![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি স্বপ্নের জন্য ঘুমিয়ে পড়তে রাজী নই, আমি জেগে থাকব স্বপ্নের সূর্যোদয় দেখার জন্য...........
এক।।
মাসুম - কিরে হালা কাল রাত্রে কই মরছিলি?
মিনহাজ - ঘুম মহান আল্লাহপাকের দান, এইডারে উপেক্ষা করি ক্যমনে?
রাহুল - লেডিস হলের সামনে বিড়ি টানার চাইতে কি ঘুম বেশী মজার?
মিনহাজ - আমি তা বলিনি।
আলোচনা যখন এরকম গুরুত্বপূর্ন দিকে মোড় নিচ্ছে, তখনই টঙের দিকে একটি মেয়েকে হেটে আসতে দেখা গেল। মেয়েটা শান্তা। মাসুম কেন জানি রাহুলের পাশ থেকে উঠে মিনহাজের পাশে গিয়ে বসল। মিচকা শয়তান মিনহাজ বলে উঠল -
- হুদাই কিছুক্ষন উপদেশ শুনতে হবেরে। মেয়েটা ভাবে কি? আমরা ফিডার খাই?
শান্তা এসে রাহুলের পাশে বসে পড়ল। আর প্রথম কথাটা একটা প্রশ্ন -
- এই তরা তিনটা ক্লাস করলি না কেনরে?
মিনহাজ - বালের ক্লাস করে কি হবেরে? আর আমরা ক্লাস করি আর না করি তাতে তর কি?
শান্তা - কি করতেছিলি তাতো জানি, টঙে বসে ধোয়াা টানতেছিলি। ভাল কিছু করতে পারস না তোরা?
রাহুল চেচিয়ে উঠল -
-মামা, তিনটা লীফ দিয়োতো।
এবার শান্তাকে উদ্দেশ্য করে বলল - "ধোয়ার মর্ম তুই বুঝবি না। আমরা এখন এই ফালতু কাজটাই করব। তুই কি থাকবি না যাবি?
রাগত ভাবে উঠে হাটা দিল শান্তা। পিছন থেকে শুনল ওরা তিনজন হাসছে।
দুই।।
রাস্তার পাশে সব্জিওয়ালার সাথে দরকষাকষি করছে টাক মাথা লোকটা, নোংরা হোটেলের ছেলেটা ডেকেই চলেছে গরম গরম ফুরি, রিক্সায় যাওয়া মেয়েকে দেখে আড়চোখে দেখছে পাশ দিয়ে চলে যাওয়া ট্রাক ড্রাইভার। এগুলো দেখে খুবই মজা পায় রাহুল। এগুলো দেখে মজা পাওয়ার জন্য ও কানে হেডফোন দিয়েও হাটে না। যারা হাটে তাদের দেখে রাহুলের আফসোস হয়, চারপাশে ঘটে যাওয়া মজার কত জিনিস যে তারা মিস করছে টা ভেবে ওর আফসসের সীমা নাই।
আজ চারপাশটা একটু অন্যরকম। আজ ও নিজেই দ্বিতীয় দলে। টিউশানিতে যাচ্ছে ও কানে হেড ফোন। দুপুরে শান্তার সাথে ওরকম করা উচৎ হয়নি ওর বা ওদের। শান্তার সাথে এরকম খুনসুটি আগেও করেছে ও। শান্তাও মুখ ঝামটা দিয়ে চলে গেছে বহুবার। রাহুলের মন খারাপ হয়নি কখনো। ও জানে শান্তা আবারও আসবে, ওর কাছেই আসবে। কাল কি সরি বলবে রাহুল। বা সরির চাইতে বেশী কিছু।
ওহ কাল পহেলা বৈশাখ।
তিন।।
রুমে ফিরেছে সেই সন্ধ্যায়। তারপর থেকে শান্তা বসে আছে ল্যপটপের সামনে। কিছুই করছে না। মনটা বিষিয়ে আছে ওর। মাসুম বা মিনহাজের উপর না। এরকম সময়ে রুমে ঢুকল মিথিলা নামের জুনিয়র একটা মেয়ে।
- আপু মেজাজ খারাপ নাকি? রাহুল ভাইয়া কিছু বলেছে??
