নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পৃথিবী আমার আবাস। মানুষ আমার পরিচয়।

আবীর চৌধুরী

ইলেক্ট্রিক্যাল এন্ড ইলেক্ট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ার

আবীর চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

লতিফ সিদ্দিকীর বক্তব্য ও এক হিন্দু বন্ধুর প্রতিক্রিয়া

০৩ রা অক্টোবর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:১৭

এটা কোন ধরণের কথা বুঝলাম না!



সম্প্রতি লতিফ সিদ্দিকী কান্ডের পরে দেশে স্বাভাবিকভাবেই জনরোষ তৈরী হবেই (তবে, যেহেতু তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, সেজন্য কোন বাড়াবাড়ি না করাই ভাল), অথচ, আজ এক হিন্দু (সে নামে হিন্দু, কাজে হিন্দু কিনা জানি না) বন্ধুর ফেসবুকে একটা পোস্ট দেখে বিস্মিত হলাম।

তার মতে, "৯০ ভাগ মুসলমানের দেশে দুর্নীতি সহ্য করা হবে তবে, ধর্ম নিয়ে মত প্রকাশ করা যাবে না। গ্রহনযোগ্যতা পাবার জন্য শেখ হাসিনা ন্যুনতম বিবেক বিচার খাটাতেও দেখা গেল না।"

আশ্চর্য, আশ্চর্য হই এইসব সেক্যুলারিস্ট-কমিউনিস্ট-ধর্মবিদ্বেষীদের কথা-বার্তা শুনে; তারা তো কোন ঘাটেরই পানি খায় না! লতিফ সিদ্দিকী যদি হজ্জ্ব-মুহম্মদ(সঃ) নিয়ে কথা না বলে দূর্গাপূজা-মা দূর্গা নিয়ে কিছু বাজে-ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করতেন, তাহলে সেক্ষেত্রেও কি ব্যতিক্রম কিছু হত?

তখন তো মনে হয় আরেক দফা শাহবাগে আন্দোলন-মিছিল-সভা হত! আজিজ মার্কেট-চেরাগী পাহাড়ের মানবতাবাতী-সংস্কৃতিমনাদের আবার কথা বলতে বলতে মুখে ফেনা উঠে যেত, পা ঘষতে-ঘষতে চপ্পলের তলা খসে যেত! অথচ, শুধু মুসলিমদের বেলায় ব্যতিক্রম কেন?! ইসলাম নিয়ে বাজে মন্তব্যকারীদের বিরুদ্ধে কেউ রাগ-ক্ষোভ প্রকাশ করলেই কি সে "তেঁতুল" হয়ে যায়, "ফ্যানাটিক" হয়ে যায়, "মৌলবাদী" হয়ে যায়?

যারা ইসলাম জানে না, বা মানে না, বা ঘৃণা করে, তাদের উদ্দেশ্যে বলি, ইসলামের মূল কথাই হচ্ছে "আল্লাহ ও আল্লাহর রাসূল মুহম্মদ (স)-এর উপর বিশ্বাস"; ইসলামের মূল স্তম্ভগুলোই হচ্ছে- "কলেমা, নামাজ, রোজা, হজ্জ্ব, যাকাত"।

খুব নগণ্য ও উদারপ্রকৃতির মুসলিমেরাও এসব "মূল-ভিত্তি" অস্বীকার করে না। "মূল" মানাটাই স্বাভাবিক, "আগাছা" মানাটা অপশনাল! কেউ মূল মানলেই সে মৌলবাদী হয়ে যায় না! মৌলবাদী ও উগ্রবাদী/জঙ্গিবাদীর মধ্যে ব্যস্তর ফারাক! আমার মত যারা নামে মুসলিম তারাও লতিফ সিদ্দিকীর এইসব কথা শুনলে ক্ষুব্ধ হবে; সে যদি সাধারণ কোন সেক্যুলারিস্ট হত সেটা অন্য ব্যাপার; দায়িত্বশীল পদে থেকে অনেক কিছুই ভেবে-চিন্তে করতে হয়, বলতে হয়। আম্রিকাতে মদ খাওয়া, কল-গার্লের সাথে সময় ব্যয় করা সাধারণ ব্যাপার, কিন্তু তারপরেও তাদের জনপ্রতিনিধিরা এসব জনসম্মুখে করেন না; কারণ শত হলেও এসবের মধ্যে কোন মহত্ব নেই!

