![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
চাণক্য-শ্লোক : কে ছিলেন চাণক্য?
-মো. আবুল হোসেন
'চাণক্য' প্রাচীন ভারতের কূটনৈতিক ইতিহাসের এক উজ্জ্বল নাম। পাঞ্জাব প্রদেশের অন্তর্গত তশীলায় চণক-ঋষির ঔরসে মহামতি চাণক্য খ্রিস্টপূর্ব চতুর্থ শতাব্দীতে জন্মগ্রহণ করেন। চণক-ঋষির পুত্র বলেই তাঁর নাম হয় 'চাণক্য'। তাঁর জন্মগ্রাম 'চানকা' থেকে 'চাণক্য' নাম হয়েছে বলেও অনুমান করা হয়। এছাড়া 'বিষ্ণুগুপ্ত' নামেও তিনি পরিচিত। চাণক্যের বিখ্যাত ছদ্মনাম 'কৌটিল্য'। কুটিলবুদ্ধি পরায়ণ বলে তিনি এ নামে অভিহিত। 'কুটিলা' গোত্রভুক্ত হওয়ার কারণে তাঁর 'কৌটিল্য' নাম হয়েছে বলেও ধারণা করা হয়।
সে সময়ে মগধে 'নন্দবংশ' নামে এক রাজবংশ ছিল। ঐ রাজবংশের শেষ রাজা ছিলেন ধনানন্দ। ধনানন্দের সৎভাই ছিলেন (পিতা মহাপদ্মের ঔরসে দাসী 'মুরা'র গর্ভজাত) চন্দ্রগুপ্ত। রাজা ধনানন্দ প্রজাদের কাছে প্রিয় ছিলেন না। পিতা মহাপদ্মের মৃত্যুর পর তিনি দাসীমাতা মুরা ও সৎভাই চন্দ্রগুপ্তকে রাজ্য থেকে তাড়িয়ে দেন। অপমানিত চন্দ্রগুপ্ত তার ভাই ধনানন্দকে পরাজিত করে মগধের সিংহাসন দখলের চেষ্টা করেন। কিন্তু সে চেষ্টায় তিনি ব্যর্থ হন এবং জীবন বাঁচাতে জঙ্গলে গিয়ে নির্বাসিত জীবন-যাপন করতে থাকেন।
মহারাজ ধনানন্দের পিতৃশ্রাদ্ধে পৌরহিত্য করার জন্য একজন ব্রাহ্মণের প্রয়োজন হয়। ব্রাহ্মণ সংগ্রহের দায়িত্ব পড়ে মন্ত্রী শকটার উপর। তিনি চাণক্যকে মহারাজ ধনানন্দের পিতৃশ্রাদ্ধে পৌরহিত্য করার অনুরোধ জানান। সে অনুরোধ অনুযায়ী চাণক্য যথাসময়ে রাজপ্রাসাদে উপস্থিত হয়ে পুরোহিতের আসন গ্রহণ করেন। চাণক্যের চেহারা খুব ভাল ছিল না। পুরোহিতের আসনে কদাকার ব্রাহ্মণ চাণক্যকে দেখে মহারাজ ধনানন্দ ভীষণ ক্রুদ্ধ হন এবং তাকে তিরস্কার করে সেখান থেকে বের হয়ে যেতে বলেন। পণ্ডিত চাণক্য প্রথমে রুষ্ট না হয়ে মহারাজাকে হিতবাক্যে বুঝাতে চেষ্টা করেন। কিন্তু রাজা ধনানন্দ কোন প্রবোধ না মেনে অপর লোক দ্বারা চাণক্যকে যথেষ্ট অপমান করেন। চাণক্য ক্রুদ্ধ হয়ে সেখান থেকে চলে আসেন এবং এই অপমানের প্রতিশোধ গ্রহণের প্রতিজ্ঞা করেন।
