নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পৃথিবী আমার আবাস। মানুষ আমার পরিচয়।

আবীর চৌধুরী

ইলেক্ট্রিক্যাল এন্ড ইলেক্ট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ার

আবীর চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিদ্যুৎ? নাকি, বিজ্ঞাপন?

১১ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৫:৩৬

রাজনীতির ভাষা আর প্রকৌশলের (বিজ্ঞানের) ভাষা এক নয়।

তাই, ক্ষমতাধরেরা ক্ষমতা ধরে রাখতে সাধারণ মানুষের সাথে হয়তো মিথ্যা বলতে পারেন, অসম্পূর্ণ তথ্য দিতে পারেন, প্রলোভন দেখাতে পারেন; কিন্তু সাধারণ মানুষের মধ্যেও ন্যুনতম শিক্ষিত মানুষ আছে।



যত "কনফিউশান" আছে সবই তৈরী করেন এসব ক্ষমতালোভীরা, মিথ্যা আশার ভেলায় ভাসান মূর্খ/অন্ধ ভক্তদের। সুন্দর ভবিষ্যতের পরিকল্পনা করছেন ভালো কথা, সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করছেন/করবেন তা'ও ভালো কথা, কিন্তু মিথ্যার মূলা ঝুলিয়ে কেন জনগণকে তার পিছনে ছুটে "আশাবাদী" হতে দিবাস্বপ্ন দেখাচ্ছেন?



নিচের দেওয়া ছবিটাতে বলা হচ্ছে "বিদ্যুত উৎপাদন বেড়ে ১১০০০ মেগাওয়াট করা সম্ভব হয়েছে"; কিন্তু কিভাবে?!

১১০০০ মেগাওয়াট যদি উৎপাদনই হতো, তবে দেশে এখনো "লোডশেডিং" কেন হয়? তবে কি লোডশেডিং করা হয় ইচ্ছাকৃত কারণে, অপচয়কারী প্রজাদের শিক্ষা দেবার জন্যে, বিদেশে পাচার করার জন্যে? না!!







লোডশেডিং তখনই করা হয়, যখন যোগানের চেয়ে চাহিদা বেশি থাকে। আমাদের দেশে সামনের গ্রীষ্ম মৌসুমে চাহিদা ৯০০০ মেগাওয়াট ছাড়িয়ে যাবে; তার মানে এখন চাহিদা ধরা যাবে ৮০০০ মেগাওয়াট বা তার কম। তাহলে আবারো একই প্রশ্ন, ১১০০০ মেগাওয়াট যদি উৎপাদনই হতো, তবে দেশে এখনো "লোডশেডিং" কেন হয়?



প্রকৃত ও সম্পূর্ণ তথ্য হল, আমাদের দেশে বিদ্যুতের স্থাপিত ক্ষমতা (Installed Capacity) হল ১১০০০ মেগাওয়াটের সামান্য বেশি, আর উৎপাদন ক্ষমতা (Generation Capacity) বা উৎপাদিত বিদ্যুৎ (Electricity Produced) হল গড়ে ৬০০০ থেকে ৭০০০ মেগাওয়াট। যেদিন সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয় (৭৫০০ মেগাওয়াট) সেদিন-ও ৫০০ মেগাওয়াট ঘাটতি থাকে! বিদ্যুৎ খাতে এখন মূল চ্যালেঞ্জের বিষয় হল- "জ্বালানী"।



সরকারের উচিত প্রশংসা ও সমর্থন পাওয়ার জন্য মিথ্যাচার না করে জবাবদিহিতামূলক সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা; এবং কয়লা/গ্যাস/তেল ইত্যাদি আবিষ্কার/উত্তোলন/সংরক্ষণ/আমদানির পাশাপাশি নবায়নযোগ্য জ্বালানীর উপর গুরুত্ব আরোপ করা। সৌর বিদ্যুৎ ও বায়ুবিদ্যুতে শুধুমাত্র প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলো ছাড়া দেশের বৃহৎ জনগোষ্ঠীর চাহিদা পূরণ সম্ভব নয়। তাই সামুদ্রিক স্রোত ও জৈববর্জ্য হতে বিদ্যুৎ উৎপাদন করেই বিপ্লব ঘটানো সম্ভব।



