নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পৃথিবী আমার আবাস। মানুষ আমার পরিচয়।

আবীর চৌধুরী

ইলেক্ট্রিক্যাল এন্ড ইলেক্ট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ার

আবীর চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

দেশভরা প্রিয়াসাহা

২১ শে জুলাই, ২০১৯ রাত ১২:২৬

প্রিয়া সাহা কি বললো, না বললো, সেটা বড় কথা না। দেশের হিন্দু, খ্রিস্টান, বৌদ্ধদের মধ্যে কেউই এর বিরুদ্ধে কেন প্রতিবাদ করলো না; সেটাই সবচেয়ে বড় প্রশ্ন।

বিক্ষিপ্তভাবে কেউ হয়তো করছে; নরম সুরে। কিন্তু, অধিকাংশই চুপ আছে, তামাশা দেখছে। এদের মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠই প্রিয়াসাহার সাথে নিমরাজি।

প্রিয়াসাহার বক্তব্য সংশ্লিষ্ট পোস্টে হাজারে হাজারে লাভ ও স্যাড রিয়েকশন এরই প্রমাণ দেয়।

খুবই দুঃখজনক ব্যাপার, অনেকে প্রিয়াসাহার ঘটনার সাথে এসকে সিনহা, ডঃ ইউনুস, এবং খালেদা জিয়ার তুলনা করছে। তাদের এসব ব্যক্তির ব্যাপারে, দেশের ও আন্তর্জাতিক রাজনীতির ব্যাপারে, সাম্প্রদায়িক প্রেক্ষাপটের ব্যাপারে কি যে জঘন্য ধারণা আছে, তা ভাবতেই ঘৃণা লাগে, লজ্জা লাগে।

লিখতে না চাইলেও বাধ্য হয়ে এই বিষয়ে লিখতে হলো। মনের দুঃখ থেকে। এরকম ঘটনার মধ্যেও "কিন্তু", "অথচ", ইত্যাদি উছিলা খুঁজে পায় কিছু সুযোগসন্ধানী। তারাই সহিংসতা ও বিদ্বেষের ইন্ধনদাতা, উস্কানিদাতা।

যে দেশে এরকম বাসিন্দা/নাগরিক থাকে, সে দেশ নিয়ে কোন আশা দেখি না

পুনশ্চঃ আম্রিকা যাইতে প্রিয়াসাহারা ভিসা পায়, অথচ নাসার প্রতিযোগীতায় অংশগ্রহণকারী প্রতিযোগীরা ভিসা পায় না।

পুনশ্চ পুনশ্চঃ

আগেও অনেকবার বলেছি, আবারো বলছি, এদেশে "সংখ্যালঘু" নির্যাতন হয় না।
যাদের কোন ক্ষমতা নেই, টাকা ও গায়ের জোর নেই, প্রভাবশালী কর্তা নেই, তারাই নির্যাতিত হয়।

খোদ প্রিয়াসাহাই বলেছেন, আওয়ামীলীগাররাই সবচেয়ে বেশি নির্যাতন করছে/করেছে। পরিসংখ্যানও তাই বলে।
তাই বলে, ব্যাপারটা দলীয় ও সাম্প্রদায়িক হয়ে যায় না।

এই দেশের Demography বিবেচনা করলে, শতকরা বেশির ভাগ মানুষ "মুসলিম নামধারী" বা "মুসলিম পরিবারে জন্মানো"; এবং শতকরা বেশির ভাগ মানুষ "আওয়ামী লীগ সমর্থক" (অন্তত বর্তমান সময়ে)।
উপরের তিনটা ফ্রেইজ ইনভার্টেড কমার মধ্যে রাখার অর্থ হল, এর মানে এই না যে, তারাই মুসলিম বা আওয়ামীলীগের আদর্শ ধারণ করে, পরিচয় বহন করে।
যত রকম নির্যাতন বা জুলুমবাজি হয়, সেগুলির বেশির ভাগ কালপ্রিটই ঐ দুই ক্যাটাগরিতে পরে যাওয়াকে কেউ যদি Deliberate মনে করে, তবে হয়তো সে গণ্ডমূর্খ, কিংবা তার কোন খারাপ উদ্দেশ্য আছে।

৩৩ বছর ধরে এত এত অমুসলিম বন্ধু ও পরিচিতজনের সাথে পরিচয়। কই, কোথাও তো কারো উপর "অমুসলিম" হওয়ার কারণে শোষিত বা অত্যাচারিত হতে দেখিনি। বরং অগ্রাধিকার পেতে দেখে রাগান্বিত হয়েছি সবসময়। নারীরা যেমন সমানাধিকারের দাবী তুলেও অগ্রাধিকার পেতে পিছ পা হয় না, তেমনি তথাকথিত সংখ্যালঘুরাও (এই দেশে)।

"মানুষ" হিসেবে পরিচিত হতে হলে, নারী-পুরুষ উভয়কে যেমন সমান Trial and Tribulations এর মধ্যে দিয়ে যাওয়া জরুরি, তেমনি দেশের নাগরিক/বাসিন্দা হিসেবে পরিচয় দিতে চাইলে, নির্যাতিত বা ভিক্টিমাইজড হলে "সংখ্যালঘু" পরিচয়টাকে হাইলাইট না করাও জরুরি।

