নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পৃথিবী আমার আবাস। মানুষ আমার পরিচয়।

আবীর চৌধুরী

ইলেক্ট্রিক্যাল এন্ড ইলেক্ট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ার

আবীর চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

"সংবাদপত্র ভয়ংকর, সাবধানে না পড়লে বিপদ"- লিখেছেন জাহিদ রাজন

০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৫৬

দুইটা নিউজে দেখে মজা পেলাম।

প্রথমটা হল- তিন দিন আগে প্রথম আলো পত্রিকার অনলাইন ভার্সনে একটা নিউজ - এক খ্রিস্টান দম্পতি ডাকাতির শিকার হয়েছেন।
নিউজটা এমনিতে খুবই সাধারণ প্রকৃতির ,আনটিল ইয়ু পে এটেনশন।

বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার কত ভাগ খ্রিস্টান ? আমার ধারণা সেটা ০.০৫% এর কম (কারেক্ট মি ইফ আই এন্ড রং)। মোট ডাকাতির শিকার হওয়া লোকেদের কত ভাগ খ্রিস্টান ? সাধারণ হিসেবে মোট ডাকাতির শিকার হওয়া খ্রিস্টান ভিক্টিম এর পারসেন্টেজ ০.০৫% এর আশেপাশেই হওয়ার কথা।
আমি টাইটেল দেখে সে নিউজটা বিস্তারিত পড়লাম। বিস্তারিত অংশে লেখা হয়েছে- তারা কোন ধর্মীয় প্রতিহিংসা নয়, জাস্ট রেণ্ডমলি একটা ডাকাতির শিকার হয়েছেন, অর্থাৎ এটি সে ০.০৫% ঘটনারই অংশ।

তাহলে এখানে তাদের ধর্মীয় পরিচয়টা মুখ্য হল কেন ?
কোন মুসলিম দম্পতি যখন ঠিক এরকম কোন একটা রেন্ডম ডাকাতির শিকার হন, সেখানে- " এবার ডাকাতির শিকার হলেন এক মুসলিম দম্পতি ?" এরকমটা দেখা যায় না কেন ?
এ ধরনের সংবাদের মুল সমস্যা হল- এগুলো আপনাকে একটা ইম্প্রেশন দেয় যে, সম্ভবত খ্রিস্টান দেখেই এমনটা ঘটেছে (আমি বলছি না যে মাইনরিটি এরকম হামলার শিকার হয় না), কিন্তু যেখানে এটা একটা রেণ্ডম ঘটনা মাত্র এবং সে সময়ে সে স্থানে উপস্থিত যে কারো ক্ষেত্রেই এটা হতে পারত, সেখানে ধর্মীয় পরিচয়ে ডাকাতির খবর উল্লেখ করে এক্ষেত্রে অস্তিত্বহীন ধর্মীয় ডাকাত তৈরির মানে কি ?
ডাকাত কি ডাকাতি করার আগে জিজ্ঞেস করেছে- " ঐ মিয়া তোমার ধর্ম কি ? এবার যা আছে সব বাইর কর কারণ তুমি খ্রিস্টান ?" ব্যাপারটা কি আমাদের সংখ্যা লঘুদেরকে মানসিকভাবে আরও বেশী নিরাপত্তাহীনতায় ভোগায় না ?
যেখানে সিঁদুর নেই সেখানে সিঁদুর দিয়ে, হেফাজতের লাশের বদলে কাটা গাছের জন্য আহাজারি করে, মাদ্রাসার ছেলে করলে তাণ্ডব আর ছাত্রলীগ করলে ভাংচুর উল্লেখ করে প্রথম আলো আমাদের সাথে এই খেলা নিয়মিত খেলে। এটা জাস্ট কন্টিনিউয়েশন অফ দ্য গেম।
-------------

