![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এই যে পুরো রমজানে ঈদের আগে সারা দেশে লক্ষ লক্ষ ভিক্ষুকের সদর্প পদচারণ বেড়ে যায়, তার সাথে যোগ দিয়েছে শপিং মল আর সুপার শপের সামনে দাঁড়ানো সচ্ছল যুবক-যুবতীদের তহবিল সংগ্রহ নামক ছুপা-ভিক্ষাবৃত্তি, অনলাইনে ইভেন্ট খুলেও চলে আসছে এসব। ভিক্ষুক সিন্ডিকেটগুলির হর্তাকর্তাদের সাথে কর্পোরেট এক্সটর্শনিস্টদের কোন নীতিগত পার্থক্য নেই।
এসব ঈদ ত্রাণ-তহবিল এর ৯০% ক্ষেত্রে প্রকৃত খাতে খরচ হয় না। আর, হয়ে থাকলেও এসব মৌসুমী, লোকদেখানো সাহায্য হতদরিদ্র জনগোষ্ঠীর জীবনযাত্রার স্থায়ী মানোন্নয়নে কোন কাজেই আসে না।
যে দেশে শহরের বেশির ভাগ মানুষ ব্যয়ের সাথে আয়ের তাল মিলিয়ে চলতে পারে না, সঞ্চয় কমে যায়, দুর্নীতি করে, অন্যের উপর জুলুমবাজী-ঠগবাজী করে, উৎপাদন-বিনিয়োগ ব্যাহত হয়, সামাজিক আর অর্থনৈতিক দৈন্যদশার কারণে সুস্থ-সুন্দর জীবনযাপন করা অস্বাভাবিক হয়ে পরে, সে দেশে মধ্যবিত্তের ঘাড় ভেঙ্গে কিভাবে এসব ভিক্ষাবৃত্তি টিকে থাকে, ভাবতে অবাক লাগে।
আশ্চর্যজনকভাবে, উচ্চবিত্ত এবং নিম্নবিত্তরা মধ্যবিত্তদের তোয়াক্কাই করে না, এবং মধ্যবিত্তের ঘাড়েই কাঁঠাল ভেঙ্গে খায় ওই দুই শ্রেণী। উচ্চ এবং নিম্নবিত্তদের কেউই প্রকৃতপক্ষে নিজেদের জীবন মান পরিবর্তনে বিন্দুমাত্র আগ্রহী নয়। এদের এক শ্রেণী আজীবন বাংলাদেশকে সেকেন্ড হোম মনে করে আসছে, অন্য শ্রেণী বস্তির কীটপতঙ্গের মত বেঁচে থাকাকে ত্যাগ করতে পারছে না।
সামাজিক এবং অর্থনৈতিক সাম্যাবস্থা ফিরিয়ে আনতে চাইলে এই দেশে সামগ্রিক বিকেন্দ্রীকরণের কোন বিকল্প নেই। শিক্ষা, চিকিৎসা, কর্মসংস্থান, প্রয়োজনীয় ক্রয়বিক্রয়, এবং বসবাসের জন্য কেন একজন মানুষকে জন্মস্থল ছেড়ে জীবনে লক্ষ লক্ষ বার ভ্রমণ করতে হবে? শহরগুলির উপর চাপ কমাতে পারলে, আবাসিক-বাণিজ্যিক-শিল্পখাতভিত্তিক এলাকাগুলি পৃথক করতে পারলে, গ্রামগুলিকে "গ্রাম" রেখে কৃষিভিত্তিক অর্থনীতি চাঙ্গা করতে পারলে, কর্মসংস্থানের চাহিদার প্রতি লক্ষ্য রেখে শিক্ষাব্যবস্থা পুনর্বিন্যাস করতে পারলে, এবং সর্বোপরি দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার বন্ধ করে সচিবালয় থেকে শুরু করে গণশৌচালয় পর্যন্ত নিয়ম-কানুনের সুপ্রতিষ্ঠা করতে পারলে প্রতিবছর ঈদের আগে কিংবা অন্য যেকোন সময় দেখা যাওয়া এসব ভিক্ষুক এবং চাঁদাসংগ্রাহকদের কোন অস্তিত্ব থাকবে না!
©somewhere in net ltd.