নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পৃথিবী আমার আবাস। মানুষ আমার পরিচয়।

আবীর চৌধুরী

ইলেক্ট্রিক্যাল এন্ড ইলেক্ট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ার

আবীর চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমি প্রধানমন্ত্রী হলে (পর্ব ১)

০৭ ই অক্টোবর, ২০১৫ রাত ৯:১২

আমি প্রধানমন্ত্রী হলেঃ-

১) গণপরিবহন নেটওয়ার্ক শক্ত করতাম, যাতে কম খরচে, কম জ্বালানীতে, কম সময়ে অধিক সংখ্যক মানুষ শহরের ভিতরে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় ও এক জেলা থেকে অন্য জেলায় যাতায়াত করতে পারে।

২) যে মানুষের কর্মস্থল যে জায়গায়, তাদের জন্য পাশাপাশি বা কাছাকাছি স্থানে আবাসিক এলাকা ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা সরবরাহ করতাম, যাতে যাতায়াতে কম সময়, অর্থ, জ্বালানী ব্যয় হয়; মানুষ হেঁটে বা সাইকেলে করে এই স্বল্প দূরত্বে কর্মস্থলে বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেতে পারে।

৩) ব্যক্তিগত যানবাহনে ৩০০% এর মত ট্যাক্স তুলে ফেলতাম। কারণ, এতে কোনই লাভ হচ্ছে না। মানুষকে বিলাসী জীবনযাপনে কোনভাবেই অনুৎসাহিত করতে পারছে না এই বিপুল পরিমাণ কর। তার পরিবর্তে সব প্রতিষ্ঠানের ছোট-বড় সব কর্মচারী-কর্মকর্তার জন্য বাসে চলাচল বাধ্যতামূলক করতাম। ইংলিশ/বাংলা/মাদ্রাসা যেকোন মিডিয়ামের যেকোন স্কুল-কলেজ-ভার্সিটির শিক্ষার্থী-শিক্ষক-অধ্যক্ষ-ভাইস চ্যান্সেলর সবাইকে একই ধরণের বাসে যাতায়াতে বাধ্য করতাম।

৪) নদী-খালবিল-হাওড়বাওড় এমনকি শহরের খাল-নর্দমাকে পুনর্গঠন-দখলমুক্ত-প্রশস্তকরণ করে জলপথে ইঞ্জিনবিহীন-মানবচালিত নৌযানে মানুষ ও মালামাল পরিবহনের সুযোগ সৃষ্টি করতাম।

৫) যদি সম্ভব হয়, শহরাঞ্চলের বড় রাস্তাগুলোর নিচে বা আন্তজেলা-হাইওয়ের তলদেশে পানি-চলাচলকারী স্ট্রম-ড্রেইন-নেটওয়ার্ক তৈরি করতাম। একই সাথে প্রত্যেক বাসা-অফিস-কারখানা-হাসপাতালের বর্জ্য নির্গমনের পথে খাঁচার মত বাক্স বসানো বাধ্যতামূলক করতাম, যাতে তরল বর্জ্যের সাথে কঠিন বর্জ্য মিশতে না পারে। এতে সহজেই কঠিন বর্জ্যগুলো সরিয়ে নিয়ে রিসাইকেল করা যাবে, এবং পানিদূষণ কমবে; পানি শোধনাগার কেন্দ্রগুলোর উপর চাপ কমবে।

৬) যদি সরকারী ব্যবস্থাপনায় কাজে দেরি হয় বা অর্থ খরচ বেশি হয়, তবে সবকিছু বেসরকারী বা বিদেশী ব্যবস্থাপনায় দিয়ে দিতাম। দুর্নীতিরোধে দেশের সব প্রজেক্টের দৈনিক-সাপ্তাহিক-মাসিক-বাৎসরিক হিসাবনিকাশ-লেনদেন প্রিন্ট-ইলেকট্রনিক-অনলাইন মিডিয়ার মাধ্যমে দেশবাসীর সামনে খোলাসা করতাম। কারণ, আমি প্রধানমন্ত্রী মানে আমি জনগণের "দাস", জনগণ আমার গোলাম না!

