নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জুবাইদুর আকাশ

জুবাইদুর আকাশ › বিস্তারিত পোস্টঃ

ডিজিটাল সার্ভিস/ আকাশ

৩০ শে আগস্ট, ২০১৩ বিকাল ৫:১৬

অফিসের একটা জরুরী কাজে খুলনা যেতে হবে। একটা জুট মিলের ডাইরেক্টর এর সাথে মিটিং । মঙ্গলবার বিকাল ৫ টায়। আমার সাথে আমার এমডি সাহেব ও যাবেন। আমি মঙ্গলবার সকাল ৭:১০ এর ২টি টিকেট কাটলাম। সোহাগ পরিবহন স্ক্যানিয়া। টিকেটের মুল্য ১০৫০. টাকা। যে গরম পড়েছে টিকেটটা পেয়ে মনে হল এবার একটু আরামেই যাওয়া যাবে। ঘুমানোর আগে ভোর ৫টায় এলার্ম দিয়ে রাখলাম যাতে গাড়ি মিস না করি। ঘুম থেকে সময় মত উঠে ফ্রেশ হয়ে না¯তা করতে বসেছি, এরই মধ্যে সোহাগ পরিবহন এর কাউন্টার থেকে ফোনে জানানো হলো ‘গাড়ি দের ঘন্টা লেট হবে। উত্তরা-আব্দুল্লাহপুর আসতে ৯ টা বেজে যাবে, আপনারা ৮:৪৫ এ মধ্যে অবশ্যই কাউন্টারে থাকবেন।’ মনটা খারাপ হয়ে গেল। আমি সাইফুল ভাইকে জানিয়ে দিলাম গাড়ি লেট হবে। বাসা থেকে ৮:৩০ এ বের হয়ে সাইফুল ভাই কে নিয়ে কাউন্টারে পৌছাতে ৮:৫০ বেজে গেল। কাউন্টারে ভেতরে পর্যাপ্ত বসার জায়গা নেই। ছোট একটা রুমে ২০-২৫ জন গাদাগাদি করে বসে আছেন। আমি কাউন্টারে বসা একজন কে খুলনা গšতব্যের গাড়ি কখন আব্দুল্লাহপুর পৌছাবে তা জিজ্ঞেস করতেই বল্ল ‘ ভাই গাড়ি বাড্ডাতে’। আমার মত অনেকেই কাউন্টারের ভদ্রলোক কে গাড়ির কথা জিজ্ঞেস করছিল এবং তাতে ঐ ভদ্রলোক খুবই বিরক্ত হচ্ছিল। এরই মধ্যে বিদ্যুৎ চলে গেল। আমি ফ্যান এর দিকে তাকিয়ে রইলাম কিন্তু কোন ফ্যানই চলেনা। জিজ্ঞেস করতেই জানা গেল এখনে কোন জেনারেটর বা আই.পি.এস নেই। শুধু কম্পিউটারে আই.পি.এস এর লাইন দেওয়া আছে। গাড়ি যখন আব্দুল্লাহপুর তখন প্রায় ১০.৪০ বাজে। ৯টা-- ১১ টা এক অসহ্য গরমের মধ্যে কাউন্টার-বাহির, বাহির-কাউন্টার করতে করতে কেটে গেল। এত বড় একটা নামকরা গাড়ির কাউন্টারে এ.সি নেই ! এমন কি জেনেরেটর বা আই.পি.এস নেই!! যাইহোক গাড়িতে চেপে বসলাম। একটু পর গাইড ভাইকে জিজ্ঞেস করলাম ‘গান-বাজনা, টিভি এগুলো ঠিক আছেতো ? গাইড মুচকি হেসে বললো ‘সার, গান-বাজনা, টিভি সব ঠিক আছে।’ আমি সাইফুল ভাই কে বল্লাম ‘ভাইযান, ওরা গরমে কষ্ট দিয়েছে এবার গান-বাজনাদিয়ে পুশিয়ে দেব। আশুলিয়া পৌছাতেই একটা নাটক চালানোর চেষ্টা করল কিন্তু ৫ মিনিট যেতে না যেতেই শো শো শব্দ হয় কোন কথা শোনা যায় না। বুঝতেই পারছেন মেজাজ কতটা খারাপ হতে পারে। খুলনা পৌছাতে আমাদের প্রায় সন্ধ্যে ৭টা বেজে গেল। মিটিং টা চেন্জ করে বুধবার সকাল ১০টায় দেওয়া হলো। এই হচ্ছে আমাদের ভলভো/স্ক্যানিয়া গাড়ির মান।

