নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আবদুল বারি রোহিতপুর

আবদুল বারি রোহিতপুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

বৃটিনের রানী হাতে কোটি নিরপরাধ মানুষের রক্ত লেগে আছে

১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ রাত ৮:৫৪

বৃটিনের রানীকে যতই গ্লোরিয়াই করা হোক না কেন, যারা ইতিহাস জানেন, তারা জানেন যে এই ভদ্রমহিলা জীবদ্দশায় কতটা অহংকারী, খলনায়িকা ও কুটিল ছিলেন।

সে বৃটিশ রাজ পরিবারের সবচাইতে দীর্ঘায়ু পাওয়া ব্যাক্তি, তথাপিও সে তাঁর দীর্ঘ জীবদ্দশায় কখনো কোনদিনও তার সাম্রাজের; তার পরিবারের প্রয়াত সদস্যদের অতীত কুকর্মের জন্য বিন্দুমাত্রও অনুতপ্ত হননি, ক্ষমা চাওয়া তো দূরের কথা। ক্ষতিপূরণ দেয়া তো আরো অনেক অনেক দূরের কথা!!

তার কারণ সে কখনো স্বীকারই করেনি যে বিশ্বজুড়ে তার দেশের অসম্ভব রকমের নৃশংস এক লিগ্যাসি রয়েছে!

তার পরিবার বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কলোনী আর বর্ণবাদের বসতি গড়েছে, এরপর দাস বানিয়েছে সেই দেশের জনসাধারনকে, সেই দেশের সরকারকে। এবং যতটা সম্ভব লুঠ করেছে সেই দেশের প্রতিটা সম্পদকে! (আমরাও তাদের এই শোষন-অত্যাচার থেকে রেহাই পাইনি!)

সারা দুনিয়া থেকে লুন্ঠন করা সম্পদরাশি দিয়ে তারা গড়ে তুলেছে আজকের আধুনিক ইংল্যান্ড!

শুধুমাত্র ভারত থেকেই আজকের দিনের ৪৫ ট্রিলিয়ন ইউএস ডলারের সমপরিমান সম্পদ তারা লুঠ করে নিজেদের দেশে নিয়ে গেছে!

চিন্তা করেন একবার! ৪৫ ট্রিলিয়ন ডলার!! ১ হাজার বিলিয়নে ১ ট্রিলিয়ন ডলার হয়!!

লুঠ করা সম্পদের ভিতর শত শত হীরা জহরত, মনিমুক্তা ছিলো, এমনকি বিশ্বের সবচে দামী হীরা “কহিনূরও” ছিলো বলে কথিত আছে, যার তৎকালীন মূল্যমানই ছিলো প্রায় ২০০ মিলিয়ন ডলার!

এমনকি রানী ২য় এলিজাবেথ যে মুকুটটা মাথায় নিয়ে গতকাল মরেছে, সেই মুকুটেও রয়েছে তার রাজ পরিবার কর্তৃক ভারত আর আফ্রিকা থেকে ডাকাতি করা মনিমুক্তা!

বৃটেনের রানীকে সর্বদাই একজন সাধু রমনীর ভেক ধরিয়ে পশ্চিমা গনমাধ্যম প্রচার করে এসেছে।

যেমনঃ তিনি মৃত্যুর আগ পযন্ত বৃটেনের জনগনের মঙ্গলের জন্য কাজ করে গেছেন, কখনো সে রানী হতে চায়নি, আজীবন একজন সাধাসিধে গৃহীনি হিসেবে জীবন কাটাতে চেয়েছিলেন, ৪৮ টা দেশ তার হাত ধরে স্বাধীনতা পেয়েছে, ইত্যাদি ইত্যাদি।

বৃটিশ সিংহাসনের হাতলে গত কয়েক শত বছরে বিশ্বের কোটি কোটি নিরপরাধ মানুষের রক্ত লেগে আছে! যে সিংহাসনে টানা ৭০ বছর বৃটিশদের রানী আসীন ছিলো। তারা তাকে এতটাই ক্ষমতা দিয়েছে যে তিনিই পৃথিবীর একমাত্র ব্যক্তি ছিলো যিনি কোথাও গেলে কোন পাসপোর্ট ও ভিসার প্রয়োজন হতো না।

পৃথিবীর কোটি কোটি নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করে, ডজন ডজন দেশকে শাসন ও শোষন করে এই সামাজ্র গড়ে উঠেছে এবং বিশ্বকে শাসন করেছে, যার নিদারুন অসহায় ভিকটিম আমরাও মানে ভারতীয় উপমহাদেশে আমাদের পূর্ব পুরুষরাও ছিলেন!

মাস্টারদা সূর্যসেন, প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার, তিতুমির, ক্ষুদিরামসহ আরো নাম না জানা অসংখ্য বিপ্লবীকে বৃটিশ সরকার ফাসিঁ দিয়ে হত্যা করেছিলো। তাদের একটাই অপরাধ ছিলো, তারা বৃটিশদের শোষন ও অত্যচারের প্রতিবাদ করেছিলো, নিজেদের ন্যায্য পাওনার দাবী করেছিলো!

