নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পৃথিবী আমার আবাস। মানুষ আমার পরিচয়।

আবীর চৌধুরী

ইলেক্ট্রিক্যাল এন্ড ইলেক্ট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ার

আবীর চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

দ্বিজাতিতত্ত্বে আমরা কই?

৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ৯:৫০

মঙ্গলবার রাতে জি বাংলায় "দাদাগিরি" দেখছিলাম। মাঝে মাঝে দেখি। সেদিন "রয়েল বেঙ্গল রহস্য" মুভির কাস্ট-ক্রু টিমের কয়েকজন সদস্য প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছে।

সঞ্চালক সৌরভ গাঙ্গুলী নায়ক আবীর চ্যাটার্জিকে প্রশ্ন করলেন "কোন দেশের ক্রিকেটারদের টাইগার নামে ডাকা হয়?" অপশন দিলেন "শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশ"

আবীর এর আগের উত্তরগুলো ভেবে-চিন্তে দিচ্ছিলো। এই উত্তরটা প্রশ্ন শেষ করার আগেই দিয়ে দিল- "শ্রীলঙ্কা "

অন্য প্রতিযোগীদের কেউই "চ্যালেঞ্জ" করল না, এমনকি সবার চেয়ে বড় ব্যবধানে এগিয়ে থাকা টালিউডের অন্যতম শীর্ষ হিরো জিত-ও না।

সৌরভ সঠিক উত্তর বলে দিলেন। সবাই অবিশ্বাসের ভঙ্গিতে হাসতে লাগলো, এমনকি জিত যেভাবে বাংলাদেশ শব্দটি উচ্চারণ করলো, তাকে তাচ্ছিল্য তো বলাই যায়!



বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বন্ধু বলে যাকে দাবি করা হয়, তারা আর কতভাবে আমাদের শোষণ করবে? আর কতভাবে আমাদের ছোট করবে? তাদের শিক্ষা-সাহিত্য, ইতিহাস-সংস্কৃতিতে আদৌ কি আমাদের ব্যাপারে সত্য তুলে ধরা হয়েছে ?



সেদিন ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক চ্যানেলে ভারতীয় সেনাদের নিয়ে একটা ডকুমেন্টারী দেখছিলাম। ডকুমেন্টারীর এক পর্যায়ে বলা হয়, "১৯৬৫ সালের পর ১৯৭১ সালে ভারত-পাকিস্তান পুনরায় যুদ্ধে লিপ্ত হয় আর এর ফলে জন্ম নেয় বাংলাদেশের; ১৬ ডিসেম্বর ঢাকায় ভারতীয় বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পন করে পাকিস্তানী বাহিনী।"



বাক্যগুলো খেয়াল করেন। এখানে ৭১ এ বাংলাদেশের ব্যাপারটা গৌণ ধরে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধকেই মূখ্য ধরা হচ্ছে। অধিকাংশ ভারতীয়ও মনে করে ৭১ এ যুদ্ধটা হয়েছিল ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে, আর এর ফলস্বরুপ বাংলাদেশের জন্ম হয়। শুনতে খারাপ লাগলেও এটাই বাস্তবতা।



অনেক দেশপ্রেমমূলক ভারতীয় চলচ্চিত্রেও এই সত্য উপলব্ধি করা যায়। একটা উদাহরণ দিলাম।



http://www.imdb.com/title/tt0313844/

http://en.wikipedia.org/wiki/16_December_(film)



ভারতকে গালমন্দ বা বর্জন-ই এর প্রতিকার নয়। আমাদের সবাইকে সবসময় দেশের স্বার্থটাই দেখতে হবে। জনগণ-ই একটি দেশের আসল কাণ্ডারি,প্রত্যেক দেশের শাসকগোষ্ঠীর ভুলের মাশুলই জনগণের গুণতে হয়।



জনগণের কথা যখন আসলো, তখন আমার প্রাত্যাহিক জীবনের কিছু অভিজ্ঞতার কথা বলি। আমি যেখানে থাকি, সেটি একটি হিন্দু-অধ্যুষিত এলাকা। সম্প্রতি নির্বাচনোত্তর সহিংসতার কিছুদিন পরেই আমাদের সামনের এলাকা দেওয়ানজীপুকুর লেনে কিছু মানুষের সাথে পথে কথা বলছিলাম। হঠাত, একজনের মোবাইলে ভারতের জাতীয় সঙ্গীত বেজে উঠলো, সে কথা বলা শেষ করার পরে আমি ও আমার সাথে আরো কয়েকজন (তারাও হিন্দু) বিস্মিত হয়ে প্রশ্ন করলাম কেন সে এই গান রিংটোন হিসেবে রেখেছে। এর উত্তরে সে উদ্ধত ভঙ্গিতে যা বল্লো, তাতে শিহরিত হয়ে উঠতে হয়। তার জায়গায় কোন মুসলিম পরিবারের ছেলে যদি পাকি জাতীয় সঙ্গীত রিংটোন রাখতো, তবে তার পরিণতি ভেবেও শিহরিত হয়ে উঠতে হয়।