আমি যদি আমার প্রবাসজীবনের ব্যস্ততা বাদ দিয়ে এখন এটা প্রমাণ করতে বসে যাই, তবে নিশ্চিত প্রমাণ করতে পারবো, মফস্বল বা গ্রামাঞ্চলে, অমুসলিম জনগোষ্ঠীদের যেই শতাংশ মানুষ বিভিন্ন রকম অপরাধের ভিক্টিম হয়েছে, তার কমপক্ষে কয়েক হাজার গুণ বেশি নির্যাতিত হয়েছে "মুসলিম নামধারী" দরিদ্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠী।

আমাদের দেশে, এরকম চক্রান্তরত বিশাল জনগোষ্ঠীর মানুষগুলি শুরু থেকে না থাকলে, দেশটার বর্তমান ও ভবিষ্যৎ অন্যরকম হতে পারতো।

চীন, ভারত ও ইসরাইলে মুসলিমদের সাথে যা হচ্ছে, তারপরেও দুনিয়া নির্বিকার। আমিও নির্বিকার। আমার কিচ্ছু যায় আসে না।
টাকা, অস্ত্র, অর্থের জোর না থাকলে, প্রভাবশালী ও শক্তিশালী মিত্র না থাকলে, এরকমই হবে। এটা বাস্তবতা।
সেইসবের তুলনায় বাংলাদেশে তো অমুসলিমেরা স্বর্গেই আছে।

প্রয়াত এক রাজনৈতিক নেতা, বিশ্ববিদ্যালয়ের মালিক, আমার মুখের উপ্রে বলেছিল, তুই অমুক ভার্সিটিতে পড়সিস, আমার ভার্সিটিতে পড়িস নাই, এই কারণে তোকে লেকচারারের চাকরি দিবো না। আমি ডান্ডিদেরই দিবো। ওরা অনেক "কৃতজ্ঞ"!
শুনে আমি পুরা থ।
অথচ, আমার ভার্সিটিও রাজনৈতিক বা অন্য কোন কারণে লেকচারারের এপ্লিকেশন এপ্রুভ করে নাই।
এইসব পুরান কথা।

আসল কথা হইল, অত্যাচারের শিকার হওয়া কপালে থাকলে ধর্ম, জাত, দল কিচ্ছু দেখে হয় না। যে শোষণ করে, সেটা তারই দায়। তার ধর্ম, দল, জাত, এসবের কোন দায় নাই।

এই যেমন মায়ানমারেও কিন্তু বৌদ্ধরা যে মুসলিমদের মারছে ও তাড়াচ্ছে, এরকম কিন্তু না। ওখানে মুসলিম ধর্মাবলম্বী রোহিঙ্গা গোষ্ঠী ছাড়াও আরো অনেক ছোট ছোট গোষ্ঠী অত্যাচারিত, বঞ্চিত ও শোষিত হয়েছে, হচ্ছে। এসবের পিছনে "ধর্মের" কোন হাত নেই।

সবই ক্ষমতা ও লোভের খেলা। সংখ্যার খেলা।

এসব যারা বুঝার ক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও বুঝে না, বুঝতে চায় না, তাদেরকে গলার ভিত্রে দশদিন পরা পায়ের মোজা ঢুকায়ে দিলেও বুঝবে না।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে জুলাই, ২০১৯ সকাল ৯:৩০

রাজীব নুর বলেছেন: সংখ্যালঘু শব্দটাই শুনতে ইচ্ছা করে না!ভয়ংকর কদর্য আর অমানবিক একটা শব্দ!

২৩ শে জুলাই, ২০১৯ রাত ১২:৫৯

আবীর চৌধুরী বলেছেন: আমার শহর, প্রিয় চট্টগ্রাম..।
বাংলাদেশের আমার দেখা সবচেয়ে বেশি ডাইভারসিফাইড সিটি।

আমার যত অমুসলিম ও মুসলিমবিদ্বেষী ফ্রেন্ড, পরিচিত মানুষেরা আছেন, সবাই বহাল তবিয়তে, দাপটের সাথে চট্টগ্রামে ও দেশে বসবাস ও বিচরণ করে যাচ্ছেন ৩ যুগেরও বেশি। (আমার বয়স বিবেচনায়)

অবাক করার মত বিষয়, একই সাথে, তারা প্রায় প্রত্যেকে, অন্য যেকোন আরেকটি দেশের নাগরিক বা বাসিন্দা বা দ্বৈত বাসিন্দা। হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান বা ধর্মহীন, যা-ই হউক না কেন।

এমনও অনেক বন্ধু বা পরিচিত জন আছেন, ভারতে ও বাংলাদেশে একসাথে ব্যবসা ও বসবাস করে। ৩ জনের নাম এই মুহুর্তে মাথায় আসছে, যারা এই দেশে বেকারত্বের কবলে পরে, ভারতে গিয়ে চাকরি খুঁজে নিয়েছে।

তারপরেও, ওরা যখন ১০০ বছরেরও বেশি সময়ের পরিসংখ্যান দেখিয়ে, এক টানে বলে ফেলে, সংখ্যাগুরুদের অত্যাচারে সংখ্যালঘুরা বাংলাদেশ ছাড়ছে, তখন রক্ত মাথায় না উঠে কই বা যাবে?

২| ২৩ শে জুলাই, ২০১৯ রাত ২:৩১

ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন: প্রিয়া সাহা একজন অখ্যাত মানসিক রোগী। আর ট্রাম্প হচ্ছেন মিকি মাউসের দেশের লোক তিনি মিকি মাউস খেলা পছন্দ করেন। আমরা আমের ছালা জনতা অকারণে উম্মাদটাকে জনপ্রিয় করছি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.