এবার ফেরার পালা! যেহেতু সোহাগ পরিবহন এর সার্ভিস সম্পর্কে ভাল ধারনা পেয়েছি এবার টিকেট করলাম গ্রিন-লাইন স্ক্যানিয়া । ‘সার্ভিস খুবই ভাল, এসি ঠিকমত কাজ করে, গান-বাজনা, টিভি সবই ভাল’। কথাগুলো কাউন্টারে বসা লোকের। আমরা আশ্ব¯ত হয়ে টিকেট করলাম। সময় বুধবার রাত্র ৯টা। যথারিতি আমরা হোটেল থেকে চেক-আউট করে ৯ টার মধ্যেই কাউন্টারে এসে দেখলাম সামনের রা¯তায় একটা ভাঙ্গাচোড়া গাড়ি দাড়ানো আছে। সাইফুল ভাই গাড়ির দিকে তাকিয়ে বলল ‘আকাশ, এই ভাঙ্গা গাড়িই মনে হয় আমাদের কপালে পরবে’। আমি কপাল কুচকে বললাম ‘আপনি খামাখা মন খারাপ করা কথা বলছেন। আমাদের টিকেটতো গ্রিন-লাইন স্ক্যানিয়া গাড়ির। ফাটাফাটি গাড়ি! এটা মনে হয় এমনি দাড়িয়ে আছে।’ আমি কাউন্টারে বসা একজন কে জিজ্ঞেস করলাম ‘৯ টার ঢাকাগামী গাড়ি কোনটা ?’ ভদ্রলোক কম্পিউটারের মনিটর থেকে মুখ ফিরিয়ে বললেন ‘সামনে দাড়ানো’। আমারতো মাথাখারাপ অবস্থা। আমি পকেট থেকে টিকেট বের করে লোকটার দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বললাম ‘ভাই আমারতো স্ক্যানিয়া গাড়ির টিকেট কিন্তিু এটাতো অনেক পুড়ানো ভলভো।’ ভদ্রলোক বললেন ‘আপনার কথা ঠিক আছে। স্কেনিয়াতে একটু প্রবলেম হয়েছে তাই ঢাকা থেকে এই গাড়িটা পাঠিয়েছে। অসুবিধা নেই এটা অনেক ভাল গাড়ি।’ আমি কোন কথা না বলে সাইফুল ভাইকে নিয়ে গাড়িতে বসলাম। ভেতরে গুমোট গন্ধ, মনে হচ্ছে কেও বমি করেছে, ঠিকমত পরিস্কার করা হয়নি। গাড়ি নির্দিষ্ট সময়ে কাউন্টার ত্যাগ করল। এখন দেখাগেল এ.সি ঠিকমত কাজ করেনা। গাইড কে জানানো হলে তার উত্তর ‘কাউন্টারে জানান’। সাইফুল ভাই বললেন পানির বোতল দিতে। গাইড বিরক্ত মুখে জানালো পানি যশোর কাউন্টার থেকে দেবে। পেছনের সিটে বসা ভদ্রলোক বেশ জোড়ে বললেন ‘এই ব্যাটা, আমার পানি দরকার এখন আর তুই দিবি যশোর থেকে, ফাইজলামি পাইছস, যা পানি নিয়ে আয়।’ গাইড কিছু না বলে সামনের দিকে হাটা দিল। পেছনের ভদ্রলোক আবার বললেন ‘গান ছাড়’। আবার একটু পর বললেন ‘গান না তুই নাটক চালা। নাটক দেখতে দেখতে যাই।’ গাইড বলল ‘ভাই গাড়ির টি.ভি নষ্ট, গান বাজে না।’ মেজাজ এই পরিমান খারাপ হলো শালারে লাথি দিয়ে গাড়ি থেকে নামিয়ে দেই। আমাদের কিছুই করার নেই শুধু মনে মনে কথা বলা। গাড়ি তার নিজের গতিতেই চলতে লাগলো। মনে হলো আমরা ঘোড়ার গাড়িতে যাচ্ছি। গাড়ি হেলে দুলে যাচ্ছে, মাঝে মাঝে বিকট শব্দ হচ্ছে, শ্যালো মেশিনের শব্দ। উপরে তাকিয়ে দেখি এ.সি মেসিন আমাদের মাথার উপরে, তাই বিকট শব্দ হচ্ছে। আমি মনে মনে আল্লাহ্ কে স্বরণ করলাম, ঠিকমত বাসায় পৌছাতে পারব কি না। যেখানে আমার জন্য অপেক্ষা করছে আমার প্রিয়জনেরা।



যে যার মত ব্যবসা করছে। বলছে স্কেনিয়া-ছাড়ার সময়ে ভাঙ্গা ভলভো। এ মধু মাসে বাজার থেকে কোন ফল কিনে খেতে সাহস পাচ্ছিনা, এই বুঝি ফরমালিন দিয়েছে। তারপরেও দিন চলে যায় রাত আসে, আমরা নতুন করে স্বপ্ন দেখি, স্বপ্ন দেখি আর স্বপ্ন দেখি ।



Engr. Zubaydur Rahman Aakash

[email protected]

মন্তব্য ৭ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে আগস্ট, ২০১৩ বিকাল ৫:৪৫

মুহাম্মদ জহিরুল ইসলাম বলেছেন: হুমম, আমাদের দেশে Quality of Service বলে কিছু নেই, টাকা ঠিকই নিবে ষোল আনা কিন্তু সার্ভিস দেবে না... :|

আমাদের জাতিগত পরিবর্তন দরকার...