অনেকেই এসব মানসিক/মানবিক বিকৃতির জন্য ধর্ম/সম্প্রদায়ের অস্তিত্বকে মুন্ডুপাত করেন। কিন্তু দোষ ধর্মের বা ধার্মিকতার না। দোষ কট্টর জাতীয়তাবাদের। আর এই উগ্র জাতীয়তাবাদের সফল বীজ বপন করে দিয়েছে সেসময়ের ইংরেজরা, যা আজ-ও থ্রি-জি যুগের তরুণেরা বহন করে চলেছে।



সেদিন যেমন এক হিন্দু আইনজীবি ভাই বলছিলেন, সব দোষ নাকি হুজুরদের। হুজুরেরা দেশ ছেড়ে চলে গেলে দেশ শান্তিতে থাকবে। তিনি চট্টগ্রামের ছেলে হয়েও চট্টগ্রামকে সমকামিতা দোষে দুষ্ট হিসেবে আখ্যায়িত করলেন। আবার, নিজ মুখেই স্বীকার করলেন, ঢাকা চট্টগ্রামের চেয়ে ৫০ বছর এগিয়ে। কারণ, ঢাকাতে মানুষ ধর্ম বা সামজিক মূল্যবোধের বেড়াজালে থাকে না; সেখানে সমকামিতা বা পরকিয়া বা একাধিক শারীরিক সম্পর্ক বা উৎসব-কালীন মদ্যপান সবই স্বীকৃত; আর তাই ঢাকা চট্টগ্রামের চেয়ে ৫০ বছর এগিয়ে!! এই যদি এগিয়ে যাওয়া হয়, তবে আমৃত্যু পিছিয়ে থাকতে রাজি আছি আমি- বলেছিলাম আমি সেই তরুণ উকিলবাবুকে।



পাকিস্তান-ভারত মানেই যে মুসলমান-হিন্দু না, এটা বুঝতে রকেট সায়েন্সের ছাত্র হতে হয় না। আর সংখ্যাগরিষ্ঠতার সুযোগ নিয়ে জমিজমা দখল ও রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের লক্ষ্যে যারা সংখ্যালঘিষ্ঠদের বাড়িঘর থেকে উতখাত করে বা বসতভিটা ধ্বংস করে, তাদেরকে বলি দয়া করে সামনে আসুন, দেশকে/জাতিকে বিভক্ত হতে দিবেন না, আমরা সবাই বাংলাদেশী; আর কারো ধর্মীয় পরিচয়টাও গৌণ নয়, তাকেও সমুন্নত রাখতে সচেষ্ট থাকুন। আসল "সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা" দেখতে চাইলে মায়ানমারের দিকে দেখুন- যেখানে সংখ্যালঘিষ্ঠদের নির্যাতন না, সরাসরি জবাই করে মেরে ফেলা হয়। আর বিবিসি/সিএনএন-ও সেসব ঘটনার ছবি আনতে ব্যর্থ হয়; কি নিদারুণ পটভূমিতে এই নির্মমতার রূপ দেওয়া হয়!



চোখে দেখা বা কানে শোনা সত্যের মধ্যেও প্রচুর খাদ থাকে; ঠিক যেমন খাদ থাকে বাজারে পাওয়া তরল দুধে, যে দুধের ভেজাল "ল্যাক্টোমিটার"-এ ও ধরা পরে না!

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ১০:৫০

-আরোহী বলেছেন: আপনার নামটা কোনখানে? :||

০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৪:৫৬

আবীর চৌধুরী বলেছেন: প্রশ্নটা পরিষ্কার করেন? আমার নাম কোনখানে মানে? আপনি দেখছেন না আমি বাংলাদেশের ব্লগ সাইটে বাংলা ভাষায় ব্লগ লিখছি? এতে কি কোন সন্দেহ আছে?
ভারতের বা আওয়ামীলীগের সমালোচনা করলেই কি স্বাধীনতা-বিরোধী হয়ে যায়? পাকিস্তানের বা বিএনপি-জামাতের নিন্দা করলেই কি ইসলাম-বিরোধী হয়ে যায়?
জাতীয় পরিচয়কে যারা ধর্মীয় পরিচয়ের সাথে সাংঘর্ষিক পরিস্থিতিতে দাড় করিয়েছে, তাদের মুখের ভিতরে প্রসাব করে দেওয়া উচিত।
যারা দেশের খেয়ে বিদেশের উদ্দেশ্য হাসিলের ধান্দা করে তাদেরকে মল খাইয়ে দেওয়া উচিত।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.