![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি স্বপ্নের জন্য ঘুমিয়ে পড়তে রাজী নই, আমি জেগে থাকব স্বপ্নের সূর্যোদয় দেখার জন্য...........
এক।।
- চল শাকিল, চা খেয়ে আসি।
রুমমেটের এমন প্রপোজাল কে ফেলবে বলুন? তাও আবার রাত আড়াইটার সময়। গায়ে ময়লা আর কুচকানো টি-শার্টটা চাপিয়ে চললাম রুমমেরটের পিছু পিছু। কাম কাজ নাই, ফেসবুকে কোন নারী বন্ধুও নাই। এর চাইতে আমীর কমপ্লেক্স এর সামনে বসে চা খাইলে আর আমাদের দেশের মহান(!) দুইজনকে নিয়ে একটু কথা বললে যদি দেশোদ্ধার হয় আরকি।
- মামা একটা ছোট কফি আইনা দুইডা চা দেও তো, দুধ চিনি বড়ায়া দিয়ো, আগে দুইডা লীফ দিয়া যাও।
ফ্রেন্ডস মার্টের সামনের দোকানের মামারে কথাগুলো বলে আমি আর আমার রুমমেট রনি বসে পড়াম লোহার বেঞ্চটাতে। একথা সেখথা থেকে চলে গেলাম রাজনীতিতে। হাজার হলেও বাঙালি তো, চায়ের কাপে ঝড় তুলতে আমরা অত্যধিক ভালবাসি। আমরা একটু সিরিয়াস ডিসকাশনে ঢুকি ঢুকি করছি এমন সময় কোন অসীম কালো অন্ধকার ফুড়ে মমিন পাগলার আবির্ভাব। পাগল হলেও সে বেশ পরিপাটি। মুখভর্তি দাড়ী বা হাত তিনেক লম্বা চুল, কোনটাই তার নাই। দাঁত কেলানো একটা হাসি দিয়ে সে বলল-
- মামা, একটা সিগারেট, মামা?
টঙের মামারে কইলাম - মামা অরে একটা ডার্বি দেও তো।
এই হল ভার্সিটি গেটের মমিন পাগলা। সে আমার কাছে আজ পর্যন্ত একদিন মাত্র সিগারেট ছাড়া এককাপ চা আর একটা পরোটা চাইছে। আর তার চাওয়া খুবই অল্প, একটা সিগারেট। না মালব্রো, লীফ বা বেনসন না, একটা ডার্বি পেলেই সে খুশি।
দুই।।
"Giving up cigeratte is the easiest thing in the world.
I know, b'coz I heve done it thousand of times."
- Mark Twin
সিগারেট কি?
সিগারেট ধূমপানের জন্য গ্রহণ করা হয়। তামাক পাতা কেটে পরিশোধন করার পর তার সাথে কয়েকটি উপাদান মিশিয়ে কাগজে মোড়ানো সিলিন্ডার আকৃতির একটি জারের ভিতর প্রবেশ করিয়ে সিগারেট তৈরি করা হয়। একটি প্রতিরূপ সিগারেটের সিলিন্ডারের দৈর্ঘ্য ১২০ মিলিমিটার এবং ব্যাস ১০ মিলিমিটার। সিগারেটের এক প্রান্তে আগুন জ্বালিয়ে অন্য প্রান্তে মুখ দিয়ে শ্বাস নিতে হয়। যে প্রান্তে মুখ দিতে হয় সে প্রান্তে সচরাচর বিশেষ ফিল্টার থাকে। সিগারেট হোল্ডার দিয়েও অনেকে ধূমপান করে থাকেন। সিগারেট বলতে সাধারণত তামাকের তৈরি সিগারেট বোঝানো হলেও বিশেষভাবে এটি যেকোন ধরণের উপাদানকে নির্দেশ করে। যেমন, গাঁজা দিয়েও সিগারেট তৈরি হতে পারে।
সিগারেটে ৫৭টি মারাত্মক রাসায়নিক উপাদানের সন্ধান পাওয়া গেছে যা মানবদেহের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। তেমনি একটি হলো নিকোটিন।
আচ্ছা মমিন পাগলা কি এই তথ্যগুলো জানে? মনে হয় না। জানার ইচ্ছা হল, জিজ্ঞেস করলাম,
- মমিন, বলো তো সিগারট কি?
