নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

।।এস যুক্তির আঘাতে মুক্ত করি চেতনার জট।।

ক্ষুদ্র পরিসরের এই জীবনটাকে আমি ইচ্ছেমত উপভোগ করব। নিষিদ্ধ গলিতে প্রবেশ করে আমি শুদ্ধ হয়ে বের হব।।

বিকারগ্রস্থ আগন্তুক

আমি স্বপ্নের জন্য ঘুমিয়ে পড়তে রাজী নই, আমি জেগে থাকব স্বপ্নের সূর্যোদয় দেখার জন্য...........

বিকারগ্রস্থ আগন্তুক › বিস্তারিত পোস্টঃ

গঞ্জিকা সেবনপূর্বক লিখিতেছি (গাঁজা খেয়ে লিখছি) - ১

০৫ ই মার্চ, ২০১৩ ভোর ৬:০৩

যাহা সেবনপূর্বক আপনাদের সামনে হাজির হইযাছি তাহার কিঞ্চিত গুনকীর্তন না করিলে তাহার অপমান সাব্যস্ত হইতে পারে। ইহার নিমিত্তেই নিচের এই নতিদীর্ঘ অংশের অবতারণা, অন্য কোন কার্যকারন খুজিতে যাওয় বৃথা-



গাঁজা কি?

গাঁজা এক প্রকার উদ্ভিদ, এর বৈজ্ঞানিক নাম Cannabis indica। মাদক হিসেবে এর ব্যবহার খুব প্রাচীন। গাঁজা গাছের পাতা, ডাল এবং নির্জাসই মুলত নেশার উপকরন হিসেবে ব্যবহৃত হয়। গাঁজার মূল নেশা উদ্রেককারী উপাদান হচ্ছে Delta-9-tetrahydro cannabinol) সংক্ষেপে THC৷



গাঁজা দেশে দেশে

ইংরেজি - Marijuana অন্যান্য প্রচলিত নামের মধ্যে আছে গঞ্জিকা,গাঞ্জা, সিদ্ধি ইত্যদি। আমরা যাকে আদর করে গাঞ্জা বলে সম্মোধন করি তাই বাইরে মারিজুয়ানা বলে পরিচিত, তবে বিভিন্ন স্থানে যেমন বুলগেরিয়াতে ইহা মারিহুয়ানা নামেই পরিচিত।



গাঁজার নিয়ন্ত্রন দেশে দেশে

গাঁজা খাওয়া সারা পৃথিবীতেই নিষিদ্ধ তবে বেশ কিছু দেশে চিকিৎসার প্রয়োজনে(!!) গাঁজা বৈধ! দেশগুলির ভেতর আছে, কানাডা, অষ্ট্রিয়া, জার্মানি, নেদারল্যান্ড, স্পেন, ইজরায়েল, ফিনল্যান্ড, পর্তুগাল এবং যুক্তরাষ্ট্রের কিছু অংশ। এসব দেশে ডাক্তারের প্রেসকিপশন হলে গাঁজা কিনতে পাওয়া যায়! ১৯৮৯ সালের আগে গাঁজার উত্‍পাদন ও বিপণনের উপর কোন প্রকার নিষেধাজ্ঞা ছিল না(এজন্যই এখন আমরা গান গাই "আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম)[1]





কেন নিষিদ্ধ?

