নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পৃথিবী আমার আবাস। মানুষ আমার পরিচয়।

আবীর চৌধুরী

ইলেক্ট্রিক্যাল এন্ড ইলেক্ট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ার

আবীর চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

সিন্ডিকেট ব্ল্যাকমেইলিং

২৩ শে অক্টোবর, ২০১৯ সকাল ১০:০৮

বেশ কয়েক বছর আগে সিন্ডিকেট সিন্ড্রোম নামে এই লেখাটা লিখেছিলাম-
https://www.somewhereinblog.net/blog/abir33x/29715478

ঘুরে ফিরে আবার সিন্ডিকেটবৃত্তি নিয়ে লিখতে বসতে হলো।

এক বছর হল, বিদেশ আছি। ইউরোপের ১ম সারির দেশ। বিশ্বের উন্নত দেশগুলির একটি। সম্পদে স্বয়ংসম্পূর্ণ দেশ। বসবাসের যোগ্য ও শান্তির দিক দিয়ে সবসময় র‍্যাংকিং-এ থাকে। আশ্চর্যের ব্যাপার, এখানেও নানান রকমের অসংখ্য ইউনিয়ন আছে। আরো আশ্চর্যের ব্যাপার, ইউনিয়নগুলির ওয়ার্কিং পার্টনার হচ্ছে সরকার/রাষ্ট্র এবং সব কোম্পানিগুলি (যারা ইউনিয়নভুক্তদের অন্নদাতা)। আরো আশ্চর্যের ব্যাপার, তারা মাঝে মাঝেই বিভিন্ন দাবী ও কারণে হরতাল করে। আরো আশ্চর্যের ব্যাপার, সেইসব ধর্মঘটের কারণে দেশের একটা মানুষেরও কোনপ্রকার ক্ষতি বা কষ্ট হয় না, দেশের কোনরকম মানহানি বা সম্পদ নষ্ট বা উৎপাদনশীলতা নষ্ট হয় না!

এ কি করে সম্ভব সেটা দেখা ও শেখার জন্য এরকম উন্নত কোন এক দেশে বাংলাদেশের সরকারি আমলা, সরকারি নেতা, ব্যবসায়ী নেতা, ইউনিয়ন নেতা, প্রমুখ ব্যক্তিবর্গকে পাঠানো দরকার। পাবলিকের টাকা খেয়ে অন্তত ভালো কিছু একটা শিখে যাক; যদিও সেটা দেশে এসে প্রয়োগের সম্ভাবনা প্রায় নেই বললেই চলে।

অনেক বছর ধরে বলে আসছি, এই দেশ/জাতিকে নিয়ে আশার কিছু দেখি না। খুব শীঘ্রই ভূরাজনৈতিকভাবে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে, প্রাকৃতিক বা মানবসৃষ্ট দূর্যোগের কারণে, বাংলাদেশ নামক দেশটা বিলুপ্ত বা পরিবর্তিত হতে পারে; সেটা ভিন্ন কথা। কিন্তু, আশাহীনতার কারণ একটাই, এই দেশের আপামর জনসাধারণের চরিত্র, স্বভাব।

দুর্নীতি, জনসংখ্যা, সুশাসনের অভাব, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, অর্থনৈতিক বিপর্যয়, এসব বিশাল সমস্যা ঐ সমস্যার সামনে কিচ্ছু নাহ। মানুষের সামষ্টিক আচরণ ঠিক থাকলে, এই সমস্যাগুলি কাটিয়ে উঠা শুধু স্বল্পসময়ের ব্যাপার মাত্র।

