নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পৃথিবী আমার আবাস। মানুষ আমার পরিচয়।

আবীর চৌধুরী

ইলেক্ট্রিক্যাল এন্ড ইলেক্ট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ার

আবীর চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

কোটাসংস্কার আন্দোলন ২০১৮ ভাবনা:-১

১১ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১০:৩৮

আমি আমার পরিচিত ভুরি ভুরি মুক্তিযোদ্ধা পিতার সন্তানদের উদাহরণ দিতে পারব, যারা নিজেদের সর্বক্ষণ "মুক্তিযোদ্ধার সন্তান" বলে জাহির করেন না; "মুক্তিযোদ্ধা কোটা" ব্যবহার করেননি বা প্রয়োজনই হয়নি; মুক্তিযুদ্ধের পরে যাদের অর্থনৈতিক বা সামাজিক অবস্থার অকস্মাৎ উন্নতি হয়নি (সৌভাগ্যবশত এমন অবনতিও এদের কারো হয়নি, যাতে পত্রিকা/টিভির খবরের শিরোনাম হতে হয়); এমন ২ জনের উদাহরণ দিতে পারব (দুজনই সনাতন ধর্মাবলম্বী) যাদের বাবারা এলাকাতে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃত ও নন্দিত, কিন্তু তাদের কোনই মুক্তিযোদ্ধা সার্টিফিকেট নেই!! (অথচ, প্রতি টার্মে টার্মে দেশে মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা বাড়ছে, সুবিধা বাড়ছে, বয়স কমতে কমতে কয়দিন পর নেগেটিভে যাবে)।

সাম্প্রতিক কোটাবিরোধী আন্দোলন নিয়ে দেশে উথাল-পাতাল চলছে। কয়দিন পরে সব দমে যাবে। এরকমই হয়ে এসেছে বিগত ৯ বছরে। অথচ, আজ যদি আওয়ামী লীগ রাজপথে থাকত, তবে নিমিষেই "লুটপাটের সরকার" এর পতন হয়ে যেত। এখানেই আওয়ামী লীগের কারিশমা। আগুনের ফুলকি থেকে দাবানল বানাতে পারে। বিএনপি, জাতীয় পার্টি বা বামদলগুলি এদিক থেকে অনেক পিছিয়ে। সেই পিছিয়ে থাকাতেও অবশ্য ক্ষমতাসীনদের কৃতিত্ব। কার পিঠের মাজা কখন, কিভাবে, কোথায় ভাংতে হয়, সেটা ক্ষমতাসীনদের পর্দার পিছনের কলকাঠিনাড়কদের চেয়ে ভালো আর কেউ জানে না!

এই সরকারের সব ভালোর মধ্যে একটা ব্যাপারই খারাপ; বুঝতে একটু ভুল করে। লক্ষ কোটি টাকা লোপাট, ব্যাংক খাত ধ্বংস, শেয়ার বাজার ধ্বংস, পরিবহন/নির্মাণ/বিদ্যুৎ/জ্বালানি খাতে ভেজাল আর জোচ্চুরি, অসংখ্য ব্যবসায়ী/পেশাজীবি/কর্মচারী/শ্রমিক সিন্ডিকেটকে অন্যায়ভাবে প্রশ্রয় দিয়ে ভোটব্যাংক হাতে রাখা, বর্ধিত অপরাধের হার, জংগি-জুজু-ড্রামা, রাষ্ট্রীয় ও প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতি যখন নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপারে পরিণত হয়েছে, তখনো কোনভাবেই "সাধারণ ছাত্র/যুবসমাজ" উত্তেজিত হয়নি। ক্ষমতা আর টাকা হলেই এ দেশে ব্যাংক/টিভি চ্যানেল/প্রাইভেট ভার্সিটি খোলার একটা হুজুগ আছে। (একটু আগেই পড়লাম, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলির উপরে আবারও করারোপ করতে যাচ্ছে সরকার। উচ্চহারে বেতন গ্রহণের প্রথাকে নিয়ন্ত্রণে না এনে, উপর্যুপরি প্রাইভেট ভার্সিটিকে লাইসেন্স দিয়ে, লাখ লাখ বেকার/হতাশাগ্রস্থ গ্রেজুয়েট বানিয়ে সরকার কি দেশে গণবিস্ফোরণ ঘটানোর চেষ্টা করছে?!) বিভিন্ন সেক্টরকে কৌশলে বশে আনার সময়েও চুপ ছিল সাধারণ তরুণসমাজ। আজ যখন দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়ার পরে তারা মাঠে নেমেছে, তখন তাদেরকে "রাজাকারের বাচ্চা" বলে গালি যে দেয়, তাকে "শুয়োরের বাচ্চা" বলা কি ভুল হবে? একের পর এক জামাতী নেতাকে ফাঁসি দেওয়া হল, জামাত রাস্তায় নামতে পেরেছিল? বিএনপিকে বছরের পর বছর হিজড়া বানিয়ে রাখা হল, কবরে ১ পা দেওয়া নেত্রীকে "স্বাধীন বিচার বিভাগের (!!)" উছিলা দিয়ে জেলে পুরে রাখা হল, একটা গলার আওয়াজও কেউ করল না! কিভাবে মেনে নিলেন, এই হাজার হাজার ছাত্র-যুবকেরা আওয়ামীবিরোধী/সরকারবিরোধী?

