নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পৃথিবী আমার আবাস। মানুষ আমার পরিচয়।

আবীর চৌধুরী

ইলেক্ট্রিক্যাল এন্ড ইলেক্ট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ার

আবীর চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

উত্তরণের পূর্বশর্তঃ সংকটের কথা "স্বীকার" করা!

২২ শে এপ্রিল, ২০২০ সকাল ৭:১১

কায়িক পরিশ্রমের উপর নির্ভরশীল আমাদের দেশের বৃহৎ জনগোষ্ঠী; যাদের কিছু কাজ করে নির্মাণখাতে, কিছু উৎপাদন খাতে, কিছু পরিবহন খাতে, কিছু কৃষি খাতে, বাকি কিছু সেবা খাতে।

করোনা চলে যাওয়ার পরেও, ব্যক্তিগত বা সরকারি/বেসরকারি উন্নয়নকাজ/নির্মাণকাজ অনেকদিন বন্ধ থাকবে পুঁজির অভাবে, এবং প্রয়োজনীয় না হওয়ার কারণে। ফলে ঐ শ্রমজীবিরা কাজ পাবে না।

উৎপাদনখাতের মধ্যে দুই শ্রেণীর পণ্য- এক শ্রেণীতে কম মানবসম্পদ লাগে (বেশির ভাগই স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতি), আরেক শ্রেণীতে বেশি মানবসম্পদ লাগে (যেমন তৈরি পোশাক খাত)। করোনার কারণে দেশে বা বিদেশে মানুষের বিলাসিতার সুযোগ একেবারেই থাকবে না। পোশাকের চাহিদা না থাকার কারণে বায়ার কিনবে না, এবং কারখানাও বন্ধ থাকবে। ফলে ঐ শ্রমিকেরাও কাজ পাবে না।

পরিবহন খাত হয়তো বা ধীরে ধীরে সচল হবে। তবে এই ক্ষেত্রেও এই বছরের একেবারে শেষ পর্যন্ত অস্থিরতা থাকবে। ভুলে গেলে চলবে না, করোনার সবচেয়ে মারাত্মক অবস্থায় বাংলাদেশ এখনো পৌঁছায়নি।

একমাত্র কৃষি পেশাজীবি ও শ্রমিকরাই করোনা চলাকালীন ও করোনা পরবর্তী সময়ে সমানভাবে সচল থাকবে; যদি না করোনা আক্রান্ত ও মৃত্যুর কারণে সংখ্যায় পরিবর্তন না আসে। সেক্ষেত্রে কৃষিকাজে অন্যদের নিয়োগ করা হবে (ইতিমধ্যে হয়েছে)। খাদ্যের চাহিদা মানুষের মূল মৌলিক চাহিদা। যুদ্ধ, মহামারি যাই হোক না কেন, মানুষের মৃত্যুর আগ পর্যন্ত, এবং পৃথিবী ধ্বংসের আগ পর্যন্ত খাবারের চাহিদা থাকবে। অতঃপর, খাবার উৎপাদনের সাথে জড়িতদের আয়ে কখনো ভাটা পরবে না।

দুর্ভাগ্যবশতভাবে, বাংলাদেশ রাষ্ট্রীয়ভাবে এবং সামাজিকভাবে কৃষিকে জীবিকা হিসেবে সমর্থন করে না, পৃষ্ঠপোষকতা করে না। সেবাখাতকে (উদাহরণঃ রেস্টুরেন্ট, হোটেল, ইত্যাদি) বরং প্রয়োজনের চেয়ে বেশি প্রাধান্য দিয়ে আসা হয়েছে। হোয়াইট কলার জবের চাহিদা মেটাতে হোক, ফার্মের মুরগীর মত গ্র্যাজুয়েট উৎপাদনকারী ভার্সিটিব্যবসায়ীদের প্রোডাক্টের চাহিদা মেটাতে হোক, কিংবা শিল্পপতি/পুঁজিপতিদের সম্পদকে আরো বাড়াতে হোক, দেশে ব্যাংকের পর ব্যাংক গড়ে উঠেছে ব্যাঙ এর ছাতার মত। দেশের শিক্ষিত জনগোষ্ঠীর এই বিশাল অংশকে উৎপাদনমুখী কোন খাতে ব্যবহার না করার কারণে মহামারি ও মন্দার মত দুঃসময়ে দেশের অর্থনীতিতে এরা বা এদের চাকরিদাতা ব্যাংকগুলি কোন ভূমিকাই রাখতে পারবে না।

শিক্ষা ও চিকিৎসা আর মৌলিক চাহিদা থাকেনি। বাসস্থান আর অন্ন-বস্ত্রের মত তারাও ব্যবসার বস্তুতে পরিণত হয়েছে অনেক অনেক আগে। এই ৫টার সবকয়টা নিয়ন্ত্রণ করে যাচ্ছে একাধিক সিন্ডিকেট, যাদের সাথে কোন পেশা বা দলের কোন সম্পর্ক নেই, তারা সবকিছুর উর্ধ্বে। রাজনীতিবিদেরা সবসময় নিজেদের স্বার্থে- কখনো এদেরকে ব্যবহার করেছে, কখনো এদের দ্বারা ব্যবহৃত হয়েছে।