আমার সেই হিন্দু বন্ধু আরো বলেছে- " লতিফ সিদ্দিকীর চিরকালই শওকত ওসমান সহ দেশের সব প্রগতিশীল লেখক - বুদ্ধিজীবির সাথে ওঠা - বসা; ফলে ভদ্রলোক বেশ প্রগতিশীল চিন্তার অধিকারী। তবে তাঁর স্থান-কাল - পাত্র জ্ঞান খুব কম, এ কথা ঠিক, বাংলাদেশের মূর্খ জনগণ সম্পর্কে বা মূর্খ লোকের সামনে সব কথা সব সময় বলা যায় না। এটা তাঁর মাথায় রাখা দরকার ছিল।"

আশ্চর্য লাগে। রাজনীতি করা বা রাজনীতি নিয়ে গঠনমূলক চিন্তা করা একজন তরুণ কি করে দেশের সব মানুষকে গড়পড়তাভাবে "মূর্খ জনগণ" বলে দেয়! যারা ধর্মীয় মূল্যবোধকে সম্মান করে, তারা কি "অপ্রগতিশীল"? মানুষকে "বুদ্ধিজীবি" হতে হলে কি ধর্মীয় বিশ্বাসকে (নিজের ও অন্যের) পায়ের নিচে পিষে মারতে হয়? আমি বিশ্বাস করি, আওয়ামীলীগ সরকার তাদের দলের ভিতরে ও বাইরে মানুষের মধ্যে এইরকম ভাবনা-চিন্তার পরিবর্তনে কাজ করবে।

সেই সনাতন ধর্মাবলম্বী বন্ধু আরো বিস্মিত ও রাগান্বিত হয়েছে শুধুমাত্র ধর্মবিরোধী (ইসলাম-বিরোধী) কথা বলার কারণে লতিফ সিদ্দিকীকে ফাঁসির কাষ্ঠে ঝোলানোর দাবি জানানোর কারণে। অনেক চ্যানেলে-পত্রিকায়-ইন্টারনেটে দেখলাম এইধরণের দাবিকে ব্লাসফেমি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

"দোষ" হয়েছে সেটা আমি মানি, তবে "দোষের শাস্তি" সম্পর্কে আমি কোন মন্তব্য করতে চাই না! কারণ, আমি আদালত নই, আমি আইন-শৃঙ্খলার দায়িত্বেও নিয়োজিত নই। আর যেহেতু, দেশটা গণতান্ত্রিক সেহেতু সংবিধান-অনুযায়ী যা হওয়ার তা-ই হবে।

তবে আমি বলব, লতিফ সিদ্দিকীর কথার বিপরীতে যেরকম রাজনীতি/অস্থিরতা করার চেষ্টা/অপচেষ্টা চলছে, সেরকম একইভাবে তার বক্তব্যের বিরুদ্ধে হওয়া জনআক্রোশ ও প্রতিবাদকে যারা জঙ্গিবাদ/মৌলবাদ/ব্লাসফেমি/সাম্প্রদায়িক/বাকস্বাধীনতাবিরোধী/হেফাজতের-উত্থান প্রভৃতি বলে কলঙ্কিত করার চেষ্টা করছে, তারাও কোন "ধোয়া তুলসী পাতা" না!

কারো লক্ষ্য ধর্মকে রাষ্ট্র-পরিচালনার মুখ্য উপাদানে পরিণত করা, কারো লক্ষ্য ধর্মকে পৃথিবী থেকে নির্মুল করে দেওয়া। দুটোই মানব-অস্তিত্বের জন্য ভয়াবহ। এই দুটো শক্তির সংঘর্ষের কারণেই এই দেশে অস্থিরতা তৈরী হয়!

সত্যিকারের ধার্মিকেরাই একে অন্যের বন্ধু; হোক সে যে কোন ধর্মের। কিন্তু যারা কোন ধর্মকেই সমর্থন ও সম্মান করে না, তারা কপটতা ও ভণ্ডামি করে একেক সময় একেক ধর্মের বিপক্ষে বলে ঠিকই; কিন্তু কখনোই তার মানে এই নয় যে তারা অন্যান্য ধর্মকেও ডিফেন্ড করে সেইসব কথা বলে।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৩ রা অক্টোবর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৩০

নুর ইসলাম রফিক বলেছেন: সত্যিকারের ধার্মিকেরাই একে অন্যের বন্ধু; হোক সে যে কোন ধর্মের।

২| ০৩ রা অক্টোবর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৪৬

কুকরা বলেছেন: মালুর বাচ্চা, মালুর বাচ্চার মতই কথা বলছে। এতে অবাক হওয়ার কি আছে?

৩| ০৩ রা অক্টোবর, ২০১৪ রাত ১০:৩৯

হোৎকা বলেছেন: কুকরা, সহমত

৪| ০৪ ঠা অক্টোবর, ২০১৪ রাত ৯:৫২

আবীর চৌধুরী বলেছেন: সবার মধ্যে এত ঘৃণা, হিংসা, বিদ্বেষ দেখলে মাঝে মাঝে আফসোস হয় কেন মানুষ হয়ে জন্মালাম।
মানুষ হয়ে জন্মিয়ে তো ভুল করলামই, মুসলিম হয়ে জন্মিয়ে মনে হয় আরো ভুল করলাম!
পুরো দুনিয়ায় মুসলিমদের শত্রু গিজ গিজ করছে। তাহলে কি কেউ নিজের বিশ্বাস নিয়ে শান্তিমত মরতেও পারবে না? নিজের ধর্ম-গৌত্রকে ডিফেন্ড করতে পারবে না?
যারা সীমা অতিক্রম করছে, তাদের দোষের দায়ভার কেন সার্বজনীনভাবে চাপিয়ে দেওয়া হয়? কেন?!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.