পুলিশ-ল এনফোর্সারদের উদ্দেশ্যে বলি, জানি আপনাদের সিংহভাগ খারাপ না, চেইন অব কমাণ্ডে বন্দী। আমারও বন্ধুরা, স্বজনেরা পুলিশে আছে। উপরের অর্ডার জীবনে একবারের জন্যে হলেও কমোডে ফ্লাশ করে আসুন। আপনার ভাইবোন বা সন্তানেরাও এই দেশেই থাকবে তো? আন্দোলনরতদের সাথে মিশে যান, একাগ্রতা প্রকাশ করুন, আক্রমণাত্মক আচরণ থেকে বিরত রাখুন। বহিরাগত, infiltrator দের বাধা দিন; ওরা আন্দোলন নস্যাৎ করতে সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছে অবিরাম। আর, যেসব পুলিশ শিক্ষার্থীদের জমায়েতের সামনে মাইক দিয়ে "খেয়ে দিব!" টাইপের কথা বলছে, তাদের নিজ ঘরে গিয়ে খোঁজ নিতে বলুন, ঘরের লক্ষী খাচ্ছে কে?!

আন্দোলনকারীদের বলছি, হুদাই রক্ত-ঘাম ঝড়িয়ে কি লাভ! সেই ২০০৮ থেকে সাফল্যের সাথে ছোটবড় প্রত্যেক ইস্যু নিয়ে জাতিকে নাচিয়েকুদিয়ে বিমোহিত বা পথভ্রষ্ট করে নিজেদের পথ পরিস্কার করে এসেছে bal. "মুক্তিযোদ্ধা সম্মাননা"-ও এর ব্যতিক্রম না, "নারীবান্ধব মুখোশ"-ও এর ব্যতিক্রম না। বহুদলীয় গণতন্ত্রকে যেমন একনায়কতন্ত্রে রূপ নিতে বাধ্য করেছে, তেমনি তরুণ-নবীন-উচ্চাভিলাষী ছাত্রদের বৃহৎ অংশকে জ্ঞান ও নীতিবিবর্জিত "সাদা পোশাকের" গুণ্ডাবাহিনীতে পরিণত করেছে। দক্ষিণ ভারতের সিনেমার প্লটকেও হার মানায়। এখন শুধু ক্লাইম্যাক্সের অপেক্ষা।

ক্লাইম্যাক্সে ডেসপারেট পেশাজীবি ও তরুণেরা নিজেরাই স্বয়ংসম্পূর্ণ সিন্ডিকেট বানিয়ে সব পরিস্কার করবে। কিংবা ডুবন্ত নৌকা ছেড়ে সাঁতরে কোন জাহাজে আশ্রয় নিবে। যারাই "উন্নয়নের ফেভিকল" এর প্রশংসা শুনে হাততালি দিয়ে উঠবে, জেনে রাখুন, তারা তাদের পায়ুপথেও সেই ফেভিকল লাগায়, ফলস্বরূপ মুখ দিয়ে অনর্গল বের হয় পদলেহনের মল। যারাই "বিদেশে কি আছে? দেশ তো আজ মঢেল!" বলবে, তাদেরকে "আংগুর ফল টক" বলার আগে ভেবে দেখুন, কয়েক দিন পরে তারা যখন "আংগুল ফুলে কলাগাছ" হবে, তখন তাদের দেখে আবার আফসোস করবেন না তো?

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই এপ্রিল, ২০১৮ সকাল ৯:০৫

তার ছিড়া আমি বলেছেন: সত্য বলেছেন, তবে সত্যটা একটু সাবধানে বলবেন। সরকারে কিন্তু bal আছে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.