প্রথম উদাহরণস্বরূপ বলতে হয়, ২১ অক্টোবর ২০১৯ এ আকস্মিকভাবে পুরো চট্টগ্রামে সবরকম গণপরিবহন চলাচল বন্ধ করে লক্ষ লক্ষ মানুষকে অমানুষিক কষ্ট দেওয়া। এর কারণ, প্রশাসন ও পুলিশ সম্মিলিতভাবে ফিটনেসবিহীন গাড়ি বাজেয়াপ্ত করা সহ আরো নানান ইস্যুতে গণপরিবহন সেক্টরকে জনবান্ধব ও কার্যকরী করার প্রয়াস করছিল। আমরা বিভিন্ন ঘটনায় সঙ্গত কারণেই সরকার, সরকারি দল, প্রশাসন, সরকারি কর্মকর্তা/কর্মচারী, এবং বিশেষত পুলিশকে দোষ দিই, তাদের সমালোচনা করি, গালাগালিও করি। কিন্তু, যখন সরকার ভালো কিছু করতে চায়, পুলিশ সেটা পালন করে, তখনও এই দেশে ভালো কোন পরিবর্তন সম্ভব হয় না। কারণ, তখনই সংশ্লিষ্ট পেশা বা গোষ্ঠীর সব মানুষগুলি জোটবদ্ধ হয়ে ব্ল্যাকমেইলিং শুরু করে, জাতিকে বেকায়দায় ফেলতে চায়, দেশকে স্থবির করে দেয়। তাই বুঝে নিতে হয়, এই জাতির মূল সমস্যা হচ্ছে জাতির রক্তে, চরিত্রে।

কোন রাজনৈতিক দল, বা কোন বিশেষ পেশায়, বা কোন বিশেষ এলাকায় সমস্যা না। সমস্যাটা এই জাতির মানুষগুলির বিবেকে। এরা মানুষ নামের কলংক। অনার্য নৃতাত্ত্বিক জাতিগোষ্ঠীর সাথে কিঞ্চিৎ অন্যান্যদের সংকরায়ণের ফলে জন্ম নেওয়া এই বাঙ্গাল জাতির এই চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের বহিঃপ্রকাশ ইতিহাসের কালধারায় আমরা দেখতে পাই। একমাত্র জুলুমবাজ ঔপনিবেশিক শাসকই পারে এরকম একটা ঔদ্ধত্যপূর্ণ অসভ্য জাতিকে লাগাম ধরে বশ করে রাখতে।

দ্বিতীয় উদাহরণ, ঐ একই দিনে চট্টগ্রামের সব রিকশার ভাড়া কমপক্ষে ২ গুণ থেকে ৩ গুণ হয়ে যাওয়া। সিএনজি তো আছেই।