আর, সরকারের মুখপাত্র হয়ে আসা পেশাজীবিরা (অবসরপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় ব্যাংক গভর্ণর, কিংবা পেশায় ডাক্তার কিন্তু ক্ষমতাবলে মেম্বার অব পার্লামেন্ট) সবসময় জোরপূর্বক আশার বাণী শুনিয়েছেন, প্রশংসাকে গ্রহণ আর নিন্দা বা সমালোচনাকে বর্জন করেছেন, অতীতের সরকারদের দোষারোপ করে গিয়েছেন, অতীতের ঘটনাকে দায় দিয়ে গিয়েছেন।

সবচেয়ে অবাক করার মত ঘটনা, যে বা যারা এই করোনার আগেও দেশকে বা দেশের বিভিন্ন স্থানকে সিঙ্গাপুর, কানাডা, আমেরিকার মত দেশগুলির সাথে বিভিন্নভাবে তুলনা করতেন, তারাই করোনা পরবর্তী আলোচনায় নির্লজ্জ-বেহায়ার মত বলে উঠেন- "দেশ তো আর একদিনে আমেরিকা-ইতালির মত হতে পারবে না!"

অর্থনীতি হোক, সামাজিক হোক, রাজনৈতিক হোক, কিংবা লাশের সংখ্যা গণনাতে হোক, বাংলাদেশের সবার এখন জানা উচিত- Brace yourself for the worst now. সামনে আসছে ভয়াবহ দুর্দিন। এই ভয়, এই সচেতনতা, এই তাগিদ যদি আরো আগে আসতো, তাহলে বাংলাদেশ আজকের এই দুরবস্থায় থাকতো না। এতদিন যদি "উন্নয়নের জোয়ারের দিবাস্বপ্ন" গুলে খাওয়ানো না হতো, সবকিছুতে মিথ্যা আশ্বাস দেওয়া না হতো, জোরপূর্বক সব অসঙ্গতি লুকিয়ে রাখা না হতো, তাহলে দেশটা আজকে অন্যরকম ভালো অবস্থানে থাকতো।

মন্তব্য ৭ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে এপ্রিল, ২০২০ সকাল ৭:২৩

চাঁদগাজী বলেছেন:


দেশের অশিক্ষিতরা জানে না, দেশের বর্তমান ও ভবিষ্যত কি! শিক্ষিতদের মাঝে বড় অংশ পড়ালেখা না করাতে, তাদেরও দেশের অর্থনীতি সম্পর্কে সম্যক ধারণা নেই।

তেলের মুল্য ব্যারেল ১১ ডলারে এসেছে, সোদী আরব, আমিরত, ইরাক, ইরান, লিবিয়া তাদের দেশ চালাতে হিমশিম খাবে; সেই সব দেশে অবস্হিত বাংগালীদের রেমিট্যান্স অনেক কমে যাবে।

২| ২২ শে এপ্রিল, ২০২০ সকাল ৯:৪০

ফারহানা শারমিন বলেছেন: দূর্ভাগ্যবশতভাবে, বাংলাদেশ রাষ্ট্রীয়ভাবে এবং সামাজিকভাবে কৃষিকে জীবিকা হিসেবে সমর্পৃথন করেনা।পৃষ্ঠপোষকতা করেনা।
-অত্যন্ত দুঃখজনক একটা সত্য।

৩| ২২ শে এপ্রিল, ২০২০ সকাল ১০:৪৩

ক্ষুদ্র খাদেম বলেছেন: কিছু অপ্রিয় সত্যি কথা, কিন্তু কে কাকে বুঝাবে???

৪| ২২ শে এপ্রিল, ২০২০ সকাল ১১:২৫

রাজীব নুর বলেছেন: শুনুন, আমাদের অবস্থা খুব খারাপ হবে না। যদিও আমাদের দেশ দরিদ্র দেশ। দরিদ্র দেশে করোণা হওয়ার আগে মানূষ যেমন ছিলো। করোনা চলে গেলেও সেরকমই থাকবে।

৫| ২২ শে এপ্রিল, ২০২০ সকাল ১১:৩০

সাইন বোর্ড বলেছেন: ফাকা কলসি একটু বেশিই বাজে, তারপর আবার যে কলসি কারো হাতের স্বাক্ষরই পায়নি ।

২২ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ১০:০৩

আবীর চৌধুরী বলেছেন: ?

৬| ২২ শে এপ্রিল, ২০২০ দুপুর ১২:৫৯

নেওয়াজ আলি বলেছেন: মানুষ এখন কৃষি উৎপাদন বেশী করে। খাটতি হবে না। সুষম বন্টন এবং চুরি বন্ধ করতে হবে। কৃষক হতে প্রান্তিক এসে খাদ্য সংগ্রহ করে শহরে সরবরাহ করতে করলেই হবে

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.