চন্দ্রগুপ্ত যখন বিন্ধানের জঙ্গলে পলাতক ও নির্বাসিত জীবন যাপন করছিলেন, তখন ঘটনাচক্রে ঐ চাণক্যের সাথে তার সাক্ষাত হয়। চন্দ্রগুপ্ত তার সমস্ত কথা চাণক্যের কাছে খুলে বলেন এবং ধনানন্দকে পরাজিত করে মগধের সিংহাসন দখলে চাণক্যের পরামর্শ ও সাহায্য কামনা করেন। চাণক্য ছিলেন প্রখর প্রতিভাধর কুটিলবুদ্ধি-সম্পন্ন পণ্ডিত। চন্দ্রগুপ্ত চাণক্যকে তার গুরু, উপদেষ্টা ও মন্ত্রণাদাতা হিসেবে মেনে নেন। চাণক্যের সক্রিয় সহযোগিতায় চন্দ্রগুপ্ত ক্রমে একটি শক্তিশালী সেনাবাহিনী গড়ে তোলেন এবং গুরু চাণক্যের সুনিপুণ পরিকল্পনা অনুসারে ধনানন্দকে পরাজিত করে মগধের সিংহাসন দখল করেন। সিংহাসনে আরোহন করার পর মাতা 'মুরা'র নামানুসারে (নন্দবংশের পরিবর্তে) রাজবংশের নামকরণ করেন 'মৌর্যবংশ' এবং পণ্ডিত চাণক্যকে করেন তার রাজ্যের প্রধানমন্ত্রী।
চন্দ্রগুপ্তের গুরু ও প্রধানমন্ত্রী হিসেবে চাণক্য অবলীলায় বিলাসবহুল জীবন কাটাতে পারতেন জাঁকজমকপূর্ণ প্রাসাদে। কিন্তু তিনি তা না করে একটি শ্মশানে কুড়েঘরে সন্ন্যাসীর মত জীবন-যাপন করতেন। গ্রিক দার্শনিক সক্রেটিসের চেহারা যেমন সুন্দর ছিল না, চাণক্যের চেহারাও তেমনি সুন্দর বা আকর্ষণীয় ছিল না। তাছাড়া স্বাস্থ্যেও তিনি ছিলেন দুর্বল। কিন্তু পাণ্ডিত্যে ছিলেন প্রায় সক্রেটিসের সমতুল্য। তিনি বিশ্বাস করতেন 'দেহের সৌন্দর্যের চাইতে চিন্তার সৌন্দর্য অধিকতর মোহময় ও এর প্রভাব যাদুতুল্য।' তিনি ছিলেন দক্ষ পরিকল্পনাবিদ, সিদ্ধান্তে অটল এবং পরিকল্পনা বাস্তবায়নে অত্যন্ত কঠোর। ক্ষমতার দৃশ্যপট থেকে দূরে থেকেও তিনি সর্ববিধ পরামর্শ দিয়ে রাজা চন্দ্রগুপ্তকে পরিচালনা করতেন। রাজা চন্দ্রগুপ্তের জীবনে চাণক্য ছিলেন সত্যিকার বন্ধু, দার্শনিক, গুরু এবং স্বর্গীয় দূততুল্য অভিভাবক। শ্মশানে থেকে (রাজ্য পরিচালনার পরামর্শদানের পাশাপাশি) অসংখ্য ভক্তদেরকে নৈতিক ও আর্থ-সামাজিক বিষয়েও তিনি জ্ঞানদান করতেন।
চাণক্যের অর্থবিষয়ক জ্ঞানের সংকলন হচ্ছে অর্থশাস্ত্র, যা 'চাণক্যের অর্থশাস্ত্র' নামে পরিচিত একটি কালোত্তীর্ণ গ্রন্থ। এ শাস্ত্রে আছে শাসকের উদ্দেশ্যে পরামর্শ, প্রজাদের নিরাপত্তা, কল্যাণ ও জীবনমান উন্নতকরার কৌশল। চাণক্য তার অর্থশাস্ত্রে রাজাকে এভাবে পরামর্শ দিয়েছেন- 'যে রাজা শত্রুর গতিবিধি সম্পর্কে ধারণা করতে পারে না এবং শুধু অভিযোগ করে যে তার পিঠে ছুরিকাঘাত করা হয়েছে, তাকে সিংহাসনচ্যুত করা উচিত।' 