নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
Ashraful Alam Khan Pranto
২য় পর্ব
১ম পর্ব
আত্নহত্যা শব্দটি শুনে আর চমকায় না তুহিন। শব্দটির আড়ালে মুক্তি লুকিয়ে থাকার সম্ভাবনা যাচাই করে দেখে। নিজের মানসিক আর শারীরিক স্বাস্থ্য দিন দিন খারাপ হচ্ছে। সেদিন নিজের উপর প্রচন্ড আক্রোশে, আয়নায় ঘুষি বসিয়ে দেয় তুহিন। হাত কেটে প্রচুর রক্তপাত হয়। হাতে সেলাই পড়তে দেখে কাঁদে তুলতুলি। অনেকদিন চুপচাপও থাকে। তুহিন প্রার্থনা করে, তুলতুলির স্বাভাবিকতার জন্য। তবে, তুলতুলির ফেরত আসতে সময় লাগে না। ফের কথার চাবুকে আহত হয় তুহিন।
মগবাজারের এক বারে সুরার গন্ধ নিতে দেখা যায় তুহিনকে। জীবনের ব্যাপারে গভীর অবিশ্বাস জন্মাচ্ছে তার। তারপর একদিন মদ্যপ অবস্থায় মারামারি করে অন্য মাতালদের সাথে। খুব ভোরে তাকে রাস্তা থেকে উদ্ধার করে শ্বশুর এবং শ্যালক।
তুলতুলি বরাবরের মতোই নিজের জন্য বিলাপ করে, মুখ ফসকে তুহিনকে ডিভোর্স দিতে চায়। 'ডিভোর্স' শব্দটা নতুন ঠেকে তুহিনের কাছে। পরিচিত জনেরা তুহিনের দুঃখ বুঝতে শুরু করেছিলো। তুলতুলিও শপথ করে, নিজেকে শোধরাবার কথা বলে। কিন্তু তুহিন অনুভূতি শূন্য হয়ে যাচ্ছে। নিয়তিকে গাঢ় আলিঙ্গন করে, সে চাকরিতে মন দেয়। সৎ পথে অর্থ সঞ্চয়ের প্রতিজ্ঞা করে।
সংসারে যেমন তুহিন মন দিতে পারেনা, তুলতুলিও তেমনি নিজেকে সামলাতে পারে না। স্ত্রীকে এড়িয়ে চলতে, মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত হওয়া কাছিমের মতো নিজেকে লুকিয়ে রাখে তুহিন। কিন্তু নিয়তি যাকে পরীক্ষা করে, তাকে আমৃত্যু পরীক্ষা করে।
কর্মসূত্রে, কর্পোরেট জগতের সাথে অনেক কিছুর সাথে ব্যালেন্স করে চলা লাগে। কয়েকজন ভদ্রমহিলা তুহিনের কলিগ। কিছু দরকারে তাদের একজন রাতের বেলা কল দেয়। দৈবের দয়ায়, সেই ফোন ধরে তুলতুলি। সমস্ত জীবনের সন্দেহ আর ক্ষোভ ঝরে পড়ে তুহিনের নিভুপ্রায় জীবন প্রদীপে। একটা কাঁচের গ্লাস তুহিনের দিকে ছুড়ে মারে তুলতুলি। স্ত্রীকে শান্ত করতে শয়তানের কৃপায়, একটি চড় মেরে বসে হতভাগ্য যুবক।
অনেকক্ষণ চুপ থেকে মধ্যরাতে তুলতুলি চিৎকার করে ঘোষণা দেয়, সে এখন আত্নহত্যা করবে।
সুদীর্ঘ অপেক্ষার বাঁধ ভেঙে দিয়ে, ঘর থেকে বেরিয়ে আসে তুহিন। ফ্ল্যাটের বাইরে প্রতিবেশীদের উঁকি দিতে দেখে, নিজের সমগ্র জীবনের নির্লজ্জতার কথা মনে পড়ে তার। পিতামাতার সৌম্য অবয়ব চোখে ভাসে, পেছনে ছায়া মানুষের টিটকিরিগুলো আবৃত্তি করে কেউ।
ছাদের সিড়ি গুলো পেরিয়ে, এক বুক শ্বাস নেয় তুহিন। এমুহূর্তে তার মস্তিষ্কটা বন্ধ করতে হবে।
তাও ভূমিমুখী পতনের সময় একবার চাঁদকে আঁকড়ে ধরতে চায় সে। মনে পরে যায়, নিষ্পাপ শৈশবের দিনগুলো।
ইতিকথা:
আমগাছটা, বেঁচে থাকার শেষ একটা সুযোগ দেয় তুহিনকে।
আটদিন পর চোখ খুলে, আইসিইউর কাঁচের বাইরে হেলান দিয়ে ঘুমোতে দেখে তুলতুলিকে। তুলতুলির এতো দুঃখী মুখ কখনো দেখেনি তুহিন। তুলতুলি একসময় তুহিনের দিকে চায়। ভালোবাসার সুতোয় বাঁধা পরা দুজনের চোখ ছুয়ে অশ্রু আসে, বহুল প্রতিক্ষীত বৃষ্টির মতো।
