নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পৃথিবী আমার আবাস। মানুষ আমার পরিচয়।

আবীর চৌধুরী

ইলেক্ট্রিক্যাল এন্ড ইলেক্ট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ার

আবীর চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

একজন মূসা বিন শমসের

১৯ শে নভেম্বর, ২০১৬ রাত ১:৫৭

নিচের লিঙ্কে দেওয়া ভিডিওটি দেখুন। ধনকুবের মূসা বিন শমসেরকে নিয়ে ডেনমার্কের একটি চ্যানেল এই রিপোর্ট তৈরি করেছে। ভিডিওটি দেখার পরে আমার লেখাটি পড়ুন।

https://www.youtube.com/watch?v=gXKUPDqf0nk

১) ড. মূসার ভাষ্যনুযায়ী- ২০০৮ সাল পর্যন্ত সে আনুমানিক ৩ কোটি মানুষকে দেশের বাইরে বিভিন্ন দেশে পাঠিয়েছে, যাদের বেশির ভাগই মধ্যপ্রাচ্যে। শ্রমিক হিসেবে বিদেশে যাওয়া এসব মানুষের বেশির ভাগই খুব স্বল্প সময় বিদেশে চাকুরী করে দেশে ফেরত এসেছে; কিন্তু সাথে অতিরিক্ত কোন আয় নিয়ে আসতে পারেনি তাদের বেশির ভাগই; বরং বিদেশে যাওয়ার জন্য তাদের অনেকেই হারিয়েছে সহায়-সম্বল।
সুইস ব্যাংকের একটি "ফ্রোজেন" একাউন্টে প্রিন্স মূসার ৭ লক্ষ কোটি টাকা আছে। শুধু এই পরিমাণ মোট অর্থকে তার কোম্পানি কতৃক পাঠানো মোট শ্রমিক সংখ্যা দিয়ে ভাগ করলে, প্রতিজনের ভাগে পরে প্রায় আড়াই লাখের মত। অর্থাৎ, ৩ কোটি শ্রমিক বিদেশে পাঠাতে তিনি গড়ে ২ লক্ষ ৩৩ হাজার ৩ শত ৩৩ টাকা নিয়েছেন। আমাদের বাস্তব অভিজ্ঞতা বলে- শ্রমিকেরা বিদেশে যেতে এর চেয়ে আরো বেশি পরিমাণ অর্থ খরচ করে থাকে।

২) মূসার কোম্পানি ড্যাটকো পানামায় রেজিস্টার্ড করা, কারণ সেখানে ট্যাক্স দিতে হয় না।
ভারতীয় স্ট্যান্ডআপ কমেডিয়ান এবং অভিনেতা কপিল শর্মা যেখানে বছরে ১৫ কোটি রূপি ইনকাম ট্যাক্স দিয়ে গর্ববোধ করে, সেখানে আমাদের এই মাল্টিবিলিওনিয়ার কর দেওয়াকে নিজের ক্ষতি মনে করে।
সে বছরের পর বছর গরীব-মূর্খ মানুষগুলিকে বিদেশে গতর খাটতে পাঠানোর জন্য জনপ্রতি লক্ষ লক্ষ টাকা "নেওয়াকে" দেশের উপকার করা মনে করে, অথচ, বৈধ উপায়ে নিজের আয়ের কিছু অংশ "দেওয়াকে" সে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দেই।
তার কোম্পানি দ্বারা পাঠানো মানুষগুলি যখন কিছুদিন পরেই দেশে ফিরে এসে চাকরি পায় না, ব্যবসার পুঁজি পায় না, দৈন্যদশায় দিন কাটায়, তখন তাদেরকে দেখতে যাওয়াটা সে নিজের সময়ের অপচয় মনে করে, নিজের প্রাইভেসির জন্য হুমকিস্বরূপ ভাবে। এই রিপোর্টের রিপোর্টার তার সাথে মূসাকে এরকম একজন বিদেশফেরত শ্রমিককে দেখতে যাওয়ার অনুরোধ করলে সে যেতে অস্বীকার করে।
সে যদি প্রতি বছর তার আয়করের ১০%ও সঠিক পরিমাণে দিয়ে দিত, তবে ফেরত আসা এসব শ্রমিক স্বস্তিতে জীবনযাপন করতে পারতো।

৩) মূসার দৃষ্টিতে পৃথিবীর সব গরীব মানুষ "ইডিয়ট"!
সে তার এই অভিমতের তাৎপর্য ব্যাখা করতে গিয়ে যা বলল, তাতে তাকেই পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ইডিয়ট আখ্যায়িত করলে ভুল হবে না বোধ করি।

৪) রিপোর্টার জিজ্ঞেস করেছিল, "বাংলাদেশে যদি আপনার মত ভয়ংকর ধনী মানুষেরা থাকেন, তাহলে কেন আমরা (উন্নত দেশসমূহ) আপনার দেশকে অর্থ-সাহায্য দিব?"
সে উত্তর দেয়, "আমি স্বতন্ত্র; পুরো জাতির দায়ভার আমি নিতে পারি না। ... ..."

