নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পৃথিবী আমার আবাস। মানুষ আমার পরিচয়।

আবীর চৌধুরী

ইলেক্ট্রিক্যাল এন্ড ইলেক্ট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ার

আবীর চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

চকবাজার অগ্নিকাণ্ডের নেপথ্যে

২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ সকাল ১০:২৫

Carelessness এ যদি বিশ্বের দেশগুলির তালিকা করা হয়, সেই তালিকাতেও শীর্ষে থাকবে আমাদের প্রাণপ্রিয় দেশটা।

কয়েক বছর আগে বিদ্যুৎ ও জ্বালানী মন্ত্রণালয়ের বাৎসরিক একটা প্রোগ্রামে গিয়েছিলাম ঢাকার বঙ্গবন্ধু সম্মেলন কেন্দ্রে। এক গাদা স্টিকার, ব্যানার, লিফলেট, বুকলেট আর পোস্টার এনেছিলাম। সাধারণ ভোক্তা-গ্রাহকদের গ্যাসের ব্যবহার সম্পর্কে সচেতন করাই ছিল এগুলির মূল উদ্দেশ্য।

সিলিন্ডার পরিবহন ও সরবরাহকারী শ্রমিকদের দায়িত্বশীলতা!

গ্যাস উত্তোলন থেকে শুরু করে গ্যাস ব্যবহার পর্যন্ত নানারকম মানুষের সম্পৃক্ততা থাকে। সবাই হয়তো শিক্ষিত বা প্রথম থেকে এইসব ব্যাপারে জ্ঞাত হয় না। কিন্তু, আমি নিশ্চিত, গ্যাস সিলিন্ডার পাইকারী ও খুচরা পর্যায়ে বাজারজাতকরণ, পরিবহন ও বিক্রি-সরবরাহের ক্ষেত্রে যারা জড়িত থাকেন, তাদেরকে কেউ কোন দিন থাপ্পড়-লাত্থি দিয়ে কিছু শিখায় নাই। থাপ্পড়-লাত্থির ব্যাপারটা বললাম, কারণ এই বিশেষ পেশাজীবি শ্রেণীর মানুষগুলি হচ্ছে "লাত্থির কাঁঠাল"। লাথির কাঁঠাল, লাথি না দিলে পাকে না।

চকবাজারের মর্মান্তক ঘটনা ঘটার পর থেকে নানান উদ্দেশ্যভোগী মানুষ, নানান ইস্যু নিয়ে মেতে আছেন।

গাড়িতে গ্যাস ব্যবহার নিষিদ্ধ করার কথা উঠছে। গ্যাস সিলিন্ডার বন্ধের কথা উঠছে। আবাসিক ও বাণিজ্যিক খাতে গ্যাসের ব্যবহার-ও প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে; যা খুবই বিস্ময়কর, বিরক্তিকর এবং অপ্রাসঙ্গিক।

প্রাকৃতিক গ্যাসে সমৃদ্ধ এই দেশে পরিবহন, ব্যবসা-বাণিজ্য, রান্নাবান্না এবং শিল্পখাতে তরল জ্বালানীর চেয়ে গ্যাসীয় জ্বালানীর ব্যবহার বেশি হবে, এটাই স্বাভাবিক। অথচ, উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে দেওয়ার জন্য উদগ্রীব সবাই।

গ্যাস সিলিন্ডার পরিবহন ও সরবরাহকারী মাদারটোস্ট শ্রমিকগুলির দোষটা হচ্ছে মুখ্য। এরপর বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমারে উর্ধ্বমুখী সিলিন্ডার সংঘর্ষ হয়ে আগুনের ভয়াবহতা শুরু হয়। তাহলে কি দেশে বিদ্যুৎ সঞ্চালন ও বিতরণ বন্ধ করে দিয়ে মোমবাতি-হারিকেনে বাধ্য করবেন? সেখানেই তো আগুনের ভয় আছে, দুর্ঘটনার সম্ভাবনা আছে।