'সকল উদ্যোগ নির্ভর করে অর্থের উপর। সে জন্য সবচেয়ে অধিক মনোযোগ দেওয়া উচিত খাজাঞ্চিখানার দিকে। তহবিল তসরুপ বা অর্থ আত্মসাতের চল্লিশটি পদ্ধতি আছে। জিহ্বার ডগায় বিষ রেখে যেমন মধুর আস্বাদন করা সম্ভব নয়, তেমনি কোন রাজকর্মচারীর পক্ষে রাজার রাজস্বের সামান্য পরিমাণ না-খেয়ে ফেলার ঘটনা অসম্ভব ব্যাপার। পানির নিচের মাছের গতিবিধি বোঝা যেমন অসম্ভব, রাজকর্মচারীর তহবিল তসরুপ বোঝাও তেমনি অসম্ভব। আকাশের অতি উঁচুতেও পাখির উড্ডয়ন দেখা সম্ভব, কিন্তু রাজকর্মচারীর গোপন কার্যকলাপ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া অসম্ভব।' চাণক্যের পরামর্শ ও নির্দেশনাগুলি শুধু রাজ্যশাসনের ক্ষেত্রে নয়, এ যুগের বড় বড় বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান পরিচালনা ও সম্প্রসারণের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। তিনিই অর্থশাস্ত্রের প্রথম প্রবক্তা বলে অভিহিত। চাণক্যের অর্থশাস্ত্র উপবেদের অন্তর্ভুক্ত।
এই বিজ্ঞ ও বাস্তবজ্ঞান-সম্পন্ন পণ্ডিতের সমাজ, সংসার, ধর্ম, রাজনীতি, অর্থনীতি ইত্যাদি সম্পর্কিত নীতিকথাগুলি (আজ আড়াই হাজার বছর পরেও) গুরুত্ব হারিয়ে ফেলেনি। আজও তা 'চাণক্য-শ্লোক' নামে ছড়িয়ে আছে সর্বত্র। কথাগুলি যে চাণক্যের তা হয়তো আমরা অনেকেই জানি না, অথচ কথাগুলি আমাদের খুবই পরিচিত। চাণক্যের এমন কিছু শ্লোক নিচে উল্লেখ করা হল-
১. অতি পরিচয়ে দোষ আর ঢাকা থাকে না।
২. অধমেরা ধন চায়, মধ্যমেরা ধন ও মান চায়। উত্তমেরা শুধু মান চায়। মানই মহতের ধন।
৩. অনেকে চারটি বেদ এবং ধর্মশাস্ত্র অধ্যয়ন করলেও আত্মাকে জানে না, হাতা যেমন রন্ধন-রস জানে না।
৪. অন্তঃসার শূন্যদের উপদেশ দিয়ে কিছু ফল হয় না, মলয়-পর্বতের সংসর্গে বাঁশ চন্দনে পরিণত হয় না।
৫. অবহেলায় কর্মনাশ হয়, যথেচ্ছ ভোজনে কুলনাশ হয়, যাচ্ঞায় সম্মান-নাশ হয়, দারিদ্র্যে বুদ্ধিনাশ হয়।
৬. অভ্যাসহীন বিদ্যা, অজীর্ণে ভোজন, দরিদ্রের সভায় বা মজলিশে কালক্ষেপ এবং বৃদ্ধের তরুণী ভার্যা বিষতুল্য।
৭. অহংকারের মত শত্রু নেই।
৮. আকাশে উড়ন্ত পাখির গতিও জানা যায়, কিন্তু প্রচ্ছন্নপ্রকৃতি-কর্মীর গতিবিধি জানা সম্ভব নয়।
৯. আদর দেওয়ার অনেক দোষ, শাসন করার অনেক গুণ, তাই পুত্র ও শিষ্যকে শাসন করাই দরকার, আদর দেওয়া নয়।
১০. আপদের নিশ্চিত পথ হল ইন্দ্রিয়গুলির অসংযম, তাদের জয় করা হল সম্পদের পথ, যার যেটি ঈপ্সিত সে সেই পথেই যায়।
১১. আড়ালে কাজের বিঘ্ন ঘটায়, কিন্তু সামনে ভাল কথা বলে, যার উপরে মধু কিন্তু অন্তরে বিষ, তাকে পরিত্যাগ করা উচিত।
১২. ইন্দ্রিয়ের যে অধীন তার চতুরঙ্গ সেনা থাকলেও সে বিনষ্ট হয়।