১৯৩৪ সালের ১২ই জানুয়ারি মধ্যরাতে সূর্য সেন ও তারকেশ্বর দস্তিদারের ফাঁসী কার্যকর করা হয়৷ ফাঁসির আগে সূর্য সেন এবং তার সহযোদ্ধা তারকেশ্বর দস্তিদারকে ব্রিটিশ সেনারা নির্মম ভাবে অত্যাচার করে। ব্রিটিশরা হাতুড়ী দিয়ে তাদের দাঁত ভেঙ্গে দেয় এবং তাদের হাত ও পায়ের হাড়ও ভেঙ্গে দেয়।

এরপর তারা অজ্ঞান হয়ে যান। নিষ্ঠুরভাবে তাদের অর্ধমৃতদেহ দুটি ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। সূর্য সেন ও তারকেশ্বর দস্তিদারের লাশ আত্মীয়দের হাতে হস্তান্তর করা হয়নি এবং হিন্দু সংস্কার অনুযায়ী পোড়ানো হয়নি। ফাঁসীর পর লাশদুটো জেলখানা থেকে ট্রাকে করে স্টীমার ঘাটে নিয়ে যাওয়া হয়। তারপর মৃতদেহ দুটোকে ব্রিটিশ ক্রুজার “The Renown” এ তুলে নিয়ে বুকে লোহার টুকরা বেঁধে বঙ্গোপসাগর আর ভারত মহাসাগরের সংলগ্ন একটা জায়গায় ফেলে দেয়া হয়



২য় বিশ্বযুদ্ধের সময় বাংলার ৪০ লাখ লোক দুর্ভিক্ষে মারা গিয়েছিলো, যে দুর্ভিক্ষের সূচনা করেছিলো এই রানী মায়ের বৃটিশ সরকার!!

কেনিয়ার কনসানট্রেশান ক্যাম্প স্থাপন করে মাও মাও বিদ্রোহ দমন করতে হাজার নিরপরাধ ও নিরস্ত্র কেনিয়ানকে টর্চার ও হত্যা করেছিলো ৯৬ বছর বয়স্কা এই রানী মায়ের বৃটিশ সরকার!

১৭৯৪ সাল থেকে অষ্ট্রেলিয়ার আদীবাসীদের উপর রীতিমতো গনহত্যা শুরু করে বৃটিশ সরকার।

ট্রান্স আটলান্টিক দাস ব্যবসার সাথে সরাসরি জড়িত ছিলো বৃটিশ রাজ পরিবার। কোটি কোটি পাউন্ড মুনাফা করেছে তারা এই ব্যবসা করে, অথচ বৃটিশ রাজপরিবার কখনো এগুলা স্বীকার করেনি।

এই সবগুলো ইতিহাস রানী এলিজাবেথ জানতেন কিন্তু তথাপি সে এই ইতিহাস স্বীকার করেনি, ভিকটমের বংশধরদের কাছে ক্ষমা চায়নি, ক্ষতি পূরণ দেবার তো প্রশ্নই উঠে না!

সে বৃটেনের শেষ রানী ছিলো, অর্থাৎ সে চাইলেই এই মহান কাজগুলো করতে পারতো। সেই এই ডিসিশান নিয়ে তার কথার উপর কেউ কথা বলতে পারতো না। বৃটিশ রাজ পরিবার ইংল্যান্ডের ইন্টেরিয়র অপারেশন নিয়ে কোন নির্দেশ জারি করতে পারে না, কিন্তু নিজের পরিবারের অতীতে করা কুকর্মের জন্য ক্ষমা চাইতে পারতো মিডিয়ার কাছে, সেইটা করার মত মহানুভবতা এই মহিলা গত ৭০ বছরেও দেখাতে পারে নাই!

অথচ আজ ফেসবুকের নিউজফিডে অনেককেই দেখছি তার মৃত্যুতে শোকতপ্ত হতে!

একজন লিখসে - “আমি গত কয়েকদিন ধরে বৃটিশ রাজ পরিবার নিয়ে সুন্দর সুন্দর ডকুমেন্টারি দেখতেছিলাম ইউটিউবে, আজ তার মৃত্যু সংবাদে আমার খুব খারাপ লাগতেছে!”

আরেকজন আরো এক কাঠি সরেস! সে লিখেছে - “ব্রিটিশ পার্লামেন্টে পাশ হওয়া ভারতীয় স্বাধীনতা আইন অনুযায়ী ১৯৪৭ অনুসারে কথা ছিল ভারত ও পাকিস্তান তাদের নিজস্ব সংবিধান চালু না হওয়া পর্যন্ত এ ডোমিনিয়ন থাকবে। পাকিস্তানের ক্ষেত্রে সংবিধান কার্যকর করার তারিখ ছিল ২৩ মার্চ, ১৯৫৬। তারমানে ১৯৫৭- ১৯৫২ পর্যন্ত পাকিস্তানের রাজা ছিলেন ৬ষ্ঠ জর্জ ও ১৯৫২-১৯৫৬ পর্যন্ত ব্রিটেনসহ পাকিস্তানের রাণী ছিলেন দ্বিতীয় এলিজাবেথ। তারমানে তিনি রানী ছিলেন আমাদের এই অঞ্চলেরও । আর তাই সেভাবে দেখলে আমাদের এই অঞ্চলের রাজতন্ত্রের ইতিহাসের শেষ রানীর মৃত্যু হল আজ ।”

খুব সম্ভবত এই ধাড়ী রাম*ছাগ/লটা নিজেকে এখনো মনে প্রাণে বৃটিশ রানীর একান্ত অনুগত এক ভৃত্য মনে করে। আফসোস হয় এইসব অকৃতজ্ঞ, বিশ্বাসঘাতক, দেশদ্রোহী কুলাং঳঳গারদের জন্য!!

এখন মুকুট পরবে বুড়ীর বয়োবৃদ্ধ সন্তান চার্লস, যার নিজের হাতেও প্রিন্সেস ডায়ানার রক্ত লেগে আছে। রাজপরিবারের প্রত্যেকরা সদস্য এইরকম একেকটা খুনী, দাগী আসামী! কিন্তু মিডিয়ার কাছে কত্ত মহান আর ক্ষমতাধর ব্যক্তি এরা!!

ধিক এই রাজ পরিবারকে!!

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.