নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পৃথিবী আমার আবাস। মানুষ আমার পরিচয়।

আবীর চৌধুরী

ইলেক্ট্রিক্যাল এন্ড ইলেক্ট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ার

আবীর চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

সময়ের প্রশ্ন

১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৪:৪৩

গ্যাস-পানি-বিদ্যুত সংকটে জর্জরিত দেশে ৮ হাজার কোটি টাকার সমরাস্ত্র কি দরকার? আগের কেনা সমরাস্ত্র-গুলোর মত এগুলো-ও হয় ভাগাড়ে যাবে, না হয় জাদুঘরে যাবে, নতুবা ক্যান্টনমেন্টের শোভাবর্ধন করবে।



বড় শহরগুলোতে গ্যাস সরবরাহ প্রায় জিরো লেভেলে পৌছে যাওয়াতে শহর বাসিন্দাদের এখন খুচরা গ্যাস সিলিন্ডারের ঘানি টানতে হচ্ছে। প্রতি মাসে গ্যাস কতৃপক্ষকে বিল-ও দিচ্ছে, আবার গ্যাস সিলিন্ডার-ও কিনতে হচ্ছে, যেগুলো কিনা আবার চিপসের প্যাকেটের মত- "দাম যত বাড়ে, ভিতরে শূন্যস্থান-ও তত বাড়ে!!"



অধিকাংশ শহুরে মানুষ এখন বাধ্য হয়েই বিদ্যুত-চালিত ইন্ডাকশন চুলা, হিটার, রাইস কুকার, মাইক্রোভেন ইত্যাদি অত্যাধিক মাত্রায় ব্যাবহারের কারণে এই শীতেও প্রতি এক ঘন্টা অন্তর অন্তর লোডশেডিং হচ্ছে। আর কোটি কোটি আই-পি-এস তো আছেই, ডিসচার্জ না হলেও নিয়ম করে ওগুলো ঠিকই চার্জ হচ্ছে!!



গ্যাস-বিদ্যুত এর সংকটের সাথে পানির হাহাকার-ও যেন একই সূত্রে গাঁথা! আর শহরের ভাড়াটিয়া সম্প্রদায়ের কষ্ট তো আরো বেশি! কিছুই তো পায় না, কিন্তু ভাড়া বাড়ে প্রতি বছর!!



শহরে-শহরে, গ্রামে-গ্রামে (যেসব গ্রামে নির্বাচনী ওয়াদা হিসেবে লাইন দেওয়া হয়েছে) দেয়াশলাই বাঁচানোর জন্য ও ছাদে উঠে কাপড় শুকাতে দেওয়ার আলসেমির জন্য রান্নার চুলার গ্যাস নষ্ট হতে দেখেছি গত কয়েক দশকে! বসত-বাড়ি এবং ব্যাবসায়িক লাইনকে আলাদা হিসেবে না নেওয়া-ও এখনকার তীব্র গ্যাস-সংকটের অন্যতম প্রধান কারণ।



"বায়োগ্যাস প্লান্ট" প্রজেক্টগুলো স্কুল-কলেজের সায়েন্স ফেয়ারে ঠিকই পুরস্কার ও বাহবা পায়, কিন্তু এসব প্রজেক্ট থেকে সরকার-আমলারা বড় অঙ্কের দুর্নীতি করতে পারবেন না বলে এগুলো কখনো আলোর মুখ দেখে না। শহরের ঘিঞ্চি লোকালয়ে "বায়োগ্যাস প্লান্ট" করার মত স্থান-পরিবেশ অপ্রতুল, তাই গ্যাস সরবরাহের প্রথম অগ্রাধিকার হওয়া উচিত শহরের বসতবাড়ি। গ্রামাঞ্চলে লাকড়ীর চুলা হতে নির্গত দূষিত বায়ু শোষণে প্রচুর উদ্ভিদ-ও যেমন আছে, তেমনি "বায়োগ্যাস প্লান্ট" কাম "খামার (পোল্ট্রি/ ডেইরী)" করার সুযোগ-ও প্রচুর!



সরকার ও রিয়েল-এস্টেট ব্যাবসায়ীরা গ্রাম ও শহরের ব্যাবধান কমিয়ে আনতে খুব ততপর; কিন্তু তারা বুঝেন না কেন শুধু ইট-সিমেন্টের খাঁচা হলেই শহর হয় না, গ্যাস-পানি-বিদ্যুত-ও থাকতে হয়!! রাস্তায় গাড়ী চালানোর মত টাকা নেই মানুষের পকেটে (বিশ্বব্যাপী তেলের দাম কমলেও, এদেশে একবার দাম বাড়ালে কস্মিনকালেও তা কমে না), অথচ গ্রামের পর গ্রাম বাঁধানো রাস্তা খাঁ-খাঁ পরে আছে!!!