গাঁজাকে বলা হয় Gateway Drug, অর্থাত্‍ নেশায় হাতেখড়ি হয় গাঁজার মাধ্যমে৷ এই মাদকটি গ্রহনে দৃষ্টিভ্রম, বাচালতা, মাংশপেশীর অনিয়ন্ত্রিত ও অপ্রয়োজনীয় সংকোচন, দিকভ্রান্ত হওয়া, মাথা ঘুরা, ক্ষুধা লাগা, গভীর ঘুমে অচেতন হয়ে যাওয়া,সময়জ্ঞান হারানো থেকে শুরু করে প্রলাপ বকা, বিকার আসা এমনকি মানুষকে হত্যাকরার ইচ্ছাও জাগ্রত হতে পারে। মাত্রা বেশী হয়ে গেলে অনেক সময় হাত পা এর নড়াচড়ার নিয়ন্ত্রন হারিয়ে ফেলা, হাতে পায়ে ঝি ঝি ধরা এবং অবশ হয়ে যাওয়া, কথা জড়িয়ে যাওয়া, মানসিক বিকারগ্রস্ত হয়ে যাওয়া থেকে শ্বাস কষ্ট হয়ে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। নিয়মিত এবং বেশী মাত্রায় গাঁজা জাতীয় দ্রব্য সেবনে গাঁজা সাইকোসিস (Ganja-psychosis) নামে একধরনের লক্ষন হয়। এতে চোখে রক্তজমে চোখ লাল হয়ে যায়, ক্ষুধামন্দা, নির্জিবতা, শরীরের মাংস-পেশী শুকিয়ে যাওয়া, অত্যাধিক দুর্বলতা, হাত-পা অনবরত কাপতে থাকা, পুরুষত্বহীনতা থেকে শুরু করে পুরোপুরি মানসিক রোগী হয়ে যাওয়ার সুযোগ থাকে। রানিং এমোক (Running amok) নামক আরেক ধরনের মানসিক বিপর্যয় ও গাঁজা সেবিদের পরিণতি হয়ে আসতে পারে। অবিরত গাঁজা সেবনের কারনে অনেক সময় এদের দৃষ্টিভ্রম (Hallucination), নির্যাতিত-বঞ্চিত হবার কল্পনা থেকে এরা হিংসাত্মক, আগ্রাসি সন্ত্রাসীর ভূমিকায় অবতীর্ন হতে পারে। রানিং এমক হলে লোকটি চোখের সামনে যাকে পায় তাকে তার কল্পিত শত্রু মনে করে অস্ত্র নিয়ে হত্যা করতে পারে এবং এই মানসিক অবস্থা কেটে যাবার আগ পর্যন্ত যাকে সামনে পায় ক্রমান্বয়ে তাকেই হত্যা করার চেষ্টা চালিয়ে যেতে থাকে। এই আবেশ কেটে গেলে একসময় সে আত্মহত্যা করতে যেতে পারে অথবা আত্মসমর্পনও করতে পারে[2]



এখন প্রশ্ন হল - গাঞ্জা খেয়ে মানুষ কি করে? কেউ হাসে, কেউ বমি করে, কেউ মুভি দেখে আর কেউ আমার মত ব্লগ লিখতে বসে।



এর গুনাগুন

বেগুন নামের সবজির যদি ভেষজ গুনাগুন থাকতে পারে গাঁজার থাকবে না কেন? আছে আছে। নেই কে বলল?



শরীরের বিষ-ব্যথা সারায় গাঁজা। এ কথার বর্ণনা রয়েছে ভারতবর্ষের প্রাচীন ও মধ্যযুগীয় চিকিৎসাশাস্ত্রে। তবে এ কথাও সুবিদিত যে, গাঁজা, ভাং ও মারিজুয়ানা গ্রহণ মানুষের স্মরণশক্তি হ্রাস করে এবং দীর্ঘ মেয়াদে মনোবৈকল্য ঘটায়। যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞানীরা এখন গাঁজা, ভাং ও মারিজুয়ানার ওপর গবেষণা করে জেনেছেন, এ সব মাদকদ্রব্য থেকে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াহীন ব্যথানাশক ওষুধ প্রস্তুত করা সম্ভব, যা মানুষের কোনো ক্ষতি করবে না। গবেষণাটি করেছে ফ্রান্সের বায়োমেডিকেল ইনস্টিটিউট। এর নেতৃত্ব দিয়েছে আইএনএসইআরএম। ফ্রান্সের গবেষকরা জানান, 'তারা ইঁদুরের মস্তিষ্কের যে অংশের কোষের নিউরনে গাঁজা বা মারিজুয়ানার মাদক ক্রিয়া করে তা ওষুধ প্রয়োগ করে নিষ্ক্রিয় করেন প্রথম। এর পর ওই ইঁদুরের শরীরে এসব মাদক প্রবেশ করিয়ে দেখা গেছে, তাতে ইঁদুরটি বেহুশ হয় না। বরং ওটির প্রাণচাঞ্চল্য ঠিকই থাকে। এ অভিজ্ঞতা থেকে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ব্যথানাশক হিসেবে গাঁজা বা মারিজুয়ানার ভালো গুণ মানুষের বিভিন্ন রোগের ওষুধ এবং অস্ত্রোপচারের জন্য চেতনানাশক হিসেবে ব্যবহার করা যাবে। শিগগিরই গাঁজা ও মারিজুয়ানার নির্যাস থেকে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াহীন এ ওষুধ প্রস্তুত হবে। আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়া ও আলাবামা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা এক গবেষণায় দেখেছেন, ভাং ও গঞ্জিকা সেবনে ফুসফুসের ক্ষতি তামাক পাতায় প্রস্তুত সিগারেট পানের চেয়ে কম। [3]



গাঁজা নিয়ে এতক্ষণ কেন গ্যজাইলাম?