শেষ উদাহরণ, দেশের জাতীয় ক্রিকেট দলের ধর্মঘট। একটু আগে, বীরেন্দর শেবাগ অভিনীত একটি ভারতীয় টিভি বিজ্ঞাপন দেখলাম। ৩ নভেম্বর থেকে শুরু হওয়া ইন্ডিয়ান সিরিজের বিজ্ঞাপন সেটি। ৩ তারিখ ১ম টি২০ ম্যাচ। এবং যথারীতি বিজ্ঞাপনটিতে বাংলাদেশকে খাটো করা হয়েছে। যেটা অবশ্যই যৌক্তিক। যতটা না বাস্তবিক অর্জন, ক্রিকেটে, তার চেয়েও অনেক অনেক বেশি পেয়ে এসেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল; এবং ক্রিকেট বোর্ডও সেইসব ভুয়া অর্জনকে সাইনবোর্ড বানিয়ে কোটি কোটি টাকা কামিয়ে এসেছে। হঠাৎ বৃষ্টির মত প্রাপ্তিগুলির পরে, নিয়মিত বেতন ও ম্যাচ ফির বাইরেও জমি, ফ্ল্যাট, গাড়ি, বাড়ি পেয়ে এইসব বেয়াদবদের প্রশ্রয় দেওয়া হয়েছে। এক সাকিব, এক তামিম, এক মাশরাফির মত গুটিকয়েক ভালো খেলোয়ারদের বন্দনা আর স্তুতিতে প্রিন্ট-ইলেক্ট্রনিক-সোশ্যাল মিডিয়া বানের তোড়ে ভেসে গিয়েছে। আর, তাতেই আস্কারা পেয়ে সব জাতীয় পেশাদার ক্রিকেট প্লেয়ার আজ অবান্তর দাবী পেশ করে, সবাইকে ব্ল্যাকমেইল করছে। ভারত সিরিজের প্রমোশন শুরু করে দেওয়ার পরই তারা এসব শুরু করে; যাতে বোর্ড তাদের দাবী মানতে বাধ্য হয়। ক্রিকেটে দেশের সব টাকা ঢেলে দেওয়ার পরেও ক্রিকেট যা দিয়েছে, অন্যান্য সব খেলায় কিছু না দিয়েও তারা অনেক ভালো অর্জন এনে দিয়েছে জাতিকে। সরকারের উচিত, এই ব্যাপারে মনোযোগী হওয়া। ক্রিকেট নিয়ে সরকারের ও সরকারি দলের লাফালাফি করাও বন্ধ করা উচিত। পুরো দুনিয়া জানে, ক্রিকেটীয় অর্জনে, বাংলাদেশ- যত গর্জে, তত বর্ষে না।
মাসখানেক আগে, একটা রেস্টুরেন্টে অনেকগুলি দেশের মানুষ মিলে ডিনার করছিলাম। আমার টেবিলের মার্কিন এক কলিগ (আমেরিকানরা ক্রিকেট সম্পর্কে তেমন জানে না কিন্তু) ঘটনাক্রমে আমার সাথে তামাশা করতে গিয়ে বলেছিল, তোমরা ক্রিকেট-ক্রিকেট করো এত, কিন্তু তোমাদের ক্রিকেটের প্রকৃত অর্জন তো প্রায় শূন্যের কাছাকাছি। টেবিলের অন্য উপমহাদেশীয়রাও আমেরিকান মেয়েটাকে সমর্থন করে তামাশায় যোগ দিয়েছিল। আমি ভেতর থেকে ঠিকই ব্যাপারটা মেনে নিয়েছি।

সিন্ডিকেট বানিয়ে, ব্ল্যাকমেইলিং করে দাবী আদায়ে বাধ্য করার এই রীতির প্রসঙ্গে বলতেই হয়- এরকম নোংরা চরিত্রের মানুষ, পৃথিবীর আর কোথাও যেন না থাকে, এটাই কামনা করি।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ২৩ শে অক্টোবর, ২০১৯ সকাল ১০:১৭

রাজীব নুর বলেছেন: কোন পথে আসবে সমস্ত মানুষের মুক্তি? নাকি কোনো দিনই আসবে না। তার আগেই ধ্বংস হয়ে যাবে পৃথিবী।

২| ২৩ শে অক্টোবর, ২০১৯ সকাল ১০:৪৮

বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: সহমত। এত ফালতু হয়ে গিয়েছে এই জাতির চিন্তা ধারা ভাবা যায় না। যে যেভাবে পারছে মানুষকে ল্যাং মারছে। যে যেভাবে পারছে তার জায়গায় দুর্নীতি করছে। হারামের টাকা দিয়ে পরিবার চালাচ্ছে। রন্দ্রে রন্দ্রে দুর্নীতি।

ক্রিকেটারদের হঠাৎ আন্দোলন দেখে অবাকই লাগছে। এই ক্রিকেটারদের কত জমি, প্লট, ফ্ল্যাট দেয়া হল আর তারা এখন টাকার হিসাব করছে অন্য দেশের সাথে! আজ পর্যন্ত বড় কোন ট্রফি দিতে পারল না, দেশের মাটিতে স্পিন পিচ বানিয়ে ভীতু ক্রিকেটাররা দাবী করে তারা বিশ্বমানের...

৩| ২৩ শে অক্টোবর, ২০১৯ সকাল ১১:২৩

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
আমরা নিজেরাই এর জন্য দায়ী। নয়তো কবেই উন্নত বিশ্বের অংশ হত বাংলাদেশ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.