দ্বিতীয়টা হল-
বাংলাদেশের সেনাসদস্যদের কেউ একজনের বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ এসেছে। এটা নিয়ে মানুষজন খুব আপসেট। নিউজটা এখনো অভিযোগ পর্যন্ত সীমাবদ্ধ, প্রমাণ হওয়া বাকি। অভিযোগ এবং প্রমাণ এক জিনিস না, এটা খুব সহজ হিসেব।

এখন যদি ধরেও নেই এটা সত্য, এরপরের পার্টটা হল- বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কত হাজার সদস্য এ পর্যন্ত বাইরে গিয়েছেন ? এর মধ্যে কতজনের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ আছে ? এরকম অভিযোগ এসেছে এর বেস রেট কত ? আমার ধারণা এটা দশমিকের পরে এক বা একাধিক ঘর শূন্য এবং এরপরের একটা সংখ্যা হবে।
আমি নিশ্চিত জাতিসংঘ মিশনে যৌন হয়রানি সংক্রান্ত বা অন্য প্রায় সব ব্যাপারে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ট্র্যাক রেকর্ড খুবই ভাল। যে ক্রাইম এর বেস রেট এত কম এটা একটা নিছক দুর্ঘটনা।

এর চেয়েও মজার ব্যাপার হল- এটা নিয়ে সেনাবাহিনীই সবার চেয়ে বেশী চিন্তিত হবার কথা। আফটার অল- ইউ এন মিশন ব্রিংস দেম মানি (এন্ড অনার)।
বাংলাদেশের পাবলিক গেদারিংয়ে (যেমন- একুশে বই মেলা) কি পরিমাণ যৌন নির্যাতন হয় এবং (ভিডিও থাকা সত্ত্বেও ) যে পরিমাণ আনপানিশড যায়, জাতিসংঘ এটা জানে, কারণ মানবাধিকার সংস্থার রিপোর্ট তাদের কাছে যায়। এসবের তুলনায় সেনাবাহিনী দুধে ধোয়া তুলসি পাতা। ফলে এরকম একটা ঘটনার কারণে- "মান ইজ্জত সব গেল " এমনটা হয় নি। মান ইজ্জত সব যাওয়ার মত এত সেন্সেটিভ মান ইজ্জত আমাদের সিমপ্লি নাই !
হ্যাঁ, যদি কোন সেনাসদস্য এটা করে থাকে তাহলে- তার অবশ্যই শাস্তি হওয়া উচিত।
সেনাবাহিনীর পেশাগত অবস্থান সম্ভবত এই আনপ্রপোরশনেট মনযোগের কারণ।

মন্তব্য ৯ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৯) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:০৮

রেজওয়ান26 বলেছেন: প্রথম খবরটি পড়ে মনে হচ্ছে প্রথম আলোর কুমতলব আছে। অবশ্যই সবাইকে সাবধান হওয়া উচিত। ধন্যবাদ লেখককে সুন্দর বিষয় তুলে ধরার জন্য।

০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৩১

আবীর চৌধুরী বলেছেন: All credit goes to my Facebook Friend from The Netherlands named Jahid Razan.

২| ০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:০৮

ঢাকাবাসী বলেছেন: আপনি জিনিসগুলোকে বেশ সহজভাবে নিয়েছেন। আমার থিউরীও তাই, লাইফটাকে সহজভাবে নিন। দুপুরে করলা ভাজি আর কাচকি মাছ আর মসুর ডাল দিয়ে ভাত খেতেই হবে? দুটো সিঙ্গারা খেলে হয় না? হয়। এদেশের সবাই যদি তা পারত তাহলে অনেক সমস্যার উদ্ভবই হতোনা। ধন্যবাদ।

০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৩২

আবীর চৌধুরী বলেছেন: All credit goes to my Facebook Friend from The Netherlands named Jahid Razan.

