নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

হৃদয়ে কবিতা

আবু জাফর মহিউদ্দীন

কবিতা লিখি,কবিতা ভালোবাসি।

আবু জাফর মহিউদ্দীন › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভালো বন্ধু নির্বাচনে গুরুত্ব ও তাৎপর্য

২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ রাত ৯:২০

পৃথিবীতে বেঁচে থাকার জন্য মানুষের যেমন খাদ্য, বস্ত্র ও বাসস্থান প্রয়োজন, তেমনি সমাজে বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজন মানুষের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক, সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতির। কেননা মানুষ সামাজিক জীব। সমাজবদ্ধ হয়ে চলা মানুষের সহজাত প্রবৃত্তি। আর মানুষের স্বভাব-প্রকৃতিই এমন যে কোনো মানুষ একাকী থাকতে চায় না। সমাজের অন্য সবার সঙ্গে প্রীতির মেলবন্ধনে জড়িয়ে থাকতে আগ্রহী। এই পারস্পরিক সম্পর্ক, সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতির মায়াজাল মানুষের মধ্যে বন্ধুত্বের আবহ সৃষ্টি করে। তাই সমাজে একজনকে আরেকজনের প্রয়োজন পড়ে। এটা আল্লাহর এক অশেষ নিয়ামত। সঠিকভাবে যথার্থ বন্ধু নির্বাচন করার মধ্য দিয়ে মানুষ তার সামাজিক এবং ব্যক্তিগত জীবনকে সুষ্ঠু ও নিরাপদ করে তোলে। এই বন্ধুত্বের ব্যাপারে ইসলামের রয়েছে বিশেষ দৃষ্টিভঙ্গি। মহান আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে বলেন; হে ঈমানদারগণ! আল্লাহকে ভয় করো এবং সত্যবাদীদের সহযোগি হও। (সূরা তাওবাঃ ১১৯)
সমাজে চলার পথে বন্ধুর প্রয়োজন হয়। সামাজিক সম্পর্ক তৈরীতে বন্ধুত্বের একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। মানুষের কর্ম, চিন্তা-ভাবনা ও দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন হয় বন্ধুত্বের কল্যাণে। এ কারণে কার সাথে বন্ধুত্ব করতে হবে এবং কাদের বর্জন করতে হবে এ ব্যাপারে স্বয়ং আল্লাহ তাআ'লা আমাদের পথ দেখিয়েছেন। মহান আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে বলেন;
“আর ঈমানদার পুরুষ এবং ঈমানদার একে অপরের বন্ধু। তারা ভালো কথার শিক্ষা দেয় এবং মন্দ কাজ থেকে বিরত রাখে (সূরা আত তওবা)
নবী করীম (ﷺ) সৎ সঙ্গী গ্রহণে উৎসাহিত করেছেন, এবং অসৎ সঙ্গী থেকে দূরে থাকতে তাকিদ দিয়েছেন।
তিনি বলেন, মানুষ তার বন্ধুর রীতি নীতির অনুসারী হয়। কাজেই তোমাদের প্রত্যেকের খেয়াল রাখা উচিত সে কার সঙ্গে বন্ধুত্ব করছে। (সুনান আবু দাউদ) তিনি আরো বলেন;
'আমলের মধ্যে সর্বোৎকৃষ্ট হল আল্লাহর ওয়াস্তে ভালবাসা, আর আল্লাহর জন্যই কারো সাথে ঘৃণা ও শত্রুতা পোষণ করা (সুনানে আবূ দাঊদ)

অপরদিকে খারাপ বন্ধুত্বের পরিণতি হবে ভয়াবহ কারণ কিয়ামতের দিন অসৎ বন্ধুর জন্য আফসোস করতে হবে। আল্লাহ তা‘য়ালা পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেন,
‘হায়! আমার দুর্ভোগ! আমার আফসোস! যদি আমি অমুককে বন্ধুরূপে গ্রহণ না করতাম। অবশ্যই সে আমাকে বিভ্রান্ত করেছিল আমার নিকট উপদেশ বাণী কুরআন পৌঁছার পর; আর শয়তান হল মানুষের জন্যে মহাপ্রতারক। (সূরাআল-ফুরক্বান)

প্রিয় পাঠক প্রবাদে রয়েছে ,সঙ্গ দোষে লোহা ভাসে। শেখ সাদী (রহ.) বলেছেন,- সহবতে ছলে তোরা ছলে কুনাদ,সহবতে তলে তোরা তলে কুনাদ। অর্থ, সৎ সঙ্গে সর্ববাস অসৎ সঙ্গে সর্বনাশ।
আমাদের সমাজে যত অধঃপতন তার মূলে রয়েছে সঙ্গ দোষ। অর্থাৎ খারাপ মানুষের সাথে চলা। হযরত আলি (রা.) বলেছেন, 'নির্বোধের বন্ধুত্ব থেকে দূরে থাকো। কারণ সে উপকার করতে চাইলেও তার দ্বারা তোমার ক্ষতি হয়ে যাবে।’
হযরত ইমাম জাফর আস-সাদিক (রহ.) বলেন, ‘পাঁচ ব্যক্তির সঙ্গে বন্ধুত্ব করা সমীচীন নয়। তারা হলো-মিথ্যাবাদী, নির্বোধ, ভীরু, পাপাচারী ও কৃপণ ব্যক্তি।’
হযরত ইমাম গাজ্জালি (রহ.) বলেছেন, ‘যার সঙ্গে বন্ধুত্ব করবে তার মধ্যে পাঁচটি গুণ থাকা চাই। আর তা হলো- ‘বুদ্ধিমত্তা, সৎ স্বভাবের অধিকারী হওয়া, পাপাচারী না হওয়া, বেদআতি না হওয়া এবং দুনিয়াসক্ত না হওয়া।’
পরিশেষে...বন্ধুত্ব হতে হবে পরকালের কল্যাণে। আর পরকালের কল্যাণে দুনিয়ার শ্রেষ্ঠ বন্ধু নির্বাচনে একজন মানুষ হয়ে ওঠে পরিপূর্ণ ঈমানদার।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহর প্রত্যেককে পারস্পরিক সুসম্পর্ক ও বন্ধুত্ব লাভে কুরআন এবং হাদিসের নির্দেশনা অনুসরণ ও অনুকরণ করার তাওফিক দান করুন এবং তিনি যেন মুসলিম উম্মাহকে সৎ হওয়ার এবং সৎ লোকদের সংস্পর্শে থাকার এবং আল্লাহর ওয়াস্তে বন্ধুত্ব স্থাপন করার তাওফিক দান করেন। আমিন।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.