নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পৃথিবী আমার আবাস। মানুষ আমার পরিচয়।

আবীর চৌধুরী

ইলেক্ট্রিক্যাল এন্ড ইলেক্ট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ার

আবীর চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

অর্থনৈতিক সাফল্যের সূত্র ও করণীয়

০৯ ই মার্চ, ২০১৫ রাত ১:৩২

জনসংখ্যা বিস্তার রোধে পরিবার-পরিকল্পনাজাতীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। ঠিক তেমনই এদেশের অর্থনীতির মোড় ঘুরাতে বেশকিছু প্রকল্প হাতে নেওয়া দরকার।

১) সার্ভিস সেক্টরকে প্রাধান্য না দিয়ে ম্যানুফেকচারিং সেক্টরকে গুরুত্ব দিতে হবে। উতপাদন ও উতপাদিত পণ্যকে কেন্দ্র করে সেবাখাতগুলো কাজ করে যেতে পারে।

২) প্রয়োজনের তুলনায় আমাদের দেশের শহরাঞ্চলে বিলাসবহুল রেস্টুরেন্ট, শপিংমল ইত্যাদির সংখ্যা অনেক বেশী। এরা জনসংখ্যার অধিকাংশের চাহিদাপূরণে অক্ষম। দরিদ্র জনগোষ্ঠী এখনও পথের খাবার/পোশাক/পণ্যের উপর নির্ভরশীল।

৩) শপিংমলগুলোতে বিপণনের জন্য রাখা পণ্যগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে তৈরী-পোশাক। আরএমজি ম্যানুফেকচারিং এর মধ্যে বাংলাদেশ যেভাবে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে উঠেছে, ঠিক তেমনি অন্যান্য সব পণ্যের ক্ষেত্রেও উদ্যোক্তাদের উদ্যোগ নেওয়ার মত পরিবেশ তৈরির দায়িত্ব রাষ্ট্র ও সরকারের।

৪) পাশের দেশের চ্যানেলগুলোতে প্রোগ্রামের মাঝে বিজ্ঞাপনগুলো দেখলে রীতিমত হিংসা হয়। আমাদের ঢালিউড যেরকম বলিউডের তুলনায় ক্রোশ ক্রোশ পিছিয়ে, তেমনি বিভিন্ন প্রোডাক্ট প্রোডাকশনের ক্ষেত্রেও অনেক অনেক দূরে। অটোমোবাইল, ইলেক্ট্রিক্যাল ও ইলেক্ট্রনিক্স, মেকানিক্যাল, পেটরোলিয়ামজাত পণ্য আমাদের দেশে একদমই উতপাদিত হয় না, শুধু আমদানি-বিপণন-বিক্রয়-মেরামতের মধ্যেই সীমাবদ্ধ আছে অর্থনীতির চালিকাস্বরূপ এসব গুরুত্বপূর্ণ খাত।

৫) অর্থনীতিকে একমুখী না করে বহুমুখী করতে হবে। মানুষ কি শুধুই কাপড় পরেই যাবে, কাপড় বিক্রি হওয়ারও কি একটা সীমা নেই?
মানুষ কি শুধুই ইট-লোহা-বালি-সিমেন্টের বাড়ী বানিয়ে ভাড়া দিয়ে পায়ের উপর পা তুলে টাকা আয় করবে? এভাবেই কি দেশ মধ্য আয়ের দেশে পরিণত হবে?

৬) এদেশের কৃষজ পণ্য, ভূমির ঊর্বরতা ও সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে কেন কানাডার মত ভোগ্যপণ্যের ইন্ডাস্ট্রিয়াল এরিয়া গড়ে তোলা হল না? সমুদ্র ও নদীর প্রতুলতা থাকা সত্ত্বেও মতস্যখাতকে কেন রপ্তানীযোগ্য পণ্যে পরিণত করা সম্ভব হল না?

৭) বিশ্ববাজারের সাথে সরাসরি কোন সম্পর্ক না থাকার পরেও পোল্ট্রি ও ডেইরি প্রোডাক্টের মূল্য কেন আমাদের দেশে ঊর্ধগামী? ভোজ্যতেলের উপাদান বা চিনির যোগানকারী ইক্ষুচাষে কেন কোন বিস্তৃত পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না? এসবের পিছনেও কি রয়েছে দেশী-বিদেশী স্বার্থান্বেষী ব্যবসায়ী মহল?

৮) ভুড়ি ভুড়ি ডায়াগনোস্টিক সেন্টার বা ক্লিনিক প্রয়োজনের সময় আসলেই কি দেশের সিংহভাগ মানুষকে মানসম্মত চিকিতসা দিতে পারছে? এতজাতের ব্যাংক খোলা হচ্ছে, দেশের কয়টা মানুষ আয়-ব্যায়ের পর সঞ্চয়ের বিলাসিতা করতে পারে? ঋণখেলাপীরা ছাড়া সাধারণ মানুষ কতটুকুই বা লোন পায়?

৯) চ্যানেল, পত্রিকা, মিডিয়াসেন্টারের বাহারে রাজধানী ঝুলে পড়েছে। কিন্তু তারা কতটুকুই বা কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পারে? এমনকি তাদের নিজেদের আয়ের উতস-ও বিজ্ঞাপন। পণ্য উতপাদনের উদ্যোগ, পরিকল্পনা বা পরিবেশ না থাকলে বিনোদন বা পর্যটন খাত-ও কখনো চাঙ্গা হবে না।

১০) সফটওয়ার ও টেলিযোগাযোগ খাতে বিপ্লব আনার মুখরোচক বুলি "ডিজিটাল বাংলাদেশ" কে আপগ্রেড করার সময় এখনই। সফটওয়ার বা ইন্টারনেটনির্ভর পেশা ও পণ্যভোগের একটা শেষ সীমানা আছে; যেটা স্পর্শযোগ্য পণ্যের ক্ষেত্রে নেই। হার্ডওয়ারের শিল্প আরো ব্যাপক, ইন্ডাস্ট্রিয়াল বা রেসিডেন্সিয়াল কাজে ব্যবহৃত ইকুইপমেন্ট ও মেশিনারিজ উতপাদিত হলে এই দেশের শিল্প বিপ্লব কেউ ঠেকাতে পারবে না, বেকারত্ব থাকবে না, অপরাধ কমে যাবে, বৈদেশিক নির্ভরতা থাকবে না, দেশ থেকে মেধা ও অর্থপাচার থেমে যাবে।

শুধু চাই এখন রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, জাতীয় ঐক্য, এবং সুপরিকল্পনাভিত্তিক কার্যকরী উদ্যোগ।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.