- এই তোর এত কথার কি দরকার। এটিচিউড শিখিস নাই? ফাজিল কোথাকার। আর একটা কথাও বলবি না।
চিন্তা করল কাল থেকে ক্যম্পাসে গিয়ে রাহুলের সাথে কথাই বলে না।
চার।।
আজ পহেলা বৈশাখ। ক্যম্পাসটা আজ সবার মত সেজেছে।সকালের শোভাযাত্রায় দেখা যায়নি রাহুলকে। ঘুমাচ্ছিল হয়ত। মাসুম আর মিনহাজ ছিল। দুটো চোখ রাহুলকে খুজেছে। এই চোখদুটো শান্তার। গতরাতের প্রতিজ্ঞা ভুলে গেছিল কিন কে জানে? বেলা বারোটার ঘুম জড়ানো চোখে আর কুচকানো একটা টিশার্ট গায়ে রাহুলকে দেখা গেল টঙে বসে আছে ঐ দুই বান্দরের সাথে।
মাসুম - মামারে কি যে মিস করলি।সেই সব জিনিস ছিল।
মিনহাজ - সমস্যা নাই, অর্ধেক দিন তো এখনো পড়ে আছে।
রাহুল - হা এক বছরের খোরাক জোগাড় করতে হবে না।
শান্তা ওর দুই ব্যচমেট আফি আর সুচির সাথে টঙের দিকেই আসছি। শাড়ী আল খোপার লাল গোলাপে ওকে অছাম লাগছিল। টঙে ঢোকা মাত্রই জলন্ত সিগারেটটা মুখ থেকে নামিয়ে ওকে উদ্দেশ্য করে রহুল বলল - "তোরে পেত্নীর মত লাগছেরে শান্তা।"
গত সন্ধ্যর কথা মনে ছিল না সম্ভবত ওর। কথাটা শুনেই সব আলো নিভে গেল শান্তার মুখ থেকে। পিছন ঘুরে দ্রুত হাটতে থাকল ডিপার্টমেন্টের পিছনের দিকে। আফি বলে উঠল -
- তোরা তিনটা কেনযে খালি ওর পিছে লাগস?
বলে আফি আর সূচি চলে গেল শান্তা যেদিকে গেছে সেদিকে। পিছন থেকে মাসুমের চিৎকার-
- তগো তো বয়ফ্রেন্ড আছে। তগো খোচায়া মাইর খামু নাকি? তোদের দুজনরে দারুন লাগতেছে। ভাইয়ারা তো কইবই। আমরাও কইলাম। শুনছস?
শেষের কথাগুলো শুনেছে কিনা বোঝা গেল না মিনহাজের দনবীয় হাসির জন্য।
পাঁচ।।
মাসুম - মামা তিনটা লীফ দিয়ো তো।
সিগারেট তিনটা নিয়ে মিনহাজ একসাথে ধরিয়ে একটা বাড়িয়ে দিল মাসুমের দিকে। এরপর রাহুলের দিকে জলন্ত সিগারেটটা বাড়িয়ে দেখল ও হেটে যাচ্ছে ডিপার্টমেন্টের পিছনের দিকটায়। মিনহাজ চিৎকার করে উঠল - "ওই হালা কই যাস?"
মাসুম বাধা দিল- "ডাকিস না। এইসময় বাধা দিলে শত্রু হয়ে যাবি।"
মিনহাজের দানবীয় হাসি হা হা হা হা।
না রাহুল ফিরে আসেনি।
আচ্ছা রাহুল কি আজ শান্তার সাথে তুই থেকে তুমিতে নেমে আসতে পারবে?
©somewhere in net ltd.