৭) সরকারী কর্মকর্তা বা সরকারের মন্ত্রী-উপদেষ্টাদের "বৈদেশিক উন্নয়নের প্রকৃতি" দেখার নামে "সপরিবারে বিদেশ ভ্রমণ" বন্ধ করতাম; বছরে কোটি কোটি টাকা সাশ্রয় হত। ইন্টারনেটের যুগে অপ্রয়োজনীয় ভ্রমণ অর্থহীন। তাছাড়া, সংশ্লিষ্ট দেশে এদেশের দূতাবাস থাকলে, বা প্রবাসী বাংলাদেশী থাকলে, তারাই "বৈদেশিক উন্নয়নের হালচাল" সম্পর্কে আমাদের অবহিত করতে পারে।

৮) ক্ষতিকর ড্রাগ-মাদক-পর্নোগ্রাফী আইন করে নিষিদ্ধ করতাম। রাস্তাঘাটে ফুটপাতে মল-মূত্র ত্যাগকারীর জন্য নির্মম-তাৎক্ষণিক শাস্তির বিধান করতাম। যেসব কর্মক্ষেত্র বা ব্যবসাক্ষেত্রে স্বাস্থ্যকর পাবলিক টয়লেট নেই, সেগুলো বুলডোজার দিয়ে গুড়িয়ে দিতাম। খেলার মাঠ বা পুকুর-জলাশয় ছাড়া আবাসিক এলাকা গড়ে তোলা হলে নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানের কর্ণধারকে সিরিয়ায় নির্বাসনে পাঠাতাম।

৯) প্রত্যেক ভোগ্যপণ্যের বিক্রয়মূল্য, বাসাভাড়া, যাতায়াত ভাড়া, গ্যাস-পানি-বিদ্যুৎ বিল, জ্বালানী খরচের সীমা নির্ধারণ করে দিতাম। "এই দেশে একবার কোন কিছুর মূল্য বৃদ্ধি হলে আগের জায়গায় ফেরত আসে না"- এই নিয়ম পরিবর্তন করতাম। মূল্যস্থীতি কমাতে না পারলে প্রেস কনফারেন্স ডেকে জাতির সামনে নিজের গালে নিজে দুইটা কষে থাপ্পড় দিতাম।

১০) বাংলাদেশের প্রত্যেক জেলার, প্রত্যেক অঞ্চলের কিছু নিজস্ব অর্থনৈতিক পণ্য আছে, নিজস্ব আঞ্চলিক সম্পদ আছে। আঞ্চলিক বৈশিষ্ট্যকে প্রাধান্য দিয়ে ছোট ছোট অর্থনৈতিক অঞ্চল সৃষ্টি করে কর্মসংস্থান ও বসবাসের সুযোগ-সুবিধা তৈরি করতাম। শিল্পায়নের চেয়ে কৃষিকে প্রাধান্য দিতাম। গ্রামের মানুষ কেন শহরে এসে ভিড় করছে, তা খুঁজে বের করে সমাধানের চেষ্টা করতাম। তাদেরকে নিজ নিজ এলাকায় মৌলিক নাগরিক অধিকার সরবরাহের পরেও যেতে না চাইলে শহর থেকে গলা ধাক্কা দিয়ে বের করে দিতাম।

১১) মাধ্যমিক/উচ্চমাধ্যমিকের পরে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে শিক্ষাগ্রহণের উদ্দেশ্যে এবং স্নাতক-স্নাতকোত্তরের পরে কর্মসংস্থানের উদ্দেশ্যে ঢাকায় অনবরত মানুষের আসা বন্ধ করতাম। প্রত্যেক অঞ্চলে বিশ্ববিদ্যালয় বা কর্মক্ষেত্র তৈরি করাই শুধু যথেষ্ট নয়। শিক্ষা বা পেশায় অযৌক্তিক, ক্ষতিকর সামাজিক বা অর্থনৈতিক শ্রেণিবিভেদ ধ্বংস করতাম। অমুক বিশ্ববিদ্যালয় সেরা, সবাই ওইখানেই ভর্তি হতে হবে; অমুক কোম্পানি সেরা, সবাইকে ওইখানেই চাকরি করতে হবে- এসব মান্ধাতার আমলের ধারণাপোষণকারীকে মায়ানমারের বর্ডারে বেঁধে রাখতে আদেশ দিতাম।

১২) সুস্থ বিনোদন, মানসম্মত শিক্ষা, দুর্নীতিমুক্ত রাজনীতি, অবিভক্ত সমাজ, এবং "সবার জন্যে উন্নয়নমুখী অর্থনীতি" না থাকলে দেশে প্রতিদিন যে মানবসন্তান জন্ম নিচ্ছে, তাকে কখনোই বাঁচানো যাবে না; এই দেশ তাকে হয় "শিকার" না হয় "শিকারী" বানিয়ে ছাড়ে। দেশের বর্তমান ও ভবিষ্যতের জন্য এই শর্তাবলী নিশ্চিতের অঙ্গীকার করে নিঃস্বার্থভাবে কাজ করে যেতাম।

