নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি কে? আমি অনেক কিছু, বাকি টা আপনি যা বলবেন হয়তো তাই।

এ বি এম তামিম

শিখছি

এ বি এম তামিম › বিস্তারিত পোস্টঃ

ক্যান্সার এর এই কুল ও ঐ কুল!

১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৫:৩৫

ক্যান্সার

ক্যান্সার বা কর্কটরোগ অনিয়ন্ত্রিত কোষ বিভাজন সংক্রান্ত রোগসমূহের সমষ্টি। এখনও পর্যন্ত এই রোগে মৃত্যুর হার অনেক বেশি। কারণ হচ্ছে প্রাথমিক অবস্থায় ক্যান্সার রোগ সহজে ধরা পড়ে না, ফলে শেষ পর্যায়ে গিয়ে ভালো কোনও চিকিৎসা দেয়াও সম্ভব হয় না। ক্যানসার প্রতিরোধে শরীর পরীক্ষা করা বা স্ক্রিনিং খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।
ক্যানসার নিরাময়ে বিকিরণ চিকিৎসায় বড় ধরনের পরিবর্তন এনেছে স্টেরিওট্যাকটিক বডি রেডিয়েশন থেরাপি (এসবিআরটি) পদ্ধতি। এ পদ্ধতি প্রয়োগ করে এখন তিন-চার দিনেই ক্যানসার রোগীকে সুস্থ করে তোলা সম্ভব হচ্ছে। এর জন্য বিকিরণ জীববিজ্ঞান বিষয়ে বিশেষ জ্ঞান ও দক্ষতা প্রয়োজন।
নতুন এ পদ্ধতি নিয়ে গত প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বলেন যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব হেলথ সায়েন্স সেন্টারের রেডিয়েশন অনকোলজি বিভাগের অধ্যাপক সালাউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, এ পদ্ধতিতে অল্প সময়ে রোগীকে বেশি মাত্রা বা ডোজে বিকিরণ দিতে হয়।
প্রথাগত বিকিরণ চিকিৎসায় ক্যানসারের কোষ নষ্ট করার জন্য অতি শক্তিশালী রঞ্জনরশ্মি ব্যবহার করা হয়। এতে রোগীকে ছয় থেকে সাত সপ্তাহ ধরে বিকিরণ দেওয়া হয়। সর্বসাম্প্রতিক এসবিআরটি পদ্ধতিতে রোগী সুস্থ হচ্ছে তিন থেকে চার দিনেই। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র, জাপানসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে ক্যানসার নিরাময়ে এটি এখন স্বীকৃত পদ্ধতি।
সাধারণত সাতটি বিষয়কে ক্যানসারের বিপদ সংকেত বলা হয়। যেমন : খুসখুস কাশি, ভাঙ্গা কণ্ঠস্বর, সহজে যদি ঘা না শুকায়, স্তনে বা শরীরে কোথাও কোনো চাকা বা পিণ্ডের সৃষ্টি, মল ত্যাগের অভ্যাসের পরিবর্তন, ঢোক গিলতে অসুবিধা বা হজম অসুবিধা, তিল কিংবা আচিলের কোনো সূক্ষ পরিবর্তন। এই সাতটি বিপদ সংকেতের কথা সাধারণ মানুষের কাছে যদি আমরা ব্যাপকভাবে প্রচার করি তাহলে অনেক আগে থেকে ক্যানসার প্রতিরোধ করা সম্ভব।
ক্যানসার নিঃসন্দেহে মারণব্যাধি। ওয়ার্ল্ড ক্যান্সার সংস্থার হিসেবে প্রতিবছর ৭৬ লাখ মানুষ ক্যানসারে মারা যায়। কিন্তু সঠিক সময়ে ক্যানসারকে যদি চিহ্নিত করা যায়, এবং যথাযথ চিকিৎসার সুফল যদি মেলে তাহলে ক্যানসারকেও পরাজিত করা সম্ভব। এর জন্য দরকার ক্যানসারের উপসর্গ সম্পর্কে সচেতনতা।

সম্প্রতি ‘জার্নাল অফ ক্যানসার’ জানিয়েছে কোন কোন শারীরিক পরিবর্তন ক্যানসারের পূর্বাভাস দেয়? আসুন জেনে নিই, উপসর্গগুলোঃ

১. যদি চামড়ার নীচে কোনও মাংসের দলা দেখা দেয়: এটা বোঝা যায় খুব সহজেই। হাত দিয়ে স্পর্শ করে যদি শরীরের কোনও অংশে শক্ত মাংসের দলা অনুভব করেন তাহলে অবিলম্বে ডাক্তারের দ্বারস্থ হন। স্তন, অণ্ডকোষ, গলা, তলপেট কিংবা বগলের মতো জায়গাগুলোতে বিশেষ নজর রাখা দরকার।

