নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পৃথিবী আমার আবাস। মানুষ আমার পরিচয়।

আবীর চৌধুরী

ইলেক্ট্রিক্যাল এন্ড ইলেক্ট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ার

আবীর চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

কিভাবে পুনরায় চালু করতে হবে মোটর-রিকশা

১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১২:৩৭

আমি আমাদের দেশের মানুষের স্বার্থপর আচরণের জন্য সবসময় বিরক্ত ও লজ্জিত। দলগত, সমষ্টিগত স্বার্থগুলোর জন্য মানুষ মাঝে মাঝে এতটাই উন্মত্ত হয়ে যায় যে, ভেজাল ওষুধ নিষিদ্ধের প্রতিবাদে ঔষধ বিক্রেতারা ধর্মঘট করে, ভেজাল মাংস নিষিদ্ধ করার কারণে কসাই-মাংস ব্যবসায়ীরা ম্যাজিস্ট্রেটের উপর চড়াও হয়, শহরজুড়ে অবৈধ বিলবোর্ড উচ্ছেদকালে রাজনৈতিক ক্ষমতাশালী ছাত্রবেশী ব্যবসায়ীরা ম্যাজিস্ট্রেটের গায়ে হাত তুলে, ইত্যাদি, ইত্যাদি।

সম্প্রতি চট্টগ্রামে একই ঘটনা ঘটে চলেছে "মোটর-রিকশা" নিয়ে। সাধারণ মানুষের ভালোর জন্যই যে যানবাহন বন্ধ করা হয়েছে, তারই প্রেক্ষিতে মানুষকে যাতায়াতের জন্য সীমাহীন দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।



গত বেশ কয়দিন ধরে নগরীতে একই সাথে গ্যাস ও বিদ্যুৎ-এর "লোডশেডিং" চলছে। এর কারণ হচ্ছে বস্ত্র ও অন্যান্য শিল্পে বাসাবাড়ীর গ্যাস বরাদ্দ দিয়ে দেওয়া।

আমি বুঝি না, গ্যাস-বিদ্যুৎ-জ্বালানীর মত মৌলিক জিনিসের পর্যাপ্ততা নিশ্চিত না করেই কেন আবাসিক ও শিল্পখাতে নতুন নতুন স্থাপনা হয়েই চলেছে। এর মূলে অবশ্য রয়েছে অর্থলোভ, ক্ষণস্থায়ী স্বান্তনাপ্রদান ও অদূরদর্শিতা। উদাহরণ হিসেবে বলতে পারি, দীঘিনালার (স্থানের নামটি নিশ্চিত না, পত্রিকায় পড়েছিলাম) পানি শোধনাগার কেন্দ্রটি উদ্বোধন হয়েছে অনেক দিন আগে, অথচ বিদ্যুৎ সংযোগের অভাবে সেটি আদৌ চালু হয়নি, বরং কোটি কোটি টাকার যন্ত্রপাতি পরে থেকে থেকে অকেজো হয়ে যাচ্ছে, এবং অনেক যন্ত্রপাতি চুরিও হয়ে গিয়েছে।



মোটর-রিকশা চালু বা নিষিদ্ধের ব্যাপারটি এখন একটি দুমুখো সমস্যা। ব্যাপারটা এমন; বাবা তার ছেলেকে ছোট বয়সে বখাটেপনা থেকে বিরত রাখেননি, এখন কিছুটা বড় হওয়ার পরে পাড়াপড়শীর অভিযোগে ছেলেকে শাসন করার উদ্যোগ নিয়েছেন, অথচ ছেলে এখন শাসন-বারণের আওতার বাইরে।

শত সমস্যা হলেও মানতে হবে, মোটর-রিকশার উপর এখন চট্টগ্রামের হাজার-পঞ্চাশেক দরিদ্র পরিবার নির্ভরশীল; যারা তাদের আয়ের উৎস বন্ধ হওয়ার পরে চট্টগ্রামবাসীকে কার্যত জিম্মি করে ফেলার উদ্যোগ নিয়েছিল। আর অনেক মানুষের জন্যেও মোটর-রিকশা ছিল যাতায়াতের দ্রুত ও সহজলভ্য মাধ্যম।



মোটর-রিকশা পুনরায় চালু করার আগে প্রশাসনের কিছু বিষয়ে নজর দেওয়া দরকার।

সবচেয়ে মুখ্য বিষয় হল, চট্টগ্রাম শহরের মোটর-রিকশাগুলো সেই বিদ্যুৎ-ই ব্যবহার করছে, যা বাসাবাড়ীর জন্য বরাদ্দ। এই মুহুর্তে, যখন শিল্পখাতে বিদ্যুৎ উৎপাদনের গ্যাস চলে যাচ্ছে, তখন মোটর-রিকশায় একটি বিশাল পরিমাণ বিদ্যুৎ-এর সংস্থান দেওয়া আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত হতে পারে। এইজন্যে মোটর-রিকশার কাঠামো ও কার্যকারিতায় কিছু উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনা জরুরী। আগে মোটর-রিকশাগুলো জাতীয় গ্রিড থেকে বিদ্যুৎ নিয়ে ব্যাটারী চার্জ করে চলতো; এখন সেই একই যানবাহনগুলো সোলার প্যানেল ব্যবহার করে চলতে পারে (Click This Link)। রিকশার গ্যারেজগুলোতে ও শহরের কিছু নির্ঝঞ্ঝাট জায়গায় রিকশার জন্য সোলার চার্জিং স্টেশন স্থাপন করা যেতে পারে (Click This Link)। রিকশার ব্রেক ও বডিকে আরো উন্নত করতে হবে, যাতে দূর্ঘটনা আর না ঘটে। আর রিকশা-চালক ও রিকশা-মালিকদের মনমানসিকতায় পরিবর্তন আনাও জরুরি।



এসব পরিবর্তন যতক্ষণ না হয়, ততক্ষণ সবার ভালোর জন্যই মোটর-রিকশা বন্ধ থাকা উচিত। প্রশাসন, সরকার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে আরো শক্ত ও নিয়মতান্ত্রিক হতে হবে।



আর সরকারকে অনুরোধ জানাবো, জ্বালানী-গ্যাস ও অন্যান্য সামুদ্রিক সম্পদ আহরণের জন্য যেমন বঙ্গোপসাগরকে সদ্ব্যবহারের পরিকল্পনা করা হচ্ছে, ঠিক তেমনি বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্যও এই বঙ্গোপসাগর আমাদের এক বিশাল সম্পদ। পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য যেমন বিদেশী বন্ধুদের সাহায্য নেওয়া হচ্ছে, ঠিক তেমনি সামুদ্রিক স্রোতনির্ভর বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য দেশের পরামর্শ ও সাহায্য নেওয়া যাবে না কেন? [http://www.voanews.com/content/harnessing-power-of-ocean-waves-provides-cheap-electricity/1871119.html]

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১২:৫৯

মোগল সম্রাট বলেছেন: ভালো লাগলো, সচেতনতা মূলক পোষ্টের জন্য। কিন্তু রাম রাজেত্বের এই দেশে এই সব জনদুর্ভোগর কথা মনে করে শুধূ আফসোস করে কষ্ট পাওয়া ছাড়া আর কােন উপায় নাই। ............

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.