১৩. উপায়জ্ঞ মানুষের কাছে দুঃসাধ্য কাজও সহজসাধ্য।
১৪. উৎসবে, বিপদে, দুর্ভিক্ষে, শত্রুর সঙ্গে সংগ্রামকালে, রাজদ্বারে এবং শ্মশানে যে সঙ্গে থাকে, সে-ই প্রকৃত বন্ধু।
১৫. ঋণ, অগ্নি ও ব্যাধির শেষ রাখতে নেই, কারণ তারা আবার বেড়ে যেতে পারে।
১৬. একটি দোষ বহু গুণকেও গ্রাস করে।
১৭. একটি কুবৃক্ষের কোটরের আগুন থেকে যেমন সমস্ত বন ভস্মীভূত হয়, তেমনি একটি কুপুত্রের দ্বারাও বংশ দগ্ধ হয়।
১৮. একটিমাত্র পুষ্পিত সুগন্ধ বৃক্ষে যেমন সমস্ত বন সুবাসিত হয়, তেমনি একটি সুপুত্রের দ্বারা সমস্ত কুল ধন্য হয়।
১৯. একশত মূর্খ পুত্রের চেয়ে একটি গুণী পুত্র বরং ভাল। একটি চন্দ্রই অন্ধকার দূর করে, সকল তারা মিলেও তা পারে না।
২০. কর্কশ কথা অগ্নিদাহের চেয়েও ভয়ঙ্কর।
২১. খেয়ে যার হজম হয়, ব্যাধি তার দূরে রয়।
২২. গুণবানকে আশ্রয় দিলে নির্গুণও গুণী হয়।
২৩. গুণহীন মানুষ যদি উচ্চ বংশেও জন্মায় তাতে কিছু আসে যায় না। নীচকুলে জন্মেও যদি কেউ শাস্ত্রজ্ঞ হয়, তবে দেবতারাও তাঁকে সম্মান করেন।
২৪. গুরু শিষ্যকে যদি একটি অক্ষরও শিক্ষা দেন, তবে পৃথিবীতে এমন কোনও জিনিস নেই, যা দিয়ে সেই শিষ্য গুরুর ঋণ শোধ করতে পারে।
২৫. গৃহে যার মা নেই, স্ত্রী যার দুর্মুখ তার বনে যাওয়াই ভাল, কারণ তার কাছে বন আর গৃহে কোনও তফাৎ নেই।
২৬. চন্দন তরুকে ছেদন করলেও সে সুগন্ধ ত্যাগ করে না, যন্ত্রে ইক্ষু নিষ্পিষ্ট হলেও মধুরতা ত্যাগ করে না, যে সদ্বংশজাত অবস্থা বিপর্যয়েও সে চরিত্রগুণ ত্যাগ করে না।
২৭. তিনটি বিষয়ে সন্তোষ বিধেয়: নিজের পত্নীতে, ভোজনে এবং ধনে। কিন্তু অধ্যয়ন, জপ, আর দান এই তিন বিষয়ে যেন কোনও সন্তোষ না থাকে।
২৮. দারিদ্র্য, রোগ, দুঃখ, বন্ধন এবং বিপদ- সব কিছুই মানুষের নিজেরই অপরাধরূপ বৃক্ষের ফল।
২৯. দুর্জনের সংসর্গ ত্যাগ করে সজ্জনের সঙ্গ করবে। অহোরাত্র পুণ্য করবে, সর্বদা নশ্বরতার কথা মনে রাখবে।
৩০.দুর্বলের বল রাজা, শিশুর বল কান্না, মূর্খের বল নীরবতা, চোরের মিথ্যাই বল।
৩১.দুষ্টা স্ত্রী, প্রবঞ্চক বন্ধু, দুর্মুখ ভৃত্য এবং সসর্প-গৃহে বাস মৃত্যুর দ্বার, এ-বিষয়ে সংশয় নেই।
৩২. ধর্মের চেয়ে ব্যবহারই বড়।
৩৩. নানাভাবে শিক্ষা পেলেও দুর্জন সাধু হয় না, নিমগাছ যেমন আমূল জলসিক্ত করে কিংবা দুধে ভিজিয়ে রাখলেও কখনও মধুর হয় না।
৩৪. পরস্ত্রীকে যে মায়ের মত দেখে, অন্যের জিনিসকে যে মূল্যহীন মনে করে এবং সকল জীবকে যে নিজের মত মনে করে, সে-ই যথার্থ জ্ঞানী।