ময়ল দাঁত না কেলিয়ে সে আবার কথা বলতে পারে না। একইভাবে সিগারেটটা উচু করে উত্তর দিল - এইডা মামা।
তিন।।
ঢাকায় শাপলা চত্তরে কিছু মানুষ জড়ো হয়েছেন তাদের ঠুনকো ঈমান রক্ষার জন্য। যে ঈমান অন্যের একটা দুইটা লেখা পড়লে নষ্ট হবার ভয় থাকে তাকে ঠুনকো বলাই ভাল। এখানে যারা জড়ো হয়েছিলেন তাদের কতজনের কাছে "ইন্টারনেট কি?" এর সঠিক উত্তর পাওয়া যাবে? আর ব্লগ তো আরো পরের কথা। কতজন বিভিন্ন ব্লগে নাস্তিকদের লেখা পড়েছেন? কে বা কারা লিখে তার হিসেব জানে? এর উত্তর মোটামুটি আমরা সবাই জানি। এগুলো কিছু না জানার পরও তারা কেন এসেছে? কারন তাদের হুজুর তাদের বলেছে "কিছু ব্লগার আমাদের নবিজীকে গালাগলি করে লেখালেখি করে, তাদের ফাসি না দিয়ে ঘরে ফেরা যাবে না"।
চার।।
সকালে নিউজপেপার খুললাম নাস্তিকদের মৃত্যুদন্ডের বিধান রাখতে হবে, পুরুষ সমাবেে নারী সাংবাদিকের উপর হামলা এরকম কিছু উদ্ভট সংবাদ সকালটা তিতো করে দিল। ভার্সিটি গেটের মমিন পাগল এর সাথে শাপলা চত্তরের লাখো মানুষের একটা মিল খুব স্পষ্ট, মমিন পাগল জানে না সিগােট কি? কিন্তু সে এটার ভক্ত। লাখো জনতা আছে যারা জানে না কারা তাদের প্রিয় নবীর বিরুদ্ধে কি লিখেছে বা কোথায় বা লিখেছে, তারপওরও তারা নাস্তিকদের ফাসি চায়
কি বলব ভার্সিট গেটের মমিন পাগলারে দেখে আমাদের মনে কষ্ট হয়, আফসোস করে বলি- হায়রে পাগল। মমিন পাগলাও হয়ত মনে মনে আমার দিকে তাকিয়ে কেলিয়ে হাসে আর ভাবে- হায়রে পাগল।
এদেশের তৌহিদি জনতা জানে না নাস্তিক কারা, তারা কিইবা করে, এদের লেজ আছে নাকি নেই, তার পরেও তাদের নিয়ে এই তৌহিদি জনতার আফসোসের সীমা নাই। তারা সবইকে নিয়েই জান্নাতে যাবে, কে যেতে চায় কে চায় না এটা দেখার কি দরকার?
রাতে কি গাঞ্জা খাইছিলাম নাকি? মনে নাই। খাইছিলাম মনে হয়, নতুবা মাথাট ঝিম ধরার কথানা। আর কি দেখছি এগুলো, নারী সাংবাদিকের উপর হামলা, সরকার নীরব ভোট বাচাতে, বিরোধী দল সোচ্চার ভোট বাড়াতে। আমার খুব ভাবতে ইচ্ছা করছে আমি গাজা খেয়ে টাল হয়ে এগুলে কল্পনা করছি, কিন্তু যখন রুমমেট আমার দিকে আধা জ্বলা সিগরটেটা বাড়িয়ে ধরে আর আমি কি বোর্ড থেকে হাত তুলে যত্নে ওটা গ্রহন করি, তখন মনে হয়না আমি গাঁজা খেয়ে লিখছি।
০৯ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১০:৪৫
বিকারগ্রস্থ আগন্তুক বলেছেন: আপনার মন্তব্যে আর উৎসাহের জন্য ধন্যবাদ।
এদেশের রজনীতি নিয়ে একটু ভবলেই মনে হয় নজরুলের ঐ গানটা- "বিরাটো শিশু, খেলিছো এই বিশ্ব লইয়া।" রাজনীতিবিদরা আমাদেরকে নিয়ে শিশুর মতই খেলা করে যাচ্ছে। আমর নাদানের মত তা দেখে যাচ্ছি। ভোটের জন্য এরা সব পারে। কখনো ধর্মনিরপেক্ষ, কখনো শাহজালালের মাজার থেকে ভোট ভিক্ষা শুরু।
©somewhere in net ltd.
১|
০৯ ই এপ্রিল, ২০১৩ বিকাল ৪:০৯
শ্রাবণ জল বলেছেন: কি বলব ভার্সিট গেটের মমিন পাগলারে দেখে আমাদের মনে কষ্ট হয়, আফসোস করে বলি- হায়রে পাগল। মমিন পাগলাও হয়ত মনে মনে আমার দিকে তাকিয়ে কেলিয়ে হাসে আর ভাবে- হায়রে পাগল।
আপনার লেখার স্টাইল ভাল লাগল।
শিরোনাম দেখে প্রথমে পড়ার ইচ্ছে না থাকলেও
গঞ্জিকা সেবনপূর্বক লিখিতেছি (গাঁজা খেয়ে লিখছি) - ১ এটা পড়ার পর ২ টা পড়তে হল।
মাদক সেবনের অভিজ্ঞতা না থাকলেও, দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতার এইসব আগডুম বাগডুম চিন্তা করতে গেলে মাথায় আসলেই ঝিম ধরে যায়।
ভাল থাকবেন।