ধরে নিলাম, বর্তমানে দেশের জনসংখ্যা ১৮ কোটি। তার সুইস ব্যাংকের ঐ একাউন্টের টাকাই পুরো দেশের মানুষের মধ্যে ভাগ করে দিলে প্রত্যেকের ভাগে প্রায় ৪০ হাজার টাকার মত পরে। যদিও দেশের সব মানুষই অভাবগ্রস্ত নয়; সবাইকে সাহায্যের প্রয়োজন নেই।
তার "ঢাকা প্যালেসের" প্রতিটা কোণা থেকে শুরু করে তার ঘড়ি-বেল্ট-জুতায় হীরা আর স্বর্ণের ছড়াছড়ি। ডিনার-লাঞ্চে প্রতিদিন ২৫ এর নিচে পদ থাকেনা। ঘর যেন তার দামী পোশাক আর আসবাবপত্রের গুদাম। গাড়ি-বাড়ির হিসাব দিয়ে আপনাদের হার্ট এটাক ধরালাম না।

তাহলে, ৭ লক্ষ কোটি টাকা কেন "ফ্রোজেন" হয়ে সুদূর সুইজারল্যান্ডে পরে থাকবে?
দেশের এবং জাতির জন্য এই টাকা বিনিয়োগ করা হচ্ছে না কেন? টাটা, আম্বানি, হিন্দুজা, মিত্তাল, গোদ্রেজ, মিস্ত্রি, প্রেমজি পরিবারেরা যদি ভারতের ১২৫ কোটি মানুষের হাল ধরতে পারে, তাহলে একজন "মূসা বিন শমসের" কেন পারবে না? বিয়ের পর থেকে নিজের হাতে খাবার না খেয়ে বৌয়ের হাতে খাওয়ার মধ্যেই কি তার Legacy নিহিত?!

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে নভেম্বর, ২০১৬ রাত ২:২০

ভ্রমরের ডানা বলেছেন:

সুস্থকর ও সৃজনশীল পোষ্ট আমার মতে সবার পছন্দ! তবে এমন লেখায় কি আর বলব, মন যার কলম তার!

২১ শে নভেম্বর, ২০১৬ দুপুর ২:১১

আবীর চৌধুরী বলেছেন: খুবই ডিপ্লোম্যাটিক মন্তব্য।
লেখাটি আবার পড়ুন।
লেখাটি পড়ার আগে ভিডিও ভালো করে দেখে নিন।
ভিডিও বুঝতে সমস্যা হলে ইংরেজী শিখে নিন; কিংবা ইংরেজী বুঝে এরকম কারো সাহায্য নিন।
মূসা সম্পর্কিত দেশ-বিদেশের তদন্ত প্রতিবেদনগুলি পড়ে নিজেকে আলোকিত করুন।

শুভ কামনা।

২| ১৯ শে নভেম্বর, ২০১৬ ভোর ৪:৪৩

কবি এবং হিমু বলেছেন: তার টাকার হিসেবে তিনি বিশ্বের কতোতম ধনীর তালিকায় আসবেন,জানালে খুশি হতাম।গরীব মানুষ তাই ধনীদের নিয়ে এতো বেশি পড়ালেখা করা হয় না।

৩| ১৯ শে নভেম্বর, ২০১৬ সকাল ৮:০৫

রিফাত হোসেন বলেছেন: নুলা মুসা কিংবা প্রিন্স মুসাঃ যে রাজাকারের সম্পদ আর ক্ষমতার কথা শুনে আপনি চমকে যাবে..। ব্যাপারটা নিয়ে কম জল ঘোলা হয় নি । জানার জন্য শেয়ার করলাম ।
http://www.somewhereinblog.net/blog/dshaha/29134828

http://www.ali-mahmed.com/2014/12/blog-post_19.html

তবে তার ইডিয়ট বলার কারনটা সঠিক .... যারা কিছু করতে পারে না তারাই হাত পাতে .... একমত ।

তবে দূর্ভাগ্যদের ব্যতিরেখে. যারা দূর্ঘটনায় পরে । অলসদের প্রতি অবশ্যয়ই ই্ডিয়ট বলা যাবে, যাদের কোন স্বপ্ন নাই , ইচ্ছা নাই ।

তবে নিজে সুখি থাকলেই চলে ।

২১ শে নভেম্বর, ২০১৬ দুপুর ২:০৯

আবীর চৌধুরী বলেছেন: ভিডিওটা মনোযোগ দিয়ে দেখুন। কেন ইডিয়ট বলেছে সেটা বুঝতে না পারলে, আপনাকেও ইডিয়ট বলতে বাধ্য হব। মূসার যুক্তিই তাকেই ইডিয়ট সম্রাট বানিয়েছে।
আপনার মত সুন্দর যুক্তি সে দেখায়নি বলেই আমি এরকম লিখেছি।

৪| ২১ শে নভেম্বর, ২০১৬ দুপুর ২:৪৩

ভ্রমরের ডানা বলেছেন:


এগুলা আমি পড়ে কি কিছু করতে পারব না। আপনি কিছু পারলে দেশ উপকৃত হবে আশা রাখি! যেহেতু আপনি অনেক কিছুই বোঝেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.