৩৫. পাপীরা বিক্ষোভের ভয় করে না।
৩৬. পাঁচ বছর বয়স অবধি পুত্রদের লালন করবে, দশ বছর অবধি তাদের চালনা করবে, ষোল বছরে পড়লে তাদের সঙ্গে বন্ধুর মত আচরণ করবে।
৩৭. পুত্র যদি হয় গুণবান, পিতামাতার কাছে তা স্বর্গ সমান।
৩৮. পুত্রকে যাঁরা পড়ান না, সেই পিতামাতা তার শত্রু। হাঁসদের মধ্যে বক যেমন শোভা পায় না, সভার মধ্যে সেই মূর্খও তেমনি শোভা পায় না।
৩৯. বইয়ে থাকা বিদ্যা, পরের হাতে থাকা ধন একই রকম। প্রয়োজনকালে তা বিদ্যাই নয়, ধনই নয়।
৪০. বিদ্বান সকল গুণের আধার, অজ্ঞ সকল দোষের আকর। তাই হাজার মূর্খের চেয়ে একজন বিদ্বান অনেক কাম্য।
৪১. বিদ্যাবত্তা ও রাজপদ এ-দুটি কখনও সমান হয় না। রাজা কেবল নিজদেশেই সমাদৃত, বিদ্বান সর্বত্র সমাদৃত।
৪২. বিদ্যা ব্যতীত জীবন ব্যর্থ, কুকুরের লেজ যেমন ব্যর্থ, তা দিয়ে সে গুহ্য-অঙ্গও গোপন করতে পারে না, মশাও তাড়াতে পারে না।
৪৩. বিদ্যাভূষিত হলেও দুর্জনকে ত্যাগ করবে, মণিভূষিত হলেও সাপ কি ভয়ঙ্কর নয়?
৪৪. বিদ্যার চেয়ে বন্ধু নাই, ব্যাধির চেয়ে শত্রু নাই। সন্তানের চেয়ে স্নেহপাত্র নাই, দৈবের চেয়ে শ্রেষ্ঠ বল নাই।
৪৫. বিনয়ই সকলের ভূষণ।
৪৬. বিষ থেকেও অমৃত আহরণ করা চলে, মলাদি থেকেও স্বর্ণ আহরণ করা যায়, নীচজাতি থেকেও বিদ্যা আহরণ করা যায়, নীচকুল থেকেও স্ত্রীরত্ন গ্রহণ করা যায়।
৪৭. ভোগবাসনায় বুদ্ধি আচ্ছন্ন হয়।
৪৮. মিত ভোজনেই স্বাস্থ্যলাভ হয়।
৪৯. যশবানের বিনাশ নেই।
৫০. যাঁরা রূপযৌবনসম্পন্ন এবং উচ্চকুলজাত হয়েও বিদ্যাহীন, তাঁরা সুবাসহীন পলাশ ফুলের মত বেমানান।
৫১. যে অলস, অলব্ধ-লাভ তার হয় না।
৫২. যে গাভি দুধ দেয় না, গর্ভ ধারণও করে না, সে গাভি দিয়ে কী হবে! যে বিদ্বান ও ভক্তিমান নয়, সে পুত্র দিয়ে কী হবে!
৫৩. রাতের ভূষণ চাঁদ, নারীর ভূষণ পতি, পৃথিবীর ভূষণ রাজা, কিন্তু বিদ্যা সবার ভূষণ।
৫৪. শাস্ত্র অনন্ত, বিদ্যাও প্রচুর। সময় অল্প অথচ বিঘ্ন অনেক। তাই যা সারভূত তারই চর্চা করা উচিত। হাঁস যেমন জল-মিশ্রিত দুধ থেকে শুধু দুধটুকুই তুলে নেয়, তেমনি।
৫৫. সত্যনিষ্ঠ লোকের অপ্রাপ্য কিছুই নাই।
৫৬. সত্যবাক্য দুর্লভ, হিতকারী-পুত্র দুর্লভ, সমমনস্কা-পত্নী দুর্লভ, প্রিয়স্বজনও তেমনি দুর্লভ।
৫৭. সাপ নিষ্ঠুর খলও নিষ্ঠুর, কিন্তু সাপের চেয়ে খল বেশি নিষ্ঠুর। সাপকে মন্ত্র বা ওষধি দিয়ে বশ করা যায়, কিন্তু খলকে কে বশ করতে পারে?
