বাসার সামনে নামলাম, আমি মুগ্ধ! এত সুন্দর একটা জায়গা! একটাবারও খেয়াল হলো না, এই বাসা সেটা নয়, যেটায় আমি উঠবো ভেবে ছিলাম। এটা আংকেলের আরেকটা বাসা। এটা মূল বাড়ি থেকে অনেকটাই দূরে। আমি ভেবেছিলাম, মূল বাড়ির বাইরের ঘরটা আমার হবে। যা হোক, উনি তো বলেন নাই কোন বাড়িতে উঠবো, আমার বুঝার ভুল।



স্যুটকেস আর ব্যাগ নিয়ে আংকেলের সাথে বাসায় ঢুকলাম। বিশাল বিশাল ফার্নিচার। সবগুলোই ঘরে বানানো বুঝা যায়। দরজা দিয়ে এসব ঢুকবে না। আংকেল বললেন, "অরিজিনাল সেগুন কিন্তু!"



"বলেন কি! সবগুলো?"



"হ্যাঁ। আর..." চাবিটা আমার হাতে তুলে দিলেন, "...এ সব কিছুই আগামী ৫ বছরের জন্য তোমার।"

"আপনারা উঠবেন না?"

"এখন না, আমার বাবাকে দেখছো না? উনি ওয়ার্নিং দিছেন, এ বাসায় উঠলে উনার লাশের উপর দিয়ে উঠতে হবে!"

"আচ্ছা!", হেসে ফেললাম। "আংকেল, আমার ৮ টায় ভার্সিটি যেতে হবে।"

"ওকে তাহলে, সন্ধ্যায় অফিস থেকে ফিরে কথা হবে।"



সারা ঘরে চোখ বুলিয়ে বের হয়ে গেলাম। সারাদিনের ব্যস্ততায় আর বাসার কথা মনে হয়নি। বিকেলে যখন ফিরছি তখন ব্যাপারটা খেয়াল করলাম। গ্রামে ঢুকার পর ১০ মিনিটের মত হাটতে হয় আমার বাসাটা দেখতে হলে। যখন দৃশ্যপটে আসে, তারও পর আরও ১০ মিনিট হাটতে হয় পৌছাতে।



চারপাশে ধানের মাঠ। মাঝে সর্পিলাকারে পাকা রাস্তা। আমার বাসাটার চারপাশে কোন বাসা নাই। সামনে-পেছনে ধানি জমি। বাসাটা জমির লেভেল থেকে অনেকটাই উঁচুতে। বাসার একটু পেছনে জঙ্গলের মত একটু জায়গা। একা একটা বাসা। ২ ফ্ল্যাটের। এক পাশে আমি থাকবো, আরেক পাশ বন্ধ।



হুম, চায়ের কাপ নামিয়ে রাখলাম! একটা চায়ের দোকানে বসে দেখছিলাম বাসাটা।



বাসায় যখন ঢুকলাম তখন সন্ধ্যা নেমে গেছে। ঘরে ঢুকে লাইট জ্বেলে দিলাম। প্রথমে ড্রয়িং রুম, পরে ডাইনিং, আর সবশেষে আমার বেডরুম। একটু মন খারাপ, সিলেট ছেড়ে এসেছি। সিলেটের সন্ধ্যাগুলো মনে পড়ছিল খুব।



ধপ করে আঁধারে ঢেকে গেল সব হঠাৎ করে। গ্রামের লোডশেডিং! উফ! কখন আসে কে জানে।



মোমবাতি একটা খুঁজে নিয়ে জ্বালালাম। সারা ঘরে কাঁপা কাঁপা আলো। একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে মন থেকে সিলেটকে সরিয়ে দিয়ে বিছানায় এসে বসলাম।



হঠাৎ অমানুষিক এক রক্ত হিম করা চিৎকার। রক্ত হিম হওয়াটা যে কি বুঝে গেলাম! শিয়ালের বিকৃত চিৎকার কোন বিশাল প্রাণীর গলায় যেমনটা হতে পারে, মনে হয় সেরকমই। ঠিক আমার এক হাত পেছনে জানালার একেবারে সাথে। কিন্তু, সেখানে একজন মানুষও জমিতে দাঁড়িয়ে জানালার নাগাল পাবে না। তাছাড়া পেছনে বারান্দাও আছে। নিস্তব্ধ সন্ধ্যা যেন ছিন্ন ভিন্ন হয়ে যাচ্ছে। আমার সারা শরীর বেয়ে ঠান্ডা স্রোত নেমে গেল। এই অনুভূতি এতদিন বইয়ে পড়েছি, সেদিন প্রথম টের পেলাম।