২. শরীরের কোনও অংশ যদি লাল হয়ে ফুলে যায় এবং চুলকানি দেখা দেয়: কোনও অংশে ক্যানসার দেখা দিলে সাধারণত শরীরের স্বাভাবিক প্রতিষেধক ক্ষমতার প্রতিক্রিয়ায় ওই অংশে রক্তপ্রবাহ বৃদ্ধি পায়। স্বভাবতই ওই অংশ লাল হয়ে ফুলে যেতে পারে, এবং সেখানে চুলকানিও দেখা দিতে পারে।

৩. যদি শরীরের কোনও অংশের কোনও ঘা বা ক্ষত সারতে না চায়: দীর্ঘদিন ধরে যদি কোনও ঘা বা ক্ষত না সারে, তাহলে ডাক্তারের কাছে অবশ্যই যেতে হবে।
৪. যদি মুখের ভিতরে সাদা মুখওয়ালা কোনও গোটা দেখা দেয়: জিহবা, মুখের ভিতরের অংশ, কিংবা মাড়িতে যদি কোনও গোটা দেখা দেয় এবং সেটির মুখ যদি সাদা হয়, তাহলে কালবিলম্ব না করে ডাক্তারের কাছে চলে যান।

৫. হঠাৎ করে খিদে চলে যাওয়া: ক্যানসারের প্রভাবে শরীরে নিউট্রিয়েন্টস কমে যায়। পরিণামে খিদেও কমে যায়।

৬. মলত্যাগের অভ্যাসে কোনও আকস্মিক পরিবর্তন বা মলের সঙ্গে রক্তপাত হলে।

৭. মূত্রত্যাগের অভ্যাসে কোনও পরিবর্তন: যদি মূত্রের রং, পরিমাণ বা গন্ধে কোনও লক্ষ্যণীয় পরিবর্তন আসে, কিংবা মূত্রের সঙ্গে রক্তপাত ঘটে, তা হলে তা ক্যানসারের লক্ষণ হতে পারে।

৮. ব্যাখ্যাহীন রক্তপাত: শরীরের কোনও অংশ থেকে (যেমন যোনি কিংবা স্তনবৃন্ত) যদি আকস্মিকভাবে কোনও সুস্পষ্ট কারণ ছাড়়াই রক্তপাত শুরু হয়ে যায়, তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।

৯. কন্ঠস্বরে আকস্মিক পরিবর্তন হওয়া।

১০. একটানা কাশি: যদি টানা দু’সপ্তাহের উপর কাশি থাকে, তবে তা গলা, ফুকসফুস, খাদ্যনালী এমনকী পাকস্থলীর ক্যানসারের লক্ষণ হতে পারে।
ক্যান্সারের চিকিৎসা

ক্যান্সারের চিকিৎসায় বিভিন্ন ধরনের পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়।
অস্ত্রোপচার
যে জায়গাটি ক্যান্সার আক্রান্ত হয় সেটির ক্যান্সার আক্রান্ত কোষগুলো এবং তার আশেপাশের কোষগুলোকে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে কেটে সরিয়ে ফেলা হয়। ক্যান্সার যদি অল্প একটু জায়গা জুড়ে থাকে এবং প্রাথমিক পর্যায়ে থাকে তাহলে এ ধরনের চিকিৎসা দেয়া হয়।
রেডিওথেরাপি
নিয়ন্ত্রিতভাবে শরীরের অংশবিশেষে তেজস্ক্রিয় রশ্মি প্রয়োগ করে সেই জায়গার কোষগুলোকে ধ্বংস করে ফেলা হয়।
কেমোথেরাপি
এই ব্যবস্থায় ক্যান্সার কোষকে ধ্বংস করতে অ্যান্টি-ক্যান্সার (সাইটোটক্সিক) ড্রাগস বা ওষুধ ব্যবহার করা হয়। ৫০টিরও বেশি ধরনের কেমিওথেরাপি ওষুধ রয়েছে। এগুলোর কোনকোনটা ট্যাবলেট বা ক্যাপসুল হিসেবে খেতে হয়। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই ওষুধগুলোকে স্যালাইনের সাথে বা অন্য কোনভাবে সরাসরি রক্তে দিয়ে দেয়া হয়। রক্তের সাথে মিশে এই ওষুধগুলো শরীরের যেখানে যেখানে ক্যান্সার কোষ রয়েছে সেখানে গিয়ে ক্যান্সার কোষগুলোকে ধ্বংস করার চেষ্টা করে।
হরমোন থেরাপি
শরীরের কিছু হরমোনের মাত্রা পরিবর্তন করার মাধ্যমে এই চিকিৎসা করা হয়। শরীরের বৃদ্ধির সাথে হরমোনের একটা সম্পর্ক রয়েছে। কোন কোন ক্যান্সার এই হরমোনের মাধ্যমে প্রভাবিত হয়। ফলে ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধি কমিয়ে ক্যান্সারকে নিয়ন্ত্রনে নিয়ে আসতে হরমোন থেরাপি ব্যবহৃত হয়।