৫৮. সুবেশভূষিত মূর্খকে দূর থেকেই দেখতে ভাল, যতক্ষণ সে কথা না বলে ততক্ষণই তার শোভা, কথা বললেই মূর্খতা প্রকাশ পায়।
৫৯. হাতি থেকে একহাজার হাত দূরে, ঘোড়া থেকে একশ হাত দূরে, শৃঙ্গধারী প্রাণী থেকে দশহাত দূরে থাকবে। অনুরূপ দুর্জনের কাছ থেকেও যথাসম্ভব দূরে থাকবে।
২| ২৪ শে মে, ২০০৯ সকাল ১১:৪৭
নকীবুল বারী বলেছেন: সত্যবাক্য দুর্লভ, হিতকারী-পুত্র দুর্লভ, সমমনস্কা-পত্নী দুর্লভ, প্রিয়স্বজনও তেমনি দুর্লভ
অনেক চমৎকার পোষ্ট
অনেক অনেক ধন্যবাদ............................
৩| ২৪ শে মে, ২০০৯ সকাল ১১:৪৮
সুব্রত কুমার সরকার বলেছেন:
চাণক্যের নাম শুনেছি; কিন্তু জানতাম না।
চমৎকার একটি পোস্ট। +
লাল পাখা বলেছেন:
আগে প্রিয়তে রাখলাম।
এর পর পড়া শুরু করি।
৪| ২৪ শে মে, ২০০৯ সকাল ১১:৫২
মো. আবুল হোসেন, শিবচর, মাদারিপুর বলেছেন:
চাণক্যের শ্লোক আমার ভাললাগে। আমার ভাললাগাকে আপনাদের
সাথে শেয়ার করার জন্য এই পোস্ট।
@ লাল পাখা, নকীবুল বারী, সুব্রত কুমার সরকার,
আপনাদের সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
৫| ২৪ শে মে, ২০০৯ সকাল ১১:৫৩
জাগরূ৪৯ বলেছেন:
'সকল উদ্যোগ নির্ভর করে অর্থের উপর। সে জন্য সবচেয়ে অধিক মনোযোগ দেওয়া উচিত খাজাঞ্চিখানার দিকে। তহবিল তসরুপ বা অর্থ আত্মসাতের চল্লিশটি পদ্ধতি আছে। জিহ্বার ডগায় বিষ রেখে যেমন মধুর আস্বাদন করা সম্ভব নয়, তেমনি কোন রাজকর্মচারীর পক্ষে রাজার রাজস্বের সামান্য পরিমাণ না-খেয়ে ফেলার ঘটনা অসম্ভব ব্যাপার। পানির নিচের মাছের গতিবিধি বোঝা যেমন অসম্ভব, রাজকর্মচারীর তহবিল তসরুপ বোঝাও তেমনি অসম্ভব। আকাশের অতি উঁচুতেও পাখির উড্ডয়ন দেখা সম্ভব, কিন্তু রাজকর্মচারীর গোপন কার্যকলাপ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া অসম্ভব।"
চাণক্য মালটা ত্রীকাল দেখতে পারছিলেন।
২৪ শে মে, ২০০৯ দুপুর ১২:৪৮
মো. আবুল হোসেন, শিবচর, মাদারিপুর বলেছেন:
চাণক্য মালটা ত্রীকাল দেখতে পারছিলেন।
৬| ২৪ শে মে, ২০০৯ দুপুর ১২:১৯
শোভা বলেছেন: শুধু চানক্য কেন ? হিন্দু ও বৌদ্ধ ধর্মের প্রত্যেক মুনির কথায় জীবন কি তা ফুটে উঠে ।
৭| ২৪ শে মে, ২০০৯ দুপুর ১২:২৮
নুভান বলেছেন: প্রিয়তে রাখলাম।
২৪ শে মে, ২০০৯ দুপুর ১২:৪৯
মো. আবুল হোসেন, শিবচর, মাদারিপুর বলেছেন:
ধন্যবাদ। ভাল থাকুন সব সময়।
৮| ২৪ শে মে, ২০০৯ দুপুর ১২:২৯
জাগরূ৪৯ বলেছেন:
আমি কই কি আর আমার সারেন্গী কয় কি! চাণক্য আমাগো এখনকার বাংলাদেশ দেখছিলেন, আমি এইটা কইছি, বুচ্ছেন শোভাদি?
৯| ২৪ শে মে, ২০০৯ দুপুর ১২:৩০
তায়েফ আহমাদ বলেছেন: চাণক্য অনেক ভালো কথা বলেছেন!