৩| ০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:১৪

পথে-ঘাটে বলেছেন: "দুধে ধোয়া তুলসি পাতা" বাক্যটা মানুষ নেগেটিভ হিসেবে বেশি ব্যবহার করে আমার মনে হয়।



যাহোক ভাল পোস্টের জন্য ভাললাগা জানবেন।

০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৩২

আবীর চৌধুরী বলেছেন: All credit goes to my Facebook Friend from The Netherlands named Jahid Razan.

৪| ০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৫৬

এম বি রশিদ বলেছেন: পারসেনটেন্স ।০৫ চোখে পড়ার মত। কথায় আছে যা না তারে থেকেও লাফ দেয় ।নেক জোরে

৫| ০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:৩২

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: নিরাপত্তা হীনতায় ভুগানোর কী আছে?
সংখ্যালঘুরা তো নিরাপত্তাহীনই!
আমার চোখের সামনে দেখেছি জামাতের লোক হিন্দু বাড়িতে আগুন দিচ্ছে, ভাঙচুর করছে- সেখানে তারা নিরাপত্তাহীন নয়তো কী?
খ্রিস্টান দম্পতী বপ্লায় এমন কোন মহাভারত অশুদ্ধ হয়নি। আর এতো কিছু ভেবেও এমন খবর প্রকাশ করা হয় না।
আসলে নয়াদিগন্ত গোষ্ঠী দোষের কিছু খুঁজে না পেয়ে এমন আলতু ফালতু ভুল ধরে।

০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১২:১৩

আবীর চৌধুরী বলেছেন: এত সহজভাবে বুঝিয়ে বলার পরেও কেউ যে এই অকাট্য যুক্তির বিরোধিতা করবে, তা ভাবতে পারিনি।
কিভাবে আর বলব, বুঝতে পারছি না।

দুটো জিনিস বলি।

১) গুগলে গিয়ে বাংলায় যেকোন একটি অপরাধের নাম লিখুন। ধরুন "ডাকাতি"। সার্চ সংখ্যা দেখুন। সার্চ রেজাল্টগুলিতে ভ্যারাইটি পাবেন। যেকোন কয়েকটি খবর পড়লে দেখবেন, অপরাধকে ভিন্নখাতে প্রবাহের চেষ্টা করা হয়নি।

এবার পর্যায়ক্রমে গুগল সার্চ ইঞ্জিনে "ডাকাতি" শব্দের পাশে "হিন্দু", "বৌদ্ধ", এবং "খ্রিস্টান" লিখে দেখুন। সার্চ সংখ্যা তুলনা করুন। আবার, অসংখ্য সার্চ রেজাল্টে একই ঘটনার কথা বলা হয়েছে; অর্থাৎ একই ঘটনা নিয়ে আকাশকুসুম রিপোর্ট করা হয়েছে। প্রত্যেক খবর যদি পড়তে পারেন, তবে দেখবেন, সেগুলিকে গতানুগতিক ক্রাইমের চাইতে ধর্মীয় বা সাম্প্রদায়িক এঙ্গেলে বিবেচনা করা হয়েছে।

দুই ক্ষেত্রে সার্চের শুরুতে ভারতীয় বাংলা সার্চ রেজাল্ট না পাওয়ার জন্যে সাথে "বাংলাদেশ" শব্দটাও লিখতে পারেন। তবে, পশ্চিমবঙ্গে আমাদের দেশের মত এরকম আজগুবি রিপোর্ট হয় না। ওদের ওখানে ক্রিমিনাল বা ভিকটিমকে প্রথমে মানুষ হিসেবে গণ্য করা হয়; কোন সম্প্রদায়ের অংশ বিবেচনা করে ঐ সম্প্রদায়কে ঐচ্ছিকভাবে কলংকিত করা হয় না!

২) Click This Link

২০১৪ সালে লেখা আমার এই লেখাটি পড়লে আমার বাকি বক্তব্য-ও বুঝতে পারবেন আশা করি।

শুভাশীষ!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.