এখন তো মনে হচ্ছে শহরের চেয়ে গ্রাম-ই অনেক ভালো! গ্রামের মানুষদের অন্তত “থেকেও না থাকার বেদনা” সহ্য করতে হয় না। ওদের আছে মাটির চুলা, জ্বালানী হিসেবে লাকড়ি, কুপি বাতি বা লন্ঠন, নলকূপ বা পুকুরের পানি, ঝুলন্ত পায়খানা।



দেশের প্রতিটি মানুষের পকেট থেকে ৫০০ টাকা নেওয়ার সময় অনুমতি নেওয়া হয়েছে? দেশটা যে ক্রমশ পশ্চাদপসরণরত তা' শুধু এদেশের কিছু উন্মাদ গোষ্ঠীর অস্তিত্বই বলে দেয় না, শহরের ফ্ল্যাটে লাকড়ির বা মাটির চুলা-ই তা আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়!



সরকারের পক্ষ থেকে রাশিয়া সফরের প্রধান কারণ প্রথমে ১ বিলিয়ন ডলারের শপিং বলা হলেও, এখন মূল কারণ হিসাবে দেখানো হচ্ছে রূপপুরে নির্মিতব্য পারমাণবিক বিদ্যুতকেন্দ্র! ১৯৬২ সালে শুরু হওয়া এই প্রকল্প কোনদিন আলোর মুখ দেখবে কিনা জানি না, কিন্তু সরকারের তথাকথিত “সমুদ্রজয়” শুধু নামেই “জয়” হয়ে থাকবে। বিদ্যুত যেহেতু সরাসরি জ্বালানী তথা গ্যাস নির্ভর, সেহেতু যুদ্ধাস্ত্র কেনার চেয়েও নিযুত-গুণ গুরুত্বপূর্ণ ছিল গভীর সমুদ্রের গ্যাস-ব্লক থেকে গ্যাস উত্তোলনে উদ্যোগ গ্রহণ!



বিশ্ব এখন অস্ত্রের যুদ্ধ চলে না, চলে যুক্তির যুদ্ধ, উন্নয়নের প্রতিযোগিতা, টিকে থাকার সংগ্রাম। আর যদি যুদ্ধ লাগেই, শত কোটি টাকার অস্ত্র থাকা সত্ত্বেও আমাদের বসে বসে তাকিয়ে থাকা ছাড়া কিছুই করার থাকবে না। শুধু কোন মহারথীকে সাপোর্ট দিয়েই আমাদের গুরুদায়িত্ব খালাস হয়ে যাবে!!



শুধু নামে “ডিজিটাল-ডিজিটাল” চেঁচালে তো হবে না, যেদেশে গ্যাস-পানি-বিদ্যুতের মত মৌলিক সম্পদের সংকটে সামগ্রিক উতপাদনশীলতা হুমকির সম্মুখীন, সেদেশে থ্রি-জি/ স্মার্ট ফোন/ ওয়াইম্যাক্স দিয়ে কি মানুষ কটকটি খাবে??



এর মধ্যেও কিছু মানুষ পরে থাকে শুধু কে কি বিশ্বাস করল এইসব ছাই-পাশ নিয়ে। জানি “বিশ্বাসে মেলায় বস্তু, তর্কে বহুদূর”- তাই বলে বিশ্বাস নিয়ে তর্ক করতে হবে? নিজে যা মানেন, তা মানুন না, তাই বলে ব্লগে ব্লগে সন্ত্রাস সৃষ্টি করে, সৃষ্টিকর্তায় বিশ্বাসী মানুষদের “ধর্মান্ধ আর নির্বোধ” আখ্যা দিয়ে নিজেদের তারা কি প্রমাণ করতে চায়, কে জানে? আপনি ধর্ম মানেন না ভালো কথা, এক্ষেত্রে আপনার ধর্ম আপনি “অবিশ্বাসী”, তাই আপনি যদি আপনার নিজের বিশ্বাসকেই শ্রেষ্ঠ আর অন্যদের নিচ-ইতর মনে করেন, তবে আপনি-ই “ধর্মান্ধ আর নির্বোধ”!



আর মনে রাখবেন আগে শ্বাস, তারপরে বিশ্বাস!



অফ-টপিক:- শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রাংশ আমদানির নামে আনা ২৫ টন বিদেশী মদ এখন চট্টগ্রাম বন্দরে বাজেয়াপ্ত অবস্থায় আছে। আশা করি, কাস্টমের ফাঁক-ফোঁকর গলে সেগুলো অতি শীঘ্রই দেশের পাগলু/পাগলা/উন্মাদদের বুদ্ধি-বিবেককে আরো কয়েক ধাপ উপরে নিয়ে যাবে!

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৪:৫৫

শের শায়রী বলেছেন: কে শোনে কার কথা? আমাদের নাভিশ্বাস আর তারা কেনে অস্ত্র।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.