তবে, যতদুর জানি ক্ষমতার স্বার্থে ভাল-খারাপ সব কাজকেই তিনি বৈধতা দিয়েছিলেন।
এজন্য চাণক্যনীতি/ কৈটিল্যশাস্ত্রকে একটু ঋনাত্মক ভাবেই দেখা হয়ে থাকে!
২৪ শে মে, ২০০৯ দুপুর ১২:৫১
মো. আবুল হোসেন, শিবচর, মাদারিপুর বলেছেন:
'কৈটিল্য' নয় 'কৌটিল্য'
ধন্যবাদ আপনাকে।
১০| ২৪ শে মে, ২০০৯ দুপুর ১২:৩৩
অপু২৮৩৮ বলেছেন: অসাধারণ
২৪ শে মে, ২০০৯ দুপুর ১২:৫৫
মো. আবুল হোসেন, শিবচর, মাদারিপুর বলেছেন:
খুশি হলাম । ধন্যবাদ আপনাকে। ভাল থাকুন সব সময়।
১১| ২৪ শে মে, ২০০৯ দুপুর ১২:৪৬
রোডায়া বলেছেন: ভালো৷
২৪ শে মে, ২০০৯ দুপুর ১২:৫৬
মো. আবুল হোসেন, শিবচর, মাদারিপুর বলেছেন:
১২| ২৪ শে মে, ২০০৯ দুপুর ১:০০
ঊননের মুখ থেকে বলছি বলেছেন: ধন্যবাদ আপনপাকে আপনি উল্লেখ করেছেন চাণক্য-এর অর্থশাস্ত্র তথা তহবিল তসরুপ বা অর্থ আত্মসাতের চল্লিশটি পদ্ধতি আছে র্পযয়ক্রমে জানালে খুশি হব।
২৪ শে মে, ২০০৯ দুপুর ১:০৭
মো. আবুল হোসেন, শিবচর, মাদারিপুর বলেছেন:
চাণক্য বলেছেন: '.....তহবিল তসরুপ বা অর্থ আত্মসাতের চল্লিশটি পদ্ধতি আছে। .......'
আপনার মত আমারও জানার বড় ইচ্ছে এ চল্লিশটি পদ্ধতি। দুঃখিত সাহায্য করতে না পারার জন্য।
১৩| ২৪ শে মে, ২০০৯ দুপুর ১:১৫
পাপী বলেছেন: প্রিয়তে গেল।
১৪| ২৪ শে মে, ২০০৯ দুপুর ১:১৬
নাজিম উদদীন বলেছেন: চাণক্য মাণিক্য গণ
বেণু বীণা কন্কণ কণিকা।
গুড পোস্ট।
২৪ শে মে, ২০০৯ দুপুর ১:২৩
মো. আবুল হোসেন, শিবচর, মাদারিপুর বলেছেন:
চাণক্য, মাণিক্য, গণ, বেণু, বীণা, কন্কণ, কণিকা।
ণ-ত্ববিধান: স্বভাবতই 'ণ' হয়।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
১৫| ২৪ শে মে, ২০০৯ দুপুর ১:১৭
এম আর মোহাম্মদ হোচেন আলি বরকত হোসেন লোকমান বলেছেন:
অসাধারণ। সরাসরি প্রিয়তে।
১৬| ২৪ শে মে, ২০০৯ দুপুর ১:২১
সারিয়া তাসনিম বলেছেন:
ইদানিং লগ ইন না করে চুপচাপ পোস্ট পড়ি। কিন্তু এই পোস্টে মন্তব্য না করে পারলাম না।
প্রিয়তে রাখলাম।
অনেক ভালো লাগলো
২৪ শে মে, ২০০৯ দুপুর ১:২৫
মো. আবুল হোসেন, শিবচর, মাদারিপুর বলেছেন:
পুলকিত।
অনেক অনেক ধন্যবাদ।
১৭| ২৪ শে মে, ২০০৯ দুপুর ১:৪৬
জাগরূ৪৯ বলেছেন:
লেখক বলেছেন:
চাণক্য বলেছেন: '.....তহবিল তসরুপ বা অর্থ আত্মসাতের চল্লিশটি পদ্ধতি আছে। .......'
