নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পৃথিবী আমার আবাস। মানুষ আমার পরিচয়।

আবীর চৌধুরী

ইলেক্ট্রিক্যাল এন্ড ইলেক্ট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ার

আবীর চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভারসাম্যময় কর্মজীবন, মানসিক স্বাস্থ্য এবং উৎপাদনশীলতা

০৩ রা নভেম্বর, ২০২০ রাত ৯:১০

work-life balance কি জিনিস, সেটা বাংলাদেশীরা জানে না, কখনো প্রত্যক্ষও করেনি।

আমার পরিচিত কমপক্ষে ৩০০ জন আত্মীয়-স্বজন, বন্ধুবান্ধব, পরিচিত জন, সিনিয়র-জুনিয়র, বাংলাদেশের মাসিক লাখ-লাখ টাকা বেতনের চাকরি বা কোটি-কোটি টাকার ব্যবসা ছেড়ে দিয়ে, দেশের সবকিছু বিক্রি করে, উন্নত-শান্তিপূর্ণ দেশে স্থায়ীভাবে পাড়ি জমিয়েছেন। যাদের অনেকেই সরকারি প্রথম শ্রেণীর চাকরি করতেন, সামরিক বাহিনীতে পদস্থ কর্মকর্তা ছিলেন, নামকরা বেসরকারি বা আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানে (বাংলাদেশী শাখায়) কর্মরত ছিলেন, প্রথম সারির বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপনা করতেন, মাসিক কোটি টাকা টার্নওভারের বিজনেসের উত্তরাধিকারী ছিলেন।

তাদের সবার দেশ ছেড়ে যাওয়ার বিবিধ কারণ ছিল; তার মধ্যে উল্লেখ্য ছিল তাদের কর্মস্থলের পরিবেশ। কারণ, টাকা বা বেতনই সব কিছু নয়। যদিও অধিকাংশ চাকরিতে বেতনের অবস্থা শোচনীয়। কাজের ও চাপের তুলনায় পাওয়া বেতন, দৈনন্দিন ভরণপোষণের জন্যেও যথেষ্ট নয়; সঞ্চয় বা জমাপুজি তো দূরের কথা।

World Economic Forum এর মত আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলি বহুদিন ধরেই working environment, workhour, working days, এসবের উপর গবেষণা করে আসছে, আর্টিকেল প্রকাশ করে আসছে, বিভিন্ন দেশের সরকার ও প্রতিষ্ঠানের সাথে কাজ করে আসছে। বাংলাদেশের সামগ্রিক কর্পোরেট কালচার এসব থেকে অনেক দূরে। ইন্টার্নাল পলিটিক্স এবং egoistic culture এর বাইরে যেতে পারেনি বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠানগুলি।

যেকোন চাকরি করার ক্ষেত্রে চাকরিপ্রার্থীকে অন্যরা যে পরামর্শগুলি দেয়, তার মধ্যে অন্যতম প্রধান হল- "বস বা কলিগরা যা বলে, তা হজম করা, চুপ থাকা, মানিয়ে নেওয়া, সহ্য করা।" Adaptibility, Flexibility, Smartness, Tolerance, সবই ভালো গুণ; কমবেশি সব পেশায় লাগে এসব। কিন্তু, বাংলাদেশে ক্যারিয়ার-লাইফের ক্ষেত্রে এসব যেভাবে ব্যবহৃত হয়, অবশ্যই সেটা derogatory সেন্সে।
প্রায় অধিকাংশ বেসরকারি চাকরিজীবির সামাজিক বা ব্যক্তিগত জীবন বলে কিচ্ছু নাই; বিনোদন তো দূরের কথা। তাদের কাজের পরিবেশ যেরকম toxic হয়, কাজের বাইরে এসেও সেই টক্সিকনেস যায় না। ঢাকা বা অন্যান্য শহরের অনেক চাকরিজীবির দৈনন্দিন কমপক্ষে ৩ ঘন্টা রাস্তায় গাড়ির ভিতরে কাটে, যেখানে তারা শান্তিতে না পারে ঘুমাতে, না পারে নিজের কোন আত্মোন্নয়নে। এর মধ্যেও অনেকে বছরের পর বছর ফাইট করে যায়। কারণ, অন্যদের করতে দেখে আসছে। আর, যারা আগে যায়, তারা পেছনে আসা ব্যক্তিদের নিজেদের ও অগ্রজদের উদাহরণ দিয়ে যায়; পরিবর্তনে অনুতসাহিত করে; গণ্ডারের চামড়া গজাতে বলে, মেরুদণ্ডহীন, ছাপোষা হতে বলে।

কাজের পরিবেশ, সহকর্মী ও উর্ধতনদের ব্যবহার, বেতন-সুবিধা, যাতায়াতের মাধ্যম ও সময়, সাপ্তাহিক কাজের দিন ও ঘন্টা, বিশ্রাম-বিনোদন, আত্মোন্নয়ন এর পর্যাপ্ত সময়-সুযোগ, এসবের সাথে চাকরিজীবিদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের সরাসরি সম্পর্ক। এবং এমপ্লয়িদের ফিজিক্যাল ও মেন্টাল হেলথের উপর সম্পূর্ণভাবে নির্ভর করছে একটি প্রতিষ্ঠানের প্রোডাক্টিভিটি; এবং পর্যায়ক্রমে একটি দেশের নীট প্রোডাক্টিভিটি। বাংলাদেশে এসব আমলে নেওয়ার মত কেউ নাই অবশ্য।

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ০৩ রা নভেম্বর, ২০২০ রাত ৯:৪০

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: পোস্ট ভালো লেগেছে।

২| ০৩ রা নভেম্বর, ২০২০ রাত ৯:৫৫

নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: আমরা সবাই সমস্যাগুলো জানি সমাধান জানি না।

৩| ০৩ রা নভেম্বর, ২০২০ রাত ১০:৪২

রাজীব নুর বলেছেন: আপনার পরিচিতদের ৩০০ জনকে অভিনন্দন।

০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২০ বিকাল ৪:৩৫

আবীর চৌধুরী বলেছেন: খোঁটা দিলেন, নাকি পজিটিভলি বললেন, বুঝলাম না।
সম্প্রতি তৌকির-বিপাশার দেশত্যাগ ও প্রবাসজীবন শুরু নিয়ে তর্ক-বিতর্ক দেখেছেন/শুনেছেন?
আপনি এর পক্ষে না বিপক্ষে?

৪| ০৩ রা নভেম্বর, ২০২০ রাত ১১:৩৭

ক্ষুদ্র খাদেম বলেছেন: রাজীব নুর বলেছেন: আপনার পরিচিতদের ৩০০ জনকে অভিনন্দন।

রাজীব ভাই, ভালা কইছেন :-B

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.