প্রতিদিন ঘুম থেকে জেগে ওঠার পর নিজেকে গাঞ্জাখোর মনে হয়। আমাদের চারিপাশে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো বিশ্বাস করতে কষ্ট হয়। আমার জন্ম গত শতকের শেষ দশক শুরুর বছর। মোটামুটি দুটি রাজনৈতিক দলের শাসনাধরন সময় দেখার সৌভাগ্যা বা দুর্ভাগ্য দুটোই আমার হয়েছে। এক সময় বাসায় বিটিভি ছাড়া আর কোন টিভি ছিল না। ২০০১ এর দিকে। প্রাইমারী পার করে দিলাম এক নেতার হিরোইক ভুমিকা আর অন্জনের ভিলেনের মত কাপুরুষতা দেখে। যখন প্রাইমারির গন্ডি পেরিয়ে হাইস্কুলের ময়দানে পা রাখতে রাখতে সরকার পরিবর্তন হল। সাথে সাথে সামাজিক বিজ্ঞান বইয়ের ইতিহাসের পাতাগুোলোও। ভিলেন নায়কের ভুমিকায় অবতীর্ন হলেন, আর নায়ক হয়ে গেল ভিলেন। বই পড়ায় বদ অভ্যাস ছিল, তাই মনে করলাম গবেষণা করে জানব আমার শিকড়। ওমা দেখি পিএইচডি ডিগ্রীধারীরা আমাকে আরো বেশী কনফিউজড করে দিল। নায়ক ভিলেন ছাড়াও এবার পড়লাম আরেক গ্যড়াকলে। কেউ বলে রাজাকার এরা, কেউ বলে না এরা যু্দ্ধাপরাধী, কেউ বলে এরা সাধু। সব শুনে সবার থেকেই সাবধান হয়ে গেলাম।



যেই জিনিসটা নিয়ে গত তেইশট বছর কিছুই বুঝতে পারিনি, তাই নিয়ে জাতি আজ দুই দিকে বিভক্ত এবং পরস্পরকে হত্তা করতে তারা সবাই বদ্ধ পরিকর। এরকম পরিস্থিতিতে যখন সকালে ঘুম থেকে উঠে ফেবুতে ঢুকি দেখি পত্রিকার ফ্যন পেজের নিউজ - অমুকের সাাথে অমুকের বা পুলিশের সংঘর্ষে এত জন নিহত। ভয়ে পালাই লগ আউট করি ফেবু থেকে। ভাবি যাই ব্লগ থেকে একটু ঘুরে আসি। এখানে এসেও নিস্তার নাই। চোখে পড়ে শিবির মুক্ত বাংলাদেশ গড়ার দাবী। এজন্য লাশ পড়লেও সমস্যা নাই। একটু পরেই চোখে পরে নাস্তিকদের ছিড়ে ফেলর ডাক। কারো মনে এই ভাবনা আসে না যেই শরীরটা সাজাতে প্রকৃতির ১০ মাস সময় লাগল, বেড়ে উঠতে ২০, ৩০, ৪০ টি বছর পার হয়ে গেল, তাকে সাজাতে প্রকৃতির আয়োজন এক নিমেষেই শেষ করে দিব? রক্তের মুল্য এখনে বিভিন্ন মতবাদকে হারিয়ে দিয়েছে। বিশ্বাসই এখন বিশ্বাসঘাতক।





এসব দেখার পর নিজেকে গাঞ্জাখোর ছাড়া আর কিইবা মনে হতে পারে? আমি বিশ্বাস করতে পারি না এগুলো ঘটছে। মনে হয় এগুলো কোন গাঞজাখরের কল্পনা।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই মার্চ, ২০১৩ রাত ১১:০২

রিক্ত রাহী বলেছেন: অস্তির বন্ধু.........কিছু বলতে পারলাম না। নিজেকে তোমার ভিতর দেখে অনেক ভাল লেগেছে।

০৬ ই মার্চ, ২০১৩ রাত ১২:৫০

বিকারগ্রস্থ আগন্তুক বলেছেন: তুমি এখানে আছো জানতাম না। ভাল লাগছে তোমাকে পেয়ে, আরো ভাল লাগছে তোমার মন্তব্য পেয়ে।

২| ২২ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ১০:৫৪

বুমকেশ বলেছেন: গাঁজা বিষয়ক গ্যাঁজানোটা ভালোই লাগল । সবাই মনে হয় আজকাল গাঞ্জার পিনিকে আছে ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.