০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:২১

জুবাইদুর আকাশ বলেছেন: আমাদের জাতিগত পরিবর্তন দরকার... রািট

২| ৩০ শে আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:০৭

ভোরের সূর্য বলেছেন: আপনার ঘটনা শুনে খুব খারাপ লাগলো।আমি এই লাইনে মাঝে মাঝেই যাতায়ত করি।বাসের সার্ভিস খুব খারাপ।বড় একটা কারন হল রাস্তা এবং পাটুরিয়া দৌলতিয়া ঘাট আর আপনি যেসব সমস্যার কথা বললেন সেসব তো আছেই।আমি কোনদিনো খুলনা থেকে ১০ঘনটার আগে ঢাকায় আসতে বা ঢাকা থেকে খুলনায় যেতে পারিনি তাই গত ২/৩ বছর থেকে ট্রেন বা প্লেনে যাতায়াত করি।

ঢাকা থেকে খুলনা ২টা ট্রেন যায়।সকালে সুন্দরবন আর রাতে চিত্রা এক্সপ্রেস।এসির ভাড়া ৭৭৫টাকা আর শুয়ে ঘুমায়(বার্থ )যেতে চাইলে ভারা ১৩৯০টাকা।সময় লাগে বাসের মতন বা একটু বেশি কিন্তু বেশ আরামে যাওয়া যায়।ঢাকা থেকে রাতের চিত্রা আর খুলনা থেকে ফেরার পথে সুন্দরবন নতুন(সাদা বগি)।তবে মনে রাখবেন যে এসির চাহিদা বেশি তাই কয়েকদিন আগেই টকিট কেটে রাখা ভাল।

ঢাকা থেকে যশোর প্রতিদিন ৩টা কোম্পানির ৬টা ফ্লাইট যায়।সকাল ৯টা থেকে ১০টার মধ্যে ৩টা ফ্লাইট আর বিকাল ৫-৬টার মধ্যে ৩টা ফ্লাইট।সময় লাগে ৪০মিনিট।যশোরে নেমে এয়ার কোম্পানির বাস খুলনা যায়।ওদের বাসে চলে যেতে পারেন।সময় লাগবে দেড় ঘনটার মতন।বাসের ভাড়া খুব সম্ভবত ১০০টাকা নিবে।

প্লেনের ভাড়া ২৯০০টাকা(কয়েকদিন আগেই ছিল ২৫০০টাকা) থেকে শুরু(ইউনাইটেড এয়ারলাইন্স)।তবে প্লেনের সিসটেম হল যত আগে টিকিট কাটবেন তত ভাড়া বেশি পড়বে।এই ২৯০০টাকার টিকিটই আপনাকে কাটতে হবে ৫০০০টাকা দিয়ে যদি একদম শেষ মুহুর্তে টিকিট কাটেন।আপনার যেমন মিটিং এর কথা শুনলান তাতে প্লেনে গেলে সকালের ফ্লাইটে যেয়ে আবার সন্ধার ফ্লাইটে ফিরে আসতে পারতেন।যশোর থেকে ফেরার ফ্লাইটগুলো ৬:৩০ এর দিকে।আর খুলনা থেকে এয়ার কোম্পানির বাসে একইভাবে যশোর।

সবদিক বিবেচনা করলে প্লেনই ভাল কারন এসি বাসের ভাড়া ১০৫০টাকা আবার সময়ও লাগে ১০ঘনটা।আর প্লেনের ভাড়া ২৯০০ আর টোটাল সময় লাগবে ৩ঘনটা সব সহ।

৩| ৩০ শে আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:১৩

ভোরের সূর্য বলেছেন: কারেকশন:যত আগে টিকিট কাটবেন তত ভাড়া কম পড়বে
প্লেন এবং ট্রেনের টিকিট অনলাইনেও কিনতে পারবেন

০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:৩১

জুবাইদুর আকাশ বলেছেন: ভাই, আপনার পরামরশের জনন ধননবাদ

৪| ৩০ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ১১:০৪

মোমেরমানুষ৭১ বলেছেন: আসার সময় গাইডটারে ধইরা মাঝ পথে নামিয়ে দিতেন........

০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:৩৩

জুবাইদুর আকাশ বলেছেন: আপনে সাথে থাকলে দিতাম......। :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.