অগ্নিকাণ্ড চরম মাত্রায় পৌঁছায় শুধুমাত্র পর্যাপ্ত দাহ্য পদার্থের সংস্পর্শে। আমরা পারফিউম, বডিস্প্রে, এয়ারফ্রেশনার, মশার স্প্রে, এগুলি ব্যবহারের সময় ক্যানের গায়ে লেখা দেখি- Highly Flammable, অর্থাৎ ভয়ানকরকম দাহ্য।

আর, পুরানঢাকার খাঙ্কির পুত বাড়িওয়ালা আর ব্যবসায়ীদের ভাষ্যমতে, এটাই পুরান ঢাকার ঐতিহ্য; মানুষ, কেমিক্যাল আর খাবারের সহাবস্থান। সময় টিভির এক সাক্ষাৎকারে বিস্তারিতভাবে খুলে বলেছে ওয়াহিদ ম্যানশনে বসবাসকারী প্রত্যক্ষদর্শী এক যুবক।

প্রত্যক্ষদর্শী যুবকের অভিজ্ঞতা বিবরণ

তারপরেও, মন্ত্রী থেকে শুরু করে কেমিক্যাল ব্যবসায়ী সবার মুখে মুখে অস্বীকৃতি, নির্বিকারত্ব। আমি সবসময়ই বলে এসেছি, আমাদের দেশের মূল সমস্যা জনসংখ্যা, রাজনীতি, প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা দুর্নীতি না। আমাদের দেশের মূল সমস্যা আমাদের দেশের মানুষের চরিত্র ও অভ্যাস। নিজের সাম্প্রদায়িক বা পেশাগত বা গোষ্ঠীগত স্বার্থের জন্য এই দেশের মানুষগুলি মুহুর্তেই রঙ পালটে ফেলতে পারে, মত পালটে ফেলতে পারে। সিন্ডিকেটের অংশ হয়ে বিরোধিতা করতে পারে কোন মহৎ-বৃহৎ উদ্দেশ্যকে।

বাংলাদেশের পাবলিক কি সবসময় এরকমই আহাম্মক আর গোঁয়ার থেকে যাবে?

পাদটীকাঃ
“মেয়াদোত্তীর্ণ গ্যাস সিলিন্ডারের প্রতিটি গাড়িই একটি বোমা!” -ইত্তেফাক
“মেয়াদোত্তীর্ণ সিলিন্ডারে চলছে সিএনজিচালিত ৮৬% গাড়ি” -বণিক বার্তা

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ দুপুর ১:১৭

রাজীব নুর বলেছেন: চরিত্র ও অভ্যাস ঠিক করার জন্য আইন থাকতে হবে এবং আইনের প্রয়োগ থাকতে হবে।

২| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ বিকাল ৩:৪৮

মাহমুদুর রহমান বলেছেন: প্রথম মন্তব্যের সাথে সহমত।

৩| ০১ লা মার্চ, ২০১৯ বিকাল ৫:৪৭

বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: আপনার লেখাটি যৌক্তিক। কিন্তু পুরাতন ঢাকার বাড়ীওয়ালাদের যে গালিটি দিলেন তা পছন্দ হল না। ঢালাওভাবে কোন বিশেষ জনগোষ্ঠীকে আপনি এভাবে বলতে পারেন না। সারা ঢাকা শহরের প্রতিটি আবাসিক এলাকা প্রতিনিয়ত কমার্শিয়াল এরিয়ায় পরিণত হচ্ছে। এর জন্য দায়ী নীতি নির্ধারকরা। বিগত ৪০০ বছরের পুরাতন বাজার এলাকা চকবাজার। আর বাজার এলাকার হাজারো দোকান পাইকারি ব্যবসা এবং আমদানি'র সাথে জড়িত। যতক্ষণ পর্যন্ত এই ব্যবসাকেন্দ্রিক চাপ না কমানো যাবে, গুদাম-কারখানা'র সংখ্যাও কমানো সম্ভব না।

আশা করি বাস্তব সমস্যাটি সরকার এবং পুরাতন ঢাকাবাসী সবাই গুরুত্বসহকারে আমলে নিবেন এবং করণীয় যা যা রয়েছে তা বাস্তভিক প্রয়োগে শতভাগ সচেষ্ট হবেন। দিনশেষে ভুক্তভোগী কিন্তু আপনার বকা খা**** পোলারাই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.