মন্তব্য ১৩ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১৩) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই অক্টোবর, ২০১৫ রাত ৯:৩১

গেম চেঞ্জার বলেছেন: প্রিয়তে।

২| ০৭ ই অক্টোবর, ২০১৫ রাত ৯:৩৩

গেম চেঞ্জার বলেছেন: কিছু মতভেদ আছে। তবে ইগনোর করা যায়। সময় বেশি হাতে নেই তাই বললাম না।

৩| ০৭ ই অক্টোবর, ২০১৫ রাত ৯:৫০

আমি মিহু বলেছেন: আফসোস, হতে পারবেন বলে মনে হয়না :পি

৪| ০৭ ই অক্টোবর, ২০১৫ রাত ৯:৫৭

ঢাকাবাসী বলেছেন: হলেও টিকবেননা বেশীদিন কারণ ১০০% করাপটেড আমলা, নেতা আর ব্যাবসায়ীরা আপনাকে মেরে ফেলবে।

৫| ০৭ ই অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১০:০৩

রাজীব নুর বলেছেন: গুড।

৬| ০৭ ই অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১০:০৩

বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: অপেক্ষায় আছি। প্রাকৃতিক ভাবে যখন দুই পরিবার বিলীন হবে(যদিও আমার জীবনে নয় সম্ভবত) তখন দেখা যাবে কী হয়।

৭| ০৭ ই অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১০:০৫

মামুন ইসলাম বলেছেন: সত লোকের জন্য বাংলাদেশে কোন খাবার নেই ।

৮| ০৭ ই অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১০:২৯

প্রবাসী ভাবুক বলেছেন: এগুলো কি গতরাতে স্বপ্ন দেখেছিলেন? মনে হয় তেমন কিছুই হবে৷ এরকম নীতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী তো স্বপ্নের ব্যাপার, সাংসদ হওয়া দূরের কথা এলাকার দলীয় কমিটিতে ভাল কোন পদ পাবেন বলে মনে হয় না৷ কারণ এটা বাংলাদেশ৷ এখানে সৎ মানুষদেরকে রাজনীতিতে বেশিদূর এগোতে দেওয়া হয় না৷ তবে আপনার ধ্যানধারণাকে সাধুবাদ জানাই৷

৯| ০৭ ই অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১০:৩১

গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: আপনার চিন্তাধারা আমার ভাল লেগেছে ।

১০| ০৭ ই অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১০:৫২

সুলতানা রহমান বলেছেন: প্রধানমন্ত্রী হলে ও কিছুই করবেন না। এখনকার দুই নেত্রীর মতোই হয়ে যাবেন। পরিবেশ শিক্ষা বলে কথা ...:D

১১| ০৭ ই অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১১:২৮

তিথীডোর বলেছেন: Well written!..I like your thoughtful ideas,..you are absolutely positive minded!!!!!!!!!!!

১২| ০৭ ই অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১১:৪৪

বিপরীত বাক বলেছেন: sultana rahman বলেছেন:
প্রধানমন্ত্রী হলে ও কিছুই
করবেন না। এখনকার দুই
নেত্রীর মতোই হয়ে
যাবেন। পরিবেশ শিক্ষা
বলে কথা।

সহমত।।।
যে যায় লঙ্কায়,,,, সেই হয় রাবণ।।।

আপনি পোদানমন্তি হলে দুর্ণীতি, স্বজনপ্রীতি, ছেলেপ্রীতি, বাপপ্রীতি, বউপ্রীতি,, সুন্দরী প্রীতি, প্রশাসন দলীয়করণ, নিজস্বার্থে দেশবিক্রি, ইত্যাদি সবই করতেন ও দেখাতেন আরও বর্ধিতরুপে, ভিন্ন আঙ্গিকে , নতুন পদ্ধতিতে।।

১৩| ০৮ ই অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১২:২৬

গৃহত্যাগী পূর্ণিমার আলো বলেছেন: হ্যান করতাম ত্যান করতাম কি করতেন জানা আছে। একটা দেশ কিভাবে চলে সেই সম্পর্কে কোন ধারণা আছে। হাসিনা-খালেদা খারাপ। কিন্তু একটা কথা মাথায় রা.।.।.।।। ধুর!!! কমেন্ট লিখে কি হবে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.