সহায়ক চিকিৎসা
ক্যান্সারের শারীরিক চিকিৎসার পাশাপাশি রোগীদের মানসিক চিকিৎসার ব্যাপারে এখন জোর দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার পর রোগীরা বেশ মানসিক কষ্টের মধ্যে দিয়ে যান, অনেকে মানসিকভাবে ভেঙ্গেও পরেন। এই কারণে অনেক সময়ে তাদের অবস্থা বেশি গুরুতর না হলেও অনেকে দ্রুত মারা যান। ফলে তাদেরকে বিভিন্ন ধরনের সেবা দেয়ার ব্যবস্থা করার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা এবং উন্নত দেশগুলোতে এ ধরনের সেবা দেয়ার জন্য বিভিন্ন সংগঠন কাজও করে যাচ্ছে। এর মধ্যে একটি হচ্ছে ক্যান্সার আক্রান্তদের একটি গ্রুপ গঠন করা, যেখানে তারা নিজেদের অভিজ্ঞতা নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করতে পারেন। এর পাশাপাশি যোগ, মেডিটেশন ইত্যাদির মাধ্যমেও রোগীদের মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখার শিক্ষা দেয়া হয়। এর পাশাপাশি মানসিক স্বস্তির জন্য কেউ যদি ধর্মীয় বা সামাজিক কোন কাজে নিয়োজিত হতে চান সে ব্যাপারেও তাদেরকে উৎসাহ দেয়া হয়।

অন্যান্য চিকিৎসা

শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে আরো শক্তিশালী করে তোলে এ ধরনের ওষুধ তৈরির ব্যাপারে এখন গবেষণা চলছে। এছাড়াও ক্যান্সারের ভ্যাকসিন তৈরির ব্যাপারে চেষ্টা চলছে। কিন্তু এখনো এগুলো একেবারেই প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে।
ক্যান্সার প্রতিরোধ

গবেষণায় দেখা গেছে যে নিয়মিত কিছু ব্যাপার মেনে চললে ক্যান্সারের ঝুঁকি অনেকখানি কমানো যায়। যেমন:
ব্যায়াম এবং ক্যান্সার

প্রত্যেকদিন নিয়মিত কিছু ব্যায়াম করা যেমন-দৌড়ানো, সাইকেল চালনো, নাচ করা, হাঁটা,
খাদ্যভ্যাস ও ক্যান্সার

ধূমপান বা মদ্যপান ছেড়ে দেয়া বা পরিমাণ কমিয়ে আনা। পান-সুপারি জর্দা, তামাকপাতা খাওয়া বন্ধ করা। চর্বিজাতীয় পদার্থ কম খাওয়া। সম্ভব হলে মাংস খাওয়া বন্ধ করে দেয়া বা কমিয়ে দেয়া। প্রচুর পরিমাণে শাক-সবজি, ফলমূল এবঙ আঁশজাতীয় খাবার খাওয়া।
সচেতনতা
বাইরে বের হওয়ার সময় সানস্ক্রিন মেখে বের হওয়া। নিয়মিত ডাক্তার দেখানো। সেটা সম্ভব না হলে শরীরে কোন অস্বাভাবিকতা দেখা দিলেই ডাক্তারের কাছে যাওয়া। ৫০ বছরের বেশি বয়স হলে অবশ্যই নিয়মিত ডাক্তারের কাছে গিয়ে শরীর পরীক্ষা করানো।

সোর্সঃ এন টি ভি, প্রথম আলো, এবং ডাক্তার ও রোগীদের থেকে নেয়া অভিজ্ঞতা, উইকিপিডিয়া।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৪৬

বর্ষন হোমস বলেছেন:
গুরুত্বপূর্ণ পোষ্ট।
প্রিয়তে রেখে দিচ্ছি।
ধন্যবাদ।

২| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ৮:২২

এ বি এম তামিম বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ, পোষ্টটি পড়ার জন্য।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.