আপনার মত আমারও জানার বড় ইচ্ছে এ চল্লিশটি পদ্ধতি। দুঃখিত সাহায্য করতে না পারার জন্য।
আমাগো এখনকার বাংলাদেশে চল্লিশ+চল্লিশ =আশিটা পদ্ধতি জারি আছে, আপনে দশটা সরকারি প্রযেক্ট এ উকি দিয়া দ্যাখেন।
২৪ শে মে, ২০০৯ দুপুর ১:৫৩
মো. আবুল হোসেন, শিবচর, মাদারিপুর বলেছেন:
যথার্থই বলেছেন। +
১৮| ২৪ শে মে, ২০০৯ দুপুর ২:৪৭
শয়তান বলেছেন: চমৎকার লাগলো ।
২৪ শে মে, ২০০৯ দুপুর ২:৫৪
মো. আবুল হোসেন, শিবচর, মাদারিপুর বলেছেন:
ধন্যবাদ।
১৯| ২৪ শে মে, ২০০৯ দুপুর ২:৫৪
হাসতে হাসতে পরে গেলাম বলেছেন: চানক্য আমার জন্য কি বইল্যা গেলো?
২৪ শে মে, ২০০৯ বিকাল ৩:৩১
মো. আবুল হোসেন, শিবচর, মাদারিপুর বলেছেন:
চাণক্য বলেছেন:
খেয়ে যার হজম হয়,
ব্যাধি তার দূরে রয়।
২০| ২৫ শে মে, ২০০৯ রাত ১২:০১
চাণক্য বলেছেন: সকল মন্তব্যকারি বালক বালিকাগনকে ধন্যবাদ। শান্তিতে থাক এই আশীর্বাদ করি।
২১| ১৬ ই জুন, ২০০৯ বিকাল ৪:১১
মুহাম্মদ মোহেব্বুর রহমান বলেছেন: পথে নেমেছি; পথই আমায় পথ দেখাবে।
২২| ১৬ ই জুলাই, ২০০৯ বিকাল ৩:৫৬
তপন বাগচী বলেছেন: ভালো লেগেছে। অনুবাদ কি আপনার?
২১ শে জুলাই, ২০০৯ রাত ১২:৩২
মো. আবুল হোসেন, শিবচর, মাদারিপুর বলেছেন: কেমন আছেন দাদা? নানান ব্যস্ততায় অনেক দিন ব্লগে আসি না।
জী আমার, তবে আশুতোষ স্যার সাহায্য করেছেন।
ভাললাগার জন্য খুবই ভাল লাগছে।
অনেক অনেক ধন্যবাদ।
২৩| ২০ শে আগস্ট, ২০০৯ বিকাল ৫:২০
মুভি পাগল বলেছেন: চাণক্য মাণিক্য গণ বাণিজ্য লবণ মণ
বেণু বীণা কঙ্কণ কণিকা
কল্যাণ শোণিত মণি স্থাণু গুণ পুণ্য বেণী
ফণী অণু বিপণী গণিকা
২০ শে আগস্ট, ২০০৯ সন্ধ্যা ৭:১৫
মো. আবুল হোসেন, শিবচর, মাদারিপুর বলেছেন:
ণ-ত্ববিধান: স্বভাবতই 'ণ' হয়।
২৪| ০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১০ রাত ১:০৫
দীপান্বিতা বলেছেন: খুব ভাল লাগল...... শ্লোক গুলো আবার ভাল করে পড়তে হবে...অনেকদিন আগে টিভিতে দেখা সেই চন্দ্রপ্রকাশ দ্বিভেদীর ‘চাণক্য’ সিরিয়ালের কথা মনে পড়ল ....
২৫| ১৯ শে মে, ২০১০ রাত ৩:২৯
হোসেন মনসুর বলেছেন: +++
২৬| ১৩ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ৩:৪৯
ফাস্ট অ্যান্ড ফিউরিয়াস বলেছেন: ++++++++++++ , প্রিয়তে
২৭| ২৬ শে আগস্ট, ২০১০ রাত ১২:০২
রক্তকরবী বলেছেন: খুব ভালো একটা লেখা।
অনেক কিছু জানতে পারলাম
শুভেচ্ছা
©somewhere in net ltd.
১|
২৪ শে মে, ২০০৯ সকাল ১১:৪৬
লাল পাখা বলেছেন:
আগে প্রিয়তে রাখলাম।
এর পর পড়া শুরু করি।