থামছে না চিৎকারটা... প্রতিটা শিরায় শিরায় অনুভব করছিলাম, যেন ছিঁড়ে যাচ্ছে। ১০ সেকেন্ডও হয় নাই, সারা বাসা পুরো একচক্কর দিল চিৎকারটা, বাসার সামনে গেল, ছাদের দিকে কিছু উঠে গিয়ে আবার নেমে আসলো। শেষে এসে থামলো ঠিক আমার বিছানার পাশের জানালায়, যেখান থেকে শুরু হয়েছিল। চিৎকারটা শেষ হলো কুকুরের ভাঙ্গা গলায় কান্নার মত করে। ঠিক আমার কানের পাশে। হঠাৎ করে শেষ হয়ে গেল। কান তখন ঝাঁ ঝাঁ করছে।



আবার, নিস্তব্ধ সন্ধ্যা। সুনশান নিরবতা। সারা ঘরে মোমবাতির আলো তখনো কাঁপছে। সব আছে, শুধু হঠাৎ শুরু হওয়া চিৎকারটা হঠাৎ'ই নাই হয়ে গেল।

এত ভয় পেয়েছিলাম যে, আমি অনুভূতি হারিয়ে ফেলেছিলাম। যখন একটু ধাতস্থ হলাম , টের পেলাম আমার দু'চোখ দিয়ে অঝোরে পানি পড়ছে। সারা শরীর ঠান্ডা হয়ে আছে।



হঠাৎ কলাপ্সিপল গেইটে জোর ঝাকানো আর আংকেলের ডাক শুনলাম। বিছানা থেকে উঠতে পারলাম না প্রথমবারে। পা'তে যেন কোন সেন্স নাই।



টলতে টলতে বের হলাম।

"শুনেছেন, আংকেল? শুনেছেন?" একটু মনে হয় অপ্রকৃতস্থের মত জিজ্ঞেস করলাম।

"কি শুনবো?" আংকেল অবাক হয়ে তাকিয়ে আছেন।

"চিৎকারটা। শুনেন নি?

"নাহ, আমি তো কখন থেকে গেইট ঝাকাইতেছি।"

"কতক্ষণ?" গলা কেঁপে যাচ্ছে।

"২৫-৩০ মিনিটের মত।"

"জ্বি?" অবিশ্বাসের দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলাম কিছুক্ষণ উনার দিকে।

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ২৩ শে মে, ২০১৪ সকাল ৯:২৬

জুপিটার মুহাইমিন বলেছেন: অবিশ্বাস্য দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলাম আপনার পোষ্টের দিকে

২৪ শে মে, ২০১৪ রাত ১২:০৮

আতিক আফজাল বলেছেন: দ্যাটস রুড! এভাবে বলেন, "লেখা পড়ে এত ভয় পাইছি, ভাবতেছি নেক্সট গুলো আর পড়বোই না!" তাও একটু সাত্বনা পাই!!!

২| ২৩ শে মে, ২০১৪ সকাল ৯:৩৪

মুরগির চামড়া ভেজে খাব আমরা বলেছেন: তারপর? B:-)

২৩ শে মে, ২০১৪ রাত ১০:৩৫

আতিক আফজাল বলেছেন: দু'জনের কেউই ঐ ব্যাপার নিয়ে আর কথা বাড়াইনি। তাই, এখানেই শেষ!

৩| ২৩ শে মে, ২০১৪ সকাল ১০:৫৩

কুকরা বলেছেন: তারপর? B:-)

২৩ শে মে, ২০১৪ রাত ১০:৩৬

আতিক আফজাল বলেছেন: তার আর পর নেই!

৪| ২৩ শে মে, ২০১৪ দুপুর ১:১৩

নীল জোসনা বলেছেন: পরের পর্বের অপেক্ষায়..................

২৩ শে মে, ২০১৪ রাত ১০:৩৭

আতিক আফজাল বলেছেন: ইনশাল্লাহ!

৫| ২৩ শে মে, ২০১৪ রাত ১০:৫২

মিনুল বলেছেন: মূর্ছা যাইনি তো আপনার লেখাটি পড়ে !

২৪ শে মে, ২০১৪ রাত ১২:০৪

আতিক আফজাল বলেছেন: উপ্স! মূর্ছা যাবেন কেন!!! :o

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.