এই বিদ্যুৎ মেলা নিয়ে টিভিতে একটি বিজ্ঞাপন দেখলাম; অদ্ভুত বিজ্ঞাপন; শাসকশ্রেণীর চাপিয়ে দেওয়া দর্শনের ভিত্তিতে নির্মিত।

বাসে গাদাগাদি করে কিছু মানুষ গন্তব্যে যাচ্ছে। আর যথারীতি সাধারণ মানুষ তার দৈনন্দিন দুঃখ-দুর্দশা-যন্ত্রণা নিয়ে সহযাত্রীদের সাথে কথা বলছে; যার ফলে আসলে কিছুই হয় না, এমনকি বিন্দুমাত্র সাময়িক স্বস্তিও আসে না। কিন্তু বিজ্ঞাপনে দেখা যায়, বাসে অন্তত একটা এমন মানুষ আছে যে কিনা চারপাশের এসব লোক-দেখানো উন্নতিতে নিজেও আশাবাদী, এবং অন্যদের-ও আশাবাদী হতে বলে। এ ধরণের মানুষেরা হয়তো ভণ্ড, না হলে শাসকগোষ্ঠীর দালাল, নতুবা কোন না কোনভাবে শাসকগোষ্ঠীর অন্যায্য লাভের অংশীদার।



যুগে যুগে সাধারণ মানুষের সাথে এরকমই হয়ে এসেছে। ৪০ সিটের বাসে ১০০ জন যাতায়াত করে; জীবনের ঝুঁকি নিয়ে; বিপন্ন হয় যাত্রীদের সামাজিক, অর্থনৈতিক, স্বাস্থ্যগত দিক। শুধু রাজধানীর কথা চিন্তা করলেই যানজটকে দোষ দিয়েই আমরা খালাস; কিন্তু যানজট কোন “কারণ” নয়, এটি অনেক কারণের একটি “ফল”।

গণপরিবহনব্যবস্থাকে পঙ্গু করে রাখা, রেলপরিবহনকে পঙ্গু করে রাখা, এসবের পিছনে অনেক রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক স্বার্থ কাজ করে। ঐ বিজ্ঞাপনে যেই রাস্তা, ফ্লাইওভার নিয়ে মানুষকে আশ্বস্ত হতে বলে ঐ ভন্ড, সেই রাস্তা-ফ্লাইওভার ও কোন প্রকৃত উন্নয়নের স্বার্থে নয়। ঢাকা বা চট্টগ্রামের ডিটেইলড এরিয়া প্ল্যান (ড্যাপ)-এ প্রকৌশলী ও স্থপতিরা যেই নকশা বা প্রস্তাব বা পরামর্শ দিয়েছেন, বাস্তবে তা কোনটাই বাস্তবায়িত হয়নি। কোন ফ্লাইওভার দিয়েই পাবলিক বাসগুলো যাতায়াত করতে পারবে না; তাহলে অপরিকল্পিত, যত্রতত্র এসব বানিয়ে কি লাভ? ফ্লাইওভার এর রুট তো মেট্রোরেল-এর ট্র্যাকের রুটের সাথেও সাংঘর্ষিক হবে। তখন কি আবার এসব ভাঙ্গা হবে? জনগণের টাকার আর কত হবে অপচয়? ঘুরেফিরে সব টাকা তো যায় এসব বাসে ঝোলা মানুষদের পকেট থেকেই!



সত্যিকারের ভালো উদ্যোগের মাধ্যমে মানুষের অন্তরে ঠাঁই পেলে বিজ্ঞাপন দিয়ে মগজ বশ করার বৃথা চেষ্টা করতে হয় না।



বিঃদ্রঃ আমি আবার একচেটিয়া "হতাশাবাদী" নই। আপনাদের জন্য কিছু আশাব্যঞ্জক খবরের ছবিও দিয়ে গেলাম।







মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.