০১ লা মে, ২০২০ রাত ৯:১১
ব্লগার_প্রান্ত বলেছেন: এইবার ঝামেলা হইলে তুহিনের গলায় দড়ি দেয়া উচিত
মন্তব্যের জন্য অশেষ ধন্যবাদ ভাই। ভালো থাকুন।
২| ০১ লা মে, ২০২০ রাত ৯:৩২
রাজীব নুর বলেছেন: শেষ পর্ব টি দারুন আবেগময় হয়েছে।
আর হ্যাআত্মহত্যা শব্দটি আমি খুব অপছন্দ করি।
০১ লা মে, ২০২০ রাত ১১:১০
ব্লগার_প্রান্ত বলেছেন: ধন্যবাদ রাজীব ভাই। আত্নহত্যা একটি বিষাক্ত শব্দ। তবে, দু:খই মানুষের ভাবনাশক্তিকে ঘোলাটে করে দেয়।
৩| ০১ লা মে, ২০২০ রাত ১০:৪৭
চাঁদগাজী বলেছেন:
মনে থাকার মতো কিছু না।
০১ লা মে, ২০২০ রাত ১১:১২
ব্লগার_প্রান্ত বলেছেন: আপাতত নুরু সাহেবের কবিতাটি মুখস্থ করুন।
৪| ০২ রা মে, ২০২০ রাত ৩:২৭
নেওয়াজ আলি বলেছেন: ধন্যবাদ আমগাছকে । ধন্যবাদ ভালোবাকে
০২ রা মে, ২০২০ বিকাল ৪:২৬
ব্লগার_প্রান্ত বলেছেন: কেন জাতীয় গাছ আম, সেটা এবার পরিস্কার হলো।
৫| ০২ রা মে, ২০২০ ভোর ৬:৩৪
ভুয়া মফিজ বলেছেন: আমগাছটা আৎকা কোত্থেকে আসলো, বুঝলাম না।
যাই হোক, তুলতুলি আসলে একটা ভুলভুলি বা অন্য কথায় ভুলভুলাইয়া। ভুলিয়ে ভালিয়ে বারে বারে তুহীনকে বেকায়দায় ফেলে। জীবনটা স্বল্প সময়ের, একে জটিল না করাই ভালো। তুলতুলির মতো সাইকোপ্যাথরা নিজেও শান্তি পায় না, অন্যকেও শান্তি দিতে পারে না। তাই, সবচেয়ে ভালো এদেরকে জীবন থেকে ঝেড়ে ফেলা। সাময়িক একটু কষ্ট হলেও ঝেড়ে ফেলাই উচিত।
লেট হার সুইসাইড! বেটার ফর হার......বেটার ফর এভরিওয়ান!!!
০২ রা মে, ২০২০ বিকাল ৪:৩৭
ব্লগার_প্রান্ত বলেছেন: আমগাছটা নির্ঘাৎ মাটি ফুড়ে বের হয়েছে
আমি আপনার সাথে একমত, ভুলিয়ে ভালিয়ে তুহিন বেচারাটাকে মরতে পর্যন্ত দিলো না শান্তিতে। বিয়েসাদী খুবই কমপ্লেক্স ব্যাপার, গাজীপুরের দিকে একটা কথা আছে,- সব ঠক যায়, কিন্তু বিয়ার ঠক যায় না।
তুলতুলি আপনার কমেন্ট পড়ে, আইসিইউতেই তুহিনকে মারধর করে কিনা!! তাড়াতাড়ি যাই, আপনাকে পড়ে জানাবোনে
৬| ০২ রা মে, ২০২০ বিকাল ৪:৫৪
পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: শেষ পর্বটা বেশ আবেগময় লাগলো। তবে কোন অবস্থাতেই আত্মহত্যা কোন সমাধান নয়। জীবনে বাঁক থাকবেই তাকে স্বাভাবিক ধরে সমাজের সঙ্গে ক্যামোফ্লেজ করে এগোতে হবে।
পোস্টে তৃতীয় লাইক।
শুভকামনা প্রিয় ছোট ভাই প্রান্তকে।
০২ রা মে, ২০২০ বিকাল ৫:০৬
ব্লগার_প্রান্ত বলেছেন: ধন্যবাদ দাদা
লেখক আর রাজনীতিবিদদের প্রধান কাজ হলো মানুষের আবেগ নিয়ে খেলা করা। একাজে যার যতো পারদর্শিতা, সেই ততো সফল।
আত্নহত্যাকারীর প্রতি সব ক্ষোভ অথবা সহানুভূতি আসে তার মৃত্যুর পর। অথচ একজন মানুষের আত্নহত্যার দায় সমাজও কিছু ক্ষেত্রে এড়াতে পারে না। তাই, যার যার স্থান থেকে দায়িত্বশীল আচরণই কাম্য।
মাহে রমজানের শুভেচ্ছা।
©somewhere in net ltd.
১| ০১ লা মে, ২০২০ রাত ৯:০৩
শের শায়রী বলেছেন: তুহিনকে যে বাচাইয়া দিলেন, কোণ লাভ হবে না তুলতুলি আবারো ঝামেলা করবে বইলা রাখলাম।